নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নারীকেই হতে হবে নারীর রক্ষা কবচ।

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:২৮



নারী নির্যাতনের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপটি আমরা দেখতে পাই পারিবারিক নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে। যেখানে নির্যাতনের হার অনেক বেশি এবং বহুমাত্রিক। বাংলাদেশে পারিবারিক নারী নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে সমাজের প্রায় প্রতিটি শ্রেণীর বহুসংখ্যক নারী। প্রচলিত শিক্ষাও যে নারী নির্যাতনের মাত্রাকে কমাতে সক্ষম হয়নি এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ উচ্চ শিক্ষিতা নারীদের নির্যাতিত হওয়ার অসংখ্য উদাহরণ।



শিক্ষিত সমাজে নারী নির্যাতনের চিত্রটি অশিক্ষিত সমাজের থেকে ভিন্ন। অশিক্ষিত এবং স্বল্প শিক্ষিত শ্রেণীর নারীদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়। আর শিক্ষিত এবং উচ্চ শিক্ষিত শ্রেণীর নারীরা যতটা না শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হন তার থেকে অনেক বেশি মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন। কোন কোন ক্ষেত্রে আবার উভয়বিধ নির্যাতনের স্বীকার হন। যা কখনো কখনো নির্যাতিতাকে মৃত্যুর মুখে পর্যন্ত ঠেলে দেয়। কখনো পরিবারের সামাজিক মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে গিয়ে কখনো বা সন্তানের মঙ্গল কামনায় এ ধরনের নির্যাতনের বেশিরভাগই চেপে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ করা যায়। ফলে এই সব হতভাগ্য নারীদের দুর্ভোগের চিত্রটিও আড়ালেই থেকে যায়। এতে একদিকে যেমন নির্যাতিতা নারীটি ন্যায় বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। অন্যদিকে এ ধরনের নির্যাতনের হার প্রতিকার হীন ভাবে নিত্যই বেড়ে চলে। যার ফলশ্রুতিতে কেউ সারা জীবনের জন্য এই অত্যাচারকে ললাট লিখন হিসেবে মেনে নিয়ে মুখ বুঝে সয়ে যান বছরের পর বছর। জীবন্মৃত হয়ে বেঁচে থাকেন জীবনের পুরোটা সময়। আবার কেউ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হিসেবে বেছে নেন বিবাহ বিচ্ছেদের পথ।



ঢাকা সিটি কর্পোরেশন একটি সমীক্ষা থেকে জানা যায়, পাঁচ বছরে যত তালাকের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই নারীরা এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা তারাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন৷ শহরে প্রতি বছর এ ধরনের তালাকের হার বাড়ছে শতকরা ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ। এই প্রবণতা ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ছে উচ্চবিত্ত ও প্রবাসী পরিবারের মধ্যে। যার প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে নির্যাতিতা নারীদের-

• স্বাবলম্বিতা অর্জন এবং বর্তমানের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাহসী হয়ে ওঠা।

• সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন(তালাক প্রাপ্তা নারীদের পূর্বের ন্যায় হেয় প্রতিপন্ন না করা)।

• সমাজে নারীদের সম্মান বৃদ্ধি।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, পারিবারিক নির্যাতনের জন্য দায়ী কে? আমরা সাধারণভাবে যেমন এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতা নারীর স্বামীকেই একমাত্র দোষী বলে সাব্যস্ত করে থাকি। নির্যাতিতাদের ভাষ্য কিন্তু তা বলেনা।



শারীরিক বা মানসিক যে ধরনের নির্যাতনই সংঘটিত হোক না কেন প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বামীর সাথে সাথে সাথে শাশুড়ি এবং ননদদেরও একটি বড় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। শাশুড়ি এবং ননদদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণ একজন নির্যাতিতার জীবনকে চরম দুর্বিষহ করে তোলে। কোথাও কোথাও এমনও শোনা যায় যেখানে শাশুড়ি-ননদের অব্যাহত প্ররোচনার ফলে ঘটে যায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা। যার ভুক্ত ভুগিও আরেকজন হতভাগ্য নারী। অথচ এই ননদটিও তার শাশুড়ির দ্বারা কমবেশি নির্যাতিতা। এখানে আশ্চর্যজনকভাবে এই নারী একই সাথে দুটি চরিত্রে অভিনয় করছে। এক জায়গায় সে নির্যাতনকারী অন্য জায়গায় নির্যাতিতা।



একটু পিছিয়ে গেলে দেখব আজকে যিনি নির্যাতনকারী শাশুড়ি, ক’বছর আগে সেই তিনিও হয়ত তার শাশুড়ি কর্তৃক কম বেশি নির্যাতিত হয়েছেন। এই যে প্রতিহিংসা পরায়নতা, এই যে মেনে নিতে না পারা এটাই নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রথম এবং প্রধান বাধা।



পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা সর্বদাই নারীকে সমমর্যাদা প্রদানে কুণ্ঠিত থেকেছে, আজো থাকছে। সন্দেহ নেই ভবিষ্যতেও তাই থাকবে। নারীকে দাবিয়ে রাখার ইচ্ছা থেকেই এক সময় তাকে দাসী হিসেবে গণ্য করা হয়েছে আর আজ তাকে করা হয়েছে পণ্য।

যে পুরুষ আজ নারী অধিকার নিয়ে নিত্য চেঁচিয়ে মরছে তার অন্দর মহলে উকি দিলে পরে তাকেও একজন সওদাগর বলেই মনে হয়! যিনি নারী মুক্তির শ্লোগানটিকেও আত্ম প্রচারের সোপান বানিয়ে নিয়েছেন সুনিপুণ ভাবে। তার উচ্চকিত স্বর তাকেই উপরে উঠানোর প্রাণান্ত চেষ্টা রত। অন্য কিছু নয়। নারী এখানে এক উপলক্ষ মাত্র।

