নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

রোকসানা লেইস

প্রকৃতি আমার হৃদয়

রোকসানা লেইস › বিস্তারিত পোস্টঃ

নববর্ষের কড়চা এলোমেলো

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৪:০২



পান্তা ভাতের ছবি দেখতে দেখতে অস্থির হয়ে যাচ্ছি, ফেসবুক ভর্তি হয়ে যাচ্ছে পান্তা ইলিশে। জানতে ইচ্ছে করে যারা পান্তা ভাতের ছবি দিচ্ছেন তাদের কতটা প্রিয় পান্তা ভাত।
নববর্ষে আমরা কখনও পান্তা ভাত খেতাম না। কিন্তু মাছ মাংস মিষ্টি থাকত নতুন বর্ষের প্রথম দিনের খাওয়ার আয়োজনে, যেন প্রতিদিন ভালো খাবার ভাগ্যে জুটে এই ধারনা থেকেই বাঙালি নিজের সাধ্যের মধ্যে মাছ কিনে বাড়ি ফিরত বৈশাখের প্রথম দিন।
অথচ ব্যবসায়ীদের বানিজ্য বিপননের সুযোগে পান্তা ভাত আর ইলিশ মাছ এখন সাংঘাতিক এক অমোঘ বস্তুতে পারিণত হয়েছে।
যাদের সাধ্য নাই কেনার তারা হাহাকারে বিলাপ করছে। যাদের সাধ্য আছে তারা দিব্যি পরিতৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। অথচ বিষয়টা জরুরী নয়। এই ধারনাটা সাধারন বুদ্ধিতে কুলিয়ে উঠে না।
বানিজ্য সর্বস্ব ভাবনার সাথে ছুটতে থাকে মানুষ, নিজের বৈশিষ্ট বিলীন করে, উজাড় করে বিলিয়ে দেয় বেনিয়ার কাছে নিজস্ব সত্তা আর আঁকড়ে ধরে তাদের ছড়ানো বিজ্ঞাপনের ঝলমল মতবাদ। বৈশাখি শাড়ি কেনা লাগে। এখন আবার পুরুষদের জন্যও আছে বৈশাখি পোষাক । ঝাঁক বেঁধে দলে দলে কিনতে বের হয় সবাই। না হলে বৈশাখ পালন হবে না। বানিজ্য বেশ হয়ে যায় এই সুযোগে।
রমনার বটমূলে সানজীদা খাতুন যখন বৈশাখের গান শুরু করেছিলেন।অত আয়োজন ছিল না। ভোরবেলা মানুষ গান শুনে কুশল বিনিময় করতে হাজির হতো নববর্ষের প্রাতে। সেখানে কিছু বেনিয়া পান্তাভাতের আয়োজন নিয়ে বসে পরে। যেমন ঝাল চানাচুর, মুড়ি মুড়কি,
আচার, কাঁচা আম, আইসক্রিম, হাওয়াইমিঠাই, চুড়ি, বাঁশি, নাগরদোলা আসে মেলায়।
তবে পান্তা ইলিশের ধারনাটা ক্রমাগত ছড়াতে থাকে। এখন যারা পালন করে তারা মনে করে এটাই নিয়ম এটা খেতেই হবে।
আসলে নববর্ষের দিন ভালো খাওয়াটা নিয়ম।
নববর্ষের দিন আমার খিচুরী রাধতে ভালোলাগে সাথে ভুনা গরুর মাংস। পান্তা ভাত কখনো খাইনি। তবে একটা সময় পান্তা ভাত আমার প্রিয় হয়ে উঠেছিল।
