নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসুন শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪২



যদি অস্ট্রেলিয়ান ক্রুসেডাররা কানাডিয়ান ক্রুসেডারদের সাথে মিলে ইসলাম ধ্বংসের মিশনে নামতে পারে, যদি আমেরিকান ক্রুসেডাররা ব্রিটিশ ক্রুসেডারদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইরাক আফগানে মুসলিম নিধন অভিযান চালাতে পারে, যদি ইসরাইলের ইয়াহুদীরা ভারতীয় মুশরিক এবং পশ্চিমা ক্রুসেডারদের সহায়তা নিয়ে সমগ্র আরব অঞ্চলে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে পারে, তাহলে আমরা এক আল্লাহর বান্দা হয়ে, এক রাসুলের উম্মত হয়ে কেন নিজেদের ভেতরকার পারস্পরিক মতভেদ ভুলে এক কালেমার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনা?
.
মুশরিক এবং কুফফারদের মাঝে শত শত মতপার্থক্য এবং দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র শত্রু এক হওয়ার কারণে সবাই একে অপরের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। অথচ আমাদের মুসলিমদের মাঝে শত শত মিল থাকা স্বত্বেও শাখাগত কিছু মত পার্থক্যের কারণে শত শত দলে বিভক্ত হয়ে বসে আছি। আমাদের সবার শত্রু তো এক ও অভিন্ন, আমাদের সবার লক্ষ্যও তো এক ও অভিন্ন।
.
আমাদের সবার লক্ষ্য তো একটাই, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান কায়েম করা এবং জালেমদের ধ্বংস করে মাজলুমদের ইনসাফ প্রদান করা। আমাদের সবার উদ্দেশ্য তো একটাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা এবং জান্নাতে গিয়ে চূড়ান্ত সুখ এবং সফলতা লাভ করা। তাহলে কেন আমরা নিজ দল এবং মতের বাইরে কাউকে সহ্য করতে পারিনা। কেন আমরা নিজ দল এবং মতের বাইরে অন্য কাউকে হক পথের পথিক ভাবতে পারিনা! কেন আমরা নিজ দল এবং মতের বাইরে ভিন্ন কাউকে দ্বীনের কাজ করছে এই স্বীকৃতি দিতে পারিনা!
.
আমাদের সবার শত্রু এক। বুঝতে হবে ভারত এবং তাদের এদেশীয় দোসররা চায় আমাদের শেষ করে দিতে। কিন্তু একসাথে সবাইকে ধরলে পালটা আঘাত সহ্য করা কঠিন হয়ে যাবে তাই তারা আমাদেরকে বিভিন্ন দল উপদলে বিভিক্ত করে রাখতে চায়। তারা চায় আমরা নিজেদের মধ্যে দলাদলিতে লিপ্ত থাকি তাহলে তাদের জন্য আমাদের শায়েস্তা করতে সহজ হবে। আমাদের বর্তমান অবস্থা হলো। আমার পছন্দের দল এবং মতের বাইরে ভিন্ন কোন মুসলিমের উপর নির্যাতন হলে আমি বিচলিত হইনা, ভাবি তাদেরকে শায়েস্তা করলে ভালোই হবে, তারা শেষ হয়ে গেলে আমার মতবাদ ছড়িয়ে দিতে পারবো খুব সহজেই। কিন্তু একটিবারের জন্যও চিন্তা করিনা এর পরই কিন্তু আমার পালা আসবে। আমাদের পরস্পরের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে মূলত তারা আমাদের সম্মিলিত শক্তিকে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছে যার ফলে আমরা তাদের সহজ শিকারে পরিণত হয়েছি।
.
বর্তমানে এই অঞ্চলের মুসলিম এবং ইসলামপন্থীদের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো ভারতের হিন্দুত্ববাদীরা। তাদের লক্ষ্য হলো পুরো উপমহাদেশে একজন মুসলিমের নাম নিশানাও বাকি রাখবেনা। সবাইকে শেষ করে হিন্দুরাষ্ট্র কায়েম করবে। যেখানে থাকবেনা কোন মসজিদ, থাকবেনা কোন মাদ্রাসা, থাকবে শুধু মন্দির,মঠ এবং শ্মশান। এই রাষ্ট্রে মুসলিমদের অবস্থা হবে দাস দাসীর চেয়েও করুণ। তাদের কোন অধিকার থাকবেনা। যখন খুশি মারবে যখন খুশি কাটবে। প্রতিউত্তরে কিছুই বলা যাবেনা।
.
