![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সাংবাদিক ও ক্ষুদ্রলেখক। সত্য তুলে ধরাই আমার লক্ষ্য।
* প্রাক কথা
* কোরআনের বিধান
* অনুমতি প্রার্থনা
* অনুমতি গ্রহনের ভাষা সালাম
* প্রবেশের সময়ে পরিচয় দেয়া
* অনুমতি চাওয়ার সীমা ৩ বার
* অনুমতির জন্য পীড়াপীড়ি করা যাবে না
* জরুরী অবস্থায় অনুমতির দরকার নেই
* গৃহের পরিবেশের প্রতি লক্ষ রাখা
* মা-বোনদের গৃহে প্রবেশেও অনুমতি লাগবে
* অন্ধ ব্যাক্তির জন্যও অনুমতি লাগবে
* উকি ঝুকি মারা যাবে না
* অনুমতি প্রার্থনার ভাষা হবে মার্জিত
* শূন্য গৃহে প্রবেশ না করা
* সমাপনী
-------------------------------------------------------------------
ইসলাম অসৎবৃত্তির উৎপত্তি ও অসত প্রবণতা রোধে অশ্লীলতা দমন এবং সতীত্ব সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন বিধান জারি করেছে, তন্মধ্যে অন্যতম বিধান হলো ঘরে প্রবেশ করার বিধান। জাহেলী যুগে আরববাসীদের নিয়ম ছিল, তারা (সুপ্রভাত, শুভসন্ধা) বলতে বলতে নিঃসঙ্কোচে সরাসরি একজন অন্যজনের গৃহে প্রবেশ করে যেত, অনেক সময় বহিরাগত ব্যক্তি গৃহমালিক ও তার বাড়ির মহিলাদের বেসামাল অবস্থায় দেখে ফেলত, আল্লাহ তা’আলা এই প্রথা সংশোধনের জন্য এ নীতিনির্ধারণ করেন, প্রত্যেক ব্যক্তির, যেখানে সে অবস্থান করে, সেখানে তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা করার অধিকার আছে এবং তার সম্মতি ও অনুমতি ছাড়া গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করার অন্য কারো অধিকার নেই। তাই কারো গৃহে প্রবেশ করার আগে অনুমতি নেয়া ও সালাম দেয়ার বিধান ইসলাম জারি করেছে।
কোরআনের আলোকে অন্যের গৃহে প্রবেশের বিধান
পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন--
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لا تَدْخُلُوا بُيُوتًا غَيْرَ بُيُوتِكُمْ حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ لَعَلَّكُمْ تَذَكَّرُونَ-- فَإِن لَّمْ تَجِدُوا فِيهَا أَحَدًا فَلا تَدْخُلُوهَا حَتَّى يُؤْذَنَ لَكُمْ وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا هُوَ أَزْكَى لَكُمْ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ
“হে মুমিনগণ! তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্যের গৃহে প্রবেশ করো না--যে পর্যন্ত পরিচয় প্রদান না কর এবং (প্রবেশের অনুমতি চেয়ে) গৃহবাসীদেরকে সালাম না দাও। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ। যদি তোমরা গৃহে কাউকে না পাও, তবু অনুমতি গ্রহণ না করা পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ করো না। যদি তোমাদেরকে বলা হয়--ফিরে যাও, তবে ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্য অনেক পবিত্রতা রয়েছে। তোমরা যা কর আল্লাহ তা‘আলা তা ভালোভাবে জানেন।” (সূরাহ নূর, আয়াত নং ২৭-২৮)
উক্ত আয়াতে বলা হয়েছে, দু’টি কাজ না করা পর্যন্ত কারো গৃহে প্রবেশ করো না : (১) পরিচয় দান করে প্রবেশের অনুমতি চাওয়া এবং (২) সালাম প্রদান। অর্থাৎ প্রথমে নিজের পরিচয় দিয়ে অতঃপর প্রবেশের অনুমতি চেয়ে সালাম প্রদান করতে হবে। নিম্নে এ দু’টি বিষয়ের বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
প্রথম বিষয় : পরিচয় প্রদান ও প্রবেশের অনুমতি চাওয়া
.....................................................................
