নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের খোঁজে দেখি তোমায় /বাঁধি সীমাহীন ভালোবাসায়/দাও কিছু সুখের বৃষ্টি / ভিজি আমি /উড়াই দিগন্তের নীলিমায় তোমার নামে / স্বপ্নের এক বিশাল ঘুড়ি।

স্প্যানকড

আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।

স্প্যানকড › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিই শুধু নিজের জোরে মাতাল !

২৮ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৫:১৯

ছবি স্প্যানকড।

ডিসেম্বর আইতে কিছুদিন বাকি এর ভিতর এহনই ঠান্ডা জ্বর লেগে গেছে। গলা সামান্য ব্যাথা ! অফিস থেকে এসেই ফ্রেশ হয়ে গরম জল দিয়ে গার্গল করে নিয়েছি কিছুটা কাজ হইছে মানে ১০ ভাগ।

মা ডাকছে আয় খিদা লাগছে না? খেয়ে যা। আমি দেখি গরম খিচুড়ি আর গরুর মাংসের ঝাল ভুনা! সাথে লেবু, শসা, টমেটো, অলিভ অয়েল দিয়ে স্যালাদ! আমি বললাম, খেতে ইচ্ছে করছে না। ভালো লাগছেনা কিছু। শরীর গরম গলা ব্যাথা!

মা বিচলিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, এই! বলিস কি? আচ্ছা, জলদি খেয়ে নে গরম গরম। আমি আদা -লেবু চা করে আনছি। ঘরে নাপা আছে খেয়ে নিবি।

আমি বললাম, মা শুধু শুধু চিন্তা করছ? সব ঠিক হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ! মা মাথা নীচু করে জবাব দিল ভয় হয়রে খোকা! বড্ড ভয় হয়। তোর কিছু হলে আমি শেষ! উনি যে কান্না লুকিয়ে রান্না ঘরে গেলেন তা কিন্তু বেশ স্পষ্ট।

তবুও বলবে আরে! চোখে ধুলো গেছে! আসলে মায়েরা বুঝি এমনই ! তবে সব নারী মা নয় এইতো খবরে দেখি পরকীয়া তারপর নিজের সন্তান কে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলছে! ছিঃ! কত জঘন্যতম কাজ! আবার সব পুরুষ ও বাবা তো দূরে থাক মানুষই হতে পারে না। উদাহরণ আছে মেলা। ছিঃ! কি একটা সমাজে বাস করছি। আসলে " ভালো জায়গাটা কোথায়? " কোন কবির লেখা ভুলে গেছি।

এসব ভাবতে ভাবতে প্লেটে অল্প খিচুড়ি নিয়ে নিলাম আর ভালো করে লেবু চিপে নিলাম। শশা, টমেটো নিলাম না। যেহেতু ঠান্ডা-জ্বর এর মুখ। মুখে দিয়ে টাসকি! আমার মা বেস্ট শেফ ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড ! চোখ বন্ধ করে বলা যায়।

মা এর ভেতর কিচেন থেকে চলে আসছে। পাশে বসে বলল, এই! কি নিলি? পুরা বাসন খালি। দে দে আমার কাছে দে। আমি বললাম আজ থাক। তুমি খেয়েছো? মা বলল, না । আগে তুই শেষ কর। আমি বললাম, না, এক্ষুনি নিয়ে আসো বাসন। এক সাথে খাবো। মায়ের কথা পাত্তা না দিয়ে আমি কিচেন থেকে একটা বাসন এনে মায়ের সামনে দিলাম আর খিচুড়ি দিয়ে দিলাম বেশী করে। মা চ্যাঁচানো শুরু করে দিল। আরে! আর না। আমি অত খেতে পারি না। আমি বললাম আজ কোন কথা নাই চুপচাপ খাও ! মায়ের চোখ আবার ভিজে উঠছে দেখছি। আসলে আমি স্বর্গ চাই না। মা কে পেলেই হবে আখেরাতে। মা পাশে থাকলে হাবিয়ার আগুন এমনিতেই শীতল হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ।

আমি কয়েক নলা মুখে দিয়া মা কে বললাম, ইউ আর গ্রেট ! মা হেসে দিল। হাসলে উনাকে যা লাগে! তিনি বললেন, তোর নানু আরও ভালো রান্না করতো। আমি বললাম, হুম, খেয়েছি তবে দুজনের টেস্ট আলাদা !

