![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
I am Rashed Sultan Tapu. I am living in dhaka but my home district is Jessore. I love my mother and my country very much.
বছরের হিসেবে খুব বেশীদিন নয়- মাত্র আট বছর পার হয়েছে। ২০০২ সালের ১৪ই ডিসেম্বর দুপুর দুটোর কিছু পরে আমি হঠাৎ আবিস্কার করলাম আমার মাথার উপরে এতদিন যে আচ্ছাদন ছিল- তা আর নেই- আমি শুধু আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে। আমার মাথার উপরে কোন ছাদ নেই- আমি অসহায়ের মতো মাথার উপরে শুধু শূন্যতা দেখছি। আমার বাবা নেই। আমার বাবা নেই।
হঠাৎ দুর্ঘটনায় পড়ে তিন বছর ধরে আমার বাবা শয্যাশায়ী ছিলেন। যেদিন দুর্ঘটনা ঘটলো সেদিনও একসাথে ভাত খেয়েছি। অফিস থেকে ফিরেই শুনি বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই থেকে শুরু। হাসপাতাল থেকে ক্লিনিক- ক্লিনিক থেকে ভারত- আমি আবার বাবাকে আবার দুই পায়ের উপরে দাঁড় করাতে চেয়েছিলাম। কোনভাবেই পারিনি। সেই থেকে শুরু হলো আমার বাবার বিছানায় শুয়ে থাকা। প্রতিদিন অফিসে যাবার সময় হাত ধরে বলে যাওয়া- বাবা অফিসে যাচ্ছি- বাবার বলা আল্লাহ হাফেজ কথাটা এখনো কানে বাজে। সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে বাবাকে ধরে ধরে হাঁটানো আর অনেক কথা বলা। কোনদিন রাত হয়ে গেলে বাবা বলতেন- বাবু আজ আমি হাঁটিনি। অফিসে বস নানা ছুতায় দেরী করাতে চাইতো- আমি বাড়ী ফেরার জন্যে ব্যস্ত হয়ে থাকতাম। অনেকদিন বলেছিও যে আমাকে বাসায় ফিরে বাবাকে হাঁটাতে হবে- এজন্যে অনেক কটু কথাও শুনেছি বসের মুখে- কিন্তু যখন বাসায় ফিরতাম- বাবাকে পেছন থেকে ধরে হাঁটাতাম আর কথা বলতাম- আমার চোখে শুধু তখন একটাই স্বপ্ন- বাবা নিশ্চয়ই একদিন নিজে নিজেই হাঁটবে। সেদিন নিশ্চয়ই অনেক দূরে নয়- নিজে নিজেই হাঁটতে পারবে।
শেষ কথাটা এখনো কানে বাজে। দুপুরে বের হচ্ছি- হঠাৎ বাবা বলল- বাবু কাছে থাকো। আমি বললাম আসছি একটু। জানতাম না সেটাই শেষ কথা- সেটাই শেষ ডাক। দুই মিনিট পরে ফিরেই দেখি বাবা কথা বলছেনা শুধু জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। ডাকলাম- সাড়া নেই- কি মনে হলো পানি নিয়ে দুই চামচ পানি মুখে দিলাম। পানিটুকু খেয়ে নিলেন- খানিক পরই মাথাটা একপাশে ঢলে পড়লো। আমার মাথার উপর থেকে সব ভরসা- সব ছাদ সাথে করে নিয়ে বাবা তুমি চলে গেলে।
পৃথিবীতে আমার সব চাইতে প্রিয় যে জায়গা সেটা হচ্ছে আমার বাবার কবর। যশোর কারবালা গোরস্থানে আমার বাবার কবরের পাশে একটুখানি জায়গা আমি রেখে দিয়েছি। ওখানে আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সবার আগে আমি যেতে চাই। আমার বাবা আমাকে বলেছিল একটু কাছে থাকতে। আমার বাবার কবরের কাছে আমি এখনও মাথা উঁচু করে যেতে পারিনা।
যান্ত্রিকতার এই ঢাকা শহর থেকে একদিনের জন্যে হলেও যদি যশোরে যেতে পারি- আমার অন্য কোন কাজ হোক বা না হোক- আমার বাবার কবরের কাছে আমি যাবোই। যখনই জিয়ারত সেরে চলে আসতে যাই- তখনই পেছন থেকে শুনি- বাবু, কাছে থাকো। জানিনা এটা আমার মনের ভুল কিনা- তবে আমি স্পষ্ট শুনি। আমার পা আড়ষ্ট হয়ে যায়। আমি আবার ফিরে যাই কবরটার কাছে।
আজকে বাবা দিবস। আজকের দিনে আমার বাবা নেই যে তাকে নিয়ে বাবা দিবস পালন করবো। আজকের দিনে- শুধু আজকের দিনেও যদি আমার বাবাকে একবারের জন্যে একটু দেখতে পেতাম- দূর থেকে হলেও যদি একবার দেখতে পেতাম- শুধু একবার।
জেমসের গানটা অনেক মর্মস্পর্শী- এতো রক্তের সাথে রক্তের টান- স্বার্থের অনেক উর্ধে- হঠাৎ অজানা ঝরে তোমায় হারালাম- মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো...........................
আমার বাবার জন্যে সবার কাছে দোয়া চাইছি। সবাই ভাল থাকবেন।
২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:৩১
রােশদ সুলতান তপু বলেছেন: আপনাকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।
২| ২০ শে জুন, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২৯
দীপান্বিতা বলেছেন:
সব সময় তিনি সঙ্গে আছেন...বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রার্থনা....
২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:৩২
রােশদ সুলতান তপু বলেছেন: আসলেও মনে হয় সবসময় তিনি সাথে আছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ২০ শে জুন, ২০১০ রাত ৮:৫৩
রক্তিম কৃষ্ণচূড়া বলেছেন: মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল ।
সৃষ্টিকর্তা যেন আপনার বাবাকে অনেক শান্তিময় স্থানে রাখেন ।
২২ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১:৩৩
রােশদ সুলতান তপু বলেছেন: দোয়া করবেন। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৪| ০২ রা মার্চ, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৭
ঝটিকা বলেছেন: আপনার বাসা কি যশোরে? আমার বাসাও ওখানে, এস,পি বাংলোর কাছে।আপনার?
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:৪২
গিনিপিগ বলেছেন:
doato obossoi thaklo.
Click This Link