নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কাল আমার পরীক্ষা। কিন্তু এটা আমার কাছে বিশেষ কোন ব্যাপারই না, কারন শুধুমাত্র পরীক্ষার খাতার কয়েকটা পাতাই আমার ভবিষ্যৎ নির্ধারন করতে পারেনা॥ ” —টমাস আলভা এডিসন। –

মোঃ তোফায়েল ইসলাম

মোঃ তোফায়েল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইভটিজিং কীভাবে করে ও কেন একে রোমান্টিকতার বহিঃপ্রকাশ বলা হয়।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১১

ইভটিজিং'শব্দটি আমাদের দেশেছোট-বড় বর্তমানে সবার কাছে অতি পরিচিত একটি শব্দ। রাস্তাঘাটে কিংবা যে কোন জায়গায় প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা এক ধরনের যৌন হয়রানি। এ ঘটনার. শিকার নারীর পরিণতি বিষণ্নতা, বাল্যবিয়ে, পড়াশোনা বন্ধ হওয়া, ঘরবন্দী জীবনযাপন, এমনকি ইভটিজিংয়ের শিকার মানুষটি আত্মহত্যাও করে ফেলে।

সাম্প্রতিকালে ভয়ংকর এ সমস্যার হিংস্র থাবায় ক্ষত বিক্ষত ও অপমানের দহনে জ্বলতে থাকা বহু কিশোরী-তরুণীর আত্মহননের নির্মম পথ বেছে নেয়া এবং সেই সাথে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটেদের হাতে জাতি গড়ার কারিগর মহান শিক্ষক কিংবা মমতাময়ী মা ও অভিভাবকের মৃত্যুতে সৃষ্টি হয়েছে গভীর উদ্বেগ। মজার বেপার হলো,

আমাদের সমাজে ইভটিজিংকে এক ধরনের রোমান্টিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে একে হাল্কাভাবে দেখার হয়.। যা আমাদের সমাজে ইভটিজিংকে করে উৎসাহিত ।

ইভটিজিং কীঃ
----------------------++
বিভিন্ন তথ্য মতে , ইভটিজিং শব্দটি যৌন হয়রানির একটি অমার্জিত ভাষা, যা সৃষ্টি বিবরণে পবিত্র কুরাআন ও বাইবেলে বর্ণিত প্রথম নারী “হাওয়া” ও “ইভ”কে নির্দেশ করে। আমাদের উপমহাদেশে প্রচলিত ইভটিজিং শব্দটির শাব্দিক বাংলা প্রতিশব্দ ‘নারীকে উত্ত্যক্ত করা’।
তবে এর মধ্যেই ‘ইভটিজিং’ শব্দটির গুঢ়ার্থ সীমিত নয়; বরং এটি মূলত এক ধরনের ইউফেমিজম(Euphemism); অর্থাৎ উত্ত্যক্ত করার আড়ালে থাকে যৌনতার নির্লজ্জ প্রবৃত্তি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ইভটিজিংকে বলা হয় সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট। এ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট শব্দটি জন্ম আমেরিকায়। শব্দটি প্রথম পরিচিতি পায় ১৯৭৫ সালের দিকে। In Our Time Memoir of a Revolution (1999) গ্রন্থে সুসান ব্রাউনমিলার উল্লেখ করেন, ১৯৭৫ সালে কর্নেল অ্যাস্টিভিস্টরা সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট শব্দটি উদ্ভাবন করেন।

আমাদের সমাজে অনেকের মধ্যেই ইভটিজিংয়ের মতো অপরাধকে হাল্কাভাবে দেখার মনোভাব কাজ করে। এজন্য এতদিন ইভটিজিং বা যৌন হয়রানির ঘটনায় আত্মহত্যা না ঘটলে তেমন কেউ উচ্চবাক্য করত না। কিন্তু কেন? সে প্রশ্ন আমি করব না। অথচ এই ইভটিজিংয়ের কারণেই রিমি, মীম, তৃষা, পিংকি, রানী নাম না জানা অসংখ্য মেধাবী মুখ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এজন্য দায়ী কে?

