নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
সন্ত্রাস ও রাজনীতি সমার্থক হয়ে যাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বুঝতে পারছেন তো?
আজ যারা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সহিংসতায় অংশ গ্রহণ করছে তারা এ সমাজের বাইরের কেউ নয়। যারা গাড়ি পোড়ায়, জীবন্ত মানুষ দগ্ধ করে, পুলিশকে কুপিয়ে হত্যা করে কিংবা মাথা থেঁতলে দিয়ে অস্ত্র কেড়ে নেয়। তারাই ভিন্ন সময়ে ভিন্ন প্রেক্ষিতে করে নারী নির্যাতন। হত্যা-লুণ্ঠন-ধর্ষণের মত কাজ গুলি তারাই করে থাকে। এদের পরিচয় কখনো রাজনৈতিক দলের সদস্য কখনো ভাড়াটে পিকেটার। তারা এই পরিচয়টাকেই তাদের পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করে চালায় নৈরাজ্য। রাজনৈতিক দলের সাথে তাদের সম্পর্কই তাদের করে তুলছে অপ্রতিরোধ্য। কারো ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপনের সাহস কখনোই হতে পারত না যদি না তাঁর মাথার উপরে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তথা ক্ষমতাধরদের আশীর্বাদ থাকত। এটা বুঝতে অপরাধ বিশেষজ্ঞ হতে হয়না। আমি বলছি না শতভাগ অপরাধীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তবে শতভাগই যে কোন না কোনভাবে রাজনৈতিক আশীর্বাদ প্রাপ্তির চেষ্টা করে তাতে সন্দেহ নেই। আর তারা যে খুব একটা বিফল হননা তাও প্রমাণিত। এমনকি এমনও দেখা গেছে মেধাবী-শান্ত ছেলেটিও রাজনৈতিক সংস্পর্শে এসে ভয়ংকর সন্ত্রাসী হয়ে উঠেছে। আজ থেকে ত্রিশ বছর পূর্বে যে পরিচিত ছিল ভয়ংকর সন্ত্রাসী বলে আজ নামকরা রাজনৈতিক নেতা। এভাবেই সন্ত্রাস ও রাজনীতি সমার্থক হয়ে যাচ্ছে। সমার্থক হয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসী ও রাজনীতিবিদ এই ভয়াবহতার দায় কি আমাদের নেতৃবৃন্দ এড়াতে পারেন?
দেবতার আসন প্রত্যাশীরা যখন যে কোন উপায়ে ক্ষমতারোহন বা ক্ষমতা ধরে রাখার অনৈতিক সংগ্রামে লিপ্ত হন। তখন তাদের পেশী শক্তি প্রদর্শন করতেই হয়। আর তা করতে গিয়ে প্রশ্রয় দিতে হয় সমাজ বিরোধীদের। আমি বিশ্বাস করতে চাই আমাদের নেতৃবৃন্দ কিছুতেই চলমান হিংস্রতা-বর্বরতা চান না। কিন্তু একে রোধ করতে যে অসুর বধ বা বর্জন প্রয়োজন তাও তারা করতে চান না। তারা মনে করেন এই হিংস্র পশুরা ছারা তারা তাদের দাবী আদায় করতে পারবেন না। আর সে কারণেই তারা একে আড়ালে পৃষ্ঠপোষকতা দেন আর প্রকাশ্যে এই আসুরিক পৈশাচিকতার দায় প্রতিপক্ষের ঘারে চাপান। হিংস্র এই হায়েনাদের তারা ব্যবহার করেন সত্য কিন্তু নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখেন না। আর তাই যতটা তারা চান তাঁর থেকে হয়ত মানুষ অনেক বেশি দুর্ভোগের স্বীকার হচ্ছে। যা তারা মেনে নিতে না পারলেও তাদের চটানোর সাহস করেন না। বরং এই বর্বরদেরই পক্ষাবলম্বন করতে বাধ্য হন।
এ কথা কোন সুস্থ মস্তিষ্কের লোক বিশ্বাস করবেন না যে, সাধারণ মানুষ এই হিংস্রতা চালায় বা এই সমাজবিরোধীরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। যেখানে একটি সভাও সফল করতে টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে আনতে হয়। সেখানে-
ককটেল/ বোমা ফোটাতে কত টাকা দিতে হয়?
গাড়ী পোড়াতে নিশ্চয়ই আরও বেশি?
মানুষ হত্যায় বা পুলিশের মাথা থেঁতলে দিতে কত?
কারা এই অর্থ ব্যয় করছেন?
একটি প্রজন্মকে তারা ভাড়ায় খাটাতে শুরু করেছেন। তাদের আরও বেশি হিংস্র হয়ে ওঠার তালিম দিচ্ছেন। এটা কতটা নৈতিক? বলা হয় বাঘ একবার রক্তের স্বাদ পেলে তাকে আর থামানো যায় না। তেমনি একবার যার হাত রক্তে রঞ্জিত হয়। পরবর্তীতে মানুষ হত্যা তাঁর কাছে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
রাজনৈতিক সহিংসতায় ভাড়া খাটা এই খুনিরাই বিভিন্ন সময়ে সমাজবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ জানতে চায়, অপরাধীরা বার বার অপরাধ করেও পার পেয়ে যায় কিভাবে? এদের খুঁটির জোড় কোথায়। উত্তরে কি প্রথমেই রাজনৈতিক নেতাদের নাম আসবে না? রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দই কি তাদের প্রশ্রয় দাতা নন?
