নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আত্মনাং বিধিই হোক যাপিত জীবনের প্রেরণার উৎস।

তাজা কলম

সেই কবে ... সভ্যতার আদিলগ্নে সূচিত হয়েছিল নিজেকে জানার অদম্য বাসনা। গ্রিক দর্শনের ‘know thyself’ কিংবা ভারতবর্ষের প্রাচীন দার্শনিকদের, “আত্মনাং বিধি”–র উত্তর আজো মেলেনি লাখো লাখো বছরের মানব ইতিহাসে। এই আত্মঅন্বেষণই তাজাকলমের জীবন তপস্যা। তবে নিজেকে জানার সাধনা বৈরাগ্যের পথে নয় বরং মানুষের সাথে থেকে, মানুষকে ভালোবেসে, মানুষের মাঝেই তাজা কলম খুজেঁ পেতে চায় আপন অস্তিত্বের ভূভাগ। তবুও তাজা কলম পৃথিবীতে এক গৃহী সন্নাসী কারন সে নিয়ত খুজেঁ ফিরছে শূণ্য খেকে আসা এবং শূণ্যতেই বিলীন হওয়া মানব জীবনের গুঢ় রহস্য। বিশেষ অনুরোধ: এ ব্লগে প্রকাশিত লেখাগুলো কপিরাইটের আওতাভূক্ত । লেখকের অনুমতি ছাড়া এখানে প্রকাশিত কোন লেখা কিংবা লেখার অংশ বিশেষ কেহ অন্য কোথাও প্রকাশ করলে বেআইনি কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রয়োজনে লেখকের সাথে যোগাযোগ করুন।

তাজা কলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপেক্ষা

০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:০০

লালমাটিয়া মাটির মসজিদ রোডে একতলা বাংলোবাড়ি। আশেপাশের সব প্লটেই ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে সুউচ্চ আবাসিক অট্টালিকা, নগরবাসীর কাছে যা অ্যাপার্টমেন্ট বলেই পরিচিত। কংক্রিট জঙ্গলের ভিড়ে গাছ-গাছালি ঘেরা আধাবিঘা জমির উপর হঠাৎ সবুজ এ বাড়িটি যেন কালের সাক্ষী। তবে দূর্মুখরা বলাবলি করে, এ বাড়িও দেখিস ... বুড়ো পটল তুলুক আগে!

এ মূহুর্তে বাড়িটির বসার ঘরে চলছে পারিবারিক মিটিং। সত্তরোর্ধ বাবা রিটায়ার্ড সরকারী আমলা আর তাঁর তিন ছেলে। বড় ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, মেঝ ডাক্তার আর সবার ছোট আর্কিটেক্ট। সরকারী আমলা হয়েও সরকারী বরাদ্দ এই প্লটটি ছাড়া তেমন সহায় সম্পত্তি আর কিছু করতে পারেননি। বাড়িটাও করেছেন ধীরে ধীরে, প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা আর হাউজ বিল্ডিং-এর লোন নিয়ে। তবে এ নিয়ে ভদ্রলোকের কোন আফসোস নেই, বরং সৎ থাকার কারণেই যে তিনি তার ছেলেদের উচ্চশিক্ষিত করতে পেরেছেন এ তার দৃঢ় বিশ্বাস।

ছোট ছেলেই প্রসঙ্গ তোলে। হাতে ধরা কাগজটি দেখিয়ে বলে, "বাবা, ডিজাইনটা দেখো ..."
-কীসের ডিজাইন?
-অ্যাপার্টমেন্টের। রাজুক দশতলা পর্যন্ত করার অনুমতি দিবে জানতে পেরেছি। আধাবিঘা জমির উপর ডিজাইনটা বেশ ইচ্ছেমতো করা গেছে। নিজেদের জন্য রাখা অ্যাপার্টমেন্টগুলো এক ইউনিট করে করানোর কথা ভাবছি। বেশ খোলামেলা, ডিজাইনও করেছি মডার্ণ অ্যাপ্রচে ...
- কী অ্যাপার্টমেন্ট? এই বাড়ি ভেঙ্গে? গাছগাছালি কেটে! বাগান তছনচ করে!
এবার হাল ধরে মেজো ছেলে, "বাবা, এ সব ইমোশনের কি কোন মানে আছে! অ্যাসেট, ইস্টার্ণ হাউজিং সহ সব বড় বড় রিয়েল অ্যাস্টেটের সাথে কথা হয়েছে। ওরা ৬ঃ৪০ শেয়ারে কাজ করতে রাজি হয়েছে। এছাড়া সাইনিং মানি হিসেবে এককোটি টাকা এবং কনস্ট্রাকসন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের বাড়ি ভাড়া চালানোর চুক্তিও করবে। এ রকম সুযোগ কিন্তু পরে আর পাওয়া যাবে না বাবা।"

বাবা এবার ভীষণ ক্ষেপে উঠেন , চেচিয়ে বলেন, " জানিস, তোদেরকে যেমন আমার রক্ত পানি করে তিলে তিলে গড়ে তোলেছি, এবাড়িটাকেও সেভাবে.. বাড়িটির প্রতিটি ইট জানে এ কথা.. আর তাছাড়া, বাগানে ঐ যে শুয়ে আছে তোর মা, দেখছে তোদেরকে আর আমাকে .. এ বাড়ি ভেঙ্গে তোরা করতে চাচ্ছিস অ্যপার্টমেন্ট, মধ্যবিত্তের বস্তি!"

মিটিং ভেঙ্গে যায়। বাবা গজ গজ করতে করতে ঢুকে পড়েন বেডরুমে।

প্রফেসর বড় ছেলে বাস্তববাদী এবং বেশ প্রাগমেটিক। চাপাস্বরে ভাইদের বলে, " বাবাকে কেন তোরা মিছেমিছি কষ্ট দেস , এতো তাড়াহুড়ার কি আছে, অপেক্ষা কর্, অপেক্ষা কর্ আর কটা বছর..."

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.