নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের খোঁজে দেখি তোমায় /বাঁধি সীমাহীন ভালোবাসায়/দাও কিছু সুখের বৃষ্টি / ভিজি আমি /উড়াই দিগন্তের নীলিমায় তোমার নামে / স্বপ্নের এক বিশাল ঘুড়ি।

স্প্যানকড

আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।

স্প্যানকড › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের গল্প পর্ব ১

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৩

ছবি নেট ।

বেশ কয়েকবার ফোন করার পর ফোন ধরলাম আমার এক জানের টুকরার! মানে খুব কাছের দোস্ত।ব্যস্ত থাকার কারণে প্রথমে ওর ফোন ধরতে পারি নাই।

মামুন - হ্যালো! ঐ ব্যাটা ঘুমাছ নাকি? কতবার ফোন দিলাম। ধরছ না ক্যান?

( পুরা ধমকের সুরে )

আমি - হ্যালো! আরে খালাম্মার পুত! আমি কাম কাইজ করি। তোর মতন গতরে বাতাস লাগাইয়া চলি না। কি হইছে জলদি ক? পুরা একটা ছয় গিয়ারের পিক আপ নিলাম আর কি! যাতে ওর গিয়ার নীচে নামে। তা কাজেও দিল সাথে সাথে।

মামুন - মামা, হইছে কি? একটা ঝামেলা হইয়া গেছে গা।

আমি - দ্যাখ, এহন টাকা-পয়সা নাই। চাইলেও পাইবি না। অন্য কিছু থাকলে ক।

মামুন - ঐ ব্যাটা! টাকা চাইছি তোর কাছে? একটা অন্য সমস্যা হইছে কইতাছি না।

আমি - ও! তা কি হইছে তোর?

মামুন - আরে নীলা বারবার চাপ দিতাছে। ওর নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলতাছে।

আমি - ও! তা কই চাপ দিছে? ( হা হা হা )

মামুন - দ্যাখ, মজা লবি না। মেজাজ কিন্তু চ্যাইতা আছে।

আমি - তা এত মেজাজ দেখাইতাছ আমার লগে। কতদিন কইছি তোরে একটা পানের দোকান হলেও দে। অন্তত বেকার থাকার চেয়ে উহা ভালো। না, উনি এক লাফে পাঁচ তলা তুলবে ঢাকা শহরে। হোন আগে কইছি এহন ও কই। বেকার থাকা কালে প্রেম পোন্দাইতে যাও ক্যা?এহন আমি কি করমু?

মামুন কিছুটা নরম হলো।

মামুন - মামা! প্রেম কি আর এত হিসেব করে চলে। কালকে ও ফোন দিয়া কইল জলদি কিছু একটা করতে নইলে ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেলে ও কিছু করতে পারবে না।

বুঝলাম বলদে আরেক টু পর কান্নাকাটি শুরু করবে।

আমি - হোন, তোর এ প্রেম আজ হইলেও যাইত কাল হইলেও যাইত। বেকার এর আবার প্রেম! তা খাওয়া দাওয়া হইছে? 

মামুন - কিসের খাওয়া দাওয়া? কি কছ?

আমি - পেটে চ্যাটে কিছু পড়ছে?

মামুন - সকালে খাইছি। এহন খাইতে যামু। ছাদের উপরে আছি। খিদা লাগছে অবশ্য।

আমি - কি জিগাইলাম আর কি কইলি?

মামুন - কি? তুই না খাওনের কথা জিগাইলি।

আমি - বলদ! আচ্ছা, এক কাম কর স্টার কাবাবে আয় দুইজনে মিলে খাওয়া দাওয়া করি।

মামুন - আচ্ছা, বলদ কইলি ক্যা?

আমি- না, এমনি।

রাখছি জলদি আয়।

স্টার কাবাবে বসে আছি। জানালার পাশে কোণার এক টেবিলে। বিকাল তিন টার দিকে। এ সময় একটু ফাঁকা থাকে। অপেক্ষায় আছি খালাম্মার পুত কখন আসবে?

মামুন কে দেখলাম, পুরা ঘেমে অস্থির। চেহারার যা হাল যে কেউ দেখলেই বুঝবে ছ্যাঁকা খাওয়া কেস!
আমি ওরে বললাম বস। চেয়ার টেনে বসল ও। আমি বললাম, আগে খাইয়া লই পরে তোর আর নীলার প্রেম কাহানী গিলমু। কি খাবি অর্ডার দে।

ও আমার দিকে চেয়ে পরক্ষনেই মাথা নীচু করে বলল, খিদা নাই। আমি ঠাস করে একটা চড় দিতে চাইছিলাম ওর গালে।অনেক কষ্টে ইচ্ছেটা সংবরণ করলাম।

আচ্ছা, আমি দিচ্ছি। এই মামা! দুই প্লেট বীফ কাবাব, ছয় টা কাস্মীরী নান আর লাচ্ছি দেন আপাতত। মামা অর্ডার নিয়ে চলে গেল।

খাবার এর মাঝে জিগ্যেস করলাম মামুন কে নীলার সাথে কথা হইছে। মামুন বলতে লাগলো, এই তো কালকে রাতে হইছে তারপর থেকে আর হয় নাই।

