নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিলেবাসে ট্রান্স মতবাদ: বৈশ্বিক কুফরের এক নিকৃষ্ট এজেন্ডা, সমাধান কোন পথে?

১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩

অভিশপ্ত শয়তান ইবলিস আল্লাহ তায়ালার সাথে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার যে প্রতিজ্ঞা করেছিল, তা সে তার অনুসারীদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
শয়তান প্রতিজ্ঞা করেছিল এভাবে,
وَلَأُضِلَّنَّهُمْ وَلَأُمَنِّيَنَّهُمْ وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُبَتِّكُنَّ آذَانَ الْأَنْعَامِ وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ وَمَن يَتَّخِذِ الشَّيْطَانَ وَلِيًّا مِّن دُونِ اللَّهِ فَقَدْ خَسِرَ خُسْرَانًا مُّبِينًا
আমি অবশ্যই তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে (মিথ্যা) আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টির আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে সুস্পষ্ট ক্ষতিতে নিপতিত হয়।
(সুরাহ নিসা-১১৯)
.
ট্রা*ন্স মতবাদ ছড়ানোর মূল এজেন্ডা হচ্ছে, এর আড়ালে কাফির ও তাদের সহযোগীরা ঘৃণ্যতম অপকর্ম সমকামিতার প্রসার ঘটাতে চায়।
এ ছাড়াও একজন নারী পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ করা কিংবা একজন পুরুষ নারীর সাদৃশ্য গ্রহণ করা হাদীসের ভাষ্যমতে সম্পূর্ণ ঘৃণ্য, হারাম ও অভিশপ্ত কাজ।
.
বৈশ্বিক কুফরি শক্তি এই এজেন্ডা বাস্তবায়নে যাদেরকে সর্বাত্মকভাবে কাজে লাগায়, তারা হচ্ছে, বিভিন্ন এনজিও, ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া, কথিত মানবাধিকার সংগঠন এবং সেক্যুলার-লিবারেল সরকার।
.
এনজিওর মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে কাজ করে, মিডিয়া এটিকে স্বাভাবিকীকরণ করে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর পক্ষে জনমত তৈরি করে। অতঃপর চূড়ান্তভাবে অনৈসলামিক সরকারগুলো তা বাস্তবায়ন করে।
.
মুসলিম দেশগুলোতে বৈশ্বিক কুফরি শক্তি ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের পাশাপাশি আরো নতুন নতুন ফ্রন্ট খুলছে। ট্রা*ন্স মতবাদ হচ্ছে তাদের তেমনই একটি ফ্রন্ট। এসব হাতিয়ারের মাধ্যমে তারা ইসলাম নির্মূলের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই ঘৃণ্য ট্রা*ন্স মতবাদের মাধ্যমে শুধু ইসলামের মূল্যবোধ বিনষ্ট হবে তা নয় বরং মানব জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
.
৯২% মুসলিম জনগোষ্ঠী একটি দেশের সিলেবাসে ট্রা*ন্স মতবাদের সপক্ষে গল্প সন্নিবেশিত করা কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। আমাদের অসচেতনতার গভীর নিদ্রা আমাদেরকে খাদের কিনারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
.।
সমাধান কোন পথে ?
.
বৈশ্বিক কুফরি শক্তি ও স্থানীয় তা/গু/তী রাষ্ট্রব্যবস্থাই হচ্ছে সকল কুফর ও অনাচারের হোতা। তারা একটার পর একটা কুফরি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই থাকবে।
.
এসব সমস্যা সমাধানের দুটো স্তর আছে।
১. যে সমস্যাটা তৈরী হলো সেটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যেন জনগণের নীরবতার সুযোগে সরকার সেটাকে সমাজে স্বাভাবিক করে ফেলতে না পারে, আইনগত বৈধতা দিয়ে ফেলতে না পারে। এটা খুবই জরুরী৷ সময়ে সময়ে মুসলিম জনগণ আন্দোলন করে বিভিন্ন জঘণ্য এজেন্ডার বাস্তবায়ন কিছুটা হলেও পিছিয়ে দিতে পেরেছেন, বাস্তবায়ন ঠেকানো না গেলে কমপক্ষে সামাজিকভাবে সেটাকে ঘৃণ্য করে তুলতে পেরেছেন, স্বাভাবিক হতে দেন নি। তাই এ ধরনের আন্দোলনগুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
.
২. টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের জন্য বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক কুফরী ব্যবস্থার অধীনতা থেকে মুক্তি অর্জন করা। এটা ছাড়া স্থায়ী, টপকসই ও শতভাগ সমাধান সম্ভব না।
আমরা যদি শুধু উক্ত এজেন্ডার পিছনেই আন্দোলন করি, কিন্তু আসল শত্রুকে চিনতে ও পরাজিত করতে চেষ্টা না করি, তাহলে আমাদেরকে এক এজেন্ডার পর আরেক এজেন্ডার পিছনে আন্দোলন করতে হবে। তারা আবার নতুন কোনো ঘৃণ্য মতবাদের প্রসার ঘটাবে। এ ধারাবাহিকতা শেষ হবেনা।
.
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন,
وَلَا يَزَالُونَ يُقَاتِلُونَكُمْ حَتَّىٰ يَرُدُّوكُمْ عَن دِينِكُمْ إِنِ اسْتَطَاعُوا.........
অর্থ: তারা (কাফিররা) সর্বদাই তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত না তারা তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন থেকে সরিয়ে (মুরতাদ বানিয়ে) দিতে পারে, যদি তারা সক্ষম হয়।...... (সুরাহ বাকারা-২১৭)
.
ট্রা*ন্সসহ সকল কুফরি ও অপবিত্র এজেন্ডার বিরুদ্ধে সচেতনতা ও আন্দোলনের পাশাপাশি বৈশ্বিক কুফরি শক্তি এবং স্থানীয় তা/গু/তী রাষ্ট্রব্যবস্থার ব্যাপারে সচেতনতা অতীব জরুরী। নতুবা আল্লাহদ্রোহী তা/গু/তী ব্যবস্থা ধারাবাহিক কাফিরায়ন প্রক্রিয়ার নতুন নতুন আয়োজন সংযোজন করতেই থাকবে।
.
কাদিয়ানীদের কাফির ঘোষণার আন্দোলন, হেফাযতের ১৩ দফার আন্দোলন সহ আরো অসংখ্য ইসলামবিরোধী আন্দোলন একদিকে হয়েছে, এসব আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ফলাফলও আছে, কিন্তু কোনো আন্দোলনের দাবী-দাওয়াগুলোই এই জাহেলী ব্যবস্থা মেনে নেয়নি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক তা/গু/তী শক্তি এখন নতুন এবং ভাষায় প্রকাশ করার অযোগ্য এমন ঘৃণ্য অপবিত্রতা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে।
.
তাই মনে রাখা জরুরী, এসবের টেকসই ও স্থায়ী সমাধান তখনই হবে, যখন আমরা মূল কুফরি শক্তিকে চিনে তার বিরুদ্ধে শরিয়সম্মত পন্থায় আন্দোলন করে তাকে উৎখাত করতে পারবো।
.
কুফরি,শিরক ও সকল ফিতনা নির্মূলে আল্লাহর ইরশাদ হচ্ছে,
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
অর্থ: আর তাদের বিরুদ্ধে কি*তা*ল করতে থাকো, যতক্ষণ না ফিতনা (কুফরি,শিরক ও অন্যান্য) নির্মূল হয়ে যায় এবং দ্বীন পরিপুর্ণভাবে আল্লাহর জন্য হয়ে যায়। (সুরাহ আনফাল-৩৯)
ই*মা*র*তে ইসলামি আ*ফ*গা*নি*স্তান যদি মূল শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই না করে শুধু ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনে নিজেদের সমস্ত কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতো, তাহলে তার ফলাফলও হয়তো কুফরী ব্যবস্থার অধীনে এখনও বন্দী হয়ে থাকা আরো দশটা মুসলিম অধ্যুষিত ভূমির মতোই হতো। কিন্তু তাঁরা যে কোনো সমস্যার প্রাথমিক সমাধানের পাশাপাশি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কুফরি শক্তিকে চিনেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছেন। এজন্য আল্লাহ তাআলা তাদেরকে উপযুক্ত ফলাফল দান করেছেন।
.
সুতরাং ট্রা*ন্স ইস্যুর মাধ্যমে আমরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কুফরি শক্তির চেহারা উন্মোচন করি এবং মুসলিম উম্মাহকে এই শত্রুর সকল ঘৃণ্য ও অপবিত্র পরিকল্পনার ব্যাপারে সচেতন করি। কারণ, যেকোনো লড়াইয়ের পূর্বশর্ত হচ্ছে- শত্রুকে চেনা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.