যারা প্রশ্ন করেন হঠাৎ করে সামাজিক অবক্ষয় এত প্রকট হয়ে উঠল কেন? তাদের কাছে আমার প্রশ্ন; দিন দিন সমাজবিরোধীদের সহিংস হয়ে উঠতে কারা উৎসাহিত করে? কারা প্রশ্রয় দেয়? পূর্বে কি এই প্রবণতা এতটা ছিল? দেখা গেছে ইদানীংকালে সংগঠিত সহিংসতায় যারা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নয়। অর্থাৎ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে সমাজবিরোধীদের দিয়েই এই সব হত্যাকাণ্ড এবং নৈরাজ্য চালানো হচ্ছে। এর একটা শেষ আছে। কোন না কোন দল বা জোট ক্ষমতায় যাবে তখন এই হিংস্র হায়েনাগুলিও মিশে যাবে সমাজে। তারা কি তখন সুশীল হয়ে যাবে? মোটেই না, বরং ক্ষমতাধরদের সাথে পূর্ব সম্পর্কের জোরে চেষ্টা করবে ক্ষমতার দাপট দেখাতে। এদের কাছে না তাদের পরিজন নিরাপদ, না সমাজ।
সাধারণ মানুষ চাইলেই এদের বর্জন করতে পারবে না। দেখা যাবে একসময় এরাই সমাজপতি। অমানুষ থেকে পরিণত হবে মহামানবে। যার অনেক নমুনাই বর্তমান। আমরা অচ্ছুতরা এই মহামানবদের মনে প্রাণে ঘৃণা করি। আমাদের সেই তীব্র ঘৃণা তাদের নির্লজ্জের বর্ম ভেদ করতে পারে না। তাদের দিকে চোখ পরলে আমরা ঘৃণায় চোখ ঘুরিয়ে নেই তারা তা দেখে আত্মপ্রসাদ লাভ করে মানুষ তাদের ভয় পায় ভেবে। তাদের কথা শোনাও আমরা পাপ জ্ঞান করি। যদিও তা বলার সাহস আমাদের নেই। কিন্তু যখন দেখি তাদের পৃষ্ঠপোষকরাই আমাদের দণ্ড-মুণ্ডের কর্তা তখন লজ্জা, ক্ষোভ আর হতাশায় আমরা ভেঙ্গে পরি।
আমাদের নেতারা খুন করেন না। খুনিকে প্রশ্রয় দেন। তারা পুলিশের গুলিতে আগ্রাসী মানুষ মারা গেলে শোকাতুর হন। তাদেরকে দেন শহীদি মর্যাদা। যখন তাদের ভাড়াটেরা পুলিশকে পিটিয়ে, বোমা মেরে, কুপিয়ে মেরে ফেলে তখন একটিবারের জন্যও তথাকথিত নেতাকর্মীদের এই বলে আদেশ দেন না যে, একটি মানুষেরও যেন প্রাণ হানী না ঘটে । আমাদের নেতারা আজ সত্যের মুখোমুখি দাড়াতে ভয় পান। ভুলে গেছেন সত্য বলতে। তারা মানুষ মারতে ভাড়া করেন জানোয়ার। ভাল মানুষের মুখোশ পরে থাকেন। আত্ম অহমিকায় তাদের মাটিতে পা পড়েনা। তারা দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে দেশদ্রোহী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। ধর্মের নামে করেন অধর্ম।
তবু শেষ পর্যন্ত তারাই আমাদের ভরসা। তাদের হাতেই সমর্পিত আমাদের নিরাপত্তা, এ দেশের ভবিষ্যৎ। আর তাদের কাছেই তাই অনুরোধ করছি আন্দোলন যদি হয় রাজনীতির অংশ আপনারা আন্দোলন করুণ। কিন্তু সেই আন্দোলনকে বেগবান করতে আজ আপনারা যাদের সহযোগিতা নিচ্ছেন তারা সমাজবিরোধী। তাদের বর্জন করুণ। তারা আজ আপনাদের মিত্র হতে পারে কাল ভয়াবহ বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এরা জাত-গোত্রহীন সুবিধাবাদী ভাড়াটে। দয়া করে এদের প্রশ্রয় দিবেন না। আমরা যেমন শত সমালোচনার পরেও আপনাদেরই শরণাপন্ন হই। আপনারাও তেমনি যতই ষ্টিমরোলার চালান না কেন এক সময় আমাদেরই মুখাপেক্ষী হন। এটাই বাস্তবতা। আর তাই আমাদের মত প্রান্তিক জনগণকে রক্ষার্থে হলেও সমাজ বিরোধীদের দমন করুণ। এই সব সমাজবিরোধীদের দ্বারা মুলতঃ প্রান্তিক জনগণই আক্রান্ত হয়; আপনাদের মত উঁচু শ্রেণীর মানুষরা নন। কিন্তু এই প্রান্তিক মানুষের দেখ ভালের দায়িত্ব তো আপনাদেরই। দয়া করে এদের থামান। আজ সমাজে যে বিশৃঙ্খলা যে নৈরাজ্য চলছে তাঁর সাথে যে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ক্ষমতার কাড়াকাড়ির যোগসূত্র রয়েছে তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। আপনারা সে দায়মুক্ত হন। আমাদের বাঁচতে দিন।
[email protected]
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:৪১
মদন বলেছেন: +++++++++++++++++++++++