নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। ভাল লাগে প্রগতিশীল , যৌক্তিক লেখা ও কাজ।
আত্মমর্যাদাহীন নারীরা
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ পুরুষের অনেক আচরণকে প্রশ্রয় দেয়, যেসব আচরণ নারীরা করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়। নারীদেরকে তাদের পরিবার ও সমাজ পুরুষদের উপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য একেবারে সস্তা কিছু আচরণ শিক্ষা দেয় যেসব আচরণের দ্বারা পরে পুরুষরাই যন্ত্রণা ভোগ করে।
বাংলাদেশে কিছু নারীরা স্বামীর সাথে সম্পর্ক ভালো না থাকার পরও জোর করে স্বামীর সাথে বাস করে। অনেক সময় তারা স্বামীর সাথে আইনি ছাড়াছাড়ি হওয়ার পরও আবার মিটিং, আলোচনা করে স্বামীর সাথে পুনরায় বাস করতে শুরু করে। এসব ঘটনায় জড়িত স্বামীরাও সামাজিক নিম্ন, অশিক্ষিত মন মানসিকতাসম্পন্ন মুরুব্বীদের চাপ, আদেশ, উপদেশের ঠেলায় পড়ে যে স্ত্রীকে তাদের ভালো লাগেনা তার সাথে বাস করতে বাধ্য হয়।
এদেশে এসব বিষয় হরদম ঘটছে। যদি স্বামী স্ত্রী জোর করে সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে, তাতে কারও কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
কিন্তু আমি এই সংশ্লিষ্ট অন্য একটি সমস্যা এদেশে প্রকটভাবে দেখছি। সেটি হল- যখন কোনো স্ত্রী'র সাথে তার স্বামীর সম্পর্ক ভালো না থাকে, বা কোনো স্ত্রী'র সাথে যখন কোনো স্বামীর আইনী বিচ্ছেদ হয় তখন প্রায়ক্ষেত্রে সেই স্বামী তার শারীরিক-মানসিক চাহিদা মেটাতে সমাজের অন্য কোনো নারীর সাথে সম্পর্কিত হয়। এটা একটি স্বাভাবিক বিষয়।
কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের সমাজ জোর করে এই ধরণের ঘটনা সংশ্লিষ্ট স্বামীদেরকে পূর্বের স্ত্রীর কাছে ফিরিয়ে দেয় এবং স্বামীরা অনেকসময় স্বেচ্ছায় পূর্বের স্ত্রীর কাছে চলে যায়। বাংলাদেশের সমাজব্যবস্থায় এক্ষেত্রে স্বামীরা দুঃসময়ে যে নারীদেরকে কাছে পায়, সেই নারীরা প্রায়ই চরম বিপদে পড়ে। কারণ সেই নারীদেরকে সমাজ খারাপ বলে চিহ্নিত করে সবরকম অপবাদ দিতে থাকে। আবার দাম্পত্য জীবনে অসুখী পুরুষরা তাদের জীবনের দুরবস্থার সময় যেসব নারীদেরকে তাদের কাছে পায় এবং যাদের কাছ থেকে ভালবাসা নেয়, পরে তাদের প্রতি প্রায়ই অকৃতজ্ঞ ও অমানবিক হয়ে পড়ে।
আমার চেনাজানা এক পুরুষ আত্মীয়ের বেলায় এমন ঘটেছে। সেই আত্মীয় পুরুষটির সাথে তার চাকীজীবি স্ত্রী'র তিন চারবার তালাক হয়েছে। তার স্ত্রী জোর করে বারবার স্বামীর সাথে মিটমাট করে বাস করছিল। স্থানীয় মুরুব্বীরাও তাদেরকে জোর করে মিলিয়েছে বারবার। এই ঘটনাসংশ্লিষ্ট পুরুষটি তার শারীরিক চাহিদা মেটাতে অন্যত্র যায় বলে শোনা গেছে। সর্বশেষ তাদের স্বামী স্ত্রী'র মধ্যে যখন তালাক হলো তখন পুরুষটি রিফা নামক এক তালাকপ্রাপ্ত নারীর সাথে সম্পর্কিত হলো।
রিফা তার যথাসাধ্য প্রেম, ভালোবাসা দিয়ে পুরুষটিকে আগলে রাখলো। কিন্তু এভাবে মাস ছয়েক গড়াতে না গড়াতে সংশ্লিষ্ট পুরুষটির তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তার চার পাঁচজন নারীসঙ্গীসহ এসে রিফাকে মারধর করল ও হত্যা করার চেষ্টা করল। প্রতিবেশীর সহযোগিতায় রিফা বেঁচে গেল এবং মামলা করল।
মামলা তোলার জন্য রিফাকে অনেক চাপ দেয়া হলো। রিফা মানছিলনা। এর মধ্যে এলাকার মুরুব্বিরা বারবার বৈঠক করে পুরুষটিকে তার প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে মিলিয়ে দিল এবং তারা আগের মত নানা ঝগড়া, বিবাদ নিয়ে ছেলেমেয়েসহ সংসার করতে লাগল।
এখানে সামাজিকভাবে হেনস্থা হলো রিফা। তাকে দেহ ব্যবসায়ী বলেও প্রচার চালাচ্ছে অনেকে। অথচ রিফা এখানে দায়ী নয়।
ওই পুরুষটির স্ত্রী অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু তার কোনো আত্মমর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব নেই। আবার এলাকার মুরুব্বীরা পুরুষটিকে জোর করে তার পূর্বের স্ত্রীর সাথে মিলিয়ে দিয়ে আসলে পুরনো সমাজের একটা অমানবিক, ফালতু রীতিকে প্রতিষ্ঠিত করল।
