![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় পাঠক,
আজ ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ এ প্রথম আলোতে প্রকাশিত খাদ্য তথ্যবিভ্রাট- ৩ এ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ফড়িয়া ও চালকল মালিকদের দৌরাত্বে সবসময়ই ক্ষুদ্র চাষীদের ফসলের মূল্য কম পান, এটা সর্বজন বিদিত। কথা হচ্ছে, সরকার যখন ফসল সংগ্রহ অভিযান শুরু করেন, তখন ফসল বিক্রির ক্ষেত্রে প্রত্যেকের জন্য সমান সুযোগ যাতে নিশ্চিত হয়, তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তা নইলে মধ্যসত্ত্বভোগিরা সারাজীবনই লাভবান হবে। যাদের ঘামে ভেজা শ্রমের বিনিময়ে এদেশের কৃষি নির্ভরশীল তারা যদি তাদের উৎপাদিত ফসলের যথাযথ মূল্য না পান, তবে এরচে’ দুঃখ আর কি হতে পারে। সরকারের উচিত, ফসল সংগ্রহ অভিযানের সঠিক সময় নির্ধারণ, যোগ্য ও নির্ভরযোগ্য সংগ্রহকারী এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল যোগাড় করা। তা নাইলে যতো কিছুই করেন, মধ্যসত্ত্ব ভোগীদের দৌরাত্মে কোন উন্নয়নই করতে পারবেন না। এটা হাসিনা খালেদা এরশাদ যেই ক্ষমতায় আসেন না কেন, কোন লাভ নেই। কারণ এনারা ভালো করেই জানেন বাংলাদেশের চাষীদের কোথায় কোথায় ঘাতটি বা দূর্বলতা। সেই ঘাটতি পূরণ, দুর্বলতাকে না ঢাকতে পারলে কোন লাভ হবে না।
ব্লগের পাঠকদের জন্য প্রথম আলোর সংবাদটি হুবহু পেস্ট করলাম।
খাদ্য তথ্যবিভ্রাট-৩
ধান-চাল সংগ্রহনীতিতে লোকসান হয় চাষিদের
ইফতেখার মাহমুদ | তারিখ: ২৮-০১-২০১৩
সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান থেকে লাভবান হচ্ছেন চালকলমালিক, ফড়িয়া ও বড় চাষিরা। মোট উৎপাদনের বেশির ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা জোগান দিলেও তাঁরাই ধানের দাম সবচেয়ে কম পান। খোদ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে কৃষকেরা ধান বিক্রি করে প্রতি মণে এক শ থেকে দেড় শ টাকা লোকসান গুনছেন।
দেশের খাদ্য-পরিস্থিতি নিয়ে পরিচালিত বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণায় বলা হয়েছে, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের প্রধান উদ্দেশ্য হওয়া উচিত দাম স্থিতিশীল রাখা। অর্থাৎ ধানের দাম বেশি কমে গিয়ে কৃষক যাতে লোকসানে না পড়েন এবং চালের দাম বেশি বাড়লে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ যেন বিপদে না পড়ে।
কিন্তু ওই গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা লাভবান হন না। কেননা, খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ করা ধান-চালের প্রায় পুরোটাই চালকল মালিকদের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।
চালকলমালিকেরা ৯৯ শতাংশ ধান সংগ্রহ করেন ফড়িয়াদের কাছ থেকে। ধান কাটার পরপরই ফড়িয়ারা ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নেন। বাজারে ধানের জোগান কমে এলে ও সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ পুরোদমে শুরু হলে ধান-চালের দর বাড়ে। কিন্তু তখন ধান-চালের মজুত থাকে বড় চাষি, ফড়িয়া ও চালকলমালিকদের কাছে।
বিআইডিএস পরিচালিত ‘বাংলাদেশে একটি সামগ্রিক ও কার্যকর খাদ্যবণ্টনব্যবস্থা পরিকল্পনার জন্য সঠিক হিসাব’ শীর্ষক ওই গবেষণায় কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ধান কাটার সময়কে বিবেচনা করে সংগ্রহ অভিযান শুরুর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো এক প্রতিবেদনেও সংগ্রহ অভিযানের সময়কালকে পুনর্বিবেচনা করার সুপারিশ করা হয়েছে। সেখানে বোরোর সংগ্রহমূল্য ফেব্রুয়ারি-মার্চে ও আমনের সংগ্রহমূল্য সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ঘোষণা করার