নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তামিম আল আদনানী

তামিম আল আদনানী

লেখক, আলেম, দ্বায়ী, মোটিভেশনাল স্পিকার

তামিম আল আদনানী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা যেন বনী ইসরাইলের মত না হই

২৩ শে মে, ২০২৫ সকাল ১০:২৮

আমরা যেন বনী ইসরাইলের মত না হই-
মুসা আলাইহিস সালাম যখন বনী ইসরাইলকে কওমে আমালিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে পবিত্রভূমিতে প্রবেশের আদেশ দিয়েছিলেন তখন তারা উত্তরে বলেছিলঃ
قَالُوۡا یٰمُوۡسٰۤی اِنَّا لَنۡ نَّدۡخُلَهَاۤ اَبَدًا مَّا دَامُوۡا فِیۡهَا فَاذۡهَبۡ اَنۡتَ وَ رَبُّكَ فَقَاتِلَاۤ اِنَّا هٰهُنَا قٰعِدُوۡنَ
হে মূসা! তারা ওখানে যতদিন থাকবে ততদিন আমরা ওখানে কখনো প্রবেশ করবোনা, কাজেই তুমি আর তোমার প্রতিপালক যাও, গিয়ে যুদ্ধ করো, আমরা এখানেই বসে রইলাম। (সূরা মায়িদা ২৪)
এই বেয়াদবি ও ঔদ্ধত্যের কারণে আল্লাহ তাআলা তাদেরকে কঠিন শাস্তি দেন। চল্লিশ বছরের জন্য পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ হারাম করে দেন। এই পুরো সময়কাল তারা ময়দানে তীহে উদ্ভ্রান্তের ন্যায় ঘুরপাক খেতে থাকে। সকালে যেখান থেকে রওয়ান করতো, সন্ধ্যায় যাত্রাবিরতি করার পর সেই জায়গায়ই আবার ফিরে আসতো।
আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারীমে এই ঘটনা বর্ণনা করেছেন যেন আমরা এখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি, যেন আমাদের থেকে এমন বেয়াদবী প্রকাশ না পায়।
কিন্তু দুঃখজনক ব্যপার হল আমাদের মধ্যেও অনেকে না বুঝে এরকম বা এর কাছাকাছি কিছু কথা বলে থাকেন। যেমন অনেকে বলে- এই যমানা বুলেটের নয় বরং ব্যালটের। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য বা মজলুমদের মুক্ত করার জন্য আমাদের কিছু করার নেই। কারণ আমাদের শক্তি নেই, শক্তি অর্জনের চেষ্টা করারও সুযোগ নেই। আমরা যদি কিছু করতে যাই তাহলে অমুক দেশ এসে হা*মলা করে সব শেষ করে দেবে। অতএব আমাদের পক্ষে বসে বসে দেখা ছাড়া কিইবা করার আছে।
আল্লাহ যদি অলৌকিকভাবে কিছু করেন তাহলে হবে নয়তো অমুক রাষ্ট্র যেই শক্তিশালী তাদের বিরুদ্ধে কিছু করার সামর্থ্য কি কারো আছে? তারা তো স্যাটেলাইট দিয়ে সব দেখতে পায়, আমরা কি করি না করি সব তাদের নখদর্পনে। তাদের গো/য়ে/ন্দাবিভাগ এতটাই শক্তিশালী যে, আমরা যদি ফিস ফিস করে কথা বলি তাও তারা টের পেয়ে যায়। তাদেরকে হারানো সম্ভব নয়, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে আত্মহত্যা করা। তাই তাদের বিরোধিতা না করে তাদের এঁকে দেওয়া ছকের মাঝে জীবন যাপন করাই হল নিরাপদ। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
বুঝতে পারছিনা আমরাও কি এই ধরণের কথা এবং নিষ্ক্রিয়তার কারনে এত বছর ধরে শাস্তি পাচ্ছি? আমরা তো গত একশো বছরে কম প্রাণ দেইনি, কম জুলুম নির্যাতন সহ্য করিনি। (যদি লড়াইয়ের ময়দানে এর অর্ধেক মানুষও জীবন দিতো তাহলে হয়তো চিত্র ভিন্ন হতো) তবুও কেন ঘুরেফিরে সেই পুরনো গর্তে গিয়েই পড়ছি। ঘুষ দূর্নীতি অন্যায় অবিচার ও লাঞ্ছনা বঞ্চনাই বারবার ফিরে পাচ্ছি। সমাজ ও রাষ্ট্রে ঘুরেফিরে সেই কুফর ও ইলহাদই দেখতে পাচ্ছি।
-
উম্মতে মুসলিমার আদর্শ সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম কখনো এমন কথা বলেননি, তারা কুফফারদের বিশাল শক্তি দেখে ভয় পাননি বরং এসব তাদের ঈমান আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,
شَهِدْتُ مِنَ الْمِقْدَادِ بْنِ الْأَسْوَدِ مَشْهَدًا لَأَنْ أَكُوْنَ صَاحِبَهُ أَحَبُّ إِلَيَّ مِمَّا عُدِلَ بِهِ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يَدْعُوْ عَلَى الْمُشْرِكِيْنَ فَقَالَ لَا نَقُوْلُ كَمَا قَالَ قَوْمُ مُوْسَى (اذْهَبْ أَنْتَ وَرَبُّكَ فَقَاتِلَا) وَلَكِنَّا نُقَاتِلُ عَنْ يَمِيْنِكَ وَعَنْ شِمَالِكَ وَبَيْنَ يَدَيْكَ وَخَلْفَكَ فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَشْرَقَ وَجْهُهُ وَسَرَّهُ يَعْنِيْ قَوْلَهُ
(বদর যুদ্ধের আগে) আমি মিকদাদ ইবনে আসওয়াদের এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, যেই কাজটি আমি করতে পারলে সেটি আমার নিকট এর পরিবর্তে অন্য সমস্ত কিছুর তুলনায় অধিক প্রিয় হতো। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মুশরিকদের বিরুদ্ধে বদ দোয়া করছিলেন তখন তিনি তাঁর নিকট আসলেন। এসে বললেন, মূসা আলাইহিস সালামের কওম যেমন কথা বলেছিল আমরা তেমন কথা বলবোনা। মুসা আলাইহিস সালামের কওম বলেছিলঃ ‘‘তুমি আর তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ করো’’- । বরং আমরা আপনার ডানে, বামে, সামনে, পেছনে সর্বদিক থেকে যুদ্ধ করব। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি দেখলাম, এই কথা শুনে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল এবং তিনি খুব আনন্দিত হলেন। - বুখারী ৩৯৫২
আচ্ছা আমরা কি পারিনা, মিকদাদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর মত সাহসিকতার পরিচয় দিতে এবং সব ভয়কে ছুঁড়ে ফেলে কুফরী বিশ্বব্যবস্থাকে ভেঙ্গে ইসলামী বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলার অঙ্গিকার নিতে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.