নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নের খোঁজে দেখি তোমায় /বাঁধি সীমাহীন ভালোবাসায়/দাও কিছু সুখের বৃষ্টি / ভিজি আমি /উড়াই দিগন্তের নীলিমায় তোমার নামে / স্বপ্নের এক বিশাল ঘুড়ি।

স্প্যানকড

আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।

স্প্যানকড › বিস্তারিত পোস্টঃ

শহরতলীর মুখ ! পর্ব ৫

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ রাত ২:১৪

ছবি নেট ।

রিমা আয়নার সামনে বসে নিজেকে দেখছে চুলগুলি পরিপাটি করার কাজে ব্যস্ত এবং আড় চোখে স্বামীকে দেখছে। চোখে চোখ পড়তেই গর্দান নীচু করে লাজুক হাসি দিয়ে প্রশ্ন করে স্বামীকে কি দেখছ  অমন করে? স্বামী উত্তরে বলে, আমার চাঁদ সোনাকে ! রিমা লাজে আরো লাল হয়ে উঠে ওর গোলাপি গাল আরও গোলাপি হয়ে উঠে। রিমার গড়ন মাঝারি।

রিমা ওর দীঘল কালো চুল গুলিকে একটা রাবারে আটকাতে চাইছে কিন্তু থাকছে না বাধ্য হয়ে খোপা করছে। ওর স্বামী খাট থেকে নেমে পিছনে দাঁড়িয়ে একটা গরম নিঃশ্বাস ছেড়ে ওর ঘাড়ে কপালে হালকা চুমু খেয়ে ওয়াসরুমে চলে গেল। রিমা বলল, জলদি এসো কিন্তু !

রিমা আয়নার সামনে থেকে উঠে জানালার পর্দা টেনে দিল যদিও আকাশে ফকফকা মস্ত একটা চাঁদ উঠেছে। কষ্ট হচ্ছে কিন্তু বাধ্য হয়ে এসব করতে হচ্ছে ঢাকা শহরে দেয়াল ঘেঁষে বাড়ি ঘর। কে জানে কে জানালা দিয়ে উঁকি দেয় তার কি গ্যারান্টি ?

এমনিতেই ইদানীং লক্ষ্য করছে পাশের বিল্ডং এর উঠতি বয়সের ছেলেটা ওকে হা করে গিলে খায়। ওকে দেখতে হুটহাট বারান্দায় এবং ছাদে চলে আসে। চোখে চোখ পড়তেই মাথা নীচু করে আবার পলক পড়ে না এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে। এ বয়সে কেন যে এমন করে রিমা খুব ভালো জানে। ওদের শরীরের হরমোন যতটা দায়ী তারচেয়ে বেশী ইন্টারনেট ! খুব অল্প সময়ে জেনে যাচ্ছে ওরা নর নারীর শারীরিক গোপন বিষয় গুলি ! যা সত্যি রীতিমতো ভয়াবহ ।

রিমার গরম লাগছে ফ্যান ছেড়ে দিল রেগুলেটর ঘুরিয়ে কমিয়ে দুই নাম্বারে দিয়ে দিল যদিও এখন শীতকাল ! কিন্তু কি হবে ঢাকা শহরে শীত তেমন নাই ! তার উপর দরজা জানালা বন্ধ! গরম লাগবেই না কেন?

গুটি গুটি পায়ে বিছানার কাছে এসে চাঁদর ঠিক করছে। এতেই কেমন ঘেমে যাচ্ছে কপালে থুতনিতে ঘাম মেঘের মতন জড়ো হচ্ছে। ভাবছে পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তন যে হচ্ছে এতেই বোঝা যাচ্ছে শীতকালে শীত নাই! গরম বেড়েই চলেছে।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে বেশ সরব কিন্তু কতটুকু লাভ হচ্ছে? কে শোনছে কার কথা ? উত্তর কোরিয়া ঘন ঘন পারমাণবিক বোম পরীক্ষা করছে । কাকে মারতে যে এ প্রতিযোগিতা চলছে আল্লাহ মালুম! 

গ্রীন হাউজের এফেক্ট ! প্রতি বছর বরফ বেশী করে গলছে। এমন হলে এক সময় বহু দেশ সমুদ্রের পেটে চলে যাবে নিশ্চিত !

আচ্ছা, মানুষ সভ্যতার বিকাশ করতে যেয়ে এমন করে নিজের পায়ে কুড়াল মেরে এখন ষাঁড়ের মতন চেচাচ্ছে ! আসলে মানবজাতি আহাম্মক !

