অন্য কথা গুচ্ছমালা [ছয়টি কবিতা]

১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

“অন্য পথে”



মুক্ত তুমি

তোমাকে দিয়েছি স্বাধীনতা

তুমি উড়ছো হাওয়ায়



স্বপ্নের রাজ্যে

তোমাকে খুজে পেয়েছো

চলছো স্বপ্ন নিয়ে



আম বাগানে

ডালে ডালে নতুন মুকুল

দেখবে বলে ছুটছো



সুদূর পানে

চেয়ে আছো একা

কিছুটা ক্লান্তি নিয়ে



যখন তুমি

শেকলে ছিলে বাঁধা

কতোটা তৃপ্তি জাননি







“অন্য কথা”



রূপসী নগর মখমলের গালিচায় মোড়া

কারুকাজে ভরা প্রতিটা দেয়াল

উপরে ঝুলন্ত কাঁচের ঝাড়বাতি

নকশা করা কোমল আয়েশি বিছানা

তুমি ঘুমাও দেহ জুড়িয়ে

স্পর্শের স্পর্ধা আমার নেই।



খুজে যাব খুজে যেতে চাই

যেখানে পারি,খবর দিয়ো না,

ফ্যাকাসে আকাশ গুমোট বাতাস

বন্ধি লাগেনা পৃথিবীর কোলে।



পারিনা উড়াতে হাওয়াই ঘুড়ি

হাতের নাটাইয়ের সুতোর ধারে



বিশাদের পরখ কেউ করতে চায়না

ভিন্ন স্বাদের ভিড়ে খুজে পায়

নতুন কোনও রং এর আলো



রাতের খুনি যেখানে ভোরে নির্দোষ।





“অন্য চোখে”



খুব ইচ্ছে ছিল দু’জনা মিলে একসাথে

খুব দূরে দৃষ্টি মেলে নগরী দেখবো

সমস্ত নগরী থাকবে দৃষ্টির সম্মুখে



যা দেখেছি,চারিপাশে তার আর তার

এর তার ওর তার আর প্রাচীরে লোহার তার

কাঁচের গুড়ো ইটের টুকরো

সবচাইতে আকৃষ্ট করল জাল

চারপাশে ঘেরা বিস্ময়কর বেড়াজাল

দেখবে এসো



কতো কিছুই না দেখেছো

প্রকৃতি,জলাভূমি,বদ্ধভূমি,বহুতলভূমি

আরও দেখেছো সেজে থাকা বিকৃত সৌন্দর্য



এসো আজ চোখ খুলে দেখো

চারিপাশে ঘেরা বেড়াজাল





“অন্য চোখে এক মধ্যাহ্ন দুপুর”



অলস এক মধ্যাহ্ন দুপুরে

অসহ্য গা ব্যথা

একটু বিশ্রাম নেব কী উপায়

মনে অশান্ত ঝড় আকাশে কালো মেঘ

বজ্রের কানফাটানো গর্জন

চিন্তাগুলো আক্রোশে ফেটে পড়া বৃষ্টি



অন্যান্য দুপুরে যখন তপ্ততা

আজ সেখানে কিছুইনা

দৃষ্টি কুয়াশায় মাখা ঝাপসা কোনও কাঁচ

পুরনো স্মৃতি দুষ্টু বালকের ছুড়ে মারা ঢিল

কাঁচ ভেঙ্গে যায়

পড়ে রয় রক্ত মাখা কাঁচের গুড়ো



মধ্যাহ্ন দুপুরে আজ ভাল্লাগেনা

কিছু করার শক্তি

না ছুতে পারার স্বর্গ রাজ্যে

স্বর্গের স্বর্ণ দুয়ার উন্মুক্ত না

ইচ্ছে শক্তিও বাঁধা অদৃশ্য শেকলে

কিছুই নেই আজ মধ্যাহ্ন দুপুরে





“অন্য চোখে এক সকাল”



ক্লন্তি ভরা চোখ

মেলে রেখে রক্ত মাখা কালো পাপড়ি

আমি জেগেছি

নতুন ভোর নতুন সুরুজ নতুন আলো

রক্তিম লাল

চামড়া জ্বলা তিব্রতার সে ক্ষণে

চোখ গুলো

আশেপাশে সবার খোলা ছিলো

কেও দেখেনি



ভোরের আগমন আবার

কারও হাতে উপহারের ঝুড়ি

ফুল হাতে

কিছু অর্থ উপার্জনের লক্ষ্য

পথও শিশু

ওদের চোখ অবসাদে ভঙ্ঘুর

তীব্র আলো

ওদের ভিতু নতুন দিনের সূচনা

কেও বোঝেনি



জানালার কপাট নেড়ে

এক শিতল বাতাস বয়ে যায়

পরিশ্রমী দেহে

নতুন শক্তির জোগান একটুখানি

সেবার দেহে

নতুন কাপড়ের আবরণ জড়িয়ে

আঙ্গুল নেড়ে

শেষ অপেক্ষার দৃষ্টি কেড়ে

কেও জেগেছে





"অন্য চোখে ভালোবাসা"



ঘৃণা সহ্য করা চোখগুলো

পরম মমতা খুজে ফেরে

ছোট্ট শিশুমুখে স্নিগ্ধ হাঁসিতে

মাকড়শার জালে, ইঁদুরের গর্তে

নামহীন পাথরে, শুকনো তুলিতে

ঘুরতে থাকা দয়ামায়াহীন পৃথিবীতে

কারও একপলক চাহনির নাম, ভালোবাসা



আঁধার রঙের আড়ালে লুকিয়ে

নিজের কোমলতা ভরা প্রান

আদুরে মুখের সরলতা সরিয়ে

স্যাঁতসেঁতে কেঁচো, কাঠঠোকরা পাখি

রাতজাগা পেঁচা, শান্তির পায়রা

মুখোশের আবরনে ঢাকা হৃদয়

পেতে চায় নির্ভীক এক যোদ্ধা, ভালোবাসা



পেশীবহুল দেবতা তার শক্তিতে

বাহুডোরে আঁকড়ে ধরে স্বপ্নদেবীকে

সাধারন মনে ভয় ভরা

হারানো কলম, ময়লা খাতা

ভাঙ্গা বাঁশি, শুকনো ফুল

প্রাণহীন জীবনে মুখথুবড়ে পড়ে

পরাজয়ে খুজে ফেরে এক সহানুভুতি, ভালোবাসা

০ টি +০/-০