নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অরুণালোক

ৈতয়ব খান

আমি শুধু কবিতায় কথা বলবো আসে আসুক ঝড় করিনা তো ভয় আমি শুধু বাণী নিয়ে খেলবো। ছন্দোবদ্ধ করে মনের মতন সৃষ্টি করবো আমি শব্দ রতন হৃদ পাপড়িগুলো মেলবো। বাজ পড়ে পুড়ে যাক পৃথিবী বাঁধুক না যুদ্ধ ক্ষতি কী আমি তবু কবিতায় কথা বলবো।।

ৈতয়ব খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কবিতা আলাপ

২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

(প্রথম তরঙ্গ)



কোন মহাকাল আগে,

আড়মোড়া দিয়ে গোপন কে যেন সহসা উঠলেন জেগে।

তখন সীমাহীন অন্ধকার,

গোপন সে জন স্বপ্ন দেখলেন সুন্দর কবিতার।

মন তাঁর স্থির-অচঞ্চল,

আপন গভীরে ডুব দিয়ে তিনি পাতলেন অঞ্চল।

এক ইশারায় আধেক আলোয় আধেক অন্ধকারে,

মহাকবিরূপী বাঁধলেন তিনি সুন্দর কবিতারে।



কবিতার প্রয়োজনে,

তাবৎ সৃষ্টি করলেন তিনি আপন খেয়ালী মনে।

গড়লেন তিনি ছকে বাঁধা করে সৃষ্টি-জগৎ সব-,

ছকের বাইরে একাকী করলেন উল্লাসে উৎসব।



সেই উৎসব শেষে

কবিতার পানে উজ্বল নয়নে চেয়ে র’ন নির্ণিমেষে।

‘এতো সুন্দর! এতো মনোহর! কবিতা, বল্ তো দেখি

সৃষ্টি জোড়া কোন সে হৃদয়! কার কাছে তোরে রাখি?’

