নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

জামায়াত নিষিদ্ধ হবে; হবে না।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১২



জাওয়াহিরির বিবৃতি, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত জঙ্গি নেতা ছিনতাই এবং এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাদের স্মিত হাসি। গত কদিন ধরে এসবই এ দেশের মানুষ বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে দেখেছে। একটির সাথে অন্যটির যে সম্পর্ক তাও প্রতীয়মান হচ্ছে। সাধারণ মানুষের এ সব নীরবে দেখে যাওয়া আর ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের অপেক্ষা করা ছারা আর কি-ই বা করার আছে? আমাদের তো এই সব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের উপরেই ভরসা করতে হয়। কেননা তারাই এ দেশের দণ্ড মুণ্ডের কর্তা। আমরা বলতে পারি, দাবী জানাতে পারি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব তাদেরই।



জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া বীর সেনানীরাই আজ যখন দলীয় আদর্শের কাছে বিক্রি হয়ে যান! তখন সাধারণ মানুষের আর ভরসার জায়গাটাই বা থাকে কোথায়? এটা ঠিক, হজব্রত পালন করলেই যেমন একজন মানুষ চিরস্থায়ী পবিত্রতা অর্জনে সক্ষম হন না। গঙ্গা স্নানে যেমন ভবিষ্যতের পাপ মোচন হয় না তেমনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মানেই চিরকালের দেশপ্রেমিক নন। জাতীর এই মহানায়কদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করেই বলছি; সকল মুক্তিযোদ্ধাই যে চিরকাল আদর্শের ধারক বাহক হয়ে দেশ মাতার সূর্য সন্তান হিসেবে নিজের আদর্শ ধরে রাখতে সক্ষম হবেন এমন কোন কথা নেই। আদর্শের যুদ্ধ প্রতিদিনের-প্রতিক্ষণের। আর তার স্খলনও ঘটতে পারে যে কোন মুহূর্তেই। যে কোন প্রলোভনে। তার একাধিক প্রমাণ অনেক মুক্তিযোদ্ধারা দেখিয়েছেনও। তথাপিও এ মহান বীর সেনানীদের কাছে সাধারণের আকাঙ্ক্ষা একটু বেশিই। আর তা যখন অপূর্ণ থেকে যায় তখন তারা আশাহত হয় বৈ কি?



দেশের বড় দুটি দলেই রয়েছে স্বাধীনতার অগ্র পথিকেরা। দুর্ভাগ্য জনক হলেও একটি দলে তারা শুধু ব্যবহৃতই হয়েছেন; দলকে ব্যবহার করে দেশ গড়ার সুযোগ পান নি। বিনিময়ে তাদের যেটুকু যা প্রাপ্তি তা তাদের কতটা সম্মানিত করেছে বা আদৌ সম্মানিত করেছে, না অসম্মানই বেশি করেছে সে প্রশ্নের উত্তরের ভার পাঠকের। অন্যটিতেও যারা আছেন মুখে যাই বলুন না কেন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে তারা যে বদ্ধপরিকর সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ।



আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হচ্ছে জামায়াত-শিবির একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। আদালতের রায়ের ধারাবিহকতায় নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক তথ্য ও মতামত সরবরাহকারী ওপেন সোর্স সংস্থা আইএইচএসের ‘আইএইচএস জেনস ২০১৩ গ্লোবাল টেরোরিজম অ্যান্ড ইনসারজেন্সি অ্যাটাক ইনডেক্স’-এর তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে শিবির। এত কিছুর পরেও জামায়াত অংশ নিচ্ছে উপজেলা নির্বাচনে। কোথাও কোথাও জয়লাভও করছে। তারা হরতাল আহ্বান করছে, তা পালিতও হচ্ছে। সরকার খোরা যুক্তি দেখিয়ে জামায়াত নিষিদ্ধ করছে না। আবার বিরোধী দলকে জামায়াতকে না ছাড়লে তাদের সাথে কোন আলোচনা নয় বলে শাসাচ্ছে। ভাবখানা এমন যে, বিএনপিই জামায়াত নিষেধের পথে একমাত্র বাধা!