এখানে আমি দ্বিধাহীন। নারী মুক্তি কখনোই পুরুষের হাত ধরে আসবে না। এটা পুরুষের ধাতে সইবে না। বড়জোর পুরুষের সহযোগিতা আশা করা যায়। আর তার প্রয়োজনও অনস্বীকার্য। নারী নির্যাতন রোধ কিংবা নারী মুক্তির মশালটি নারীকেই বহন করতে হবে। একজন শাশুড়ি একজন ননদ কিংবা একজন যা’ বা তাদের সম্মিলিত শক্তিই পারে পরিবারের নির্যাতিতা নারীটিকে রক্ষা করতে। আর সেটা তাদের দায়িত্বও বটে।



বিয়ের আগে বা অব্যবহিত পড়ে কোন ছেলেকে তার মা বা বোন “স্ত্রীর” মর্যাদা সম্পর্কে সতর্ক করেছেন বলে আমি আজ পর্যন্ত শুনিনি। বরং বহুবার বহু ক্ষেত্রে দেখেছি। মা-বোন ধরেই নেন ছেলেটা বা ভাইটা পর হয়ে গেল। তাদের এ ভাবনা যে অমূলক তা বলছি না। মা বা বোনের মনে এই ভয়টাও তো আর দশ জন নতুন বৌ-ই তাদের কৃত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ধরিয়ে দিয়েছেন তাই না? আর সেই বৌরাও তো নারী-ই।



আগে নারীরা যেভাবেই হোক বিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করতো৷ আর তা করতে গিয়ে প্রয়োজনে সব ধরনের অত্যাচারও তারা নীরবে সহ্য করতো৷ তার পেছনে তখনকার নারীদের স্বাবলম্বিতার অভাবই একমাত্র কারণ বলে চিহ্নিত করা হলে তা হবে তার প্রতি চরম অবিচার। মূলত সেই নারীর উদারতা, দায়িত্ববোধ, একনিষ্ঠতাকে আমরা কিছুতেই খাটো করে দেখতে পারিনা। তার মানে এই নয় যে নারী সারা জীবন ধরে পরে পরে মার খাবে।

নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার যেমন দিতে হবে, তেমনি নারীকেও তার আত্মসম্মানবোধে বলীয়ানও হতে হবে। সর্বোপরি নারীকেই হতে হবে নারীর রক্ষা কবচ।

আমরা যেমন ছেলের বউয়ের ক্রমাগত কুটচালে পড়ে একজন বৃদ্ধা মা' বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রয় নিক এটা দেখতে চাই না ঠিক তেমনি এটাও দেখতে চাইনা শাশুড়ি-ননদের কুমন্ত্রণায় পড়ে স্বামীর হাতে স্ত্রীর অপমৃত্যু।



আমরা দেখতে চাই এক নরাধম ছেলে বা ভাইয়ের নির্যাতনের হাত থেকে ঘরের বৌকে রক্ষা করছে তারই শাশুড়ি-ননদ। এটা যে একেবারেই হচ্ছে না তা কিন্তু নয় তবে সংখ্যাটা নেহায়েতই নগণ্য। যা একটি নারী বান্ধব সমাজ গঠনে কোন ভূমিকাই রাখতে সক্ষম হয় না।



আমরা দেখতে চাই প্রতিটি পরিবারের মধ্যে নারীরাই নারী সদস্যদের রক্ষায় সোচ্চার হোক। গড়ে তুলক নারী বান্ধব পরিবেশ। তবেই মুক্তি মিলবে নারীর।



নয়ত আজ যেমন নারী দাসী থেকে পণ্য। তেমনি কাল হয়ত পণ্য থেকে আরও কোন নতুন চতুরতার মোরকে বন্দি হবে নারী। কোনদিনই মিলবে না নারীর প্রকৃত মুক্তি।



সঞ্চালক; আপন ভুবন ডট কম

[email protected]

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সহমত!

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৮

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৯

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
গালিব মেহেদি খান ভাই, দারুণ লিখেছেন। এমনটাই আপনার লেখনি থেকে আশা করা যায়। একমত। তারপরও ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবশালী মহলটি হলো পুরুষ, যাকে সমাজ সংস্কৃতি রাষ্ট্র এমনকি ধর্ম দিয়েছে একচ্ছত্র আধিপত্য। তার মানসিকতায় পরিবর্তন প্রয়োজন।

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: মইনুল ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবশালী মহলটি হলো পুরুষ, যাকে সমাজ সংস্কৃতি রাষ্ট্র এমনকি ধর্ম দিয়েছে একচ্ছত্র আধিপত্য। তার মানসিকতায় পরিবর্তন প্রয়োজন। আপনার সাথে আমিও একমত। এই আধিপত্য ভাংতেই প্রয়োজন নারী ঐক্য। আর সেটা হতে হবে গৃহাভ্যন্তর থেকেই। ভাল থাকুন, অনেক ভাল।

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৬

দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: বাস্তব সম্মত কথা। ভাল লাগা গালিব ভাই।

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৭

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন, অনেক ভাল।

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৫

সুমন কর বলেছেন: সহমত। ভালো বলেছেন।

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ সুমন আপনাকে। ভাল থাকুন, অনেক ভাল।

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৬

স্যামুয়েল স্যাম বলেছেন: একমত প্রকাশ করি

০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ স্যাম আপনাকে। ভাল থাকুন, অনেক ভাল।

৬| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩৪

জনসাধারণের মধ্যে একটি মলিন পট্টবস্ত্র বলেছেন: নারীকেই হতে হবে নারীর রক্ষা কবচ।

কথাটির সাথে সহমত।

৭| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:১২

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৮| ০৯ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:১২

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.