নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
একদিকে সরকারের অনমনীয় মনোভাব অন্যদিকে বিরোধীদলের টানা আন্দোলন দেশকে ক্রমশই একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি যেমন জানে না আসলে তাদের লক্ষ্য কি, তেমনি আওয়ামী লীগও জানেনা তারাই বা শেষ পর্যন্ত কি করবেন। অনেকটা যেন সময়ের উপরেই ছেরে দিয়েছেন; এমন ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে উভয়ের আচরণে। যেন অবস্থার প্রেক্ষিতে করনীয় বিবেচনার নীতিতেই তারা অটল। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষা বা দেশের অর্থনীতি বাচানো এর কোনটাই বিবেচ্য নয়। বিবেচ্য হল যে কোন উপায়েই হোক সর্ব্বোচ্চ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করা। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের জন্য এই নীতি কতটা গ্রহণযোগ্য?
আওয়ামী লীগ যেমন জানে ৫ জানুয়ারি একটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তেমনি বিএনপিও জানে এই নির্বাচন ঠেকানোর ক্ষমতা তাদের বা তাদের বন্ধুদের নেই। তথাপিও তারা আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়িয়েই চলেছেন।
অথচ এই মুহূর্তে এটা স্থির করা উচিৎ যে, দশম সংসদকে আওয়ামীলীগ কতদিন চালাতে চায় বা কতদিন নাগাত একাদশ সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে চায়। আর তা কোন সরকারের অধীনে এবং কিভাবে। আমরা যতদিনে একটা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে স্থায়ী নিরপেক্ষ নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারব ততদিন যাবত এই সংকট চলতেই থাকবে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, রাজনীতিবিদদের অনৈতিক চাওয়া পাওয়া দেশকে পিছিয়ে দেবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করবে এটা মেনে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজেই এর একটি সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। প্রতি চার বছর অন্তর পুরো একটি বছর নির্বাচনের নামে নষ্ট করার কোন অধিকার রাজনীতিবিদদের নেই।
প্রতিটি খারাপেরও যেমন একটি ইতিবাচক দিক থাকে তেমনি এই গুমোট রাজনৈতিক আবহও একটি সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আর তা হল বড় দুটি দলকে একটি ঐকমত্যে পৌঁছানোর। এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের উপরে ভেতর-বাইরে যতটা চাপ রয়েছে এবং নানা কারণে তারা যতটা নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাতে এটাই সুযোগ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এমন একটি নিশ্চয়তা আদায় করে নেয়া, যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি হয়। বিএনপির নিশ্চয়ই এটা হিসেবের মধ্যে আছে যে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন এর পরে বিএনপি আর প্রধান বিরোধী দলের অবস্থানে থাকছে না। কাজেই প্রধান বিরোধী দলের প্রিভেলেইজও তাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে নৈতিক সমর্থন যত কমই থাকনা কেন ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অবধারিতভাবে নির্বাচিত আওয়ামী সরকারের আইনগত বাধা থাকছে না। তখন আজকের জাতীয় পার্টির অবস্থানও অন্যরকম হবে। সেই সাথে আশ্চর্যজনকভাবে ঘটনাপ্রবাহে এ সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে যে, জামায়াতের পরবর্তী কার্যক্রমও হয়ত বিএনপির পক্ষে যাবে না। অতএব ৫ জানুয়ারীর পরের পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিএনপির অনুকূলেই যে যাবে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। আর তাই বিএনপির জন্য বর্তমান সময়টাই একটা সুযোগ।
এর পূর্বে বিএনপি একের পর এক সুযোগ হাত ছাড়া করে এখন এমনই এক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। যা তাদের অনেকখানিই পরনির্ভরশীল হতে বাধ্য করেছে। দলীয় কর্মীরা নেতাদের কর্মকাণ্ডে চরম হতাশ হয়ে রঙে ভঙ্গ দিয়েছে অনেক আগেই। ফলে বিএনপি নেত্রী জামায়াত নির্ভর হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি আন্দোলনের নেতৃত্বও জামায়াতের হাতে ছেড়ে দিয়েছিলেন। ফলে সাধারণ মানুষ এবং বহির্বিশ্বের কাছে গনতন্ত্র মনা এ দলটি পরিচিত হয়ে উঠল জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। যা তাদের ভাবমুর্তিকেই ক্ষুন্ন করেছে কোন সুফল বয়ে আনতে পারেনি। আজ তারা ভেতর-বাহির চাপে বাধ্য হয়েই জামায়াত সঙ্গ ত্যাগ করতে শুরু করেছে। এতে জামায়াত যে ক্ষতির স্বীকার হবে, তার শোধ কি তারা সুযোগ পেলে নেবে না? বিএনপি চেয়েছিল আওয়ামীলীগের ঘারে বন্ধুক রেখে জামায়াত সমস্যার সমাধান করতে। আওয়ামী লীগ জামায়াত নিষিদ্ধ না করে বিএনপিকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করল। এখন বিএনপিকে তার ভাবমূর্তি রক্ষার্থে নিজে থেকেই জামায়াত মুক্ত হতে হবে। আর তা করতে গিয়ে অনাহুতই ঘরের ভিতরেই শত্রু জন্ম দিয়ে বসবে।