এটা দেখা যাচ্ছে যে, আধুনিককালে যারা প্রেমের সম্পর্কে বিশ্বাস করে একগামীতায় নিজেকে ব্যস্ত রাখে, তারা এসব কান্ডকারাখানার মধ্যে পড়লে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে যায়। প্রেমে বিশ্বাসীদের বাঁচার উপায় এই সমাজে কম।
ব্যক্তিত্বহীন, আত্মমর্যাদাহীন নারীরা তাদের স্বামীকে বিভিন্নভাবে অত্যাচার করে তাদেরকে একাধিক নারীর কাছে সুখ খুঁজতে বাধ্য করে নিজ স্বামীর জীবনকে নরক বানায় বিভিন্নভাবে। আবার তাদের স্বামীরা যখন অন্য নারীর সাথে সম্পর্কিত হয় তখনও চিৎকার, চেঁচামেচি করে তারা এলাকা গরম করে ফেলে।
আমি বলতে চাই, যেসব মেয়েদের টাকা আছে, বেঁচে থাকার উপায় আছে তারা কেন সেসব স্বামীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে যারা তাদেরকে পছন্দ করেনা? আপনাদের নারীদের ব্যক্তিত্ব থাকলে আপনারা একবেলা খেয়ে থাকতেন, কিন্তু যে স্বামী আপনাকে ভালোবাসেনা তার জন্য চোখের জল না ঝরিয়ে নিজের বেঁচে থাকার পথ বের করে নিতে পারতেন। কিন্তু সেটা আপনারা পারেননা। এছাড়া, আপনাদের ভালবাসা পাওয়ার পর, অথবা, আপনাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আপনাদের স্বামী যদি অন্য কোনো নারীর সাথে সম্পর্কিত হয়, তবে সেখানে আপনার স্বামীকে আপনি ভালো বানাতে পারেননি -এটা ধরে নিয়ে চোখের জল না ঝরিয়ে স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে বাঁচুন।
আপনাদের স্বামীর চরিত্র আপনাদের মনের মত করতে না পারলে সে দোষ আপনাদের, আর আপনাদের স্বামীদের। আপনারা শুধু শুধু স্বামীর চরিত্রহীনতার কারণস্বরূপ অন্য নারীদের কেন দায়ী করেন?
তাছাড়া আপনারা চরিত্র বিগড়ে যাওয়া, বা না যাওয়া স্বামীকে নিয়ে যখন জোর করে, ইনিয়ে বিনিয়ে, চোখের জল ফেলে, মুরুব্বীদের হাতে পায়ে ধরে নষ্ট সংসার জোড়া লাগাতে ব্রতী হন, তখন ভয়াবহ অমানবিক মানসিক সমস্যার শিকার হয় আপনাদের শিশুরা। কারণ তারা বাবা, মাকে বন্ধুর মত দেখতে চায়, শত্রুর মত নয়। বাবা, মাকে তারা ভালবাসে। যখন শিশুদের বাবা, মায়েরা পরস্পর শত্রুর মত আচরণ করে তখন শিশুদের মন ব্যথায় কাতর হয় এবং তারা হতাশ হয়ে সামাজিক অপরাধগুলোর দিকে ঝুঁকে পড়ে। আপনারা নারীরা নিজেদেরকে মায়ের জাত বলে বড়াই করেন। কিম্তু আপনারা জানেন কি, আপনাদের ব্যক্তিত্বহীনের মত সংসার ধর্ম পালন করার মধ্য দিয়ে আপনাদের শিশুদেরকে আপনারা মানসিকভাবে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত করছেন?
আপনারা যখন শিশু ছিলেন তখন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বড় হওয়া আপনাদের বাবা, মা আপনাদের এতটাই ব্যক্তিত্বহীন, আত্মমর্যাদাহীন করে গড়ে তুলেছে যে, আপনারা জ্ঞানে, অজ্ঞানে নিজ স্বামীকে এবং নিজেকে কেবল মূল্যহীন, অথর্ব, ফালতু বস্তুতে পরিণত করতে শিখেছেন। এই অবস্থা কাটিয়ে উঠে কবে শিক্ষিত, মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হবেন আপনারা? আপনারা নিজেদের মূল্য যেদিন বুঝবেন সেদিন আপনারা নিজেরা মানুষের মত বেঁচে থাকবেন ও অন্যকেও মানুষের মত স্বাধীন, সুন্দরভাবে বাঁচতে দিতে পারবেন।
২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪৪
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আমাদের সমাজ পুরানো নিয়ম বা শৃঙ্খল টিকিয়ে রাখতে যথেষ্ট চেস্টা করে। এটা সত্য। আর এসবের ফলাফল খুব খারাপও কিন্তু নয়।
সংসারে সন্তানাদি আসার পর স্বামীস্ত্রীর ছাড়াছাড়ি মানে সন্তানদের সমস্যায় ফেলা। সমাজ বাচ্চাকাচ্চার জন্য জোর করে।
৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৬
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: আপনার বহু কথাই আছে যেগুলোর সাথে আমি দ্বিমত পোষন করছি,তবে আমি তর্কে যাব না।
আপনার জন্য ছোট্ট একটি বানীঃ
গাছের দিকে তাকিয়ে থাকুন,গাছ আপনাকে নীরবতা পালন করা শিখিয়ে দিবে।
৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ছোটবেলা পরিবার থেকেই মানূষকে সম্মান করানো শিখাতে হয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি এই ধরণের সমস্যায় ভুগেছেন?