ইভটিজিং-এর অন্তর্ভুক্ত কাজঃ**
-----------------------------------------------

ইভটিজিং এক ধরনের নারী নির্যাতন। যা স্কুল-কলেজগামী ছাত্রী, শিক্ষিকা, কর্ম পথে যাতায়াতকারী কর্মজীবী নারীসহ প্রতিটি নারীই তার চলাচলের প্রায় সর্বত্রই কোনো-না-কোনোভাবে ইভটিজিং-এর শিকার হয়ে থাকেন।

বাচনিক- অশালীন মন্তব্য, শিস বাজানো হুমকি প্রদান, , উদ্দেশ্যপূর্ণ যৌন আবেদনময়ী গান গাওয়া, অবৈধ যৌন সম্পর্কের দাবি বা অনুরোধ;
অবাচনিক- লম্পট চাহনী, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, উস্কানিমূলক তালি বাজানো, যৌন অর্থবাহী ছবি বা ভিডিও দেখানো, অস্বস্তিপূর্ণ অপলক দৃষ্টি, পিছু নেয়া, মোবাইলে কুরুচিপূর্ণ ম্যাসেজ পাঠানো বা মিসকল দেওয়া, উড়ন্ত চুমুর (Flying kiss) ইঙ্গিত, চলার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি; শারীরিক- ঘাড় ও কাঁধে হাত দেয়া, গা ঘেঁষে দাঁড়ানো, জড়িয়ে ধরা চুমু খাওয়া, শারীরিক সম্পর্কের মতো অপ্রত্যাশিত যৌনাকাঙ্খার ব্যবহার, শরীরে ধাক্কা দেয়া, ব্ল্যাকমেইল বা চরিত্র হননের উদ্দেশ্যে স্থির বা চলমান চিত্র ধারণ করা ইত্যাদি।

ইভটিজিং-এর কারণসমূহ :**
-----------------------------------------
ইভটিজিং আমাদের সমাজে ভয়াবহ ক্যান্সার রোগের মতো প্রকট আকার ধারণ করেছে। গ্রাম-শহর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এর ব্যাপকতা। এর কারনে বেড়েছে নারীর আত্মহনন। দেশব্যাপী ব্যাপকতর এ ইভটিজিংয়ের পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে-

*১। নৈতিক শিক্ষার অভাব
*২। পাশ্চাত্য ও ইন্ডিয়ান সংস্কৃতির প্রভাব
*৩। পর্নগ্রাফী, অশ্লীল সিডি, অশালীন টিভি প্রোগ্রাম, ইন্টারনেট, মোবাইলের সহজলভ্যতা।
*৪। নেশার সামগ্রীর সহজলভ্যতা
*৫। মেয়েদের অশালীন পোশাক
*৬। বাবা-মায়ের ব্যস্ততা ও উদাসীনতা
*৭। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান না থাকা।
*৮। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পারিবারিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়
*৯।-নারীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিভঙ্গির অভাব।
*১০। স্যাটেলাইট টিভির অবাধ অনিয়ন্ত্রিত প্রদর্শন

ইভটিজিং-এর প্রতিকারসমূহ : **
--------------------------------------*----
*১। নৈতিক শিক্ষার ব্যাপক প্রচার ও প্রসার ঘটানোর জন্য সকল স্তরের কারিকুলামে ধর্মীয় শিক্ষার সংযোজন অত্যাবশ্যক।
*২। পাশ্চাত্য ও ইন্ডিয়ান সংস্কৃতির অনুপ্রবেশে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো।
*৩। পন্যগ্রাফী ও অশ্লীল সিডি তৈরি ও বিক্রয়ের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করা।
*৪। নেশার সামগ্রী তৈরি ও আমদানিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা রাখা যাতে তা যুব সমাজের নাগালের বাইরে থাকে। এ ব্যাপারে দরকার কঠোর আইন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সক্রিয়ত
*৫। মেয়েদের শালীন পোশাক অর্থাৎ ইসলামী অনুশাসন মেনে চলায় অভ্যস্ত করে তোলা।
*৬। সন্তান গঠনের ব্যাপারে বাবা-মায়ের সচেতনতা, নৈতিক শিক্ষা প্রদান ও সঙ্গদান।
*৭। অপরাধী যে-ই হোক না কেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং আইনের কোন ফাঁক গলিয়ে কোন অবস্থায়ই যেন অপরাধীরা বের হয়ে না আসতে পারে সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা বিধান করা।

একটি শিশু অপরাধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে না। পরিবার সমাজ এবং পরিবেশ তাকে অপরাধী হিসেবে গড়ে তোলে। ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার অভাব ক্রমান্বয়ে তাকে বল্গাহীন করে তোলে। তাই সমাজের সকল স্তরের জনগণকে এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার এই যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা এখন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের বলিষ্ঠ ভূমিকাই পারে পতনোন্মুখ জাতিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে
লেখক
মো: তোফায়েল ইসলাম
সাংবাদিক

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৪

মহা সমন্বয় বলেছেন: সুন্দর হইছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.