ফোন দেই ধরে না মানে মোবাইল অফ। আমি খেতে খেতে বললাম, ফেসবুকে আছে? ও বলল, না চেক করি নাই। দাঁড়া দেখছি বলে তাড়াহুড়োতে ফোন টা ফ্লোরে ফেলে দিল। ফোনের প্রটেক্টিভ স্ক্রিন কভার এর কোণা ভেংগে গেল।

আমি হাসমু না কানমু বুঝতাছিলাম না। শুধু ওরে কইলাম, বলদ! আগে খাওয়া শেষ কর। পরে দেখ।
না, কে শোনে কার কথা! খাওয়ার মাঝ পথেই  ফেসবুক ওপেন করে দেখে। যা ভাবছি তাই। বলদ কে ব্লক করে দিয়েছে এবং নীলার প্রোফাইল লক করা।

মামুন বলদের মতন ভ্যা ভ্যা করতে করতে বলল, কেমনে পারল? তুই ক কেমনে?মাত্র তো কয়েক ঘন্টা পাড় হইছে এর মধ্যে ভুলে গেল কেমনে?

যদিও বলদ টার জন্য মন খারাপ হচ্ছিল। তবুও কড়া চাহনি দিলাম। এখানে কোন সিনক্রিয়েট করতে না করলাম।

প্রসংগ পাল্টাতে ওরে জিগাইলাম অতনুর খবর জানছ? ও প্রথমে চিনতে পারল না। পরে ছলছল চোখে বলল, হুম, কি হইছে?

তখন আমাদের খাওয়া শেষ। দুই কাপ চায়ের অর্ডার দিয়ে বলতে শুরু করলাম। অতনু, প্রমার কথা জানছ কিছু? ও বলল না। আমি বলতে লাগলাম, অতনু, প্রমা ক্লাস ফাইভ থেকে অনার্স পর্যন্ত এক সাথে পড়ছে।প্রেম করে আসছিল। কত দিনের প্রেম! শেষমেশ কি হলো?

অনার্সে পড়া কালীন সময়ে প্রমা বি সি এস ক্যাডার একজন কে বিয়ে করে ফেলল কারণ অতনু তখন ও পড়ছে স্টুডেন্ট।

এ নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। অতনু ওর বন্ধু বান্ধব নিয়ে প্রমাদের এলাকায় ছিল এইজন্য যে, প্রমার হবু জামাই কে মারবে আর প্রমাকে তুলে নিবে কিন্তু আখেরে কিছু হইছে?হয়নি কারণ এলাকার কমিশনার কে প্রমার বাবা ম্যানেজ করে ছিলেন।

আর প্রমার জামাই ও ম্যাজিস্ট্রেট! কোন বাল ও ফেলতে পারেনি অতনু। তবে ও প্রায়ই কয় " খাওয়া মাল পাইছে হালায়! " বাকী টা আল্লাহ মালুম!

এই হলো ঘটনা। তোর ক্ষেত্রেও তাই ঘটতে যাচ্ছে। যদিও না হোক আমি মন থেকে দোয়া করছি কিন্তু মেয়ে মানুষের মন! হয়তো যার আগাম বার্তা নীলা এসব করে বুঝিয়ে দিচ্ছে। বুঝছত বলদ!

তুই ইমরান হাশমির যুগে হইলি দিলীপ কুমার!

মামুন এইবার আর ধরে রাখতে পারল না চোখের পানি। নিঃশব্দে কাঁদছে। এদিকে রেস্টুরেন্টে ফুল ভলিউম এ গান বাজছে

" আগ পানি মে
  লাগা দে জারাসি
  দ্যাখ ফির হোতা হ্যা কিয়া 
  হো দো গুনত
  মুঝে ভি পিলা দে শারাবি
  দ্যাখ ফির হোতা হ্যায় কিয়া
  বালেমা রে জালিমা
  আরে আরে আরে
  দো গুনত মুঝে ভি পিলা দে শারাবি ! "



 
 
 

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৩৪

ইন্দ্রনীলা বলেছেন: হা হা খুব ভালো হইসে।
বলদরে ব্লক দিসে।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫৫

স্প্যানকড বলেছেন: একজনের জীবন তেজপাতা আর আপনি হাসেন ! কামডা কি ঠিক হইল? মজা করলাম আর কি! বলদ এর শিক্ষা হওয়া দরকার। শিক্ষা পাইছে। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:০৪

অপু তানভীর বলেছেন: জীবনে সবার গল্পই এমন .. আহা বেচারা ! :(

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৮

স্প্যানকড বলেছেন: হুম, একদম ! বেচারা এখন চারা ! শিখছে কেবল শিখছে.... ধন্যবাদ অপু ভাই।

৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: পড়তাম না । পঁচা ছবি দিছেন কা হুহ

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:০৫

স্প্যানকড বলেছেন: আপু রাগ কইরেন না প্লিজ ! আমি আবার বেহুদা কেউ কষ্ট পেয়ে যাক উহা চাইনা। আগেরটা একজন শিল্পীর স্কেচ ছিল। যেহেতু আপনার ভালো লাগেনি তাই পরিবর্তন করে দিলাম। তবু্ও পইড়েন প্লিজ। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.