নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিজ্ঞাপনের ভাষা যখন; “কাঁচা খাইয়া ফালামু”!!!

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

ভদ্রলোক খুবই হাসিখুশি একজন মানুষ। যেমন হাসেন তেমনি হাসান। সারাক্ষণই সবাইকে মাতিয়ে রাখেন। তার দর্শন হল সর্বদা মনকে প্রফুল্ল রাখবেন কোন বালাই স্পর্শ করতে পারবে না। না রোগ না বস(তিরস্কার)। স্বাভাবিকভাবেই অফিসের প্রিয় মুখ তিনি। নেতিবাচক ঘটনার ভেতর থেকেও তার ইতিবাচক কিছু একটা বের করা চাই-ই চাই। এহেন একজন সজ্জন মানুষ যখন চরম হতাশা গ্রস্ত মুখ নিয়ে বসে থাকেন তখন সবাই উৎসুক হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। যাই হোক আমরা ক’জন তার ডেস্কে গিয়ে জানতে চাইলাম কারণটি কি। আসুন এবার উত্তরটি তার নিজের জবানীতেই শুনি।



কি আর বলব ভাই, একমাত্র ছেলে আমার। উন্নত পরিবেশে বড় করব বলে নিজ বাড়ি ছেড়ে ফ্লাটে উঠলাম। বাসার আশ্রিত থেকে শুরু করে কাজের সহযোগী প্রত্যেকের ভাষা শুদ্ধ করালাম। আর সেই ছেলেই কিনা আজ ক্যান্ডি খেতে চেয়ে, না পেয়ে রাগ করে আমায় বলে “না দিলে কাঁচা খাইয়া ফালামু”। আমার চোদ্দ পুরুষের কেউ এমন কথা বলেনি ভাই! এমন বেয়াদবি আমরা তো তাকে শিক্ষা দিইনি!



ওর মা বলল এটা নাকি একটি ক্যান্ডিরই বিজ্ঞাপনের ভাষা। বলুন তো, আমরা কি দিন দিন একটা বেয়াদব জাতিতে পরিণত হচ্ছি?

ঐ কোম্পানির সত্ত্বাধিকারীর সন্তান বা আমাদের তথ্য মন্ত্রী মহোদয়ের সন্তান যদি তাদের এই একই কথা বলে তাদের কি তখন ভাল লাগবে না তারা তাদের সন্তানদের এই শিক্ষা দেন?

পাঠক এই উত্তরটি আমার জানা নেই। আমি আমার সহকর্মী বন্ধুকে কোন সান্ত্বনাও দিতে পারিনি কারণ প্রশ্নটা যে আমারও।



কদিন আগে একটি ইলেক্ট্রনিকস সামগ্রীর বিজ্ঞাপনে দেখলাম যৌতুককে উপজীব্য করে বিজ্ঞাপনটি করা হয়েছে। সারা দেশে নারী নির্যাতন যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তার অন্যতম প্রধান কারণ এই যৌতুক। আর তাকেই উপজীব্য করে যারা বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারে এবং যারা প্রচারের অনুমতি দেয় তারা কোন শ্রেণীর মানুষ বা আদৌ মানুষের পর্যায়ে পরে কিনা তা আমার বোধগম্য নয়। আর যাদের প্রচারযন্ত্রে এগুলো প্রচারিত হয় তাদের কথা না হয় নাই বলি। ব্যবসায়ীর নাকি অর্থ বৃদ্ধির সাথে সাথে সমান তালেই মানবিক গুণাবলি লোপ পেতে থাকে। তাই এসব তাদের মাথায়ই ঢোকে না। হলে হতেও পারে। আর তাছাড়া যখন মহান জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে মাননীয়(!) আইন প্রণেতারা নিষিদ্ধ পল্লিতে ব্যবহৃত ভাষার উন্মুক্ত চর্চা শুরু করেন আর আমরা টেলিভিশনের চ্যানেল পালটে ছেলে মেয়েদের মগজ রক্ষার চেষ্টা করি তখন আর এ সব ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে কি লাভ?



S@ifur’s তার ইংলিশ স্পোকেন কোর্সের বিজ্ঞাপনে লেখে ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারলে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ছেলের বউ হওয়া যায়!



ফেয়ার এন্ড লাভলি বলে এক সপ্তাহে আপনাকে আশ্চর্য রকম ফর্সা করে দিবে। আর রং ফর্সা মানেই যে ভাল চাকরি, ভাল পাত্র এটাও তারা ক্রমাগত বলে যাচ্ছে। ফেয়ার এন্ড লাভলি কতটা রঙ ফর্সা করে জানি না তবে কালো বর্ণের নারীদের যে আরও কুণ্ঠিত করে তোলে তাতে সন্দেহ নেই। সেইসাথে পুরুষের মনেও যে এক ধরনের বর্ণ বিদ্বেষ গড়ে তুলছে না তাই বা বলি কি করে। যখন দেখি শুধুমাত্র গায়ের রং কালো বলেই আত্মহননের পথ বেছে নিতে হয় মিতুদের।

