![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ কি আসলেই সভ্য হতে পেরেছে? এ প্রশ্নটা করাটা খুব সহজ কিন্তু উত্তর দেওয়াটা কঠিন। কঠিন এজন্য যে, তাহলে সভ্যতা কি এর উত্তর দিতে হবে। সভ্যতা হচ্ছে ব্যক্তির চিন্তার চেতনার উন্নতর অবস্থা। উন্নত কথাটা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে ব্যক্তির ভেতরে সততা, আদর্শ, সহিষ্ণুতা, উদারতা ইত্যাদি বিশেষণগুলো যু্ক্ত করতে হবে। পোশাকী সভ্যতা আর আত্মার ভেতরে লুকিয়ে থাকা সভ্যতা এক নয়। রুচিশীল সুন্দর পোশাক, সুন্দর চেহারা, চাল-চলনে এবং বলনে আপনি যদি আধুনিক হন, তবে আপনারকে বাহ্যিকভাবে সভ্য বলা যেতে পারে কিন্তু ভেতরে যদি আদর্শ, সততা, উদারতা না থাকে তবে আপনাকে সভ্য বলাটা কঠিন। সভ্য মানুষেরা জীবনের প্রতিটি স্তরে একটি সীমা মেনে চলবে। এ সীমাটা সে পাবে ধর্মীয় শিক্ষা, রীতি-নীতি ইত্যাদি পালনের মাধ্যমে। সীমা লঙ্ঘন করলেই আপনি আর সভ্য থাকতে পারবেন না।
পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মে স্বামী স্ত্রীর বন্ধনকে অত্যন্ত পবিত্র গণ্য করা হয়। এ বন্ধনে যারা আবদ্ধ তারা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারেন। দাম্পত্য জীবনে যৌনতাকে প্রতিটি ধর্মই অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু এর বাইরে যারা যৌনকাজে জড়িত হয়ে পড়েন- তাদের সভ্য বলতে পারা যাবে না। কেননা, সভ্যতা হচ্ছে সীমার ভেতরে সুন্দর জীবনের প্রতিশ্রুতি। সীমা না মানলে তাকে সভ্য বলা কতোটা যুক্তি যুক্ত তা বিশ্লেষণ সাপেক্ষ বিষয়।
তারপরেও মানুষ সীমার বাইরে কিছু কাজ করে থাকে। তার সবটুকুকেই আবার অসভ্যতা বলা যাবে কি না এটা নিয়ে মতবিরোধ আছে, থাকবে এবং ছিল।
আমি বিবাহ বহির্ভূত যৌনতা নিয়ে দুটি কথা বলবো। পৃথিবীর আদিকাল থেকেই বিপরীত মেরুর আকর্ষণ এড়াতে না পেরে বিবাহ বহির্ভূত যৌন কর্মে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা রয়েছে। পুরুষদের মধ্যে যারা এ কাজটি করছেন, তাদের কোন নামে ডাকা না হলেও নারীদের পতিতা বলে সমাজ একটি শ্রেণি তৈরি করে দিয়েছে। মজার বিষয় হলো, পুরুষের প্রয়োজনেই যদিও তারা নারীকে এ কাজে ব্যবহার করছে; তথাপি তাদের কোন দায়, দোষ সমাজের মানুষ ধরছে না। পক্ষান্তরে কোন নারী যখন এ সম্পর্কে জড়ায় তখন তাকে নানা রকম লাঞ্ছনা-গঞ্জনা মেখে দিতে কসুর করছে না।
আদিকাল থেকে নারীরা যে যে কারণে এ অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পরেছেন তার কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা গেল:
১. শারীরিক ভাবে পুরুষের চাইতে দুর্বল থাকার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নারীরা এ কাজে বাধ্য হচ্ছেন।
২. অর্থনৈতিকভাবে পুরুষের চেয়ে স্বচ্ছল না থাকায় অভাবের তাড়নায় অনৈতিক পথে অনেক নারী পা বাড়াচ্ছেন।
৩. নিষিদ্ধ কাজের প্রতি কৌতুহল অনেকটা দায়ী।
৪. সঙ্গদোষ ও স্বভাব দোষ
