শ্রাবণী

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ৯:৫১

সবেমাত্র ভোর হতে চললো । সূর্যের আলো এখনো তেমন সারা জাগাতে পারেনি।
চারদিকে আবছা অন্ধকার । শীতের সকালে কুয়াশাও ভাল প্রভাব বিস্তার করেছে
প্রকৃতিতে । কুয়াশার কারণে অন্ধকারটা আরো ভাল করে প্রকৃতিতে চেপে বসেছে ।
অস্বস্তিকর একটা অবস্থা । তবুও এ অন্ধকার আর কুয়াশা উপেক্ষা করে আবির
বেড়িয়ে পড়ল । শ্রাবণী আজ বাড়ি যাবে , ওকে স্টেশনে নিয়ে যেতে হবে এবং ট্রেন
না ছাড়া পর্যন্ত ওকে সঙ্গ দিতে হবে ।

শ্রাবণী আর আবির সেই ছোটবেলাকার বন্ধু , খুব ভাল বন্ধু ওরা দু’জন । স্কুল-
কলেজের সময়টাতে দু’জন একই প্রতিষ্ঠানে লেখা-পড়া করেছে , ব্যতিক্রম হয়েছে শুধু
বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে । প্রতিষ্ঠান ভিন্ন হলেও দু,জন একই শহরে থাকে এবং দু,জনই
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকে।

বাড়িতে যাওয়ার সময় প্রায়ই একসাথে যায় । মাঝে মধ্যে আলাদা গেলেও আগের
দিন ফোন করে বলে দেয় –“ কাল বাড়ি যাব তুই কিন্তু আমার সাথে স্টেশনে যেতে
হবে।“

সেদিনও সন্ধ্যায় শ্রাবণী ফোন করে বলল- “হঠাৎ করেই বাড়ি থেকে ফোন এসেছে
কালই বাড়ি যেতে হবে।“ বরাবরের মতো এবারো নিয়ে যাবে কিন্তু সকালে যেতে
হবে কারণ শ্রাবণী সকালের ট্রেনের টিকেট করেছে । শ্রাবণী এবারই প্রথম এতো
সকালে বাড়ি যাচ্ছে ।

তাই আবির অন্ধকার আর কুয়াশা উপেক্ষা করে বেড়িয়ে পরলো । ভাবল বেড়িয়েই
শ্রাবণীকে ফোন করবে । এতো সকালে কোথাও কোন রিক্সা পাওয়া গেল না তাই

হেটেই চলল । কিছুদূর যাওয়ার পর ফোন করল কিন্তু ফোন বন্ধ , অনেক চেষ্টা
করেও ফোনে পাওয়া গেল না । আবির কখনো শ্রাবণীর হলে যায়নি আজও এতো
সকালে যাওয়াটা সে ভাল মনে করল না । তাই যে পথে স্টেশনে যাবে ,সে পথের
মোড়ের একটা চা’য়ের দোকানে বসলো সে । ততোক্ষণে অন্ধকার কেটে চারপাশ
আলোকিত হতে শুরু করেছে । কিন্তু শ্রাবণীর কোন দেখা নেই ! এদিকে ওর ট্রেন
ছাড়ার সময়ও ঘনিয়ে আসছে । শ্রাবণীর উপর রাগ হওয়ার মতো একটা অবস্থা ।
কিন্তু আবির রাগ করলো না । সে মনে করে পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের বিশেষ কিছু
মানুষ থাকে যাদের সাথে কখনো রাগ করতে নেই বা করা যায় না । আর শ্রাবণী
আবিরের কাছে এমনই একজন ,যার সাথে কখনো সে রাগ করে না । অবশেষে
অপেক্ষার পালা শেষ করে আবির স্টেশনের পথ ধরে হাটতে লাগ।

০ টি +০/-০