![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আলহামদুলিল্লাহ্
বুউউউম শব্দে বোমা ফাটছে। বোমার
শব্দে পুরো ফিলিস্তিন কেপে উঠল।
সাইরা আর নুর
আতংকে দাদিকে জড়িয়ে ধরল।
দাদী দোয়া পড়া শুরু করেছেন আর
অনবরত অভিশাপ দিচ্ছেন
ইস্রাইলিদের।
সাইরা কানে কানে বড় বোন
নুরকে বলল,"আপুনি,আমরা
কি মারা যাব?"নুর ওর গালে চুমু
দিয়ে বলল,"আরে না,পাগলি,আমাদের
কেন মারবে ওরা?আমরা তো ওদের
কোন ক্ষতি করি নাই।
দাদী না বলছে,তুই
কারো ক্ষতি করলে আল্লাহ তোর
ক্ষতি করবে।বুঝছিস! " সাইরা আশ্বস্ত
হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ল।
সকাল হয়ে গেছে।মায়ের
ডাকাডাকিতে ২বোন ই ঘুম
থেকে উঠে পড়ল।ওদের মা ওদের
নিয়ে আজ এক আত্মীয়ের বাসায়
যাবেন।প্রায় ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন।
একেবারে হাপিয়ে উঠেছেন।
সাইরার দাদী অবশ্য ওদের
যেতে দিতে চাচ্ছেন না।"ও
বৌমা,কি দরকার যাওয়ার?
বাইরে ইস্রাইলি কুকুর গুলা বন্দুক
হাতে নিয়া ঘুরতাসে।পোলাপান
দেখলে ভয় পাইব তো।"সাইরার
মা বললেন,"মা,যাইতে ত ১০মিনিট
লাগবে।তাড়াতাড়ি চলে আসব।"সাইরা আর নুর
দৌড়ে দাদীর কাছে গেল
দোয়া নিতে।
দাদী দোয়া পড়ে ওদের গায়ে ফু
দিয়ে দিলেন।এরপর আবার
বলতে লাগলেন,"ও বৌমা, আয়াতুল
কুরসি পড়ে বাম পা দিয়ে বাইর হইও।
আর তাড়াতাড়ি আইস।"বলে আবার
তসবিহ জপতে লাগলেন।
দুপুর ৩টা।সাইরা,নুর আর মা বাসার
উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।রাস্তার
ধারে পিপড়ার লাইন দেখা যাচ্ছে।
সাইরা-নুর পা টিপে টিপে হাটছে।
একটা পিঁপড়া ও মারা যাবে না।
নুরের পায়ের
চাপে একটা পিঁপড়া মারা গেছে।
সাইরা পিঁপড়া টাকে তুলে এনে বলল,"আপুনি,
এটা কি করলে?ওর আব্বু -আম্মু এখন
কাঁদবে না। " হঠাত এক
ইস্রাইলি সৈন্য ওদের পথ রোধ করল।
বন্দুক তাক করল ওদের দিকে।ওদের
মা কাঁদো কাঁদো কন্ঠে ওদের
ছেড়ে দেবার অনুরোধ করলেন।
কি মনে করে সৈন্যটা ওদের
ছেড়ে দিল।বাসায়
যেয়ে দাদিকে সব কথা বলল।
দাদী আবার ওদের এক চোট অভিশাপ
দিলেন।"রক্ষা কর,আল্লাহ রক্ষা কর।
জালেম দের শেষ করে দাও।"
আজকের সকালটা অনেক সুন্দর।
সাইরার বাবা আজ
ওকে নিয়ে বাইরে যাবেন।বাবার
কোলে সাইরা চুপটি মেরে আছে।
হটাত কিছু সৈন্য এসে ওর
বাবাকে গাড়িতে তুলতে লাগল।
সাইরা বাবার শার্ট
খামচে ধরে রেখেছে।কিছুতেই
যেতে দেবে না।খুব কাঁদছে।
জিপটার পেছন পেছন অনেক্ষন
দৌড়াল।
বাবাকে নিয়ে ওরা কোথায় যেন
চলে গেল।
সাইরার মা অস্থির। তিনি তার
স্বামী কে কোথাও খুজে পাচ্ছেন
না।অনেক জায়গায় খোজ করেছেন
কিন্তু কোন লাভ হয়নি।আল্লাহ
ছাড়া আর দেখার কেউ নাই ওদের।
রাত ১২টা।
নুরকে জড়িয়ে ধরে সাইরা শুয়ে আছে।
সাইরা বলছে,"আপুনি,
জানো,আমি না আল্লাহ
কে একটা চিঠি লিখছি আজ।খুব
করে বলেছি আব্বুকে ফিরিয়ে দিতে।
আব্বু বল আমাদের জন্য কাদবে না।
আরো বলেছি,আল্লাহ অই আংকেল
গুলা অনেক পচা।আমার
আব্বুকে নিয়ে গেছে।
আমি আব্বুকে অনেক ভালবাসি।আর
বলেছি,আল্লাহ তুমি চিঠির
সাথে আমার জন্য একটা ভাই
পাঠিয়ে দিও।কেমন!"কিন্ত
আপুনি,আল্লাহ র
কাছে চিঠিটা কিভাবে দিব?
