নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের খোঁজে দেখি তোমায় /বাঁধি সীমাহীন ভালোবাসায়/দাও কিছু সুখের বৃষ্টি / ভিজি আমি /উড়াই দিগন্তের নীলিমায় তোমার নামে / স্বপ্নের এক বিশাল ঘুড়ি।

স্প্যানকড

আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।

স্প্যানকড › বিস্তারিত পোস্টঃ

হেঁটে হেঁটে বহুদূর....!

২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৯:২২

ছবি নেট ।

ফুটপাত ধরে মেলা দূর হেঁটে যাওয়া আমার অভ্যাস! এ শহর এর যান্ত্রিক জীবন ঠিক কতটা যান্ত্রিক তা আর বলতে ।

কানে ইয়ারফোন গুঁজে দিয়ে মোবাইল এর বাছাই করা গান শুনছি আর হাঁটছি। এদিক সেদিক দেখছি। গাড়ির হর্ণ, রিক্সার টুং টাং, পেশী ফুলে রগ ভেসে উঠা পা, প্যাডেল, তিন চাকা ঘুরছে একটা ক্লান্ত ঘামে ভেজা শরীর ছুটছে কেবল ছুটছে , ফুটপাত ব্যবসায়ী, ধুলা বালিতে মাখা সব মিলিয়ে আমার শহর। যাদুর শহর! 

দুইটা গলি পাড় হয়ে বড় রাস্তা। ঠিক তার প্রথমে যে বড় বিল্ডিং তার কাঁচে সুর্য ডোবা দেখলাম। কিছুক্ষণের ভেতর সরকার এর দেয়া নিয়ন জ্বলে উঠল প্রতিটা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে।এখন শহরের চেহারা অন্য। ব্যস্ত মানুষের ঘরে ফেরা। কেউ কাউরে চিনে না এমন কি নিজেরেও না।

বড় রাস্তা ছেড়ে এখন আবার ভেতর গলি দিয়ে হাঁটছি। একটা জায়গায় দেখলাম ম্যানহোলের ঢাকনা নাই। কেন নাই? এরা বর্ষায় পানি জমলে চলাফেরা করে কেমনে? অবশ্য এলাকার নেতার এ নিয়ে কোন ধরনের মাথাব্যথা নেই। যার মাথাই নাই তার আবার কিসের মাথাব্যথা !

যাই হোক আমি একটু থামলাম। একটা টং দোকান থেকে পানির বোতল নিয়ে আবার যাত্রা শুরু। ভাবছি, মানব জনম শুধু ঘুরে বেড়ায়। খালি জায়গা বদলে বদলে ফেরি করে বেড়ায় দুঃখ কষ্ট, আদর, চুমু, বিরহ, সংসার। একসময় দুম! কিচ্ছু নাই !

ভাবতেই ভেতরে বিশাল শূন্যতা লক্ষ করলাম। এতটা শুন্য আমি! এ শুন্যতা ভরতে কি প্রয়োজন? প্রেম ? টাকা পয়সা ? কোন নারীর শরীর? উত্তর খুঁইজা হয়রান হয়ে ছেড়ে দিলাম এ চিন্তা। আবার হাঁটা শুরু।

এ শহরের আঁধার এর ও একটা চমক আছে। আঁধার ও নাগিনীর মতন দংশন করে। মাথার উপর একটা গোলগাল চাঁদ লটকে আছে সেদিকে কারো দৃষ্টি নাই। সবাই ছুটছে তো ছুটছে। এতে চাঁদের অভিমান হয়েছে তাই মেঘের আড়ালে চলে গেছে। এ শহরের যাদু আছে মানুষ ধরে রাখার আশ্চর্য ক্ষমতা রাখে।

একটা সময় পেটে টান অনুভব করলাম মানে খিদা লাগছে। দূরে দেখি একজন ঝালমুড়ি বিক্রি করছে। সালাম দিয়ে এক ঠোংগা চাইলাম।

লোকটি অবাক কারণ সালাম জীবনে কেউ হয়তো দেয়নি ! আচ্ছা, কেন আমরা এমন? কেন আমরা সহজ হতে ভয় পাই ? মামা জিগ্যেস করল ঝাল কি বেশী?  না,  কম? উত্তরে কইলাম, না ; মাঝামাঝি রাইখেন আর লেবুর রস টা বেশী দিয়েন। নইলে সামাল দিতে কষ্ট হইব। সে হাসে আমিও হাসি।

তারে জিগাইলাম দ্রব্যমূল্য যে বাড়ছে তাতে এ করে কি সংসার চলে ?সোজা উত্তর আল্লাহ আছে না উনি চালায় নিচ্ছেন! আসলে ঠিক আল্লাহ চালিয়ে নিচ্ছেন থেমে গেলে এ মানবের কি যে হতো ভাবলেই সেই শুন্যতা !

আমি তারে জিগাইলাম সরকার ভালো না খারাপ?প্রশ্নটা করেই নিজেরে মফিজ মনে করলাম! এ উত্তর দিবে সরকার নিজে তার কাম কাইজ দিয়ে প্রমাণ করবে সে কতটুকু ভালো বা খারাপ।

অবশ্য ইহা তো স্বীকার করতে হয় সরকার ভালো থাকলে দেশ ভালো চলে। দেশের মানুষ ভালো চলে ভালো থাকে।

সে কিছু বলে না  হাসে শুধু হাসে যার উত্তর আমিও বুঝলাম না। আমারে জিগাইল আপনে কে? কইলাম M P। মামা তো ডরায় গেছে শুনে। আমি হাসতে হাসতে কইলাম,  " আরে ডরায়েন না এই M P সেই এম পি না মানে হলো Mango people অর্থাৎ আম জনতা ! "

আচ্ছা M P মন্ত্রীর নাম শুনলে মানুষ এত ডরায় ক্যা ? এরা কি মানুষ না? নাকি বাঘ, ভল্লুক, হাতি? অবশ্য এ প্রশ্নের উত্তর এম পি মন্ত্রীগন দিবেন। কেন আপনাদের নাম শুনলে মানুষ ডরায়? আপনারা না জনতার বন্ধু সেবক! তাইলে। নাকি গাব্বার ?