আট বছর পূর্বে যখন মিতুর বিয়ে হয় তখন নিশ্চয়ই মিতুর গায়ের রং ফর্সা ছিল না! আর তাকে তার বর্তমান স্বামীর সাথেও জোর করে বিয়ে দেয়া হয়েছিল বলেও আমরা শুনিনি। প্রতিনিয়ত প্রচারযন্ত্রগুলিতে রং এর এই গুন কীর্তন কি তার স্বামী, শশুর-শাশুড়িকে প্রভাবিত করেছিল কিনা তাও খবরে প্রকাশ পায়নি। তবে আজ যদি মিতুর কোন নিকটাত্মীয় সে অভিযোগ তোলে তাকে বিবেচনায় নিবেন কিনা সেটা পাঠকের নিজস্ব বিবেচনা। আমাদের সবথেকে আশ্চর্য লাগে যখন এই সব বেনিয়া গোষ্ঠী নারীর গায়ের বর্ণকে তার দুর্বলতা বলে চিত্রিত করে একদিকে তাদের ব্যবসা পরিচালিত করছে অন্যদিকে নারী স্বাধীনতা নারীর মর্যাদা নিয়ে কথা বলে বলে মুখে ফেনা তুলে মরছে।



অলংকারের বিজ্ঞাপনে কেন অর্ধ নগ্ন নারী দেহ উপস্থাপন করতে হবে তা এর কুশীলবরাই ভাল জানেন। আমরা সাধারণরা প্রার্থনা করি ছোট মেয়েটার চোখ যেন ছবিটার উপরে না পড়ে। এটা তো ঠিক, লজ্জাজনক ঘটনা যারা ঘটায় তারা লজ্জিত হয় না, লজ্জিত হয় দর্শকরা।



বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাদী দৈত্যের সৃষ্ট Doctrine of Caveat Emptor বা ক্রেতা সাবধান নীতির দোর্দণ্ড প্রতাপের কাছে আমাদের সরকারের করা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন যে নিতান্তই অসহায় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেখানে বলা হয়েছে- “কোন পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা অপরাধ”।

আর তাই যখন আজকের পত্রিকার খবরে জানা যায় বিশেষ কক্ষে গোপন ক্যামেরা স্থাপন, স্বর্ণালঙ্কার চুরিসহ অসংখ্য কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া কানিজ আলমাসের বিউটি পার্লার পারসোনা এবার বলছে, পার্লারে ঢুকতে চাইলে তাদের কাছে মুচলেকা দিতে হবে। মুচলেকায় বলতে হবে, পার্লারে প্রবেশের পর ভেতরে অপ্রীতিকর বা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও ঘটনা ঘটলে পার্লার কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না। তখনও আমরা আশ্চর্য হইনা।



সত্যিই তো, ভোক্তার আবার কিসের অধিকার!

ভোক্তা তাই ভোগ(গলাধঃকরণ)করবে। যা তাদের ভোগ(গলাধঃকরণ) করতে বলা হবে। তারা তাই শিখবে যা তাদের শেখানো হবে। পুঁজিবাদের দুনিয়ায় ভোক্তা অধিকার বলতে কিছু নেই। যা আছে তা হল সহ্য করতে শেখা। মেনে নেয়া আর মানিয়ে চলা।আরও পড়ুন



[email protected]

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

আহলান বলেছেন: সময় এসেছে নিজেদের সচেতন হবার ....

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আহলান, শুধু সচেতন নয় সাথে প্রতিরোধও জরুরী।

২| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

আিম এক যাযাবর বলেছেন: পুঁজিবাদের দুনিয়ায় ভোক্তা অধিকার বলতে কিছু নেই। যা আছে তা হল সহ্য করতে শেখা। মেনে নেয়া আর মানিয়ে চলা।
এই স্রোতেই তো আমরা ভেসে চলেছি.....

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আিম এক যাযাবর ধন্যবাদ আপনাকে। এবার বাধ সাধারও সময় এসেছে।

৩| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: হুমম...

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৭

তামিম(বাংলার মানুষ) বলেছেন: টিভি দেখিই না, আর পড়িবারের কারো সাথে যদি দেখতেও বসি তবে ভালো কিছু খুঁজে বের করতে করতে মেজাস খারাপ হয়ে যায়। প্রতিটা চ্যানেলেই কোন না কোন বিষয় নিয়ে এরকম কিছু আছেই যা কিনা হঠাৎ পর্দায় দেখলে নিজেরি অন্যদের কাছে লজ্জা পেতে হয় /:)

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০১

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ২৫ টি চ্যানেল তবু যেতে হয় ডিসকভারী, এনিমেল প্লানেটে। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য বৈ আর কি?
আমাদের চ্যানেলগুলিতে খবর ছাড়া যা আছে তা উদ্ভট কিছু অনুষ্ঠান আর এইসব দ্বায়িত্বজ্ঞানহিন বিজ্ঞাপন।

৫| ১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক ভাল লিখেছেন....। চোর চোট্টা খুনে ডাকাতরাই যখন জাতির অভিভাবক তখন কে আর এসব নিয়ে মাথা ঘামায়........।

১১ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ২:০২

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আর তাই আমরা চেচিয়ে মরি!!

৬| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩

কালো পতাকার খোঁজে বলেছেন: ভোক্তারাই তো এসব বেনিয়ার জনক। আমাদের টাকায়ই তো চলে এসব পুজিবাদের কারখানা। তাই নিজেদের ও শোধরানো দরকার।

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৭| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

বটের ফল বলেছেন: সচেতন হবার সময় এখনই।

চমৎকার এই বিষয়টি সবার সামনে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

ভালো থাকবেন মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

৮| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৮

বটের ফল বলেছেন: আপনাকে শ্রদ্ধা।

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আমাকে শ্রদ্ধায় নয় শুভকামনায় বাধুন। কৃতার্থ থাকব। ভাল থাকুন অনেক ভাল।

৯| ১১ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬

গ্রাম্যবালিকা বলেছেন: হুম

১১ ই জুন, ২০১৩ রাত ১১:৪১

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.