আগে ত কখন ও চিঠি পাঠাই নি।নুর
বলল,"চল,কালকে বেলুনে করে আমরা চিঠি পাঠাই।
একদম আল্লাহ র
কাছে চলে যাবে।"সমাধান
পেয়ে ২বোনই খুব খুশি।
একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে রইল।
সাইরাদের বাসার কাছেই বুম্মম্ম
শব্দে বোম ফেটেছে।খুব বেশীই
কাছে।
সাইরা,মা আর দাদী র নিথর
দেহটা পড়ে আছে হাসপাতালের
মর্গে। নুর অবশেষে মৃত্যু র দুয়ার
থেকে ফিরে এসেছে।ছোট্ট নুরের
সাথে কথা বলছেন গাজার
সাংবাদিক হারজাইন।ছোট্ট নুর
বলছে,"আমি অনেক
দ্রুত বাসায় যেতে চাই।বাসায় সবাই
আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
ইশ,সাইরার চিঠিটা........। "
নাহ,হারজাইন এবার চোখের
পানি লুকোতে পারছেন না।
মনে মনে ভাবছেন, "হায়
নুর,তুমি যদি জানতে এখন যে তুমি নতুন
ফিলিস্তিনী অনাথ শিশু!" না,নুর
সেটা জানে না।এই দুনিয়ার
নিষ্ঠুরতা সে এখনো দেখে নি।তার
ভাবনায় এখন দ্রুত বাড়ি ফেরা।
সাইরাকে বলা,ও কি আল্লাহর
কাছে চিঠিটা পৌঁছাতে পেরেছে?
সাইরার আত্মা কাঁদছে। খুব কাঁদছে।
সাইরার জন্য ওই
পাখি,বেচে যাওয়া পিঁপড়া, ওর
ছুঁয়ে দেয়া ঘাস-ফুল -লতা-
পাতা সবাই খুব কাঁদছে।মানবতাও
আজ মুখ গুমরে গুমরে কাঁদছে। শুধু আমরাই
কাঁদছি না।
(১ বছর আগে লিখিত.....)
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১০
সুলতানা সালমা বলেছেন: হুমমমম...।
২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৭
নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন:
বড়ই কষটের
২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১১
সুলতানা সালমা বলেছেন: হুমমমম....
৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:০৪
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: আল্লাহ যদি বলতেন,"বান্দা,তোরশুধুমাত্র একটা দোয়া আমি কবুল করব!বল,দুনিয়ার বুকে তুই কি চাস?"আমি চাইতাম, "হে করুণাময়,এ দুনিয়াটা,প্রত্যেক বাচ্চার জন্য জান্নাতিবাগান বানিয়ে দাও।আর আমি আজীবন সেই জান্নাতি বাগানের নিষ্পাপ শিশুটি থাকতে চাই!
অনেক ভাল লাগলো দোয়াটা।
আমিও বিদাতার কাছে আপনার দোয়াটা কবুলের জন্য দোয়া চাইছি।
হে আল্লাহ আপনি জনাবা সুলতানা সালমা এর এই দোয়াটা কবুল করে নাও.।.।.।.।।।আমীন
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮
সুলতানা সালমা বলেছেন: আমিন ইয়া রাববুল আলামিন।
জাযাকাললাহ খাইর ভাই।
that's so kind of you.
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৩
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: মানবতাও আজ মুখ গুমরে গুমরে কাঁদছে।