এই কথাগুলো তারা এখন প্রকাশ্যেই বলছে, ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এসব বিষয়ে সাধারণ হিন্দুদের কাউন্সিলিং করার জন্য বড় বড় সমাবেশ এবং র‍্যালির আয়োজন হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে উগ্র হিন্দুরা এর পক্ষে জনমত তৈরি করছে এবং মুসলিমদের নিধন করার জন্য আয়োজন করছে সামরিক ট্রেনিংয়ের।
.
আমাদের দেশের অবস্থাও যে ভালো তা কিন্তু নয়। এদেশেও প্রশাসনের সর্বত্র হিন্দুত্ববাদীদের রাজত্ব দেখা যাচ্ছে। সর্বত্রই তাদের সরব উপস্থিতি। উপরস্থ কোন পদে নামধারী কোন মুসলিমের পদায়ন হলেও তাকে আগে দাদা বাবুদের কাছে আনুগত্যের শপথ নিতে হয়। এরপরই মিলে সেই পদ। সেই পদে গিয়ে কেউ যদি কোনভাবে ভারতীয় প্রভুদের অসন্তুষ্টিমূলক কোন কাজ করে ফেলে তাহলে তাকে কৌশলে সরিয়ে দেয়া হয় অথবা গুম করে ফেলা হয়। এটাই স্বাধীন বাংলাদেশের পরাধীনতার আসল চিত্র। এর থেকে যদি আমরা মুক্তি পেতে চাই তাহলে নিজেদের দলাদলি ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।
.
সামনে আলেম ওলামা এবং ইসলামপন্থীদের জন্য খুবই কঠিন দিন আসছে। গুজরাট, মুজাফফরনগর নেলি মুরাদাবাদের মত গণহত্যার প্রস্তুতি চলছে ভারত বাংলাদেশ জুড়ে। এর সামান্য কিছু নমুনা আমরা গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পেয়েছি। ভোলায় হিন্দু কতৃক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অবমাননার প্রতিবাদে মিছিল করায় প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে নবীপ্রেমিকদের হত্যা করা। কুমিল্লায় হিন্দু কতৃক কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে মিছিল বের করায় চাদপুরের হাজীগঞ্জ সহ বিভিন্ন জায়গায় বহু মুসলিমের বুকে গুলি চালানো এবং ব্যাপক ধর পাকড় চালানো। ভারতের কসাই মোদির আগমনের বিরোধিতা করায় চট্টগ্রাম বাহ্মণবাড়িয়া সহ বিভিন্ন জায়গায় অনেক মুসলিমকে হত্যা করা।
.
নাস্তিক এবং ইসলাম অবমাননাকারীদের বিচার দাবি করায় ৬ই মে রাতে শাপলা চত্বরে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অগণিত তৌহিদী জনতাকে হত্যা করা। একজন আলিমের মৃত্যুদন্ডের প্রতিবাদ করায় দুই শতাধিক মুসলিমকে নির্মমভাবে হত্যা করা। এমন আরো অনেক ঘটনা ঘটেছে গত অল্প কয়েক বছরে। এগুলো তো সব বড় বড় ঘটনা এর বাইরেও অসংখ্য গুম খুন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে শুধুমাত্র ভারতীয় আধিপত্যবাদকে মেনে না নেয়ার কারণে.
.
মোটকথা যে বা যারাই হিন্দু বা হিন্দুত্ববাদীদের ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরোধিতা করবে তাকেই হয়তো গুম করে ফেলা হবে অথবা মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হবে কিংবা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করা হবে। এই পর্যন্ত বহু আলেম ওলামা এবং সাধারণ মানুষ এই ধরণের গুম খুনের শিকার হয়েছেন। অসংখ্য আলেম ওলামা তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ নির্যাতনের কারণে কারাগার কিংবা বন্দী অবস্থায়ই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন।
.
এখনো যদি আমরা আমাদের আসল শত্রুকে না চিনি, তাদের বিরুদ্ধে শক্তভাবে প্রতিরোধ গড়ে না তুলি তাহলে আরো অনেক আলেম উলামাকে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন করা হবে। গুম খুনের শিকার হতে হবে আরো অনেক দায়ী বক্তাকে। তাই আসুন আমরা সকলে নিজেদের মধ্যকার ভেদাভেদ ভুলে একতাবদ্ধ হই এবং শত্রুর বিরুদ্ধে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলি। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাওফিক দান করুন। ওয়ামা আলাইনা ইল্লাল বালাগ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.