জামায়াত তাদের নেতাদের বাচাতে বিদেশী লবিষ্টের পেছনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছে এবং আন্দোলনের নামে যে পরিমাণ জনশক্তির অপচয় করেছে তার বিপরীতে তারা কিছুই হাসিল করতে পারেনি। আর এই ক্ষতির দায় যে অনেকটাই এসে পরবে বিএনপির ঘারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে বিএনপি তাদের সাথে সম্পর্ক ছেদ করলে।
এ অবস্থায় শুধুমাত্র বিদেশি বন্ধু আর দলকানাদের উপর নির্ভর করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া অনেকটাই অসম্ভব। তথাপিও বিএনপিকে হৃত গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে আসতে হলে হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতেই হবে।
বেশ কিছুদিন যাবত যৌক্তিক কারণেই বিএনপি আদৌ বিএনপির নীতিনির্ধারকদের পরামর্শে পরিচালিত হচ্ছে কিনা এ ব্যাপারে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ যেখানে জয়ের শতভাগ নিশ্চয়তা থাকতেও একটি নির্বাচন মুখি দল নির্বাচন বর্জনের মত আত্নবিধবংশি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তখন সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হতে বাধ্য। একই সাথে জনমতের বিপক্ষে গিয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের পক্ষাবলম্বন। দেশব্যাপী ত্রাস সৃষ্টি, কাদের মোল্লার রায় কার্যকর করার পড়েও সীমাহীন নীরবতা পালন, এমনকি পাকিস্তানের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিরুদ্ধেও সোচ্চার না হয়ে বিএনপি মূলত দেশ বিরোধী অবস্থানই গ্রহণ করেছে।
কেবল সুবিধাবাদী সুশীল গোষ্ঠী, বিদেশি পক্ষ শক্তি, আর দলকানাদের উপর ভর করেই যে ক্ষমাতারোহন সম্ভব নয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রয়োজন দলকানাদের বাইরের যে বিশাল সচেতন জনগোষ্ঠী তার সমর্থন। আর সেই সমর্থন পেতে হলে বিএনপিকে যে বিষয় গুলি পরিষ্কার করতে হবে তা হল মানবতাবিরোধি অপরাধীদের বিচার এগিয়ে নেয়ার প্রশ্ন, দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান এবং জামায়াতের পুনর্বাসন প্রশ্নে তারা কি ভূমিকা গ্রহণ করবে তা পরিষ্কার করা। সেইসাথে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সহ বেশ কিছু বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। আর এরই সাথে আগামী নির্বাচনের আগাম সময় নির্ধারণের এটাই মোক্ষম সময়। নয়ত আগামীতে বিএনপি দল থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে একটি গোষ্ঠীতে পরিণত হবে। যা শুধু বিএনপির জন্যই নয় দেশের জন্য সমূহ ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেবে। কারণ আওয়ামীলীগের লাগাম টেনে ধরতে শক্তিশালী বিকল্প থাকতেই হবে। নয়ত এই আওয়ামীলীগও এক সময় ফ্রাংকেনষ্টাইনের আরেক দানবে পরিণত হবে। যা আমরা কখনোই চাই না।
সঞ্চালক; আপন ভুবন .কম
[email protected]
২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:১৪
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আওয়ামীলীগের লাগাম টেনে ধরতে শক্তিশালী বিকল্প থাকতেই হবে। নয়ত এই আওয়ামীলীগও এক সময় ফ্রাংকেনষ্টাইনের আরেক দানবে পরিণত হবে। যা আমরা কখনোই চাই না। অনেক ধন্যবাদ তিক্তভাষী আপনাকে।
৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৩৪
মিজভী বাপ্পা বলেছেন: তবে আর যাই বলেন না কেন, এই দুদলের জন্য সাধারণ জনগণেরই বলি দিতে হবে
০৩ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:২৪
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: এই দুদলের জন্য সাধারণ জনগণেরই বলি দিতে হবে
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২
তিক্তভাষী বলেছেন: ১৯৮৬-১৯৯০ এ বিএনপি বাইরেই ছিল। ১৯৯১এ জনগন আওয়ামীদের প্রত্যাখান করে বিএনপিকেই ক্ষমতায় বসিয়েছিল। বিএনপির শুদ্ধির জন্য কয়েক বছর বাইরে থাকাই দরকার। তাছাড়া, বিএনপি শূণ্যস্থান পূরণে ব্যর্থ হলে বিকল্প অটোমেটিক বেরোবে।