![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যুগে যুগে রাজনৈতিক নেতাদের Prophet কিংবা Demigod বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ সফল হয় নাই।
সেই ক্রিস্টোফার কলম্বাসের মূর্তি এখন আমেরিকার নতুন জেনারেশন ভেঙে ফেলে কারণ এতো শত বছর পরে এসে তারা জানতে পেরেছে কলম্বাস ছিল নেটিভ আমেরিকানদের গণহত্যাকারী।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরো চার্চিলের ইতিহাস এখনকার ব্রিটসরা নতুন করে জানছে, কিভাবে এই লোক কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরী করে উপমহাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে।
বিপরীত দৃশ্যও আছে। এই দুই বছরে সবাই আবার নতুন করে হিটলারের সত্য ইতিহাস জানার চেষ্টা করছে। নেরেটিভ সব সময় পশ্চিমাদের কন্ট্রোলে ছিল। মুভি, উপন্যাস দিয়ে হিটলারের একটা চরিত্র তৈরী করা হয়েছিল সবার সামনে যেটা এখন সবাই নতুন করে প্রশ্ন করছে।
কথা হলো, ইতিহাসকে কন্ট্রোলে রাখা কঠিন। ব্যাক্তির ইতিহাস তো আরো কঠিন।
মুজিবকে নবী বানানোর চেষ্টাই মুজিবের জন্য কাল হয়েছে। 'অবিসংবাদিত' বানাতে গিয়ে বরং চাপা দেওয়া ইতিহাস বিস্ফোরিত হয়েছে এখন এসে। কিন্তু সত্যটা বললে ক্ষতি কি ছিল?
মুজিব 'বাংলাদেশ' চাইতে সাহস করে নাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। এটা তো অস্বীকার করার কিছু নাই! তখনকার পত্রিকার অনেক অনেক সাক্ষাৎকারে আছে এটা! 'অখন্ড পাকিস্তানের' প্রতিশ্রুতি বারবার দিয়েছে, শুধু বলে এসেছে পূর্ব পাকিস্তানকে ক্ষমতার ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। এমনকি ৭ মার্চে স্বাধীনতার সরাসরি ঘোষণার জন্য তাকে বলেছিলো অন্য নেতারা। স্ট্রেটেজিক কারণেই হোক, অন্য কোনো কারণেই হোক সে দেয় নাই। বাংলার মানুষ সেইদিন কানে রেডিও ধরে বেশ ছিল। হতাশ হয়েছিল। এগুলা তো লিখিত সত্য ইতিহাস।
এটাও সত্য বাংলাদেশকে স্বাধীন করার শক্তি মুজিব থেকেই পেয়েছিলো মানুষ। নিজের ক্যারিশমা দিয়ে সবার নেতা হয়ে উঠতে পেরেছিলো মুজিব। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্লোগান ছিল 'তোমার নেতা আমার নেতা, শেখ মুজিব শেখ মুজিব'। জিয়া, ওসমানী, তাজউদ্দীন না, মুজিবের নামেই রণক্ষেত্র থেকে স্লোগান উঠেছিল।
মুজিব নিজে থেকে যতটা না নেতা হয়ে উঠেছে, বাংলার মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে মুজিবকে ততটা নেতা বানিয়েছে।
যুদ্ধের পুরো সময়ে জেলে থাকা মুজিবের হয়ে যুদ্ধ যারা চালিয়েছিল সেই বীর নেতাদের ইতিহাসে জায়গা হয় নাই কেন পরে দিয়ে? জাতীয় চার নেতা ছাড়া এই দেশ স্বাধীন হইতো? ওসমানী মতন কমান্ডার ছাড়া দেশ স্বাধীন হইতো? বাংলাদেশ যে তাদের হাত ধরে হইসে সেই কথা কই?
মুজিবই স্বাধীনতার পরে একজন ব্যার্থ রাষ্ট্র নায়ক হয়েছে। এইটাও পাথরে খোদাই করা সত্য।
রাজাকারদের মাফ করা মুজিবের হাত ধরেই তো শুরু হইলো। কিন্তু কথা ছিল স্বাধীন দেশে অন্তত বড় বড় রাজাকার গুলার টুটি চেপে ধরা হবে।
হইলো কি? সাধারণ ক্ষমা দিয়ে দিলো। বিচারটা তখন করে ফেললে অর্ধশত বছর পরে এসেও দেশে রাজাকারের রাজনীতি চলতো না।
মুজিবের আমলে লক্ষ লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষে মারা গেছে এটা সত্য না? সেই দুর্ভিক্ষের সময়ে মুজিবের পরিবারে লাক্সারি বিয়ের আয়োজন হয়েছে এটা সত্য না?
