![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশ এক জঘন্য স্বৈরাচারী, সন্ত্রাসী, খুনি ও ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের কবল থেকে নিস্তার পেয়েছে। দেশের নিরপরাধ মানুষ নির্ভয়ে বাঁচার অধিকার ফিরে পেয়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট, এই ১৬ বছরের শাসনামলে গুণ্ডামি, চাঁদাবাজি, হত্যা, জেল, জুলুম, গুম, গণহত্যা— এমন কোনো অন্যায় নেই যা শেখ হাসিনা ও তার ক্ষমতাভোগীরা করেনি। বিএনপি, জামাত-শিবির, রাজাকার, জ/ঙ্গী, সন্ত্রাসী, স্বাধীনতাবিরোধী —ইত্যাদি তকমা সাঁটিয়ে খুব সহজেই যে কারো উপর ক্রসফায়ার বা জেল-জুলুমকে বৈধ করে নিত এই খুনী হাসিনা। তাছাড়া বিশেষত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে সে ছিল অত্যন্ত কঠোর।
.
অখণ্ড ভারতজুড়ে রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার একনিষ্ঠ সেবক হয়ে সে ছিল বাংলাদেশি এজেন্ট। হিন্দুদের ক্ষমতায়ন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান ও সর্বপ্রকারের সুযোগ সুবিধা প্রদান ছিল এই হাসিনার প্রধান কাজ। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও এদেশের মুসলিমরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের দ্বারা জুলুমের শিকার হয়েছে প্রতিনিয়ত। শেখ হাসিনার ভারতপ্রীতির বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে মেনে নিতে হয়েছে জেল-জুলুম বা হত্যা। বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা শুরু থেকেই জাতিকে সতর্ক করে আসছিলাম। দৃঢ়চিত্তে বলে আসছিলাম: শেখ হাসিনা ইসলাম ও এদেশের মুসলিমদের শত্রু এবং এদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘ প্রায় ষোল বছর পর আমরা এরকম এক স্বৈরাচারীর হাত থেকে মুক্তি পেলাম।
.
এ আন্দোলনে যারা আহত-নিহত হয়েছেন তাদের সকলের জন্যই আমরা দোয়া করি। নিহত ঈমানদারদেরকে আল্লাহ্ তাআলা শাহাদাতের মর্যাদা দান করে জান্নাতবাসী করেন আর আহতদের সুস্থতাকে তিনি ত্বরান্বিত করেন, আমীন। যারা দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন, তারা ইসলামের সাথে শত্রুতা না করলে তাদেরকে অভিনন্দন।
.
প্রিয় উম্মাহ! তবে আমি আজকে আপনাদের একটি কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, ধুলোর আস্তর সরিয়ে স্পষ্ট করে দিতে চাই— “এ স্বাধীনতা আমাদের পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত স্বাধীনতা নয়”। কেননা, এখনো আমরা গণতন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ, স্বাধীন হতে পারিনি। এখনো আমেরিকার দাসত্বে বাঁধা আমাদের জীবন, স্বাধীন হতে পারিনি। সেক্যুলারিজম, ন্যাশনালিজম, লিবারেলিজমসহ হাজারটা কুফরী ইজম বা মতবাদ আমদের মুসলিম সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে।
.
আপনি যদি মনে করে থাকেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশে শতভাগ বাকস্বাধীনতা ফিরে এসেছে, তাই আপনি সব জায়গায় জিহাদের কথা, শাহাদাতের কথা, ইসলামী খিলাফাহর কথা আলোচনা করতে পারবেন তাহলে আপনি স্বপ্নের জগতে বাস করছেন। বাস্তবতা হল এখনও আপনি গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারবেন না। জিহাদের ফরজিয়্যাত, শাহাদাতের ফজীলত, ইসলামী খিলাফাহর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলতে পারবেন না। আল কায়েদার মানহাজ নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন না। তালিবানের রাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা করতে পারবেন না। তাহলে আপনি টেররিস্ট বা সন্ত্রাসী হয়ে যাবেন।
কারণ, এখনো এদেশ সেক্যুলার ব্যবস্থাতেই পরিচালিত হচ্ছে, এখনো এদেশের উপর আমেরিকার কতৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালীভাবে বিদ্যমান আছে। আমরা শুধু শাসক পরিবর্তন করেছি, (এবং এ পরিবর্তন ইতিবাচকও বটে ইনশাআল্লাহ,যেহেতু এর দ্বারা জুলুম কমেছে ও তুলনামূক স্বাধীনতা বেড়েছে) কিন্তু আমরা এখনো দাসত্বের অবসান ঘটাতে পারিনি।
.
তাই, ভালো করে মনে রাখবেন, আমরা আজও পরাধীন। যতদিন না আমরা মুসলিমরা অন্য কোনো কাফের রাষ্ট্রের আধিপত্য থেকে মুক্ত স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠন করতে পারছি, ততদিন আমরা স্বাধীন নই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কি দেশে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত করবেন? না! তিনি বরং গণতন্ত্র-ই প্রতিষ্ঠা করবেন। গণতন্ত্রের প্রভূ তো আমেরিকা। যে রাষ্ট্রে গণতন্ত্রের চর্চা হবে সে রাষ্ট্র আমেরিকার দাসত্বকেই মেনে নিল। আমাদের প্রকৃত মুক্তি ও স্বাধীনতা একমাত্র ইসলামী খিলাফতের মধ্যেই নিহিত। তাই আবারো বলছি, আমরা এখনো স্বাধীন হতে পারিনি। তবে একদিন আমরা অবশ্যই প্রকৃত স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করব ইনশাআল্লাহ্। সে আনন্দ অতীতের সকল আনন্দকে ম্লান করে দেবে।
©somewhere in net ltd.