নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাবিল কাবিলের ঘটনা থেকে শিক্ষাঃ বাতিল কখনো হকের সাথে সহাবস্থানকে সহ্য করেনা

২০ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:০৭


.
ইতিহাস বলে, বাতিলরা কখনো সত্যের সাথে সহাবস্থানকে মেনে নেয়না। সত্যের অনুসারীরা যদি বাতিলের সাথে সংঘাত লিপ্ত না হয় এবং কোন ধরণের বিরোধিতা না করে তবুও তারা সত্যের অনুসারীদের মিটিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
.
তারা মনে করে গুম খুন নির্যাতনের মাধ্যমে সত্যের অনুসারীদের দমন করা গেলেই বুঝি বাতিলকে চিরস্থায়ীরূপে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। কিন্তু তারা জানেনা যে, সত্যকে কিছু সময়ের জন্য চেপে রাখা সম্ভব হলেও পুরোপুরি মিটিয়ে দেয়া সম্ভব না। উদাহরণ হিসেবে আমরা হাবিল কাবিলের ঘটনাটা দেখতে পারি।
.
আদম আলাইহিস সালামের দুই সন্তান ছিল, একজনের নাম হাবিল আরেকজনের নাম কাবিল। দুই ভাই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানী করেন, আল্লাহ তাআলা তাকওয়ার কারণে হাবিলের কোরবানী কবুল করেন আর কাবিলের কোরবানীকে প্রত্যাখ্যান করেন। এটা দেখে কাবিল হাবিলের উপর খুব ক্রোধান্বিত হয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়। হুমকি শুনে হাবিল কাবিলকে এই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্নভাবে বোঝায়।
বলেঃ
لَئِنۡۢ بَسَطۡتَّ اِلَیَّ یَدَكَ لِتَقۡتُلَنِیۡ مَاۤ اَنَا بِبَاسِطٍ یَّدِیَ اِلَیۡكَ لِاَقۡتُلَكَ ۚ اِنِّیۡۤ اَخَافُ اللّٰهَ رَبَّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۲۸﴾ اِنِّیۡۤ اُرِیۡدُ اَنۡ تَبُوۡٓاَ بِاِثۡمِیۡ وَ اِثۡمِكَ فَتَكُوۡنَ مِنۡ اَصۡحٰبِ النَّارِ ۚ وَ ذٰلِكَ جَزٰٓؤُا الظّٰلِمِیۡنَ ﴿ۚ۲۹﴾
অর্থঃ আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি আমার দিকে হাত বাড়ালেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি তোমার দিকে হাত বাড়াব না, আমি বিশ্ব জগতের প্রতিপালক আল্লাহকে ভয় করি। আমি চাই তুমি আমার ও তোমার পাপের বোঝা বহন করো এবং এর ফলে জাহান্নামী হও, আর জালিমদের প্রতিদান এটাই। সুরা মায়িদা ২৮-২৯
.
কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হল এত সুন্দর উপদেশও কাবিলকে এই ঘৃণ্য কাজ থেকে বিরত রাখতে পারেনি বরং সে হাবিলকে হত্যা করেই তবে ক্ষান্ত হয়।
.
এই ঘটনায় আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো সবক রয়েছে। যেমনঃ
-সত্যের অনুসারীরা বাতিলের কোন ক্ষতি না করে কল্যাণ কামনা করলেও বাতিলরা তাদেরকে শত্রু মনে করে এবং তাদের হত্যা নির্যাতনের মাধ্যমে শেষ করে দেয়ার চেষ্টা করে। এযুগেও আমরা অনেক আলেমকে জালিমদের উদ্দেশ্য করে বলতে শুনেছি, আমরা ক্ষমতা চাইনা, আমরা আপনাদের ভালোবাসি। আমরা একটু নির্বিঘ্নে আল্লাহর ইবাদত করতে চাই এবং মানুষকে দ্বীনের কথা শোনাতে চাই।
.
এরপরও সেইসব আলেমরা জালিমের চক্ষুশূল হয়েছেন এবং জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। এই জন্যই ইসলামের শিক্ষা হল জালিমকে সুযোগ না দেয়া এবং সর্বশক্তি ব্যয় করে হলেও তাকে জুলুম থেকে বাধা দেয়া। এই উদ্দেশ্যেই আল্লাহ তাআলা ই''দা''দ এবং জি''হা''দকে ফরজ করেছেন। কুরআনুল কারীমে ইরশাদ করেছেন-
اُذِنَ لِلَّذِیۡنَ یُقٰتَلُوۡنَ بِاَنَّهُمۡ ظُلِمُوۡا ؕ وَ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰی نَصۡرِهِمۡ لَقَدِیۡرُۨ
তাদেরকে যুদ্ধের অনুমতি দেয়া হল যারা আক্রান্ত হয়েছে। কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম। সুরা হজ-৩৯
.
- অধিকাংশ জালিমের অবস্থা হল, তারা সদুপদেশে কর্ণপাত করেনা। উলটো সদুপদেশ দানকারীকে শত্রু মনে করে। জুলুম করতে করতে তাদের দিলের অবস্থা হয় আবু জাহেল আবু লাহাব ফেরাউন নমরুদের মত। দিলের মধ্যে দয়া মায়া মমতা বলতে কিছু অবশিষ্ট থাকেনা। অন্যকে কষ্ট দিতে পারলে খুশি হয়। অন্যের ভালো দেখলে কষ্ট পায়।
.
- জালিমরা কখনো তাদের পরিণতি নিয়ে চিন্তা করেনা, বরং যতদিন পারা যায় জুলুম অত্যাচারের মাধ্যমে নিজের অন্যায় কামনা বাসনা এবং নিকৃষ্ট চিন্তাধারাকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে।
.
- জালিমদের সাধারণত আখিরাত এবং জান্নাত জাহান্নাম নিয়ে চিন্তা থাকেনা। দুনিয়ার জীবনকেই তারা মনে করে একমাত্র জীবন। এটা তাদের কথায় কাজে বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। তাদের আরাম আয়েশ এবং খাহেশাতের অনুসরণ দেখলে মনে হয় যেন তারা দুনিয়াকেই সবকিছু মনে করে; আখিরাতকে বিশ্বাস করেনা। কারণ তারা যদি আখিরাত এবং জান্নাত-জাহান্নাম নিয়ে ভাবতো তাহলে তাদের পক্ষে জুলুম করা সম্ভব হতোনা।
.
এই কারণে আমাদের উচিত হবে, জালেমদের প্রতি কোন ধরণের দয়া না দেখানো এবং তাদেরকে কোন ধরনের সুযোগ না দিয়ে মূল উপড়ে ফেলার চেষ্টা করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য এই কাজগুলো সহজ করুন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.