![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইতিহাস পড়ি না, জন্মলগ্ন থেকে বাংলাদেশকে প্রতিদিন যেভাবে দেখেছি, সেটাই বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস।
স্থান, জেদ্দা, সৌদি আরব, তারিখ, ১৯৮০ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বরের সকাল। অফিসের প্রথম দিন। মাত্র গতকাল দেশ থেকে এসেছি। ইজিপ্সিয়ান একাউন্টেন্ট, যে আমাকে এয়ারপোর্টে রিসিভ করেছিলো, সবার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলো।
কোম্পানির সৌদি জেনারেল ম্যানেজার চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার পিঠ চাপড়িয়ে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলেন। দুই তিনটা কথার পর বললেন, হজ্বে যাবে তো, এইতো কয়েকদিন পরেই শুরু হচ্ছে।
হ্যাঁ না কিছু না বলে শুধু মুচকি হাসলাম। মনে মনে ভাবলাম, ২৪ বছর বয়সে আবার কেউ হজ্বে যায় নাকি! তারপর ভুলেই গেলাম ব্যাপারটা।
কিন্তু সে ব্যাটা জেনারেল ম্যানেজার দেখলাম ভুলেনি বিষয়টা। দুই তিন দিন পর সামনে পড়তেই আবার শুধালো, এই যে ফার্মাসিস্ট, হজ্বে যেতে রেডি তো? আমতা আমতা করে বললাম, মানসিক প্রস্তুতি নিতে পারিনি এখনও।
হজ্বে যেতে আবার মানসিক প্রস্তুতি লাগবে কেন? ত্বরিত প্রশ্ন রাখলেন তিনি। একটা সুযোগ এসেছে তোমার জীবনে, আরো যোগ করলেন এবং, তাহা গ্রহণ কর যুবক, বলে আরেকবার আমার পিঠ থাবড়ালেন।
এইবার প্রসঙ্গটা সত্যি ভাবিয়ে তুললো আমাকে। রাতে শুয়ে শুয়ে ব্যাবচ্ছেদ করতে লাগলাম বিষয়টা। শুনেছি হজ্ব পালন করলে একজন মানুষ নবজাতকের মত নিষ্পাপ হয়ে যায়! আর দেশ থেকে একজনের চেয়ে আরেকজন বেশী বয়সে আসতে থাকে হজ্ব পালনে, সারাজীবনের পাপমোচনের জন্য।
আরো ভাবলাম, আমি মাত্র ২৪, সঠিকভাবে পাপ করাই শুরু করতে পারিনি কেবলমাত্র কিছু পোকামাকড়, ইঁদুর আর টিকটিকি হত্যা করা ছাড়া। মনে মনে নিজের নারী ঘটিত ব্যাপারগুলোও সন্তর্পণে রিভাইজ দিলাম। সিরিয়াসলি প্রেম করা ছাড়া আর কিছুতে জড়াইনি কোনদিন, যেটা গুরুতর পাপকার্য অবশ্যই নয়। তাই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে ২৪ বছরের জোয়ান ছেলের হজ্বে যাওয়া অবশ্য করণীয় নয়।
দেশে হজ্বে আসতে মুরব্বীদের অনুমতি নিতে হয় শুনেছিলাম, বাবা মা’র পা ধরে সালাম করে যাত্রা শুরু করতে হয়। এই যুক্তিটি মনে হওয়া মাত্র উৎফুল্ল হয়ে উঠলাম এই ভেবে যে জেনারেল ম্যানেজারকে মোক্ষম একটা কারণ দেখানো যাবে হজ্বে গমন এড়ানোর। নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে গেলাম তারপর।
সত্যি সত্যি জেনারেল ম্যানেজার একজন নাছোড়বান্দা ব্যক্তি। কাজের ফাঁকে জিজ্ঞেস করলেন পরদিনই, এহরাম কিনেছো? বললাম, এবার যাচ্ছি না জনাব, বাবা মা’র পারমিশন নেইনি যে! মনে মনে ভাবলাম, জবরদস্ত কারণ দেখিয়েছি এবং নির্ঘাত রেহাই মিলবে এবার।
কিন্তু রেহাই মিললো না। কি বললে, কি বললে? বেশ জোরে জোরে আমার পিঠ থাবড়ালেন তিনি আমার এবং স্পষ্ট মনে হলো এবার তিনি আমাকে তিরস্কার করছেন।
তুমি কি বলতে চাও, তোমার পিতামাতা যখন জানবেন তাঁদের ছেলে হজ্ব করেছে, তাঁরা অখুশি হবেন?
এই প্রশ্নের উত্তর আমার নিশ্চিত জানা ছিলো।
তার ঠিক দু’দিন পর ২৪ বছরের সেই যুবক সাতই জিলহজ্জের বিকালে লাব্বায়েক, আমি হাজির, বলতে বলতে মিনার পথে ধাবিত হোল।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩৪
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: আমার অভিজ্ঞতা আপনার ভাল লেগেছে জেনে স্বস্তি পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:১২
কলমের কালি শেষ বলেছেন: হজ্জ অনেক কষ্টসাধ্য । তাই যুবক বয়সেই করা উত্তম । কারো চাপে হলেও করেছেন উত্তম হয়েছে ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩০
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: পাপমোচন হোক বা না হোক, ২৪ বছরে করা সেই হজ্ব আমার জীবনে একধরণের ভ্যাকসিনশনের কাজ করেছে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৩| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:৪২
ফরিদুর রহমান বলেছেন: কথিত এবং অকথিত অনেক কাহিনী জানা থাকলেও তোমার প্রথম হজ্জ্বব্রত পালনের কথা জানা ছিল না। পড়ে ভাল লাগলো।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১১:৩১
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: ভালো লাগলো তোমাকে এখানে দেখে বাবুল। শ্রীলংকা নিয়ে তোমার লেখাগুলো পড়ব খুব শীগগির।
৪| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৫
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: কিছু উহ্য থাকাই ভালো ।
ঈদ মুবারক
০৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১২:৩৮
খন্দকার আলমগীর হোসেন বলেছেন: ঈদ মুবারক আপনাকেও।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:১৫
আজমান আন্দালিব বলেছেন: অভিজ্ঞতার কথা লিখে ফেলুন। বেশ ঝরঝরে লেখা।