নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ

তাহমিনা আকতার

০০৭

তাহমিনা আকতার › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রেমে অন্ধ হবেন না , এক চোখ খোলা রাখুন ।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৩১


ভালবাসা ফ্যাক্ট -২
নুরীর বয়স তখন ২৪ ল’তে পড়ে ঢাকার একটি নামী প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ।ঢাকায় আছে প্রায় ৪ বছর। ময়মনসিংহ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে পড়াশোনা করছে ,রেজাল্ট ও বেশ ভাল । প্রগতিশীল ,আধুনিক, মেয়ে।অসম্ভব রূপবতী মেয়ে একবার দেখলে চোখ ফেরানো কঠিন ।বছর খানেক হল ব্রেকাপ হয়েছে তার পর আর কোন সম্পর্কে জড়ায়নি সে।কিছুদিন হল ফেসবুকে এক ছেলের সাথে পরিচয় হল নাম সোহেল বেশ হ্যান্ডসাম আর সেই লেভেলের পারসোনালিটি যে কোন মেয়ের স্বপ্নের পুরুষ হওয়ার সব রকম যোগ্যতা তার আছে । বাড়ি সিলেটে হলেও সেখানে এখন আর কেউ থাকে না, আর সে ব্রিটিশ নাগরিক । মা ও এক ছোট ভাইসহ সবাই ইংল্যান্ডে থাকে।কিছুদিনের মধ্য ফোন নাম্বার দেয়া নেয়া , তারপর ভাইবার,হোয়াটস আপ আর স্কাইপে অনুভুতি শেয়ার করা ঘুমাতে যাওয়ার আগে পরে দেখাদেখি ভাললাগা অতঃপর ভালবাসা শুরু । দিন যায় , মাস যায় ভালবাসার গভীরতা ও বাড়ে।ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে মন থেকে শরীরে আর শরীর ভাঁজ, বাঁক দেখানোতেই তৃপ্ত থাকতে হয় দু মেরুর দুজন কে । সামনের মাসে ১৫ তারিখে সোহেল দেশে আসবে তারপর তাদের বিয়ে ... আর মাত্র কটা দিন, সোহেলের মা এ বিয়েতে রাজি না তাই ও একাই আসবে ।নুরীর পড়াশোনা ও ততদিনে শেষ ।সোহেল অবশ্য নুরিকে না করে রেখেছে ওর বাবাকে কিছু না জানানোর জন্য সারপ্রাইজ দিবে বলে। এর মধ্য নুরি একটি দুই বেড রুমের ছিমছাম একটি বাসা নিল আর মনের মত সাজাতে লাগল... গুনতে গুনতে কাঙ্খিত দিন চলে এল ...নুরি এয়ারপোর্টে যেতে চেয়েছিল সোহেল ওকে আসতে মানা করে দিল বলল ওর তাতে কষ্ট হবে ও নিজেই চলে আসবে বাসায়। ঢাকায় এসে আগে হোটেলে উঠবে তারপর বিয়ে করে বাসায় উঠবে, বিয়ের আগেই সে এক বাসায় থাকতে চায় না ।
রাতে নুরীর সাথে দেখা করার জন্য সোহেল একটি রেস্টুরেন্টে বসে অপেক্ষা করছে ... ভীষণ মন খারাপ । নুরি কিছু বুঝতে না পেরে মন খারাপের কারণ জানতে চাইল। সোহেল যা বলল তা শুনে নুরীর ও বেশ মন খারাপ হল । বিয়ের জন্য ৩০ ভরি গোল্ড , প্রায় ১ লাখ টাকার কসমেটিক কাপড় চোপড় সহ লাগেজ টা হারিয়ে ফেলেছে এয়ারপোর্টে। তো কি আর করা খুব সাধারণভাবে ১৭ তারিখ সকালে নুরির দুজন বন্ধু আর ৩ জন বান্ধবীর উপস্থিতিতে একজন কাজী ডেকে বিয়ে পড়ানো হল ।বিয়ে রেজিস্ট্রির প্রসঙ্গ আসতেই সোহেল বলল সেটা নুরীকে নিয়ে যখন সিলেট যাবে তখন ওর চাচাদের কে সামনে রেখে ওখান থেকে করে নিবে । সবাই তাই মেনে নিল। ১ মাসের জন্য সোহেল এসেছিল দেখতে দেখতে তা পার হয়ে গেল । নুরীর বাবা মা সবাই অনেক খুশী জামাই দেখে ।ওরা এর মধ্যঘুরাঘুরি করল প্রচুর আর এত ব্যাস্ত সময় পার করল যে বিয়ে রেজিস্ট্রি করার কথা কারো ই মনে রইল না । যাওয়ার সময় সি অফ করতে চাইলে সোহেল বলল তোমার আর কষ্ট করে যাওয়ার দরকার নেই জানু ...তুমি এয়ারপোর্টে গেলে তোমাকে রেখে যেতে আমার মন চাইবে না । অশ্রুভেজা নয়নে পতিব্রতা নুরী স্বামীকে বিদায় দিল ।নুরি গ্রামে আছে ১৫ দিন কিন্তু সোহেলের কোন ফোন নেই ।একদিন ওর বন্ধু রাজু ফোন করে বলল সোহেল কে বাচ্চা সহ এক মহিলার সাথে মার্কেটে দেখেছে গাড়ি থেকে নামতে । নুরী এ কথা কিছুতেই বিশ্বাস করল না ।
