![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন খারাপ হলেই আমি লিখতাম। বলা যায় লিখতে বসতাম কিংবা বাধ্য হতাম! মনে হত যাবতীয় দুঃখ, অপ্রাপ্তি বুঝি লিখে দূর করা যায়। তখন আমি ডায়েরী লিখতাম।কখনও আবার পুরাতন দিনের কথা গুলো পড়তে বসতাম। কি চমৎকার সব অনুভূতি! এতদিনে কত কিছু বদলে গেছে, লেখার ধরন-আমার হাপিত্যেশ; আরও কত কি! আবার বহুদিন পর লিখতে বসে প্রথমেই দিন গুনতাম ঠিক কতদিন পর আজ ডায়েরী আমার সামনে, ঠিক কত দিন আমি এমন দুঃখ বোধ করিনি কিংবা ডায়েরী নিয়ে বসার প্রয়োজনও বোধ করিনি। কত দিন, ঠিক কতদিন? গুনতে গুনতে মনে হত হাতের আঙ্গুল কিছু বেশী হলে মন্দ হত না! অন্তত মাসে ৩০ দিনের জন্য ৩০টা আঙ্গুল! তাতে গননায় ভুল তো হত না!! আর এ তো এমন নয় যে মন খারাপ শুধু আমার হয়? মন খারাপ তো সবারই হয়, তাই সবাই বুঝি ওমন ৩০টা আঙ্গুল চায়! এখন এই সময়ে এসে মনে হয় শৈশবের একটা সময় নষ্ট করেছি কিংবা করানো হয়েছে পচা দুঃখ দিয়ে। এখানেও সেই মন খারাপের গল্প। কতই না বাড়ির সামনের মাঠের কোনে ছুটে যেতাম মন খারাপ করে! কিন্তু সেই মন খারাপের একটা অংশ বোধহয় দূর করে দিয়েছিলেন একজন মাতৃতুল্য দাদী, তার উৎসাহে মনে হত বেশ আছি আমি। কিন্তু আজ যেহেতু মন খারাপের গল্প, আজ তাই কোন আনন্দের কথা বলব না, আনন্দের আলাদা দিন থাকে, আজ মন খারাপের দিন।
কোন একদিন আমি আমার সন্তানকে বলব, তোর যা ইচ্ছে হয় শিখ, কোন প্রতিযোগীতায় তোকে প্রথম হতে হবে না কিংবা প্রতিবেশীকে দেখানোর জন্যে লাগবে না কোন নামি স্কুলে পড়া, তোর ডায়েরীতে কোন মন খারাপের গল্পের স্থান হবে না। কত শত কারনে মন খারাপ হত, কোনদিন হয়ত এলাকার বন্ধুর সাথে ঝগড়া কিংবা ম্যাচ হেরে যাওয়া। তখন মন খারাপ হলেই চলে যেতাম মাঠের কোনে সূর্যাস্ত দেখতাম। প্রতিদিন আমার দাদীজান বাড়ির উঠানে থাকতেন, তার কাজ ছিল যাবতীয় সবজি গাছের পরিচর্যা করা। নিজ হাতে প্রতিটা চারা তার রোপন করা। হয়ত মন খারাপ হলে সেদিন গাছে পানি দিয়ে দিতাম, আমার মন খারাপ কিন্তু তাতে তাদের তো কোন ভাগ নেই-থাকার কথাও না। এভাবে সন্ধ্যা নেমে আসত, আযানের শব্দে বুঝতাম ঘরে ফেরার সময়। সারাটা দিন চলে যাওয়ার কষ্ট আরো গাঢ় হত আযানের করুন শব্দে। কেমন জানি একটা অতৃপ্তি বোধ হত। সেই অতৃপ্তি নিয়েই ঘরে ফেরা।
সবার নিজস্ব কিছু মন খারাপের গল্প থাকে। আবার সময়ে মন খারাপের গল্পের ভুমিকা বদলায়,গল্প বদলায়। কিন্তু মন খারাপের গল্প না থাকলেও কেমন যেনো অপূর্ন ভাব থেকে যায়, তাই আমি চাই মন খারাপের গল্প লিখে যেতে; সময়ে-অসময়ে। শেষ কবে কেঁদেছেন সে কথা মনে থাকলেও শেষ কবে হেসেছি সে কথা মনে নেই, কারন মন খারাপের গল্প যে দূর্লভ !! আনন্দের থেকেও বেশি !!!
____________________________________________________
আশরাফুল মাহমুদ
©somewhere in net ltd.