![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলহামদুলিল্লাহ্
জাহানারা বেগম রাগ করে পুকুর পাড়ে বসে আছেন।কিছুক্ষণ আগে তিনি ছেলের বৌয়ের সাথে বিশাল ঝগড়াবিবাদ করে এসেছেন।বৌ টা না হয় পরের ঘরের মেয়ে কিন্ত নিজের পেটের ছেলেটা যে মা'র পক্ষ নিয়ে একটা কথাও বলল না-সেটা নিয়ে তিনি খুব ফুঁসে আছেন।অথচ এই ছেলেটা একটা সময় কতই না মা ভক্ত ছিল!ভাবতেই জাহানারা বেগমের চোখে পানি চলে আসছে।
দুষ্ট ছেলের দল পুকুরে ঢিল ছুড়ছে।তিনি কান্নাভেজা চোখে তাকিয়ে দেখছেন,"আস্তে আস্তে কিভাবে সেই ইটের টুকরোগুলো পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে!"
মাগরিবের আজান দিচ্ছে।তিনি লাঠিতে ভর করে বাড়ির পথে রওনা হলেন।ছেলেটা তার সাথে একটা কথাও বলল না।দুঃখে-অপমানে না খেয়েই ঘুময়ে পড়লেন।ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে সেই পুরোনো স্বপ্নটা দেখলেন।একটা মস্ত ইটের টুকরা আস্তে আস্তে পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।
পরেরদিন আবার বৌয়ের সাথে একতরফা ঝগড়া হল।জাহানারা বেগম ঘরে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলেন।
"বুড়ো হয়ে বিশাল বোঝা হয়েছেন সবার কাছে।অন্ন ধ্বংস করা ছাড়া আর কোন কাজ করতে পারছেন না"-ভেবে ভেতরে ভেতরে কুকড়ে যেতে থাকলেন।ঠিক করেছেন,খোকাকে ছেড়ে চলে যাবেন দুরে,বহুদুরে।এমন জায়গায় যাবেন যাতে সেখানে কেউ তাকে চিনতে না পারে।বাকিটা জীবন না হয় ভিক্ষে করেই পার করে দেবেন।
মফিজ মিয়ার ইশারামাত্র বস্তাটা নদীর বুকে ফেলে তারা।দুই-একটা রাতজাগা পাখি শুধু করুন সুরে ডেকে উঠল। বস্তাটা আস্তে আস্তে নদীর বুকে তলিয়ে যাচ্ছে।গভীর থেকে গভীরে।
জাহানারা বেগম নিঃশ্বাস নিতে পারছেন না।চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।শরীরটা কেমন অবস হয়ে আসছে!
তিনি "মফিজ, ও বাবা মফিজ "বলে ডাকার চেষ্টা করছেন।গলা দিয়ে স্বর বের হচ্ছে না তার।তিনি বুঝি ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখছেন!আর কিছুক্ষন পরই হয়ত তার দুষ্টু খোকা মফিজ মিয়ার ডাকে,তার সেই স্বপ্নটা ভেঙে যাবে!
©somewhere in net ltd.