সে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নরমাল হওয়ার চেষ্টা করল। এখন দক্ষ হাতে পেঁয়াজ কেটে, সাথে মশলাদি দিয়ে ঝালমুড়ি বানাচ্ছে আর আড় চোখে আমারে দেখছে হয়তো ভাবছে হালায় ! এই সন্ধ্যা কালে কোন পাগলের খপ্পরে পড়লাম! 

আমি দেখছি একটা নক্ষত্র খচিত আকাশ। নিয়ন আলোতে ঠাসা শহর। যেই আলোর কাছে পোকা মাকড় এর বসতি ! নানান রকমের জলসা আসর !

এসবের ভেতর আমার মুড়ি হাজির। মামা ডাক দিয়ে কইল লন আপনার মুড়ি। আমি জিগাইলাম, পরিবার আছে ?হাসি দিয়া কইল, জ্বী আছে। কয়জন মেম্বার? কইল ছয়জন!

সে তখন আমারে কইল, ভাইজান! সে সময় জিগাইলেন না, " সরকার ভালো? না, খারাপ? " উত্তর কি নির্ভয়ে বলব।

আমি তারে কইলাম। কইয়া ফালান। আরে দেশে কি এহন পাকিস্তানি হানাদার আছে? দেশ চালায় জয় বাংলা পার্টি। সো নো চিন্তা ডু ফুর্তি !

সে বলতে শুরু করল  " চিন্তায় ভাই রাইতে ঘুম আসে না। দুই রানের চিপায় যেই যন্ত্রখান আছে না হেইডা ও দাঁড়ায় না!  "  কি সাংঘাতিক !

আমি হাসতে হাসতে কইলাম, আর কত খাড়াইব? ছয়টা তো অলরেডি হাজির ! হা হা হা.....।

টাকা দিয়ে আবার নিজ গন্তব্যের পানে হাঁটা দিলাম। মোবাইলে গান চলছে

" তুমি যে আছ তাই। আমি পথে হেঁটে যাই।
হেঁটে হেঁটে বহুদূর। বহুদূর যেতে চাই "।




মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:০৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: আল্লার নাম জপতে জপতে হাটুন,সামনে বিরাট গর্ত থাকলেও অবলিলায় পার হয়ে যাবেন।গান শুনতে শুনতে ফুটপাত দিয়ে হাঁটলেও গাড়ী এসে চাপা দিয়ে দিবে।

২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৭

স্প্যানকড বলেছেন: তাই নাকি ! ঘটনা মনে হয় প্যাঁচ খাইছে ! হা হা হা.... ভালো থাকবেন।

২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৩৬

শায়মা বলেছেন: হা হা নুরুলভাইয়ার কমেন্টে প্লাস!

২২ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:৪৮

স্প্যানকড বলেছেন: আপু, ঠিক আছে হাসির দরকার আছে নইলে জীবন তো ঝরা পাতা ! ভালো থাকবেন।

৩| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ২:৫৭

সৈকতসৈকত বলেছেন:





ফুটপাতে হকার থাকে
মুখে যা আহে তা কয়
আফনে সামুর হকার
আফনের মুখ দিয়া যা আহে......

বেকার মানুষ
কাজ কাম নাই বুঝি
ভূয়া গিরি বন করেন



২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ সকাল ১০:০৮

স্প্যানকড বলেছেন: হকার কি মানুষ নয় ? আপনারে হুনতে কইছে ক্যাডা ? কানে তুলা দিয়া রাখেন ভদ্রলোক !

৪| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: রাস্তার পাশের খাবারগুলি আমার প্রিয়। যদিও স্বাস্থ্যকর না হয়ত। তারপর চটপটি, ফুচকা, ঝালমুড়ি, ছোলাবুট, বিভিন্ন ফল, মাখানো জাম্বুরা, পেয়ারা, আমড়া ইত্যাদি খেতে ভালো লাগে।

আমার আব্বা বলতেন, যে খাবার হোটেলের রান্না হয় পিছনের অংশে সেগুলি ভীষণ নোংরা থাকে আর যে হোটেলের রান্না হয় সামনে সেগুলি ততটা নোংরা না।

রাস্তার পাশে ডিম ভাজি আর পরোটা দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে।

২৩ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ৮:১৬

স্প্যানকড বলেছেন: আমারও প্রিয়। একবার গোলাপ শাহ মাজার এর আশ পাশ দিয়ে হাঁটছিলাম। দুপুর বেলা। খিদাও লাগছে। কি করমু? দেখি একটু দূরে পার্কে গরম ভাত, ডাল, আর আলু দিয়ে ডিমের তরকারি পাবলিক খাচ্ছে। এরা বেশির ভাগ দিন মজুর রাস্তার খেটে খাওয়া লোক। আমার তাদের খাওয়া দেখে লোভ বেড়ে গেল। বিশ্বাস করেন এমনিতে আমি কম খাই অথচ সেদিন দুই প্লেট ভাত খাইছি ! আহ! কি স্বাদ। ধন্যবাদ সাচু ভাই। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.