![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"This above all: to thine own self be true, And it must follow, as the night the day, Thou canst not then be false to any man." - 'Hamlet' (William Shakespeare)
বাবাকে কোন দিন বলা হয়নি "আমি তোমাকে ভালবাসি।" বাবাকে ভালবাসি বলা যায় এ বোধটাই তৈরী হতে অনেকগুলো বছর চলে গেছে। যখন বুঝেছি তখনও বলা হয়নি। আসলে তাঁর সাথে ততটা সাবলীল কখনোই ছিলাম না। অদৃশ্য একটা দেয়াল সব সময়ই থেকেছে। তিনি যে খুব রাগী ছিলেন, তা কিন্তু নয়। আমি এখনও হাতের কড় গুনে বলে দিতে পারি এ পর্যন্ত কতবার তার হাতে মার খেয়েছি। অসংখ্যবার যে ধমক খেয়েছি তাও নয়। কিন্তু কেন জানি না তাঁর সাথে সহজ হতে জীবনের অনেকটা বছর চলে গেছে। পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে কর্ম জীবনে প্রবেশের পর ধীরে ধীরে তাঁর সাথে সম্পর্কটা অনেকটা সহজ হয়ে আসে। কিন্তু তাও পুরোপুরি নয়, ফাঁক কিছুটা সবসময়ই থেকেছে। এর কিছুটা হয়তো তাঁর কারণে, কিছুটা হয়তো আমার অন্তর্মুখী স্বভাবের কারণে।
কারণ যাই হোক তার প্রতি ভালবাসার প্রকাশ আমার কোন দিনই করা হয়নি। প্রতি বছর বাবা দিবস আসে, আবার চলে যায়। আমি কোন দিন তাঁর জন্য একগুচ্ছ ফুল নিয়ে বাসায় গিয়ে তার হাতে দিয়ে আমার ভালোবাসা জানাইনি। একটি কার্ডে "তোমাকে ভালবাসি" লিখে তার টেবিলের উপর রেখে আসিনি, অথবা মোবাইলে কোন মেসেজও কখনও পাঠাইনি।
কিন্তু আজ আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে, বাবা আমি তোমাকে সত্যিই ভালবাসি। তোমাকে ছাড়া এই প্রথম 'বাবা দিবস' আমার খুব খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে, আমার অসহ্য লাগছে। তুমি কি পৃথিবীর ওপাড় থেকে আমার ভিতরের এই আকুলটা বুঝতে পারছো? আমার যে তোমার জড়িয়ে ধরে তোমার বুকে মুখ গুঁজে তোমাকে বলতে ইচ্ছে করছে, "আমি তোমাকে অনেক মিস করছি, আমি তোমাকে সত্যি অনেক ভালবাসি।"
বাবা, তুমি কি শুনতে পাচ্ছ?
২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:৪০
সোনি সুলতানা বলেছেন: প্রিয় বাবা,
চিঠিটি যখন তোমাকে লিখছি তুমি তখন ক্যানসার নামক ঘাতক ব্যাধিটির সঙ্গে নিরন্তর যুদ্ধ করে যাচ্ছ। জানিনা কতটুকু যন্ত্রণা তোমার । শুধু এইটুকু বুঝতে পারছি তুমি রোগা হয়ে যাচ্ছ । তোমার ওজন ৭০ থেকে নেমে এসেছে ৫৫ তে। অফিস থেকে প্রতিদিন যখন বিকেলে বাসায় ফিরি বুকের ভীতর এক তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি। বিশ্বাস করো বাবা, তোমাকে হারানোর কথা ভাবতেও পারিনা । যে তুমি আগলে রেখেছ আমাদের ৩ ভাই বোনকে , পরীক্ষার সময় রাত জেগে বসে থেকেছ পাসে, সামান্য সর্দি জ্বর হলেই আমাদের নিয়ে ছুটে গেছো ডাক্তারের কাছে !! এক অসাধারন মায়ার বাধনে দু হাতে আগলে রেখেছ আমাদের , কখনো কোন কষ্ট পেতেও দাওনি ! আজ সেই তুমি, নরম বিছানায় চুপচাপ শুয়ে থাকো । কথা বলতে ও কষ্ট হয় তোমার । আমার ইচ্ছে করে তোমার কণ্ঠনালির ওই ক্যান্সার টা কে টেনে হিঁচড়ে শরীর থেকে আলাদা করে দেই ।
সেদিন তুমি বায়না ধরলে , কিছু খেতে পারছিনা রে , একটা হরলিক্স এনে দিবি ? কি সামান্য আবদার তোমার !! অথচ এই আমি আবদার করে করে তোমার মাথা খারাপ করে ফেলতাম । একটা কোমল হাসি দিয়ে সায় দিতে । সংসার খরচ বাঁচিয়ে কি কষ্ট করেই না আমাদের চাওয়া গুলো পুরন করতে !! রেডিওথেরাপি আর কেমথেরাপি দিয়ে কান্সারের সাথে প্রতিদিন তোমার যুদ্ধ । শরীরে যন্ত্রণার যুদ্ধ নিয়ে তুমি বেঁচে আছো জানি।
আমাদের ৩ ভাইবোন এর চাকুরীর যে সামান্য মাইনে তা দিয়ে ক্যান্সার এর সাথে যুদ্ধ করা খুব কষ্টকর ! নিজেকে অপরাধি মনে হয় । কেন আরো উন্নত চিকিৎসা দেবার খমতা আমার নেই ?? ছোটবেলায় তুমি যখন কোলের ভীতর নিয়ে আমায় ঘুম পারাতে তখন আদরে আমার ঘুম এসে যেতো । তোমার কোল যে আমাদের চির আশ্রয় । এমন আশ্রয় থেকে কে বঞ্চিত হতে চায় বলো?
বাবা, এই লেখাটা লেখার সময় আমি অনেক কেঁদেছি জানো ? ইট কাঠ পাথরের এই যান্ত্রিক শহরে নিজেকে বড় একা আর অসহায় লাগছে ! তুমি তো আমার বুদ্ধি , সংগ্রাম , সাহস !! মাথার উপরে ছায়া !! আমি এই ছায়া থেকে বঞ্চিত হতে চাইনা বাবা !!
প্রিয় বন্ধুরা ! তোমরা আমার বাবার জন্য দোয়া করো !! তিনি যেন আরো কিছুকাল বেঁচে থাকে।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮
মাসরুর প্রধান বলেছেন: বলতে চেয়েও তো আমিও পারি নাই।