সে সময়টা ছিল যুদ্ধ সময়। বড় বড় টিনে জমানো বিস্কিট, খই, মুড়ি, আটা ময়দা সব শেষ হয়ে গেছে। কাজের লোক নাই যারা সব সময় পিঠাপুলি বানাত। মুড়ি মুড়কি, খই ভাজত। মায়ের শরীরটা ভালো না। মা ছিলেন গর্ভবতি। রান্না করতে কাজ করতে অনেক কষ্ট হতো। অতটা বুঝতে পারতাম না। শুধু এক নিরব জীবনে বসবাস ছিল।আমাদের কোন কাজ নাই। সারাদিন দরজা জানালা বন্ধ ঘরে বসে থাকা। চারপাশ নিরব নিথর। বন্ধুরা কেউ নেই। পাড়া প্রতিবেশীরা নেই। গল্প, আড্ডা, খেলা কিছু নেই। খাবারও নেই পর্যাপ্ত শুধু ছিল ক্ষুদা। অনেক ভাত রান্না করে পানি দিয়ে রাখতেন মা সহজ লভ্য খাওয়া। সকালে সেই ভাত খাওয়া হতো অনেক সময়। সেই সময় খুব মজা লাগত পান্তা ভাত প্রতিদিন খেতে। যেহেতু আর কিছু ছিল না তাই।
বৈশাখের পান্তা খেয়ে যদি বাঙালিরা আনন্দ পায় তবে পাক। ফূর্তি হোক প্রাণ খোলা। মেয়েরা ঘুরে বেড়াক স্বাধীন ভাবে।কিছু বাংলাদেশি-অবাঙালী বর্তমানে বাঙলিদের আনন্দ উপভোগে কষ্ট পায় মনোক্ষুন্ন হয় তারা এত উৎসব আনন্দ আয়োজন দেখে।। উৎসবের সাথে সামিল হতে পারে না। তারা নানা রকম ভাবে এই উৎসব দমন করার প্রচেষ্টা করে। বাঙালিকে ভিন্ন সংস্কৃতিতে আকৃষ্ট করার প্রচেষ্টা করে। কিন্তু আবহমান কালের আনন্দ, কৃষ্টি ঐতিহ্য বাঙালি স্বযত্নে লালন করে নিজের মাঝে। প্রাণ খুলে উপভোগ করে সবার সাথে। যত বাঁধা দিয়ে চেষ্টা করুক তারা বন্ধ করার। এই প্রাণের জোয়ার কখনো বন্ধ হবে না। বরং তাদেরই এ্ই দেশের আবোহাওয়ার সাথে সংস্কৃতির সাথে মিলে যাওয়া উচিত। যেতে হবে একদিন।
মেয়েরা যেন ঘরে বসে থাকে তার জন্য অনেক রকম ভাবে ওয়াজ নসিয়ত চলছে। মেয়েরা নিজের ইচ্ছে মতন চলো এবং ঠিক ভাবে প্রস্তুত হয়ে যাও বৈশাখি মেলায়। তোমার শরীর ছোঁয়ার চেষ্টা করলে তাকে পাল্টা আক্রমণ করো। একজনকে ধরতে চেষ্টা করলে পাশের সবাই দল বেঁধে তাদের মারটা দিন। এখন সময় শুধু সাজগোজের নয় প্রতিবাদেরও। তাই মুখ খুলো, হাত চালাও প্রয়োজনে। নিজেকে রক্ষা করার জন্য। সবাই আনন্দ করতে যাবে কিন্তু সেখানে কেউ এসে অকারণ ঝামেলা করতে চাইলে তার জন্য আপনারাও প্রস্তত হয়ে যান। প্রতিরোধ গড়ে তোলুন সাথে সাথে সবাই মিলে। ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে।
যেন এবারই বুঝতে পারে তাদের দিন শেষ। প্রয়োজনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সাথে সাথে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। থানা, জায়গা, সময় বিবেচনা না করে। আশা করি কোন ঝামেলা ছাড়া শুভ সুন্দর ভাবে পালিত হবে নববর্ষের এই দিন।
শুভ নববর্ষ ১৪২৩। সবার জন্য সুন্দর হোক।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৬:৪০