حَتَّى تَسْتَأْنِسُوا শব্দের অর্থ যেন পরস্পর পরিচয় লাভ করতে পারো। এখানে এ শব্দ উল্লেখ করার মধ্যে ইঙ্গিত রয়েছে যে, প্রবেশের পূর্বে পরিচয় বিনিময়ের দ্বারা গৃহবাসীগণ আশ্বস্ত হন, তারা আতঙ্কিত হন না।
আয়াতে يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا বলে সম্বোধন করা হয়েছে। যা পুরুষদের জন্য ব্যবহৃত বচন। কিন্তু নারীরাও এ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। যেমন, পবিত্র কুরআনের অন্যান্য বিধানের ক্ষেত্রে পুরুষদেরকে সম্বোধন করা সত্ত্বেও মহিলারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
তাইতো সাহাবায়ে কিরামের স্ত্রীগণের কর্মধারা এরকমই ছিল। হযরত উম্মে আয়াস (রা.) বলেন, আমরা চারজন মহিলা প্রায়ই হযরত আয়িশা (রা.)-এর গৃহে যেতাম এবং প্রথমে তার কাছে (সালাম দিয়ে) প্রবেশের অনুমতি চাইতাম। তিনি অনুমতি দিলে আমরা প্রবেশ করতাম।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
উপর্যুক্ত আয়াতের ব্যাপকতা থেকে জানা গেল--অন্য কারো গৃহে প্রবেশ করার পূর্বে পরিচয় ও সালাম বিনিময় করায় পুরুষ-নারী, মাহরাম ও গাইরে মাহরাম সবাই শামিল রয়েছে। সুতরাং কোনো নারী অপর নারীর কাছে অথবা কোনো পুরুষ অপর কোনো পুরুষের কাছে যেতেও অনুমতি চাওয়া ওয়াজিব। এমনি করে সবার জন্যই এ বিধান। এমনকি কেউ যদি স্বীয় মা, বোন বা মাহরাম নারীর কাছে যায়, তাহলেও প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ.) মুয়াত্তা গ্রন্থে ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)কে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আমার মায়ের কাছে যাওয়ার সময়ও অনুমতি চাইব?” রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “হ্যাঁ, চাইবে।” সাহাবী বললেন, “আমি তো সর্বদা মায়ের গৃহেই বসবাস করি।” উত্তরে নবীজী (সা.) বললেন, “তবুও অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করো না।” সাহাবী আবার বললেন, “আমি তো সর্বদাই তার কাছে থাকি।” রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, “তবুও অনুমতি না নিয়ে যেও না। তুমি কি তোমার মাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখা পছন্দ করবে?” সাহাবী (সা.) বললেন, “না।” নবীজী (সা.) বললেন, “তাই অনুমতি চাওয়া আবশ্যক।” অর্থাৎ একাকী গৃহে প্রয়োজনে বা অসাবধানতা বশত তার এমন কোন অঙ্গ খোলা থাকতে পারে--যার ওপর নজর পড়া মারাত্মক গুনাহ এবং এতে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। (তাফসীরে মাযহারী)
সুতরাং বোঝা যাচ্ছে--যে কেউ অন্য কারো গৃহে প্রবেশ করতে চাইলে, পূর্বেই সালাম দিয়ে অনুমতি নিতে হবে। এ হুকুম নারী ও পুরুষ এবং মাহরাম ও গাইরে মাহরাম সবার জন্যই সমান।
এখন রয়ে গেলো--নিজ স্ত্রীর নিকট যাওয়ার ব্যাপারটা। যে ঘরে নিজ স্ত্রী থাকে, সে ঘরে প্রবেশ করতে অনুমতি নেয়া যদিও ওয়াজিব নয়, কিন্তু মুস্তাহাব ও সুন্নাত এই যে, সেখানেও হঠাৎ বিনা খবরে যাওয়া উচিত নয়। বরং প্রবেশের পূর্বে পদধ্বনি দ্বারা অথবা গলা খাকারি দিয়ে হুঁশিয়ার করা আবশ্যক। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর স্ত্রী বলেন, “হযরত আবদুল্লাহ (রা.) যখন বাইরে থেকে আসতেন, তখন দরজায় কড়া নেড়ে আমাকে হুঁশিয়ার করে দিতেন, যেন আমাকে অপছন্দ অবস্থায় না দেখেন।” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
