![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি ...I'm a Bad Student of 'Electronics and Communication Engineering'
আব্বা,
পথে কোনো অসুবিধা হয়নি।
নাসরিনকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে গত পরশু
ঢাকায় ফিরেছি। আপনাদের মতামত
এবং কোনোরকম
আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আমি বিয়ে করে বৌ বাড়ি
নিয়ে যাওয়াতে আপনারা কষ্ট পেয়েছেন।
কিন্তু আমি তো আমার জীবন এভাবেই
ভেবেছি। আপনার সাথে আমার যে ভুল
বোঝাবুঝিগুলো তা কখনই চ্যালেঞ্জ
বা পিতা-পুত্রের দ্বন্দ্ব নয়, স্পষ্টতই
তা দুটো বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব।
ব্যক্তি আপনাকে আমি কখনোই ভুল বুঝিনি,
আমি জানি না আমাকে আপনারা কিভাবে
বোঝেন। এতো চরম সত্য যে,
একটি জেনারেশনের
সাথে পরবর্তী জেনারেশনের অমিল
এবং দ্বন্দ্ব থাকবেই। যেমন আপনার
সাথে আপনার আব্বার অমিল ছিলো, আপনার
সাথে আমার এবং পরবর্তীতে আমার
সাথে আমার সন্তানদের। এই দ্বন্দ্ব ও
সংঘাত কোনোভাবেই রোধ করা সম্ভব নয়।
আমরা শুধু এই সংঘাতকে যুক্তিসঙ্গত
করতে পারি; পারি কিছুটা মসৃন করতে।
সংঘাত রোধ করতে পারিনা।
পারলে ভালো হতো কিনা জানিনা।
তবে মানুষের জীবনের বিকাশ
থেমে যেতো পৃথিবীতে।
আমার মনে পড়ে না। এই ছাব্বিশ
বছরে একদিনও পিতা হিসাবে আপনার
সন্তানদের আদর করে কাছে টেনে নেননি।
আশেপাশে অন্য বাবাদের তাদের সন্তানদের
জন্য আদর দেখে নিজেকে ভাগ্যহীন
মনে হয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে কখনো কষ্ট
প্রকাশ করিনি। ছেলেবেলায় আমার
খেলতে ভালো লাগতো।
খেললে আমি ভালো খেলোয়াড় হতাম।
আপনি খেলতে দিতেন না। ভাবতাম,
না খেললেই বোধ হয় ভালো।
ভালো মানুষেরা বোধ হয় খেলে না। আবার
প্রশ্ন জাগতো, তাহলে আমার
খেলতে ভালো লাগে কেনো?
আমি কি তবে খারাপ মানুষ? আজ বুঝি,
খেলা না খেলার মধ্যে মানুষের ভালো-মন্দ
নিহিত নয়। কষ্ট লাগে। আমিও স্বপ্ন
দেখতাম, আমি ডাক্তার হবো। আপনার
চেয়ে বড় ডাক্তার হয়ে আপনাকে ও
নিজেকে গৌরব দেবো। সন্তান বড়
হলে পিতারই তো সুখ। আমি সেভাবে তৈরীও
হচ্ছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধের পর
কি যে এক বিরাট পরিবর্তন এলো !
একটি দেশ, একটি নতুন দেশের জন্ম হলো,
নতুন চিন্তার সব হতে লাগলো। নতুন স্বপ্ন
এলো মানুষের মনে। সবাই অন্যরকম
ভাবতে শুরু করলো। আমিও আমার আগের
স্বপ্নকে ধরে রাখতে পারিনি। তারচেয়ে বড়
এক স্বপ্ন, তারচেয়ে তাজা এক স্বপ্ন,
তারচেয়ে বেগবান এক
স্বপ্নকে আমি কাছে টেনে নিলাম।
আমি সিরিয়াসলি লিখতে শুরু করলাম। আগেও
একটু আধটু লিখতাম, এবার পুরোপুরি।
আমি আমার আগের সব চিন্তা-ভাবনার
প্রভাব ঝেড়ে ফেলতে লাগলাম। চিন্তা থেকে,
জীবন থেকে, বিশ্বাস-আদর্শ থেকে, অনেক
কিছুর সঙ্গেই সংঘর্ষ হতে লাগলো। অনেক
কিছুর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির শুরু হলো।
কখনো ক্ষোভে আমি অপ্রত্যাশিত কিছু
করে ফেলতে লাগলাম। আপনার সাথে আমার
সাথে বিশ্বাসের সাথে মিল এমন মানুষের
দেখা পেলাম। তাদের সাথে সংঘাতও হলো।
একি ! সবার সাথে সংঘর্ষ হয় কেন?
মনে মনে আমি ভীষণ অস্থির হয়ে পড়লাম।
তাহলে কি এপথ ভুল পথ? আমি কি ভুল
পথে চলেছি? কখনো মনে হয়েছে, আমিই ঠিক,
এই প্রকৃত পথ। মানুষ
যদি নিজেকে ভালোবাসতে পারে তবে সবচেয়ে
সুন্দর হবে।
নিজেকে ভালোবাসতে গেলে সে তার
পরিবারকে ভালোবাসবে। আর
পরিবারকে ভালোবাসা মানেই
একটি গ্রামকে ভালোবাসা। একটি গোষ্ঠীর
মানুষকে ভালোবাসবে। আর একটি গ্রাম
মানেই তো সারা পৃথিবী। পৃথিবীর সব মানুষ
-- সব মানুষ সুন্দর হয়ে বাঁচবে।
পৃথিবীতে কত বড় বড় কাজ করেছে মানুষ।
একটা ছো্ট্ট পরিবারকে সুন্দর
করা যাবে না? অবশ্যই যাবে। একটু
যৌক্তিক হলে, একটু খোলামেলা হলে কত
সমস্যা এমনিতেই মিটে যাবে। সম্পর্ক সহজ
হলে কাজ সহজ হয়। আমরা চাইলেই
তা করতে পারি।
জানিনা এ চিঠিখানায় আপনি ভুল বুঝবেন
কিনা। ঈদের আগে আগে বাড়ি আসবো।
আম্মাকে বলবেন, যেন বড় মামার কাছ
থেকে হাজার চারেক
টাকা নিয়ে আমাকে পাঠায়। বাসায় রান্নার
কিছুই কেনা হয়নি। বাইরের খাওয়ায় খরচ
বেশী এবং অস্বাস্থ্যকর। আম্মার
তদারকিতে দেওয়া সম্পত্তির এটুকুই
তো রিটার্ন মাত্র। আপনার
সেন্টিমেন্টে লাগতে পারে। লাগাটাই
স্বাভাবিক। কারণ আপনার শ্বশুড়বাড়ি।
আমাদের কিসের সেন্টিমেন্ট? শিমু মংলায়
পড়বে, বাবু স্কুলে। আপনারা না চাইলেও
এসব করা হবে। দোয়া করবেন।
- শহিদুল্লাহ।
২| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৭
আরজু পনি বলেছেন:
এই চিঠির অডিওটা প্রথমবার শুনে চমকে গিয়েছিলাম, তসলিমা নাসরিনকে কেউ 'নাসরিন' বলে ডাকে !
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২
মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: হুম ----------------------