জিল্লুর রহমান রিফাত বলেছেন: অভাবীরা প্রতিদিন খেয়ে
বাঁধিয়ে বসে আলসার,
আর আহ্লাদীরা একদিন পান্তা খেয়ে
বলে এটাই হলো কালচার!

কপি।

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৩৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: জানাতে হবে। বলতে বলতে ঠিক হয়ে যাবে একদিনঅ
শুভ নববর্ষ

২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: রোকসানা লেইস ,




বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে বর্ষবরণের কথা লিখেছেন ।
রমনার বটমূলে সানজীদা খাতুন যখন প্রথম বৈশাখের গান শুরু করেছিলেন তখন এতো আয়োজন ছিল না। সত্য । কিন্তু সময় পাল্টেছে , পাল্টেছে আয়োজনের ওজন ও ।
তাই আপনার সাথে গলা মিলিয়ে বলি - বৈশাখের পান্তা খেয়ে যদি বাঙালিরা আনন্দ পায় তবে পাক। ফূর্তি হোক প্রাণ খোলা। মেয়েরা ঘুরে বেড়াক স্বাধীন ভাবে।

নববর্ষের বিলম্বিত শুভেচ্ছা ।

৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: রোকসানা লেইস ,




বেশ সুন্দর করে গুছিয়ে বর্ষবরণের কথা লিখেছেন ।
রমনার বটমূলে সানজীদা খাতুন যখন প্রথম বৈশাখের গান শুরু করেছিলেন তখন এতো আয়োজন ছিল না। সত্য । কিন্তু সময় পাল্টেছে , পাল্টেছে আয়োজনের ওজন ও ।
তাই আপনার সাথে গলা মিলিয়ে বলি - বৈশাখের পান্তা খেয়ে যদি বাঙালিরা আনন্দ পায় তবে পাক। ফূর্তি হোক প্রাণ খোলা। মেয়েরা ঘুরে বেড়াক স্বাধীন ভাবে।

নববর্ষের বিলম্বিত শুভেচ্ছা ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৫

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ এবং আরো বিলম্বিত শুভ নববর্ষ
সব পালটাবে কিন্তু মূল বিষয়টা জেনো সবার নজরে থাকে মনে থাকে সেটা খুব বেশী জরুরী

৪| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:১২

ফরিদ আহমাদ বলেছেন: আমরা মুলে ফিরে যাচ্ছি ক্রমাগত এটাই বড় কথা।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: ধন্যবাদ মূলটা সবার মনে থাকা অনেক জরুরী।
শুভ কামনা

৫| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:০১

হাসান মাহবুব বলেছেন: শুভ নববর্ষ।

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৯

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভ নববর্ষ

৬| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

রানার ব্লগ বলেছেন: পান্তা আমার খুবি প্রিয় , বিশেষ করে একটু নরম পান্তা সেই সাথে মরিচ পোড়া আর বাসি বুটের ডাল। খওয়া হয় না অনেক দিন।
এতো গেলো পান্তা খাওয়া কিন্তু বৈশাখী উৎসবে পান্তা খেতে আমার আপত্তিও নাই আবার এটা ছারা চলবে না এটাও না, কিন্তু দুই পক্ষের টানাটানিতে আমি পান্তা খাওয়ার দলে জোগ দিলাম।

৭| ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৩৬

রোকসানা লেইস বলেছেন: আপনার বর্ণিত পান্তাটাই রিয়েল পান্তা। এই ঘ্রাণটা পান্তার আসল মজা। গরম ভাতে পানি ঢালা পান্তায় সেটা পাওয়া যায় না। পান্তা আসলে হয়ে উঠে আপন মনের মাধুরী মিশায়ে। তৈরী করা যায় না।
আমারও এই পান্তা প্রিয় হয়ে উঠেছিল সে সময়ে, যার বর্ণনা দিয়েছি।
বিদেশে কয়েক দিন চেষ্টা করেছি। কিন্ত পান্তা হয় না ভাত ঝরঝরে থাকে নরম হয় না। এখানে কোন কিছু সহজে পচে না মনে হয়।
যার যেমন ভালো লাগে।
আমার নববর্ষ পালন নিয়ে একটা লেখা লিখেছি কাল ফেসবুকে, নিতান্ত ব্যক্তিগত এবং খাবারের গল্প সাথে কিছু অনুষঙ্গ।
কখন কি খাওয়া হবে সেটা ব্যাক্তিগত ইচ্ছা কিন্ত জাতিয় ভাবে কিছু করা হলে কেন করা হচ্ছে বিষয়টা সম্পের্কে খানিকটা হলেও জ্ঞান থাকা দরকার। তাহলে একটা নিজস্বতা একটা ধারা তৈরি হবে।
শুভ নববর্ষ রানার ব্লগ

৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৩২

এহসান সাবির বলেছেন: দেরিতে হলেও বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল :)

২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫০

রোকসানা লেইস বলেছেন: শুভনববর্ষ ।
শুভেচ্ছা এহসান সাবিব

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.