আওয়ামীলীগের উলটো কথাটি বলছে বিএনপি। তারা বলছে সরকার কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না? এখানে তারা অকপট; তারা সরকারের ঘারে বন্ধুক রেখে নিজেদের সাফ সুতোরও করার চেষ্টা করছে। তারা জানে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে নামে উনিশের স্থলে আঠার দলীয় জোট হবে, বাস্তবে উনিশ উনিশই রবে। নামে নয় বেনামে জামায়াত বিএনপির পাশেই থাকবে। কাজেই তারা জোর গলায়ই বলতে পারছে, সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুক।



এটা কি দায়িত্বশীল রাজনীতি? দেশ কি তাদের খেলার বস্তু। ইচ্ছেমত খেলে যাবেন! দেশকে ঝুঁকিতে ফেলে এই কুট কৌশলের খেলা খেলার অধিকার তাদের কে দিল? জামায়াত শিবির যদি সন্ত্রাসী সংগঠন হয় তাহলে জামায়াত শিবিরকে যারা ক্রমাগত আশ্রয়- প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, তাদের সমূলে উৎখাতে আজ যারা দ্বিধান্বিত। সামান্য ভোটের হিসেব-নিকেশে নিত্য যারা গলদঘর্ম। তারা কি তাহলে শ্বেত সন্ত্রাসী নয়?



আমাদের দুর্ভাগ্য দেশ পরিচালনার জন্য মন্দ আর মন্দের ভালোর মধ্যে থেকেই একটিকে বেছে নিতে হয়। যার কোনটিই দলীয় স্বার্থের উর্ধেব দেশের স্বার্থকে স্থান দিতে পারে না। আর তা পারে না বলেই দেশদ্রোহীর সাথে আঁতাত করতেও তাদের বাধে না। কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতে ইসলামীর রোকন নওশের আলী যখন মাহবুব উল আলম হানিফের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন তখন আমরা ভাবতে বসি আওয়ামী লিগের নেতারা কি পরশ পাথর যে ছুঁয়ে দিলেই ছাই সোনা হয়ে যায়!



আওয়ামী লীগ-বিএনপি সাধারণ মানুষকে বোকা ভাবতে যেয়ে নিজেরাই নির্বোধের পরিচয় দিচ্ছে। যারা বলছেন জামায়াত নিষিদ্ধ হলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে। তাদের কাছে প্রশ্ন; জামায়াত কি আন্ডারগ্রাউন্ডে নেই? জেএমবি থেকে শুরু করে যত নিষিদ্ধ সংগঠন সবারই ত শেকড় জামাতে। জামায়াত যদি তার সদস্যদের ট্রেন আপ করে দল থেকে বহিষ্কারের নাটক করে ভিন্ন নামে সংগঠন তৈরি করে কর্মকাণ্ড চালায় তা তো জামায়াতের হয়েই কাজ করবে। জামায়াত প্রকাশ্যে যেমন আছে জামায়াত নামে। তেমনি আন্ডারগ্রাউন্ডেও আছে ভিন্ন নামে। বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন সমূহের নেতাদের কুষ্ঠি বিচারে কি তাই প্রমাণ হয় না?



জামায়াত নিষিদ্ধ হলে তারা আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে এই ভাবনায় তাদের নিষিদ্ধ না করে উপজেলার মত স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দানের মাধ্যমে পুনর্বাসিত করার এই চেষ্টা কতটা সুবিবেচনাপ্রসুত তা আলোচনার দাবী রাখে।



আওয়ামিলীগ যদি এবার ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থে জামায়াতকে নিয়ে কোন খেলা খেলতে চায় তা তাদের জন্য বুমেরাং হতে বাধ্য। এটা নিশ্চয়ই তারা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন। রাজনীতিবীদ গন দেশের স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে সক্ষম হবেন এটাই কাম্য। যারা ব্যর্থ হবেন তারা প্রত্যাখ্যাত হবেন। সে ক্ষেত্রে বিদেশী শক্তির জোর, জঙ্গি কার্যকলাপ কোন কিছুর সাহায্যেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ অর্জনে সক্ষম হবেন না। শেষ বিচারে সাধারণের সমর্থন থাকতেই হয়। আর সে সমর্থন জনস্বার্থে গৃহীত কার্যকলাপের উপরেই নির্ভর করে এটা আওয়ামীলীগের অন্তত বোঝা উচিৎ।



[email protected]

সঞ্চালক; আপন ভুবন ডট কম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.