কথা বলা হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগাম সংগ্রহমূল্য ঘোষণা করে ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে সংগ্রহ শুরু করতে পারলে আমিই সবচেয়ে খুশি হব। কেননা এতে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পাবে। এ ধরনের উদ্যোগ আগেও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুরুতে ধানে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তা সরকারি গুদামে রাখার পর মান নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।’ বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিআইডিএসের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষকেরা বাজারে আসা চালের ৬৩ শতাংশ জোগান দেন। বাকি ৩৭ শতাংশ বৃহৎ চাষিরা সরবরাহ করেন। কিন্তু ক্ষুদ্র চাষিরা উৎপাদনের সময়ে বিভিন্ন উৎস থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করে ধান বিক্রি করেন। আবার ক্ষুদ্র কৃষকেরা ধান কাটার পর উৎপাদনের একটি বড় অংশ বিক্রি করে দিয়ে পরে আবার তা বাজার থেকে কিনে খান। অর্থাৎ ধানের দাম যখন কম থাকে তখন তাঁরা বিক্রি করেন, আর চালের দর বেড়ে যাওয়ার পর তাঁদের আবার তা কিনতে হয়।
বিআইডিএসের সাবেক গবেষণা পরিচালক, অর্থনীতিবিদ ড. এম আসাদুজ্জামানের মতে, সরকার ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ করে তা চালকলমালিকদের কাছে দেবে। চালকলগুলো তা আর্দ্রতা কমিয়ে ও ভাঙিয়ে চাল আকারে সরকারি গুদামে সরবরাহ করবে। এভাবে একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে পারলে সরকারি সংগ্রহ অভিযানের মাধ্যমে কৃষক লাভবান হতে পারে।
বিআইডিএসের গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে সারা বছরে যে পরিমাণে চাল উৎপাদিত হয় তার ৫৩ শতাংশ বোরো মৌসুমে, ৪৩ শতাংশ আমনে ও চার শতাংশ আউশ মৌসুম থেকে আসে। এপ্রিল থেকে বোরো ও নভেম্বরে আমন কাটা শুরু হলেও সরকার মে-জুন মাসে বোরো এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারি থেকে আমন সংগ্রহ শুরু করে।
খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ধানের সংগ্রহমূল্য ঘোষণা পুনর্বিবেচনা করার জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করছি। গুদাম বাড়িয়ে সংগ্রহের পরিমাণ বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
বিআইডিএসের ওই গবেষণায় এক থেকে আড়াই একর জমি আছে, এমন কৃষকদের ক্ষুদ্র চাষি হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, তাঁরা মোট উৎপাদনের ২৭ শতাংশ, আড়াই থেকে সাড়ে সাত একর জমিতে চাষকারী মাঝারি কৃষকেরা ৪০ শতাংশ এবং সাড়ে সাত একরের চেয়ে বেশি চাষ করেন এমন বৃহৎ চাষিরা মোট উৎপাদনের ৩৩ শতাংশ জোগান দেন।
কৃষকের এই ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গত তিন বছরে দেশে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত ২০১০-১১ অর্থবছরের তুলনায় ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্ধেকে নেমে এসেছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার বছর কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৫.২৪ শতাংশ, ২০১১-১২ অর্থবছরে তা ২.৫৩ শতাংশে নেমে এসেছে। এতে জাতীয় প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলেছে, এর অন্যতম কারণ ফসলের দাম কম পাওয়া।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪২
ৈতয়ব খান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৪
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: লাভের গুড় খায় পিপড়ায়,
কৃষকের ঘামের ফসল লুট করে মধ্যস্বতঃ ভোগী দালালেরা।
আপনার সচেতন চিন্তাকে ধন্যবাদ।