নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতীয় হিন্দুত্ববাদ

১৫ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:২০



আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, গত কয়েক বছর থেকে আমি আপনাদেরকে ভারতের হি*ন্দু-ত্ব'বাদী শক্তি ও তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদের ব্যাপারে বারবার সতর্ক করে আসছি। বিভিন্ন লেকচারে তুলে ধরেছি উগ্র হিন্দুরা মুসলিম নিধনে ও রামরাজ্য প্রতিষ্ঠায় কত ভয়ংকর ছক এঁকে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে! এ দেশের ক্ষমতার মসনদে চেপে বসা জালিম তা^গু`ত হাসিনা সরকার দিনদিন কীভাবে হি*ন্দু-ত্ব'বাদের তাবেদারি করে চলেছে!
হ্যাঁ, প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, সময় যতই গড়াচ্ছে, গো-পূজারিদের আস্ফালন ততই বেড়ে চলেছে! ভারতের মতো বাংলাদেশেও আজ উগ্র হিন্দুদের ঔদ্ধত্য চরম মাত্রায় পৌঁছেছে!
.
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের দেশে আজ তুচ্ছ অভিযোগ তুলে স্রেফ সন্দেহের বশে মুসলিমদের নৃশংসভাবে খুন করার মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটছে! মুসলিমদের হুমকি দেয়া হচ্ছে! পূজাতে অস্ত্র উঁচিয়ে শক্তি প্রদর্শন করা হচ্ছে! প্রকাশ্যে উচ্চ আওয়াজে ‘জয় শ্রীরাম’-এর ¯স্লোগান তোলা হচ্ছে! শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঘটা করে উদযাপন করা হচ্ছে শিরকি উৎসব; পক্ষান্তরে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ইসলামের বিধিবিধান পালনে বাঁধা প্রয়োগ করা হচ্ছে! প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম নারীদের ভারতে পাচার করে পতিতালয়ে বিক্রি করার এবং হিন্দু বানানোর ষড়যন্ত্র চলছে!
.
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পঞ্চপল্লীতে উগ্র হিন্দু স*ন্ত্রা*সীদের হাতে দুই মুসলিম সহোদরের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন। মুসলিম নিধনে এ দেশের উগ্র হিন্দুদের আস্ফালন আজ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বোঝার জন্য এ হৃদয়বিদারক ঘটনাই যথেষ্ট! মন্দিরে আগুন লাগানোর অভিযোগ এনে মন্দিরের পাশে এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত হত-দরিদ্র নির্মাণশ্রমিকদের ওপর উগ্র হিন্দুরা সংঘবদ্ধভাবে পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে দুই মুসলিম সহোদর ভাইকে হত্যা করেছে! মারাত্মকভাবে আহত করে দীর্ঘ সময় বন্দি করে রেখেছিল আরও চার শ্রমিককে! কোনো প্রমাণ ছাড়াই শুধু সন্দেহের বশে হত-দরিদ্র মুসলিম দিনমজুরদের ওপর এমন নৃশংস হামলা চালায় হিন্দু সন্ত্রাসীরা! এমন নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর পাশবিক আনন্দ প্রকাশ করেছে এ দেশের উগ্র হিন্দু সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত নেতা-কর্মীরা!
.
এ দেশের তথাকথিত সুশীল নামক অথর্ব কীটগুলোও আজ মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছে! মেইনস্ট্রিম মিডিয়াগুলোও ঘটনার বিস্তারিত তুলে না ধরে অত্যন্ত দায়সারাভাবে সামান্য কিছু সংবাদ প্রকাশ করেছে! তাদের শিরোনাম দেখে অনেকে খুনের শিকার দুই মুসলিম সহোদরকে অপরাধী ভাবতে পারে! অথচ আজ যদি ঘটনা তার বিপরীত হতো, এভাবে কোনো এক হিন্দুর লাশ পড়ত, তবে সুশীল শ্রেণি ও মিডিয়াপাড়া সেই হিন্দুকে নিরপরাধ প্রমাণে এবং মুসলিমদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে গলা ফাটিয়ে ফেলত!
.
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, আপনারা হয়তো ভেবে অবাক হচ্ছেন, এ দেশের সংখ্যালঘু উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদীরা কীভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের ওপর আক্রমণের এতটা সাহস পায়! কীভাবে তারা মুসলিমদের হুমকি দিয়ে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে! এ দেশে তারা মুসলিমদের তুলনায় সংখ্যায় খুব অল্প হলেও তাদের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ও দুঃসাহস দেখানোর প্রধান কারণ দুটো।
একদিকে তারা ভারতের উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদী শক্তি ও ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারই মতাদর্শ অনুযায়ী কাজ করছে, অপরদিকে তারা ভারতের মদদপুষ্ট হাসিনা সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতা পাচ্ছে। তারা নির্ভয়ে আছে, তাদের যেকোনো অন্যায়ে এ দুই শক্তি তাদের পাশেই থাকবে। হ্যাঁ, দিনদিনই তারা এ দুই শক্তির পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানান প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে!