৫. সহজেই চাকচিক্যের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রবণতা।
৬. পরিবেশ পরিস্থিতি।
৭. অতি দ্রুত ধনী হওয়া আকাঙ্খাও
৮. চারিত্রিক দৃঢ়তার অভাব।
৯. পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থা।
১০. দীর্ঘদিন স্বামী সঙ্গ থেকে বঞ্চিত
হয়তো আরও বেশ কিছু কারণ নারীদের এ পথে ঠেলে দিচ্ছে। আমার জানা কয়েকটি পরিবার আছে যারা (মা তার মেয়েকে টাকার জন্য ছেলেদের দিকে ঠেলে দিয়েছে) সমাজের অন্যান্যদের সাথে তাল মেলানোর জন্য, গাড়ি বাড়ি ফ্রিজ এয়ারকুলার ইত্যাদির জন্য অনৈতিক পথে তাদের মেয়ে সন্তানকে ঠেলে দিচ্ছে। অবশ্য এসব পরিবারের অধিকাংশই নিম্নমধ্যবিত্তের যেমন আছে, তেমনি দরিদ্রও আছে। আরেকটি পরিবারকে আমি জানি, যারা তাদের ঘরের সুন্দরী মেয়েটিকে ব্যবসায়িক কাজে টোপ হিসেবে ব্যবহার করছে। পাওনাদার এলে সেই মেয়েটিকেই এগিয়ে দেওয়া হয় কথা বলার জন্য। আর মেয়েটাও এমন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, যে চোখের বাণ মেরে ঘায়েল করে ফেলতে তার সময় লাগে না। ময়লা পরিস্কারের নোংরা ছেলেটিও যাতে বেশি পয়সা না চায়, তার জন্য মেয়েটি এমন হাসি হাসে যেন ছেলেটাকে ভালোবাসে। মেয়েটার এমন ভাব দেখে ইলেকট্রিক মিস্ত্রিও তার ন্যায্য পাওনা ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। অফিসের কর্মীছেলেটির সাথে সে এমন আচরণ করে, যেন মনপ্রাণ সপে দিয়ে ভালোবাসে। আর ছেলেটাও মিথ্যে ছলনায় ভোলে তার বেতন টেতন কিছু না নিয়েই একবেলা খেয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটায়। উপরন্তু বেতন যা পায়, তা ঐ মেয়েটির দিকে চেয়ে সেই পরিবারের পেছনেই টাকাগুলো ভাঙে। তার পর যখন ছলনা ধরা পড়ে, তখন নীরবে চোখের জল নিয়ে ছেলেটা ফিরে আসে আপন পথে। মেয়েটার চোখে জল আসে না, কেননা এটা তার স্বভাব। আর এ স্বভাবটা তাকে গড়ে দিয়েছে তার পরিবার পরিজনেরা। নইলে যে, এ সমাজে ঠাঁট-বাট নিয়ে বেঁচে থাকা যাবে না, এ সত্যটা তারা জানে। অবাক হবেন না, এটি সত্যি ঘটনা বলছি। সময় আসুক, এ বিষয়টি নিয়ে আমার একটি উপন্যাস খুব শিঘ্রি প্রকাশের অপেক্ষোয় আছে। এমন ঘটনা আপনিও হাজারেরও বেশি পাবেন যদি খুঁজেন। আপনার চোখের সামনে যে চিত্র ভেসে উঠবে তার মধ্যে আমার কথার সত্যতা পাবেন আশা করি।
যাই হোক, যে কারণেরই হোক একবিংশ শতাব্দির এ সভ্য সমাজে বাস করেও আমরা আমাদের ভেতরের মানুষটাকে সভ্য বানাতে পারিনি। যার জন্য আমাদের দেশেও এ অনৈতিক কাজটির প্রতি মানুষ ঝুঁকে পড়ছে। কারণ একটাই, কেউ অভাবে এ পথে পা বাড়াচ্ছে, কেউ স্বভাব দোষে। তবে তাদের পরিচয় হচ্ছে পতিতা। অবশ্য প্রগতিশীল সমাজ তাদের ইদানিং যৌনকর্মী বলে আখ্যা দিচ্ছে। পরিচয় যাই দিক, সে মেয়েটি মারা গেলে ধর্মীয় আচার-বিধি অনুযায়ী তাকে সমাহিত করা হবে না এটা কোন সভ্যতা হতে পারে না। আমি এ কথাগুলো বলতাম না। বললাম নিচের এ সংবাদটি পড়ে।
সম্মনিত পাঠক, আপনারাও ওদের কষ্টে কি কষ্ট পাচ্ছেন?