এসব রিমা যখন ভাবছে ততক্ষণে ওর স্বামী আসিফ ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে ওর পাশে এসে বসল। রিমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, আই লাভ ইউ। রিমা মি টু বলে আদেশ করল প্লিজ খাটে উঠ মশারী টানিয়ে দেই।

নইলে যে মশা কামড় দিলে ডেংগু নিশ্চিত ! এ কথা শোনার পর আসিফের রাশভারি গলা দিয়ে বিরক্তির সুরে বেরুলো মেয়র যে কি করে ? আসলে দেশের নেতাদের লম্বাচওড়া কথা শুনি কাজ করতে দেখি না ! এসব বলে ও খাটের উপরে চলে এলো।

রিমা খাটের ড্র‍য়ার থেকে ফুলের ছাপ দেয়া মশারী বের করে ঘরের দেয়ালে পোঁতা ছোট লৌহ দন্ড গুলিতে গেঁথে দিল মশারীর সুতা। আসিফ বলল, লাইট টা অফ করে এসো। এই বলে মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে দিল।

রিমা আচ্ছা বলে লাইট নিভিয়ে দিয়ে মশারী বন্দী হলো। আসিফ রিমা এখন দুজন দুজনার খুব কাছে। রিমা আসিফের লোমশ বুকে আংগুল ঘুরাতে ঘুরাতে বলতে লাগলো, একটা কথা বলি শুনবে ?

আসিফ রিমার পিঠ বুলাতে বুলাতে জিগ্যেস করল কি ? কোন কিছু কিনে দিতে হবে? রিমা দূর! ওসব নয়। আমাদের পাশের বাসার হালিম সাহেব আছে না ! বেচারার করোনা আসাতে জব চলে গেছে । দুমাস ধরে বেকার ! উনার জন্য কিছু করতে পারবে? উনার স্ত্রী কাল এসেছিল খুব জোর করে অনুরোধ করল যদিও আমি তাকে কোন আশ্বাস দেইনি । বলল, আর একমাস চলার মতন পয়সা পাতি হাতে আছে। এক মাস দেখবে না হলে গ্রামে চলে যাবে। এগুলি বলে কেঁদে দিল জানো। এই রাক্ষুসী ভাইরাস যে কত দিক দিয়ে কতজনের কত ক্ষতি করছে। ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যায়। কথাগুলি একদমে বলে গেল রিমা।

আসিফ শুনে বলল, বলো কী? দেখলে তো বোঝা যায়না। আর তাছাড়া আমার সাথে ওর স্বামীর দেখাই কই হয়? নিজের কাজই ফুরায় না ! গাধার মতন ছুটে চলছি। যাক ভালো করেছ কোন আশ্বাস দাওনি । আসলে জীবন এমনই  কখন যে কোনদিকে টার্ন নেয় কে জানে ?

রিমা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জবাব দেয় হুম। আসিফ বলে এই ধরনা, যদি কাল অফিস থেকে আসার সময় একসিডেন্টে প্রাণ যায় কি গ্যারান্টি তার ? রিমা ধমক দিয়ে বলল চুপ ! একদম চুপ ! আল্লাহ যেন কোন শত্রুর ও এমন না করে। খালি আকথা কুকথা !

শক্ত করে আসিফ কে জড়িয়ে কাঁপা গলায় রিমা বলতে লাগলো, আই লাভ ইউ আসিফ। ডোন্ট সে দিজ ব্লাডি শীট এগেইন !

আসিফ এক গাল হেসে আই লাভ ইউ বলে রিমাকে আরো কাছে টেনে নেয়। আসিফ রিমার গালে চুমু খেয়ে বুঝতে পারে রিমার গাল নোনায় ভিজে গেছে। আসিফ হাত দিয়ে সেই জল মুছে ফেলে বলে, দূর বোকা কাঁদেনা !

এইতো আছি আমি। এই বলে রিমার বুকের কাপড় সরিয়ে উপরে চলে আসে । আসিফ ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় রিমার ঠোঁটে যেমনটা ঠোঁট ডুবায় জলের জন্য পিপাসার্ত ছটফট করা প্রাণী। রিমার বুকে ঠোঁট ঘষতে ঘষতে আসিফ টের পায় রিমার হ্রদ যন্ত্রের ধুকধুক !

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৫২

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: এই জীবন ।

মানব জীবন ।

সাংসারিক জীবন। আর এত চড়াই-উতরাই আছে বলেই পৃথিবী-পরিবার এত সুন্দর-মনোরম।

২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ বিকাল ৪:১৫

স্প্যানকড বলেছেন: ঘটনা সত্য ! ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.