কবিতার সাথে কথা কন আর প্রেমময় নয়নে-

সে হৃদয়খানি খুঁজে পেতে তিনি তাকান সৃষ্টিপাণে।



সহসাই কবিতাকে,

নীবিড় আলিঙ্গনে জড়িয়ে আমাতে দিলেন ফুঁকে।

জাগে বিস্ময়; প্রেম কথা কয়; প্রেমিক-প্রেমময়ে

আমার দু'ঠোঁটে ভাষা ফোটে উঠে কবিতা পাবার জয়ে।



সেই থেকে আমি কবি,

তাঁরই প্রেমের সৃষ্টি আমি বর্ণালী রঙ-ছবি।

আদিকাল থেকে তাই কবিতা আমার কণ্ঠভাষা,

কবিতার মাঝে সৃষ্টি-স্রষ্টার সীমাহীন ভালাবাসা।

কবিতার সাথে রোজ,

অভিসারে ফিরি গোপন বাসরে জ্বেলে প্রেম পিলসুজ।

বলি কবিতায় যতো কথা,

সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ তুমি সুন্দর কবিতা।।



কবিতা তুমি তাঁর মায়া মাখা ফসলে সবুজ দোলা,

কবিতা তুমি চির বিস্ময় তাঁর খোঁজে পথ চলা।

কবিতা তুমি মানব জমিনে তাঁর আঁকা আল্পনা,

সর্বোযুগী সুন্দর তুমি- স্বপ্নের জাল বোনা।

কবিতা তুমি একাকী পথে তাঁর নামে জপমালা,

কবিতা তুমি বেহেস্ত হাওয়া গায়ে মেখে পথ চলা।

কবিতা তুমি দুনিয়ার বুকে তাঁর সুখ-অভিলাস

কবিতা তুমি চির বসন্ত; মৌসুম মধুমাস।

কবিতা তুমি তাঁর চোখে দেখা সফল বিশ্বরূপ,

কবিতা তুমি সর্বোরূপী তাঁর রূপে অপরূপ।



কবিতা তুমি প্রথম সৃষ্টি কিছুই ছিলো না যখন,

কবিতা তুমি প্রথম আলো; তাঁর আলোয় আজীবন।

কবিতা তুমি তাঁর ইচ্ছায় প্রথম আদম হাওয়া,

কবিতা তুমি বেহেস্তি সুখে ধুলার পৃথিবী পাওয়া।

কবিতা তুমি ফের বিরহের ব্যথা-জ্বালা হয়ে হায়-

প্রার্থনা হয়ে ছুটে গিয়েছিলে স্রষ্টার দরজায়।

কবিতা তুমি আদম হাওয়ার ভুমিতে প্রথম মিলন,

কবিতা তুমি মানস কামনা সুকোমল-মধুক্ষণ।

কবিতা তুমি তাবৎ সৃষ্টি কীট থেকে মানবে-

প্রশংসা করো উচ্চকণ্ঠে তাঁর-ই নাম গৌরবে।



কবিতা তুমি সর্বোযুগী শান্তিকানুন বাণী,

কবিতা তুমি চির প্রকাশ্য কল্যাণ রওশনী।

কবিতা তুমি যুগে যুগে আসা তাবৎ নবী ও রাসুল,

কবিতা তুমি তাঁর রূপ ধরে একক আদী ও আসল।

কবিতা তুমি পরম প্রেমিক মানুষ মোহাম্মদ (সাঃ)

কবিতা তুমি মিরাজের রাত ঘড়ির হিসাব রদ।

কবিতা তুমি সৃষ্টি-স্রষ্টার একাকী কথোপকথন-

বিস্ময়কর আবেশে আবেশী মহারাজা-মহাজন।

সৃষ্টি জুড়ে যতো কিছু আছে-, সব কিছু কবিতা

কবিতা রূপী সবখানে তাঁর সমান আসন পাতা।।

(ধামরাই, ঢাকা। ৮-১২-২০০৫)





(দ্বিতীয় তরঙ্গ)

আমি কী লিখবো চির অক্ষম হয়ে?

আমি কি লিখবো ক্ষমতাবানদের নিয়ে!

আমার অক্ষমতা

প্রকাশ হয় না যদিও লিখি পাতার পরে পাতা।



‘কবিতা কী কলা-বনরুটি, যে বাজারে নিলেই বেচা হয়?’

নামী দামী এক প্রকাশক সে ; বলেছিল, তাই পাই ভয়।

কবিতাকে আমি বেচি কীভাবে

ও’ ব্যাটা বুঝবে কী

ও’ ব্যাটা তো শুধু টাকা খুঁজে মরে

ও’ কাব্য মাণিক খুঁজবে কি?

ও’ বলতেই পারে ও কথা।

সবাই কি জানে কবিতার জ্বালা? শূন্য-পূর্ণতা!



আমার কাছে কবিতা মানে জীবনের খোলা পাতা,

কবিতা কখনো প্রিয়নারী, বোন, কখনো দরদী মাতা।

কবিতা কখনো ভাইয়ের স্নেহ পিতার আশির্বাদ,

চিরদিন ঝরে ঝর্ণাধারায় কাওসার সওগাত।

কবিতা কখনো আমাকে ছোঁয়ায় স্রষ্টার সুখ ছোঁয়া,

কবিতা কখনো পবিত্র রাতে আগর বাতির ধোঁয়া।

কবিতা কখনো মেশ্ক-জাফরান গোলাব-বেলির বাস

কবিতা কখনো খোলা জানালার দক্ষিণা সু-বাতাস।



কবিতা আমার শীত বরষার অনাহারি রোজা রাত

কবিতা কখনো আল্লাহর পানে উর্ধ্বে উঠানো হাত

কবিতা আমার তসবিহদানা, মুখে পাক মধু নাম

কবিতাকে তবে কে কেনে বলো? কে দেবে তার দাম!