সংবাদটি আমি সংবাদ ২৪ডন নেট থেকে পেয়েছি। আপনাদের মূল সংবাদটি পড়ার জন্য একটি লিংক দিলাম।
http://www.sangbad24.net/?p=90336#!
অভাবে পল্লী ছেড়ে পালাচ্ছে পতিতালয়ের বাসিন্ধারা?
তারিখঃ Aug ২৬, ২০১৩। সময়ঃ ৫:০৪ অপরাহ্ণ
[ অ+ ] /[ অ- ]
potitaমংলা প্রতিনিধি, সংবাদ২৪.নেট : সভ্য সমাজে স্বাভাবিক জীবন যাপনের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত ওরা। মানুষের আড়চোখা দৃষ্টি আর অবহেলাকে সহ্য করে চলছে ওদের জীবন নামের গাড়ী। যার শেষ ঠিকানা অযত্ন অবহেলায় নদীর জলের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাওয়া।
আর দশজন সাধারন মানুষের মত মৃত্যুকালে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের সুযোগ না থাকলেও বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই ওদের। নারী দেহের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিকিয়ে দিয়ে ক্ষুধামুক্ত নিরাপদ জীবনই তাদের শেষ চাওয়া। নানা প্রতিকুলতাকে জয় করে সেই আশায় বেঁচে থাকলেও বর্তমানে প্রকৃতির কাছে ওরা বড় অসহায় হয়ে পড়েছে।
বানীশান্তা যৌনপল্লীর বাসিন্দাদের চলমান জীবন যাত্রার তথ্য সংগ্রহে গেলে তাঁদের ভাষ্যে উঠে আসে এমন চিত্র। সমাজ সংসারে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মুখে বেঁচে থাকার শেষ চেষ্টা হিসেবে তাঁদের ঠাঁই মেলে এই রাষ্ট্র স্বীকৃত অন্ধগলিতে। আবার অনেকে মানুষ রুপী নরপশুদের প্রতারনার ফাঁদে পড়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌনপল্লীকে আপন ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছে। যে যেভাবেই আসুক এই সভ্য সমাজের কাছে মানুষ হিসেবে ওদের মেলেনি কোন স্বীকৃতি। ভদ্রবেশী সাদা পোশাকের এই সমাজের মানুষগুলো ওদের কেবলই নির্দিষ্ঠ সময়ের জন্য খরিদ করা ভোগের পণ্য হিসেবে দেখে-এমনটাই জানালো তারা।
সঙ্গত: কারনে যৌনকর্মিরা প্রানহীন রোবটের ন্যায় নিজেদের উজার করে দিয়ে বিনিময়ে কেবল ক্ষুধা নিবারন করা তাদের কর্তব্য বলে মনে করে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বানীশান্তা যৌনপল্লীতে নানা সমাস্যা থাকলেও আর্থিক দৈন্যতা তাঁদের তেমন একটা স্পর্শ করেনি। কিন্তু গত আইলার পর হতে সেখানে দেখা দিয়েছে চরম অভাব অনাটন। আগের মত আর খদ্দের না হওয়ায় অভাবের তাড়নায় অনেকে পল্লী ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে যারা আছে তাঁদের দিন চলছে অনেকটা অর্ধাহারে অনাহারে।
