![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকাল তো আমরা ঈমানী বন্ধন বলে যে কিছু একটা আছে সেটাই ভুলে গেছি। এখন ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা হয় ভাষা,জাতি,অঞ্চল ইত্যাদির ভিত্তিতে। অথচ মুমিন হিসেবে আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসার মাপকাঠি হওয়ার দরকার ছিল ঈমান। পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও যদি একজন মুমিন থাকে সে আমার ভাই। আমি এটা দেখবোনা সে কি আফ্রিকান নাকি বাংলাদেশী কিবা কাশ্মীরি। তার ভাষার সাথে আমার ভাষার মিল আছে কি নেই এটাও আমি দেখবোনা। তার মাজহাব-মাসলাক কী সেটাও আমার দেখার বিষয় নয়। আমি দেখবো তার ঈমান আছে কিনা।
.
পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক একজন মুমিনের সাথে আরেকজন মুমিনের সম্পর্ক হবে ভালোবাসা, দয়া এবং মুহাব্বতের। নুমান ইবনে বশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
تَرَى المُؤْمِنِينَ فِي تَرَاحُمِهِمْ وَتَوَادِّهِمْ وَتَعَاطُفِهِمْ كَمَثَلِ الجَسَدِ، إِذَا اشْتَكَى عُضْوًا تَدَاعَى لَهُ سَائِرُ جَسَدِهِ بِالسّهَرِ وَالحُمّى.
মুমিনদেরকে দেখবে পরস্পরের প্রতি দয়া, ভালোবাসা ও মমতার ক্ষেত্রে এক দেহের ন্যায়। দেহের একটি অঙ্গ অসুস্থ হলে (যেমন) গোটা দেহ অনিদ্রা ও জ্বরাক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে তার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে (মুমিনদের অবস্থাও এরকম, একজন আক্রান্ত হলে সবাই তার সাহায্যে ছুটে আসে)। -সহীহ বুখারী ৬০১১, সহীহ মুসলিম ২৫৮৬
.
মুমিনদের পরস্পরের মাঝে ঈমানী বন্ধন কতটুকু দৃঢ় হওয়া উচিত তা আমরা এই হাদীস থেকে উপলব্ধি করতে পারি। শুধু ঈমানী যোগসূত্রের কারণেই তারা একে অপরকে ভালোবাসে, একে অপরের প্রতি মমতা, ভালোবাসা ও হৃদ্যতা পোষণ করে।
পৃথিবীর কোথাও কোনো মুমিন আক্রান্ত হলে সবাই তার জন্য এগিয়ে আসে, তার পাশে দাঁড়ায়, প্রয়োজনে নিজের জান দিয়ে হলেও তাঁকে সাহায্য সহযোগিতা করে এবং জুলুম হতে রক্ষা করে। ঈমানের দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও যদি কারো মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকে, তাহলে তার উপলদ্ধি করা উচিত যে, তার এখনো পূর্ণাঙ্গ ও খাঁটি ঈমান নসীব হয়নি। আমাদের আদর্শ সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম সবাই এই সকল গুণে পরিপূর্ণ গুনান্বিত ছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে ইরশাদ করেছেন,
رُحَماءُ بَيْنَهُمْ
তারা একে অপরের প্রতি অত্যন্ত দয়াদ্র। সূরা ফাতহ-
.
অপর এক হাদীসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ক কতটুকু দৃঢ় হওয়া উচিত, তা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝিয়েছেন। হাদিসটি হল –
আবু মূসা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
إِنّ المُؤْمِنَ لِلْمُؤْمِنِ كَالْبُنْيَانِ، يَشُدّ بَعْضُهُ بَعْضًا وَشَبّكَ أَصَابِعَهُ.
মুমিনরা একে অপরের জন্য অট্টালিকার ন্যায়। যার এক অংশ অপর অংশকে মজবুত করে রাখে। তারপর তিনি (বুঝানোর জন্য) তাঁর এক হাতের আঙ্গুল অপর হাতের আঙ্গুলের মাঝে প্রবেশ করে দেখালেন। -সহীহ বুখারী ৪৮১,২৪৪৬, সহীহ মুসলিম ২৫৮৫
.
একটি ভবনের জন্য যেমন ভিত,খুঁটি,ছাদ সবগুলো একটি অপরটির জন্য অপরিহার্য,একটি অপরটি ছাড়া দূর্বল এবং শক্তিহীন এবং একে অপরের পরিপূরক। তেমনি মুমিনরা সবাই একটি ভবনের ন্যায় , এই ভবনের কেউ ভিত, তো কেউ খুঁটি, আবার কেউ ছাদ। সবাই একে অপরের সহযোগী। একজন বিপদে পড়লে অন্যরা তার সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে।
ইবনু বাত্তাল রহিমাহুল্লাহ বলেনঃ এই হাদিসে মুমিনদের আখিরাতের বিষয়ে এবং দুনিয়াবি জায়েজ বিষয়ে একে অপরের সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অন্যন্য মুসলিম ভাই বিশেষত মজলুম মুসলিমদের পাশে দাঁড়ানোর তাওফিক দান করুন। আমীন ইয়া রব্বাল আলামীন
©somewhere in net ltd.