ক্বারী’র মুখে কোরআনের বাণী কবিতায় রূপ তার

চির অম্লান, চির কল্যাণ স্রষ্টার উপহার।

কবিতা আমার রাসুলের বাণী, তাঁর-ই আদর্শ মানি, তা-ও মানি

ক্ষণিকের এই জীবনের জ্যোতি সবটুকু কবিতা

আমি বলে যাই মুক্ত কণ্ঠে আমার অক্ষতা।



কবিতা আমার কলা-বনরুটি কেন নয়! কে বলে?

কবিতা-ই তো আহার হয়ে রূপ নেয় ফুলে-ফলে।



কবিতা আমার ক্ষুরধার বাণী বিদ্রোহী নজরুল

হাফিজ-রবী-ফররুখ-জসীম মহাকবি আলাওল।

ওদের যতো না বলা কথা আমার কণ্ঠে এসে

সুঁড়সুড়ি মারে, গুতোগুতি করে, নিশিদিন কাঁদে-হাসে।

কবিতা আমার ক্ষোভ-অভিমান-অনুরাগ ও নীতিকথা

সর্বহারার হারানোর ভয়! কবিতা-ই তাঁর গাঁথা।

কবিতা প্রেমিক আর কেউ নেই এ অনন্ত চরাচরে

অমূল্য মণি কবিতা তাহলে কে কেনে কড়ি-জোরে!



কবিতা কখনো আসমানে ঘন এলোকেশী মেঘপরী

কবিতা কখনো সুনীল সাগরে স্বপ্ন প্রমোদ তরী।

কবিতা আমার তারার মালা বর্ণালী নভঃফুল

কবিতা কখনো সবুজ বনানী পাড় সাজা উপকূল।

কবিতা আমার প্রিয় সিগারেটে আখেরী সুখটান

কবিতা আমার বাথরুমে গাওয়া শান্তি সুখের গান।



কবিতা কখনো বোম-ভোলানাথ গাঁজায় কল্কি ভরা

চির ঋষিমনে কবিতা কখনো দেহ হৃদে ভাঙা-গড়া।

আমি কবিতাকে ভালবাসি

কবিতার প্রেমে চির যাযাবর পথ হাঁটি ; কাঁদি হাসি।



কবিতায় আমি গাইছি নিতি আল্লাহর গুণগান

দুই চোখে যাঁর দেখেছি চেয়ে রং রূপ অফুরান।

ভরা জলরাশি-মরু-পর্বত, কী অপূর্ব সমগ্র জগৎ

তাঁর আমিত্ব সুন্দরে ভরা সুন্দর তাঁর নাম

কবিতায় গাঁথা গ্রন্থ কোরান তাঁর পবিত্র কালাম।

বাণী যেন তাঁর কবিতার বীণা বিস্ময় সুরে ভরা

কিছু শুনে হাসি, আর কিছুতে ভয়ে জাগে বুকে খরা।

কিছু বাণী জাগায় হৃদয়ে পুলক, আর কিছু তাঁর বর্ণ ঝলক

বুক কেঁপে ওঠে ও কার ছোঁয়ায় ! সুন্দর কে ও হাসে!

এতো মায়াময় এতো মনোহর! ও কারে ভালবাসে?



সত্য পথের ন্যায় সেনানী বয়ে ফেরে তাঁর বাণী

কে কোথা’ আছো? কে নেবে আমারে? সে করে কানাকানি।

যে সুন্দর শুধু তারে খোঁজে, কে যে তাঁরে পাবে কিছু বুঝি না যে

পাগলের মতো পদ্যে ফোটাই সুন্দর তাঁর রূপ

শুধু এই জানি আমার কবিতা কখনো হবে না চুপ।



নেশাখোর কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত

(ধামরাই, ঢাকা। ০৪-০১-২০০৪)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: সুন্দর কবিতা মালা
বাড়বে পাঠকের মুগ্ধতা
আরও যেন সাজে কাব্য পাতা
শুভেচ্ছা

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

ৈতয়ব খান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.