অপর রিওয়ায়াতে আছে, হযরত ইবনে জুরাইজ (রহ.) হযরত আতা (রহ.)কে জিজ্ঞেস করেন, নিজ স্ত্রীর কাছে যাওয়ার সময়েও কি অনুমতি চাওয়া জরুরী? তিনি বললেন, না। আল্লামা ইবনে কাসীর (রহ.) এই রিওয়ায়াত বর্ণনা করে বলেন, তা ওয়াজিব নয়, তবে মুস্তাহাব ও উত্তম।
আজকাল যান্ত্রিক যুগে শহরে-বন্দরে যেসব বাসা-বাড়ী রয়েছে, সেগুলোতে অবশ্য কলিংবেল থাকে। এগুলো দ্বারা সংকেত দেয়ার মাধ্যমে সাধারণত অনুমতি চাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু বাসায় ঢোকার সালাম দেয়ার হুকুম বলবৎ থাকবে এবং অনুমতি পাওয়ার পর বাড়ীতে প্রবেশ করে এক রুম থেকে অন্য রুমে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিংবা গ্রাম বাংলায় এখনো অনেক খোলামেলা ঘর-বাড়ী রয়েছে, সেগুলোর বেলায় এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি গ্রহণের উপর্যুক্ত হুকুম পুনঃ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ সেগুলোতে প্রবেশের পূর্বে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে।
অনুমতি গ্রহণের উপকারিতা
-----------------------------
প্রথম উপকারিতা : আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষকে বসবাসের জায়গা করে দিয়েছেন। তা মালিকানাধীন হোক কিংবা ভাড়া হোক। তার গৃহ-আবাসস্থলের আসল উদ্দেশ্য শান্তি ও আরামের সাথে অবস্থান। পবিত্র কুরআনে অমূল্য নিয়ামত রাজির উল্লেখ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে--“আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের গৃহে তোমাদের জন্য শান্তি ও আরামের ব্যবস্থা করেছেন।”
গৃহের এই শান্তি ও আরাম তখন অক্ষুন্ন থাকতে পারে--যখন সে নিজ ঘরে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। তাই অনধিকার প্রবেশ করে তার স্বাধীনতায় বিঘ্ন ঘটানো গৃহের আসল উদ্দেশ্যকে পন্ড করে দেয়ার নামান্তর। যা কখনো বাঞ্ছনীয় নয়। এ জন্য তার নিকট প্রবেশের পূর্বে অনুমতি নেয়াকে ওয়াজিব করে ইসলামে তার শান্তিতে বসবাসকে নির্বিঘ্ন করা হয়েছে।
দ্বিতীয় উপকারিতা : আকস্মিক কেউ কারো গৃহে প্রবেশ করলে সে অজানা আতঙ্কে ভীত হয়ে পড়তে পারে। আর কোনো মুসলমানকে এভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত করে কষ্ট দেয়া গুনাহর কাজ। তাই অনুমতি গ্রহণের মাধ্যমে পরিচয় ও কুশল বিনিময়ের দ্বারা সেই আতঙ্কাবস্থা দূর করা হয়েছে।
তৃতীয় উপকারিতা : এতে লজ্জাভাব বজায় থাকে এবং নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতার পথ রুদ্ধ হয়। কারণ, বিনা অনুমতিতে কারো ঘরে প্রবেশ করলে, মাহরাম নয়--এমন নারীর উপর দৃষ্টি পড়তে পারে। অথচ তা হারাম। তদুপরি তা সংকোচ ও লজ্জার ভাব দূর করে বেপর্দেগীর মাধ্যমে নির্লজ্জতা ও অশ্লীলতা সৃষ্টি করবে। তাই যখন অনুমতি চাওয়া হবে, তখন তারা সতর্ক হয়ে পর্দা করবে। এতে হায়া-সম্ভ্রম বজায় থাকবে।
চতুর্থ উপকারিতা : মানুষ মাঝে মাঝে নিজ গৃহে এমন কিছু কাজ করে--যে সম্পর্কে অপরকে অবহিত করা সমীচীন মনে করে না। এমতাবস্থায় যদি কেউ অনুমতি ছাড়া ঢুকে পড়ে, তাহলে সে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যায়। এভাবে তাকে ব্রিবত করাও ইসলামে নিষিদ্ধ।
দ্বিতীয় বিষয় : সালাম প্রদান
............................................
