![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জ্যাকেটটা খুলতে গিয়ে হঠাৎ ভাজা চড়ুই পাখির গন্ধ পেলাম, একটু খরখরে, কিন্তু লোভ জাগানোর মত গন্ধ, স্মৃতি জাগানোর মতও কিছুটা। যখন প্রথমবার এ গন্ধ পেয়েছিলাম, খুব ছোট আমি- হাতের গুলতি তখনও নামাইনি মাটিতে, মুঠো করে ধরে আছি। আমার মা চড়ুইটাকে; আমার কিঞ্চিৎ সাহায্য নিয়ে; জবাই করে তেলে নুনে এক করে কড়াইয়ে চড়িয়ে দিয়েছেন। ঘ্রাণ আসতে শুরু করেছে। আমার মনে তখনও হত্যাকারী-ভাব জেগে ওঠেনি। তখনও মনকে অপরাধী করতে শিখিনি।
ছোট্ট চড়ুইয়ের গায়ে বলতে গেলে কোন মাংসই ছিল না, কিন্তু আমি সেটা লটপট করে খেয়েছি, আমার মায়ের হাসিমুখের সামনে। তাকেও সেধেছিলাম, তিনি খাবেন না একবার বলতেই চুপ গিয়েছিলাম, আর সাধিনি।
চড়ুইটা ছিল পাশের বাসার বড়ই গাছের ডালে, আমি উঠেছিলাম আমাদের টিনের চালে। পকেটে মাটি শুকিয়ে বানানো গুল্লি, মহামূল্যবান, হাতে পেয়ারা গাছের ভি-আকৃতির ডাল ভেঙে ঘষে মসৃণ করে বানানো গুলতি, যার দু মাথায় রিকশাস্ট্যান্ড থেকে পাওয়া রাবারের সরু রগ, মধ্যে লাল টায়ারের টুকরো। বেশ অস্ত্র!
আমার শিকারীমন ছিল না, আমি তৈয়বকে দেখে প্রভাবিত হয়েছিলাম। শৈশব প্রভাবিত হওয়ার খুব উপযুক্তরকম মন্দ সময়।
কষে টেনে ধরে মাটির গুল্লি ছোড়ার পর একজোড়া চড়ুইয়ের একটি, সম্ভবত নারীটি- আমার অনুমান; পড়ে গেলো।
সেই কবে চালানো হত্যাযজ্ঞের জন্যে আমার মন আজ সন্ধ্যায় অপরাধী হয়ে উঠলো। তখন, জ্যাকেট খুলে চেয়ারে রাখছিলাম, বাহির থেকে আসার পর; মনে হচ্ছিল, শীত চলেই যাচ্ছে।
প্রেমিকাকে, জীবনের ডালে একসনে বসে থাকা আমার নারীটিকে, বলছিলাম এই সেদিন মাত্র- ‘শীত এগিয়ে আসছে।’ আর আজই বলতে হচ্ছে, শীত চলে যাচ্ছে, বসন্ত এগিয়ে আসছে, কত দ্রুত যাচ্ছে সময়!
আসলে- যে যাকে ভালোবাসে, তার তাকে হারানোর ভয়। আমার প্রেমিকাকে যখন বলেছি, চড়ুইটি নারী ছিল, দ্বিমত সে, তার ধারণা, পুরুষটি ঝরে গেছে, নারীটি কেঁদে কেঁদে গেছে আরও অনেকদিন, গাছের মাথায় ঘুরে ঘুরে।
ঠিক যেন তাই হয়েছে; আরেকটা চড়ুইকে আমি গাছটাকে ঘিরে ঘিরে উড়তে দেখেছি, আরও অনেক অনেকদিন, আবছায়া মনে পড়ে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৩০
হামিম কামাল বলেছেন: হাহাহা... মজা তো!
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১১
মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: মুগ্ধপাঠ! অনেক ভালো লাগছে
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৪২
হামিম কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ কবি। লেখাটা নিয়ে আমি একটু যেন বিব্রত। মনে হচ্ছে এর ভেতর মাহমুদুল হক, আর কিছুটা সন্দীপন ঢুকে গেছে। যে গল্পটা বলেছি সেটা সত্যি, আমারই গল্প, কিন্তু বাচনভঙ্গিটা পুরোপুরি আমার নয়, এমন মনে হচ্ছে।
৩| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: চড়ুই পাখির ডানায় করে শৈশব এসে মাথা ঠোকড়াচ্ছে, পাখিটাকে আবার, বারবার হত্যা করতে হবে তোমায়।
ভালো লাগলো লেখা।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৯
হামিম কামাল বলেছেন: হাসান ভাই, আসলেই ঠোকরাচ্ছে। বারবার হত্যা করতে হবে বলছেন? তাহলে অসংখ্য অনুতাপে আমার মৃত্যুই হয়ে যাবে একদিন। আর যদি না হয়, আমি তো আর মানুষ থাকবো না।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০৫
পাঠক১৯৭১ বলেছেন: খারাপ, কাক আপনার মগজ খাবে!