মুজিব আওয়ামী লীগের নেতাদের সামলাইতে পারে নাই স্বাধীনতার পরে। এইজন্য দেখবেন হাসিনার আমলে সব সময় শুধু ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাইসে, স্বাধীনতার পরের মুজিবের কোনো ভাষণ চালায় নাই। কারণ সেখানে আওয়ামী লীগের আমলনামা বলা আছে। নেতাদের দুর্নীতিতে অতিষ্ট মুজিব দেশকে কিভাবে তুলতে হবে সেই ব্যাপারে clueless ছিল।
সবকিছু নিজের কন্ট্রোলে রাখার জন্য বাকশাল বানাইসে মুজিব, রক্ষীবাহিনী বানাইসে মুজিব। ৭৩-এর নির্বাচনে ভয়ঙ্কর ভাবে বিরোধীদের দমন করে মুজিব। রাষ্ট্রের টাকায় তখনকার যুগে হেলিকপ্টারে চড়ে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণা করে মুজিব।
এতকিছুর পরেও মুজিব দেশের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই ছিল।
কিন্তু তার অপয়া সন্তান হাসিনা মুজিবের সর্বনাশটা করে। শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতার জন্য বাপকে সিম্বোলিজম হিসেবে ব্যবহার করে তিতা করে ফেলে হাসিনা। শত শত কোটি টাকার মুজিব বর্ষ করে, বড় বড় স্ট্যাচু বানায়ে, অন্য নেতাদের ইতিহাস মুছে দিয়ে স্বাধীনতার পরের অটোক্রেটিক মুজিবকে পুনর্জন্ম দেয় হাসিনা। বই থেকে মুছে ফেলে অন্য নেতাদের ইতিহাস-অবদান। চারদিকে শুধু মুজিব আর মুজিব। নাইলে, ভাসানী নভোথিয়েটারের নাম বদলানোর কি দরকার ছিল? ভাসানী'ও কি শত্রু ছিলো?
এমন অবস্থায় দেশকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যেখানে বাংলাদেশ আর মুজিব একই কালেমার অংশ হয়ে গেল। মুজিবকে নিয়ে প্রশ্ন করলে তুমি বাংলাদেশকে মানো না। এর আগে যত দেশে, জাতিতে এমনটা করার চেষ্টা করা হয়েছে সেখানেই নেতার পতন হয়েছে। দেশের থেকে নেতা বড় হয় কেমনে? দেশের জন্য নেতা, নেতার জন্য দেশ না।
বাংলাদেশের একটা অংশ মুজিব হইতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ মানেই মুজিব হইতে পারে না। শুধু মুজিব না, কোনো নেতাই না। দেশ থেকে বেশি নেতা প্রেমিক হইলে আপনি দেশপ্রেমিক দাবি করেন কিভাবে নিজেকে?
তবে, মুজিবের বিরোধিতা করতে গিয়ে শিশু হত্যাকারী, গর্ভধারিনী হত্যাকারীদের প্রশংসা করবেন না। তাদেরকে হিরো বানাবেন না। মুজিব দেশকে যেই জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলো সেখানে তার এসাসিনেশন ইনভিটেবল ছিল। কিন্তু যেভাবে করা হয়েছে সেটা ১০৭ বছর আগে বলশেভিক বিপ্লবে রাশিয়ান রাজপরিবারকে হত্যা থেকেও বেশি জঘন্য। কোনোভাবেই এই ম্যাসাকারের সমর্থন হইতে পারে না।
শেষ কথা বলি,
মুজিব নেতা ছিলো, আছে এবং থাকবে। কিন্তু সকল রাজনৈতিক নেতাই এক একজন ফলস প্রফেট। ফলস প্রফেটদের পূজা করতে হয় না। রাজনৈতিক নেতাদের সমীহও করতে হয়, আবার তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন'ও করতে হয়।
এইজন্য শেখ মুজিব যতটা না 'বঙ্গবন্ধু' হয়ে উঠতে পেরেছে, ততটা 'জাতির পিতা' হয়ে উঠতে পারে নাই।
১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬
শূন্য সময় বলেছেন: ১৪-১৫ বছর ধরে এখানে লিখি আমি কিন্তু অনিয়মিত।
২| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭
নতুন মেসাইয়া বলেছেন:
আপনাে অনেক কিছুই শুন্য, মগজ-শুন্য, জ্ঞান-শুন্য, প্রজ্ঞা-শুন্য, জীবটাই শুন্য।
১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৫৯
শূন্য সময় বলেছেন: আপনার 'ভরা' থাকলে বলেন না কি কি শূন্য কথা বললাম?
৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ রাত ৮:৪৬
ধূসর সন্ধ্যা বলেছেন: ভাল বলেছেন
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই আগস্ট, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:০৩
সৈয়দ কুতুব বলেছেন: আপনার লেখা মনে হয় ১ম পড়লাম।