উপর্যুক্ত আয়াতে দ্বিতীয় আদব প্রসঙ্গে বলা হয়েছে--وَتُسَلِّمُوا عَلَى أَهْلِهَا অর্থাৎ গৃহবাসীদেরকে সালাম দিবে।
ইমাম বুখারী আদাবুল মুফরাদ গ্রন্থে হযরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন, “যে প্রথমে সালাম দেবে না, তাকে প্রবেশের অনুমতি দিওনা।”
বলা বাহুল্য, আয়াতে যে সালামের কথা বলা হয়েছে, তা অনুমতি চাওয়ার সালাম। সুতরাং অনুমতি গ্রহণের জন্য বাইরে থেকে এই সালাম দিতে হবে। যাতে ভেতরের লোক এদিকে মনোনিবেশ করেন এবং অনুমতি চাওয়ার বাক্য শুনেন। এরপর গৃহে প্রবেশ করার সময় যথারীতি পুনরায় সালাম প্রদান করতে হবে। সেটা ভিন্ন সুন্নাত, যা পরস্পর মুলাকাতের সময় করা হয়। সুতরাং এভাবে বলবেন--“আসসালামু আলাইকুম, আমি অমুক বলছি, আমি কি প্রবেশ করতে পারি?”
এখানে প্রথমে সালাম এবং পরে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাওয়ার বিষয় প্রমাণিত হয়েছে। তবে আয়াতে পরিচয় প্রদানের গুরুত্বের কারণে তাকে আগে বর্ণনা করা হয়েছে।
কারো গৃহে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাওয়ার এ নিয়মই হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন, হযরত উমর ফারুক (রা.) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি একবার রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দ্বারে এসে বললেন, “রাসূলুল্লাহর প্রতি সালাম। উমর প্রবেশ করতে পারে কি?” (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
সহীহ মুসলিমে আছে, হযরত আবু মুসা (রা.) হযরত উমরের কাছে গেলেন এবং অনুমতি চাওয়ার জন্য বললেন, “আসসালামু আলাইকুম। এই আবু মুসা এসেছে--যিনি আশ‘আরী।”
এখানে তিনি প্রথমে নিজের নাম এবং পরে আশ‘আরী লকব উল্লেখ করেছেন। এর কারণ এই যে, অনুমতি প্রার্থীকে ভালভাবে না চেনা পর্যন্ত নিরুদ্বেগে জবাব দেয়া যায় না।
আয়াতের শেষে আরো বলা হয়েছে, وَإِن قِيلَ لَكُمُ ارْجِعُوا فَارْجِعُوا “যদি তোমাকে বলা হয়, ফিরে যাও, তখন (হৃষ্টচিত্তে) ফিরে যাবে।” জনৈক বুযুর্গ বলেন, আমি সারাজীবন এই আশায় ছিলাম, আমি কারো কাছে গিয়ে অনুমতি চাইবো আর তিনি আমাকে জাওয়াবে ফিরে যেতে বলবেন, তখন আমি কুরআনের এই আদেশ পালনের সাওয়াব হাসিল করবো। কিন্তু হায় আফসোস! এ নিয়ামত কখনো আমার ভাগ্যে জুটলো না।
অনুমতি চাওয়ার সঠিক পদ্ধতি হলো :
---------------------------------------
নিজের নাম উল্লেখ করে অনুমতি চাইবে। হযরত ওমর (রাঃ)-এর ব্যাপারে বর্ণিত আছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খিদমতে হাজির হয়ে তিনি বলতেন, আস্সালামু আলাইকুম। সালামের পর বলতেন, ওমর প্রবেশ করতে পারে কি? (আবু দাউদ) সহিহ মুসলিমে আছে হযরত আবু মূসা আশআরী (রাঃ) হযরত ওমর বিন খাত্তাব (রাঃ)-এর কাছে এলেন এবং অনুমতি চাওয়ার জন্য বললেন, আস্সালামু আলাইকুম। সালাম দিয়ে প্রথমে নিজের নাম আবু মূসা বলেছেন এরপর আরো নির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য আশআরী বলেছেন। এর কারণ এই যে, অনুমতি প্রার্থীকে না চেনা পর্যন্ত জবাব দেয়া যায় না।
অনুমতি চাওয়ার পর যখন ভেতর থেকে জিজ্ঞাসা করে কে?