এ দেশের উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদীদের আর কসাই মোদির টার্গেট এক ও অভিন্ন। এরা কসাই মোদির মতোই মুসলিমদের রক্তখেকো। উগ্র হি*ন্দু-ত্ব'বাদী ভারতের হোক বা বাংলাদেশের হোক, রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করাই এদের লক্ষ্য।
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই এরা ইসলামের নিদর্শনাবলিকে মুছে ফেলার প্রয়াসে কাজ করে চলেছে। এদের নির্দেশ বাস্তবায়ন ও এদেরকে খুশি করার জন্যই এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইফতার মাহফিল বন্ধের ঘোষণা এসেছিল! এদেরকে খুশি করার জন্যই স্কুল-কলেজগুলোতে আজ ঘটা করে পূজার উৎসব চলছে! মঙ্গল শোভাযাত্রার মতো ইমানবিধ্বংসী নানান কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে উদযাপন করা হচ্ছে!
.
মুসলিমপ্রধান এ দেশে হি*ন্দু-ত্ব'বাদের এমন ভয়ংকর আগ্রাসন সত্ত্বেও কেবল গদি টিকিয়ে রাখতেই হাসিনা ও তার লীগবাহিনী ভারত ও হি*ন্দু-ত্ব'বাদের ক্রিড়নকে পরিণত হচ্ছে। আপনারা দেখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রমাদান বিষয়ক আলোচনা করার কারণে সাধারণ মুসলিম ছাত্রদেরকে ছাত্রলীগের গুণ্ডারা বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে! বুঝেশুনে হোক কিংবা না বুঝে হোক, আওয়ামিলীগ ও তাদের প্রতিটি অঙ্গসংগঠন বরাবরই ভারত ও হিন্দুদের স্বার্থকেই রক্ষা করছে। হিন্দুদের শিরকি ধর্মবিশ্বাসকে প্রতিষ্ঠিত করার মিশনে তারা সহযোগিতা করে যাচ্ছে!
.
আমার প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন, এমতাবস্থায় আমাদের করণীয় কী, তা নির্ধারণের আগে হি*ন্দু-ত্ব'বাদ এবং এদেশে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদেরকে আমাদের চিনে রাখতে হবে। হি*ন্দু-ত্ব'বাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীদেরকে কাছে উগ্র হিন্দুদের বিচার দাবি করে হিন্দুদের আগ্রাসনকে দমানো যাবে না। ভারতের মোদি সরকার হোক কিংবা এদেশে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী হোক - পুরো হি*ন্দু-ত্ব'বাদের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধেই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। হি*ন্দু-ত্ব'বাদের ভয়ংকর মিশনের ব্যাপারে সচেতন থাকার পাশাপাশি গাজওয়াতুল হিন্দের টার্গেট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করে সামনে এগুতে হবে।
.
মুসলিমদের হেনস্থা ও নিধনের লক্ষ্যে হিন্দুদের সাজানো সব নাটক সম্পর্কে সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে। পাড়ায়-মহল্লায় সকল মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, যেন একজন সাধারণ মুসলিমকেও উগ্র হিন্দুরা সন্দেহের বশে আক্রমণ করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে। বিয়ে করে ইসলাম গ্রহণের প্রলোভন দেখানো হিন্দু যুবকদের প্রেমের ফাঁদ থেকে মুসলিম মেয়েদের দূরে থাকতে হবে। কাফির-মুশরিকদের সাথে মুমিনদের কোনো বন্ধুত্ব ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপন করা যাবে না।
.
মুসলিমদের নিজেদের মাঝে দ্বন্দ্ব-বিবাদ এড়িয়ে ঐক্যের ভিতকে মজবুত রাখতে হবে। ফুরুয়ি ইখতিলাফ নিয়ে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না। সর্বোপরি মহান আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে আল্লাহর জমিন থেকে শিরক ও কুফরের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগী হতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের তাওফিক দান করুন। আমরা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার কাছে দুআ করি, ফরিদপুরের মধুখালীতে উগ্র হিন্দুুদের হাতে নিহত দুই মুসলিম সহোদর ভাইকে তিনি শাহা@দাতের মর্যাদা দান করুন। তাদের পরিবার-পরিজনদের সবরে জামিল ইখতিয়ার করার তাওফিক দিন। আমীন, ইয়া রব্বাল আলামীন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.