প্রায় ১ মাস পার হয়ে যাওয়ার পর ও যখন সোহেলের খোঁজ পাচ্ছিল না তখন সে রাজুকে গিয়ে ধরল ওই মহিলার সাথে দেখা করার জন্য ভাগ্যিস সেদিন রাজু সে ওদের পিছুপিছু গিয়ে বাড়ি চিনে এসেছিল ।দুজন মিলে তখন সে বাড়িতে গেল ।গুলশানে বিশাল বাড়ি , অনেক কষ্ট করে ভিতরে ঢোকার অনুমতি পেল।সোহেলের সাথে বাচ্চা সহ সুন্দরি এক মহিলার ছবি বাসার বসার রুমে দেখতে পেয়ে নুরির হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল । বাকশক্তি যেন হারিয়ে ফেলেছে । রাজু ওকে ধরে নিয়ে সোফায় বসাল একটু পর সোহেল সেই সুন্দরি মহলাকে নিয়ে রুমে আসল এবং খুব শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করল কাকে চায় , কেন এসেছে ভাবটা এমন যেন নুরিকে সে কোন দিন দেখেনি । তুমি আমার সাথে এমন প্রতারণা কেন করলে সোহেল ?আমার জীবনটা কেন নষ্ট করলে ... সামনে বসা থাকা মহিলা বললেন আপনি কি চান ?
আপনি কে ?
আমার বাড়ি আমার ঘর ... আপনি আমকে বলেন কে আমি !!!
সোহেল আপনার কি হয় ?
সোহেল ? সে কে ?
আপনার পাশে বসা লোকটির কথা বলছি ...
ওর নাম তো সোহেল নয় ওর নাম লিমন আর আমি ওর স্ত্রী মিলা। দশ বছরের সংসার আমাদের ।বাচ্চাদের নিয়ে ছুটিতে বেড়াতে এসেছি ১ মাস হল ।
এবার যেন আর অবাক হবার পালা নুরির তবুও সে ভেঙ্গে না পড়ে বলল ওর সাথে আমার বিয়ে হয়েছে ২ মাস আগে ।
মহিলা বরক্ত স্বরে বলল, আপনার মত মেয়ে প্রায় ই আসে শেষ পর্যন্ত প্রমাণ এর অভাবে কেটে পড়ে তা আপনার কাছে নিশ্চয়ই প্রমাণ আছে ?
সত্যি ই তো তার কাছে তো কোন প্রমাণ নেই ... বিয়ে ত রেজিস্ট্রি ই হয় নি এমনকি ছবি তোলা পছন্দ নয় বলে বিয়েতে ও কোন ছবি উঠানো হয় ... আইন নিয়ে পড়ে সে কিভাবে এতগুলো ভুলকাজ করে ফেলল !! এমনকি স্কাইপে ভিডিও কল করা ছাড়া কোন ছবি পর্যন্ত সে তাকে দেয়নি ... এখন সে কিভাবে লড়বে এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ?
তারপর ও সে সোহেলের সাথে ২ মিনিট একান্তে কথা বলার জন্য মহিলাকে অনুরোধ করল তিনি রাজি হলেন ...
সোহেল তুমি আমকে যদি অধিকার না দাও তবে আমি তোমার বিরুদ্ধে মামলা করব
করতে পার তাতে খুব বেশি লাভ হবে না , কারণ তোমার কাছে কোন প্রমান নেই , আর আমার কাছে স্কাইপে ভিডিও গুলো সব রেকর্ড আছে সব আমি নেটে দিব আর তাতে যদি না দমে যাও তবে মানহানির মামলা করব আর জান তো থানায় ১ লাখ টাকা দিলে তোমার মত মেয়েকে ওরা রাস্তার মেয়েদের নামের লিস্টে ফেলে দিবে ।নিজের ভাল যদি চাও তো এসব ঝামেলায় না জড়ানো ই ভাল।তুমি বুদ্ধিমতি আইনজীবী ভাওল করেই জান এসব তাও ধর তুমি সব প্রমাণ করলে তখন ১ লাখ টাকা কাবিন করে বিয়ে করে সাথে সাথে ই আবার ডিভোর্স দিব ...এবার ভেবে দেখ এত ঝক্কি ঝামেলা পার করে সবাইকে নিজের সম্পর্কে এসব জানাতে চাও কিনা । নুরি কিছু একটা বলতে চাইছিল এমন সময় মিলা এল।জিজ্ঞেস করল কি চায় ও... কি আর চাইবে টাকা চায় আর না দিলে মামলার ভয় দেখাল পুরান ক্যাচাল... এর পর সোহেল জোরে জোরে দারোয়ান কে ডেকে বলতে লাগল এ টাইপ লোকজন কে যদি আবার বাসায় আনে তবে ওকে চাকরি থেকে বাদ দিয়ে দিবে।এদের জ্বালায় জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেল ।
মিলা ও বলতে লাগল কিছুদিন পর পর যে এরকম ছোটলোক ধান্ধাবাজ টাইপ মেয়েরা যে কোথা থেকে আসে বিরক্ত করতে বুঝি না...বড়লোক দেখলেই ঝাপিয়ে পড়ে টাকা আদায় করার জন্য... এর পরের কথাগুল নুরি আর শুনতে পায় নি তার চোখের পানিতে ভিজে যাচ্ছে দু গাল ...

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫৫

রংহীন-পানি বলেছেন: অতি লোভে তাতি নষ্ঠ .... সবার ক্ষেত্রে এক নয়।
সব কিছুর শুরুতে বিচার বুদ্ধি বিবেচনার বিকল্প নেই...হোক না সেটা ভালোবাসা...।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.