------------------------------------------------------------
উত্তরে শুধু আমি বলা যাবে না, বরং এমন নাম বলতে হবে, যে নাম পরিচিত। শুধু আমি জিজ্ঞাসার জবাব নয়। খতীব বাগদাদী বর্ণনা করেন, আলী ইবনে আসেম বসরায় হযরত মুগীরা ইবনে শুবার সাক্ষাতপ্রার্থী হন। দরজার কড়া নাড়লেন। হযরত মুগীরাহ ভেতর থেকে প্রশ্ন করলেন কে? উত্তর হলো, আনা অর্থাত আমি। হযরত মুগীরা বললেন, আমার বন্ধুদের মধ্যে তো কারো নাম আনা নেই। এরপর তিনি বাইরে এসে তাকে হাদীস শুনালেন, একদিন জাবের ইবনে আবদুল্লাহ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে উপস্থিত হয়ে অনুমতির জন্য দরজার কড়া নাড়লেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভেতর থেকে প্রশ্ন করলেন কে? উত্তরে জাবের বললেন, আনা অর্থাত আমি, এতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে শাসিয়ে বললেন, আনা আনা (আমি, আমি) বললে কাউকে চেনা যায় কি? (বোখারী, মুসলিম) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মিরাজে গেলেন, প্রতি আকাশেই জিবরাঈল আলাইহিস্সালাম দরওয়াজা খুলে দেয়ার অনুমতি চাইলে ভেতর থেকে জিজ্ঞসা করা হলো, কে? উত্তরে জিবরাঈল নিজের নাম বলে দিলেন জিবরাঈল। (বুখারী, মুসলিম)
অনুমতি নেয়ার জন্য তিনবার ডাক দেয়ার বিধান রয়েছে
----------------------------------------------------------
আবার তিনবার ডাকা একের পর এক হওয়া উচিত নয় বরং একটু থেমে থেমে হতে হবে। এর ফলে ঘরের লোকরা যদি কাজে ব্যস্ত থাকে এবং সে জন্য তারা যদি জবাব দিতে না পারে তাহলে সে কাজ শেষ করে জবাব দেয়ার সুযোগ পাবে। আবু মূসা আশআরী (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বলেছেন, অনুমতি চাইতে হবে তিনবার, যদি অনুমতি দেয় প্রবেশ করবে নতুবা ফিরে যাবে। (বোখারী, মুসলিম)। একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হযরত সাদ বিন উবাদার বাড়িতে গেলেন এবং আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে দুবার অনুমতি চাইলেন। কিন্তু ভেতর থেকে জবাব এলো না। তৃতীয়বার জবাব না পেয়ে তিনি ফিরে যেতে লাগলেন। হযরত সাদ ভেতর থেকে দৌড়ে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমি আপনার আওয়াজ শুনছিলাম, কিন্তু আমার মন চাচ্ছিল আপনার মুবারক কণ্ঠ থেকে আমার জন্য যতবার সালাম ও রহমতের দু’আ বের হয় ততই ভালো, তাই আমি খুব নিচুস্বরে জবাব দিচ্ছিলাম। (আবু দাউদ, আহমাদ) এমনি হযরত আবু মূসা আশআরী (রাঃ) হযরত ওমর (রাঃ)-এর কাছে প্রবেশ করার জন্য তিনবার অনুমতি চেয়ে অনুমতি না পেয়ে ফিরে গেলেন।
চলছে , চলবে........
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:০৮
কষ্টবিলাসী বলেছেন: অসাধারণ। আল্লাহ্পাক আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দিন। আমিন।