পল্লীর বর্তমান অবস্থা সর্ম্পকে সেখানকার মহিলা সমিতির সাধারন সম্পাদিকা শাহিদা বেগম জানায়, আইলার পূর্বে সেখানে ২ শতাধিক যৌনকর্মী থাকলেও নানা কারনে বর্তমানে ওই সংখ্যা ১৩০ এসে দাড়িয়েছে। গোটা দাকোপে অর্থনৈতিক দৈন্যতা, মংলা বন্দরে কর্মতৎপরতা কমে যাওয়া, প্রয়োজনীয় দ্রব্যের এই অগ্নিমূল্যের বাজারে যৌনকর্মীদের দিন কাটছে অনাহারে অর্ধাহারে। সব কিছু ছাড়িয়ে প্রকৃতির নিষ্ঠুর আচরণ বর্তমানে তাঁদের দুর্ভোগের অন্যতম কারন। পশুর নদীর অব্যহত ভাঙন তাঁদেরকে করছে গৃহহারা। প্রতিনিয়ত কমে আসছে পল্লীর আয়তন। যৌনপল্লী এলাকার চারপাশে কোন বেড়ী বাঁধ না থাকায় জোয়ারের চাপ সামান্য বাডলেই তাঁদের পানির মধ্যে হাবুডুবু খেতে হয়।
সুত্র মতে তাদের যৌন নিরাপত্তায় অতীতে অনেক এনজিও কাজ করলেও বর্তমানে তাঁরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ফলে সেখানকার যৌনকর্মীদের জীবন এখন অনেকাংশে ঝুঁকির মুখে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেয়েদের এইচআইভি নিরাপত্তায় অতীতে জেজেএস, ওয়ার্ল্ড ভিশন, ব্রাক, সিএসএস, পিএসটি নানা কার্যক্রম পরিচালনা করতো। কিন্তু গত বছর থেকে ওই সকল বেসরকারি সাহায্য সংস্থা তাদের কর্মকান্ড বন্ধ করে দেওয়ায় এখন নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নিজেদের সচেতনতায় একমাত্র ভরসা। সে ক্ষেত্রে সেখানকার বাসিন্দাদের চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি কনডমসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরনের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। বর্তমান নাজুক পরিস্থিতিতে নিজেদের চলাই যেখানে কষ্ট সাধ্য সেখানে তাঁদের পক্ষে সেগুলো কিনে ব্যবহার একেবারেই অসম্ভব এমনটাই জানিয়েছে তারা। সুত্র মতে যৌনকর্মীর পাশ্ববর্তী আমতলা এলাকা থেকে ১০ টাকা ড্রাম মূল্যে পানি কিনে জীবন ধারন করছে বলে জানা যায়। সেখারকার শিশুদের শিক্ষা সুবিধা বলতে এনজিও জেজেএস পরিচালিত একটি মাত্র প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র, তাও আবার নাম মাত্র চলছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে অনেকটা ক্ষোভের সাথে তাঁরা জানায়, যখন ভোট আসে কেবল তখনই তাঁদের চোখে আমরা মানুষ। বাকী সময়টা ডাষ্টবিনের দুর্গন্ধময় বস্তু। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব রায় বলেন, আমি সেখানকার ভাঙনের অবস্থা দেখেছি, তিনি সেখানকার ভয়ানক অবস্থার কথা উল্লেখ করে বলেন আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের এ ব্যাপারে আসলে তেমন কিছু করনীয় নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন পানি সংকট নিরসনে এনজিও উলাসীর সহায়তায় কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
©somewhere in net ltd.