নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
আজ যে সব বিশ্ব পরাশক্তি মানবতা বিরোধী অপরাধীদের শাস্তি দিতে গেলে মানবতার ধুয়া তুলছেন তাদের চোখে পড়েনি- ক’দিন আগে উত্তর কোরিয়ার নেতা জাং সং-থায়েক এর বিরুদ্ধে সাজানো বিচার ও রায় কার্যকর করার ঘটনাটি? এর পূর্বে লাদেন হত্যাকাণ্ড, গাদ্দাফি হত্যাকাণ্ড, সাদ্দামের বিরুদ্ধে সাজানো বিচার ও রায় কার্যকর এ সবই খুব মানবিক বলে মনে হয়েছিল! আবু গারীব কারাগারকে তাদের কাছে কি মানবতার মহান দৃষ্টান্ত বলে মনে হয়?
এই এক চোখা নীতি সর্বস্ব বিশ্ব শক্তির সাথে যোগ হয়েছে আমাদের আভ্যন্তরীণ জাতীয় বেঈমানদের যোগ সাজস। যারা ভদ্রতার মুখোসের আড়ালে এই অপশক্তিকেই ইন্ধন যুগিয়ে চলেছে নানা ভাবে। তারা এই কাদের মোল্লা সেই কসাই কাদের মোল্লা নয়, এই দেলোয়ার হোসেন সাঈদি সেই দেল্লা রাজাকার নয় বলে ক্রমাগত বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। কিন্তু তাতেও যখন লাভ হচ্ছে না, তখন তারা কাদের মোল্লাকে শহীদের তকমা লাগিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। এরা কারা?
এক কথায় জামায়াতের এজেন্ট।
এদের কেউ কেউ যখন নিজেকে ভাল মানুষ সাজাতে এক সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধ করেছেন বলে চিৎকার করে উঠেন। তখন তাদের কাছে জানতে ইচ্ছে করে। কোথায় লেখা আছে-
যিনি একবার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেবেন সে আর কখনোই বেঈমান হয়ে উঠবে না?
মুক্তিযোদ্ধা যদি তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয় তাহলে তাকে সে দোষে দুষ্ট বলা যাবে না কোন আইনে?
কে তাদের স্থায়ী দেশপ্রেমিকের সনদ দিয়ে দিল?
স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ঘটানো বিয়োগান্তক ঘটনাগুলি কারা ঘটিয়েছিল?
এদের সাথে যোগ হয়েছেন আরও কিছু বিশিষ্ট নাগরিক যারা কোনদিন শহিদ মিনারে যান না। আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করেও স্মৃতিসৌধ অভিমুখী হন না অথচ এ দেশের দারিদ্রকে বিক্রি করে উপার্জন করে চলেন। দেশের কোন দুর্যোগে এদের টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যায় না। এরাই আবার নিজ স্বার্থ রক্ষার্থে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের পক্ষে বিশ্ব মোড়ল দ্বারা সুপারিশ করান। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই।
সমস্যা হল আমরা এই ষড়যন্ত্রকারীদের চিনতে বরাবরই ভুল করি। ১৭৫৭ তে যেমন এক মীরজাফরকে চিহ্নিত করে জগত শেঠ, উমিচাঁদ, ঘসেটি বেগমদের মত কুশীলবদের আড়াল করে ফেলেছি। ঠিক তেমনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক ঘটনার পেছনেও শুধুমাত্র কর্নেল ফারুক, রশিদ গং দের সাথে বড়জোর মুশতাক পর্যন্ত চিহ্নিত হয়। এর বাইরেও যে সব ঠাণ্ডা মাথার খুনিরা কলকাঠি নাড়িয়েছে তারা অদৃশ্যই থেকে গেছে। আড়ালেই থেকে গেছেন দেশি বিদেশি চক্রান্তকারীরা। ফলে এ দেশে তারাই সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভেও সক্ষম হয়েছিল।
জাতিসঙ্ঘ কার কথা বলে, যুক্তরাষ্ট্র কার পক্ষ অবলম্বন করে এ সব এখন আর কারো চিন্তার খোরাক নয়। দিবালোকের মত তা স্পষ্ট। মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচার কার্য শুরু হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠির কিছু তৎপরতাকে পাশাপাশি সাজালে কি নির্দেশ করে আসুন একবার দেখে নেই-
*হীনা রাব্বানীর অতীত ভুলে যাওয়ার আহবান।
*ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত বেগম খালেদা জিয়ার আলোচিত নিবন্ধ। যেখানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক মুক্তির সুবাতাস বইয়ে দেয়ার আশা পোষণ করেছেন।(মুক্তির সে স্বাদ ইতিমধ্যেই আফগানী স্থান, ইরাক, লিবিয়া, ফিলিস্তিন গ্রহণ করেছে।)
*বিএনপি কর্তৃক আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হতে হবে, স্বচ্ছ হতে হবে ইত্যাদি নানাবিধ কথা বলে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ এবং বাঁধাগ্রস্ত করার চেষ্টা।
*যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জেএসপি সুবিধা স্থগিত করন।
*বেগম জিয়ার উপদেষ্টা কর্তৃক সকল নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের আইনি সহায়তা প্রদান।
*তত্ত্বাবধায়কের দাবীর নামে চালানো সহিংসতা।
*নিজেদের ডাকা হরতালের দোহাই দিয়ে আলোচনায় না বসা।
*জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হওয়া স্বত্বেও তাদের সঙ্গ ত্যাগ না করে নির্বাচনী জোটের নামে প্রশ্রয় দেয়া।
এই বিষয়গুলি লক্ষ করলে যে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে তা হল চলমান আন্দোলনের লক্ষ্য একটাই। আর সেটি হল জামায়াতকে রক্ষা করা। আরও স্পষ্ট করে বলতে হলে বলব। যদি এই মুহূর্তে বিএনপিকে নির্বাচিত হওয়ার শতভাগ গ্যারান্টিও প্রদান করা হয় তবু তারা নির্বাচন আসবে না। কারণ এ দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কারো পক্ষেই আর সম্ভব নয় মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বের করে দেয়া। এ জন্য প্রয়োজন একটি অগণতান্ত্রিক সরকার। যাদের কোন দায় বদ্ধতা থাকে না। কাজেই এখন আর নির্বাচন মূল ইস্যু নয়। মুল ইস্যুটিকে ঢেকে রাখার উপলক্ষ মাত্র। বিএনপিকে যদি তাদের নিজস্ব অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হয় তাহলে অবিলম্বে জামায়াত সঙ্গ ত্যাগ করে গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। নয়ত জামায়াত ডুববে বিএনপিকে সঙ্গে নিয়েই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা '৬৫,'৬৬,'৬৯,'৭০,'৭১ এর উত্তাল দিনগুলোতে প্রবল বিরুদ্ধ শক্তির বিপরীতে বঙ্গবন্ধুর "অবিচল ক্যারিশমাটিক" রাজনীতি দেখে দেখে বড় হয়েছেন। তিনি জানেন কি করা উচিৎ। তিনি এও জানেন কখন কোন কৌশলে এগুতে হবে। আজ যারা যাই বলুন না কেন এ যুদ্ধে জয় এ দেশের অস্তিত্ব রক্ষার্থে, এ দেশের রাজনীতির বিভাজন দূর করতে এবং সর্বোপরি এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। আর তাই যে কোন মুল্যে এ যুদ্ধে জিততেও হবে।
আমাদের মনে রাখা দরকার আজকের এই জাতিসঙ্ঘ, এই যুক্তরাষ্ট্র, এই তুরস্ক, এমনকি চিনের মত বিশ্ব মোড়লদের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা স্বত্বেও বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত একটি সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয়েছিল। আজ কেন পারবে না? আজকের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর এ দেশের মানুষ সেই আস্থা রেখেই অপেক্ষা করছে এই যুদ্ধ জয়ের। যার সবচেয়ে বড় প্রমান হল বিরোধী জোটের আন্দোলনে জনগনের অংশ গ্রহন না করা। আমরা এ যুদ্ধে জিততে চাই। আমরা আগামীর বাংলাদেশকে দেখতে চাই প্রকৃতই স্বাধীনতার পক্ষ শক্তির হাতে। সরকার বা বিরোধী কোথাও থাকবে না স্বাধীনতার বিরুদ্ধ শক্তি।
সঞ্চালক, আপন ভুবন.কম
[email protected]
©somewhere in net ltd.