দুজন খাচ্ছি। এমন সময় আমি ঝালের চোটে জল খাচ্ছি বারবার। মা বলতে শুরু করলো আরে! এত জল নিলে পেট ভরে যাবে। এই টুকরো টা নে। মজা পাবি। আমি বললাম, আচ্ছা, দাও তবে খিচুড়ি আর নেবো না। মা হাসছে। উফফ! কোন প্যাইন্টার থাকলে আঁকিয়ে রাখতাম।

" দ্যা ফেবুলাস সাপার ! " নামে।

সে যাই হোক খাওয়ার পর্ব শেষ হতেই মা একটা দুইটা টক মিষ্টি জলপাই এর আঁচার এনে দিলেন আর বললেন খা। জ্বর মুখে ভালো লাগবে।

ঘুমোতে যাওয়ার আগে এক গেলাস গরম দুধ আর নাপা নিয়ে নিবি। আমি কিচেন থেকে আসছি।

আমি, আচ্ছা বলে ড্র‍য়িং রুমে যেয়ে সোফায় গা এলিয়ে টিভি অন করলাম। দেখি এক চ্যানেলে টক শো চলছে যার বিষয়।

" খালেদার চিকিৎসা ও বিদেশ গমন ! " 

অবশ্য সব চ্যানেলে ইহা চলছে মানে ইহা খবর এর চেয়ে বিজনেস হয়ে গেছে।

বি এন পি মানবতার কথা বলছে সাথে এ ও বলছে যদি খারাপ কিছু হয়ে যায় তাহলে সরকার এর দায় নিবে।

আওয়ামী লীগ বলছে, সেই ৭৫ এর খুনিদের আশ্রয় প্রশ্রয় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ইত্যাদি তখন কোথায় ছিল মানবতা! এসব।

মা এমন সময় চলে এলো এসেই টক শো দেখে বলল, অন্য চ্যানেল দে বাপ! বিরক্ত ধরে গেছে। দুইটাই মলের এপিঠ ওপিঠ !

তবে আওয়ামীলীগ কিছুটা ভালো অন্তত দেশের চেহারা কিছু বদলে দিয়েছে। আমি বললাম হুম সত্য ! তবে এ ও কিন্তু সত্যি নতুন নতুন বর্গী বেড়েছে ।

তারপর মায়ের হাতে রিমোট তুলে দিয়ে বললাম দেখো ভালো কিছু হচ্ছে কি না। আমি আসছি বলে বারান্দায় দাঁড়ালাম।

বহুদিন হয়েছে রাতের আকাশ দেখিনা । আঁধার এর ও একধরনের স্নিগ্ধতা আছে বা অন্য রুপ আছে। রাতের আকাশের ও অন্য কথা আছে। একটু পর মা এসে হাজির প্লাস্টিক এর চেয়ার টা টেনে বসে পড়লো। আর জিজ্ঞেস করল শরীর ঠিক আছে এখন কেমন লাগছে? বললাম আগের চেয়ে ভালো। আমি এ বলে মোবাইল ঘাটছি।

ওদিকে টিভিতে সেই টক শো চলছে তর্ক চলছে এর শেষ কই আল্লাহ ই ভালো জানে।

আমি বললাম মা, একটা কবিতা শুনবে? মা বলল, একদম মনের কথা বললি আজকাল মন কারণ অকারণে বিষিয়ে থাকে। কবিতা একমাত্র আশ্রয় ! আমি হেসে দিলাম।

পড়তে শুরু করলাম আসলে আবৃত্তি করতে পারি না। কবি শঙ্খ ঘোষের কবিতা

" তোমার কোনো ধর্ম নেই, শুধু
শিকড় দিয়ে আঁকড়ে ধরা ছাড়া
তোমার কোনো ধর্ম নেই, শুধু
বুকে কুঠার সইতে পারা ছাড়া
পাতালমুখ হঠাত্ খুলে গেলে
দুধারে হাত ছড়িয়ে দেওয়া ছাড়া
তোমার কোনো ধর্ম নেই, এই
শূন্যতাকে ভরিয়ে দেওয়া ছাড়া।
শ্মশান থেকে শ্মশানে দেয় ছুঁড়ে
তোমারই ঐ টুকরো-করা-শরীর
দু:সময়ে তখন তুমি জানো
হলকা নয়, জীবন বোনে জরি।
তোমার কোনো ধর্ম নেই তখন
প্রহরজোড়া ত্রিতাল শুধু গাঁথা-
মদ খেয়ে তো মাতাল হত সবাই
কবিই শুধু নিজের জোরে মাতাল ! "

মা আর আমি একসাথে উচ্চারণ করলাম শেষের লাইন আরও দুই বার।

" কবিই শুধু নিজের জোরে মাতাল ! "

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: অনেক আগের লেখা নিশ্চয়।এখন অন্য কেউ খাওয়ায়।

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:৩১

স্প্যানকড বলেছেন: লেখা নতুন আর মা এখনো জীবিত আছেন। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.