![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক এর মন যখন বিষণ্ন থাকে না, তখন রাতের বেলায় রাস্তা খুঁজে পেতে খুব অসুবিধে হয়। বাড়িতে যাওয়ার পথটি খুঁজে পাওয়ার জন্যে এ মুহূর্তে তার মনকে বিষাদগ্রস্ত করা দরকার। সে উপায় খুঁজছে।
সে ভাবলো মন খারাপ ব্যাপারটা একটা শেকল ধরা আবেগী ব্যাপার। দৈহিক ব্যাথার শেকল ধরে তা আসতেও পারে। সে একটা বড় সাদা ইটের খণ্ডে লাথি হাঁকালো। এক মুহূর্ত পর আঙুল টনটন করে উঠলো। তাৎক্ষণিকভাবে তার মন খারাপ না হলেও সে আশায় থাকলো- আর কিছুক্ষণের মধ্যেই শেকল ধরে ষণ্নতা পৌঁছে যাবে। কিন্তু কিছু হলো না। এ ধরনের স্থুল প্রচেষ্টা নয়। আরও সুক্ষ্মের দিকে যেতে হবে। মনকে সূক্ষ্ম ব্যাথা দিতে হবে।
কোন একজন মানুষকে কি সে চেনে না? যে তাকে বলেছিল সংবাদপত্রে একটা চাকরি দেবে? তাকে ফোন করে, প্রকৃতপক্ষে সে যে তা দিতে পারবে না এমনটা জেনে নিয়ে কি আঘাত পাওয়া যেত পারে না? ক লোকটিকে স্মরণ করে দূরালাপনে। তার সঙ্গে আলাপ হওয়ার পর লোকটা ঠিক তেমনভাবেই বললো যেমনভাবে ক চেয়েছিল- আসলে চাকরির যে শেষ সম্ভাবনা ছিল তা আজ বিকেলে শেষ হয়ে গেছে।
ক কিছু অনুভব করলো না। এভাবে হবে না বোধয়, কারণ এমন ঘটনা তার প্রত্যাশিত ছিল। সুতরাং যে মুখবাজ লোকটির কাছে সে চৌদ্দ হাজার টাকা পায় লোকটার সংবাদপত্রে ভূতের মত দুই মাস কাজ করার সুবাদে, তাকে সে দূরালাপনে ডাক পাঠনোর সিদ্ধান্ত ত্যাগ করলো। সেখান থেকে টাকা আর কখনই আসবে না, এটা জানে সে। কোন অপ্রত্যাশিত আঘাত চাই।
সে তার প্রেমিকাকে বরং ডাক পাঠালো, জানতে চাইলো সে তাকে ভালোবাসে কিনা। প্রেমিকা যদি বলে বসে, সে খুবই দুঃখিত, সেই মোটাকণ্ঠ বড়লোকপুত্রের পাঠানো আংটি আঙুলে পরবে বলে আজ বিকেলেই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাহলে তা আনপ্রেডিক্টেবলই হবে।
মেয়েটি তাকে নিরাশ করলো। জানালো, বড়লোকপুত্রের আংটি সে প্রত্যাখ্যান করেছে। সে ক-কেই ভালোবাসে, বাসবে।
সুতরাং ক-এর আজ রাতে বাড়ি ফেরার পথ খুঁজে পাওয়ার আপাতঃ শেষ সম্ভাবনাটিও নিঃশেষিত হলো। সে একটা ইউক্যালিপ্টাস গাছের নিচে বসে পড়লো।
তারপর রাতের বেলা সুযোগ বুঝে মরে গেলো।
©somewhere in net ltd.