নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ যে ভাবে গুম এবং গুপ্তহত্যা চলছে তাতে কাল যে আমি এর স্বীকার হব না সে নিশ্চয়তা কে দিবে?

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:১৭



২২ অক্টোবর ২০১৩ প্রকাশিত প্রথম আলোর “বন্ধ হয়নি ক্রসফায়ার, উৎকণ্ঠা ছড়ায় গুম” শীর্ষক একটি রিপোর্টে পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র অনুযায়ী ২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত সময়ের সাথে ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত সময়ের আইন শৃঙ্খলার একটি তুলনামূলক চিত্রে দেখান হয়েছে।

সেখানে দেখা যায়-

চার হাজার ৩৮৮টি ডাকাতির মামলার স্থানে ডাকাতি মামলা হয়েছে দুই হাজার ৬৬৩টি একই সময়ে অস্ত্র মামলা হয়েছে ১১ হাজার ১১১টির স্থানে ৬৮০টি।

নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৭৬ হাজার ৭১৩টির স্থানে ৭৪ হাজার ৮৫টি।

২০০২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত সময়ে চার হাজার ৩২১টি অপহরণের মামলা হলেও ২০০৯ থেকে ২০১২ সময়ে এ সংখ্যা তিন হাজার ৩৭০টি।



এ পরিসংখ্যানটি উল্লেখ করার উদ্দেশ্য এ নয় যে, বিএনপির থেকে আওয়ামীলীগকে এগিয়ে রাখা বা গুম আতংকে নির্ঘুম রাত কাটানো মানুষগুলোকে আশ্বস্ত করা। উদ্দেশ্য একটাই, আর তা হল আমাদের প্রশাসন যে এই আতঙ্ক দূর করতে সক্ষম এটা বলা। শুধু প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। যার সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে এ বি সিদ্দিকির ফিরে আসা। যদিও তাকে অপহরণকারীরাই ছেরে দিয়েছে বলে বলা হচ্ছে তথাপিও এর পেছনে যে প্রশাসনের তৎপরতার কোন ভূমিকা নেই তা তো নয়। কিন্তু কথা হচ্ছে কেন এই গুমের ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটে চলেছে। আসলে এর পিছনে কারা দায়ী?



বিএনপি এবং সরকার বিরোধী শিবির থেকে প্রথমেই এর জন্য অঙ্গুলি নির্দেশ করা হয় র্যা ব এবং পুলিশ প্রশাসনের দিকে। অথচ শিশু পরাগের অপহরণের কথা আমরা জানি। কারা দায়ী তাও প্রকাশিত হয়েছে । আবার স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃণালের কথাও আমরা জানি। আমরা শুধুমাত্র এটা জানি না যে, কেন এ দেশে এ ধরনের হত্যা গুমের সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি নিশ্চিত করা হয় না।



আমাদের দেশের দায়িত্বহীন রাজনীতিবিদদের যেমন আমরা জানি তেমনি দায়িত্বশীল রাজনীতিবিদদেরও জানি। আর তাই শেষ পর্যন্ত আস্থাটিও রাজনীতিবিদদের উপরেই রাখি। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে যে নৈতিক স্খলন নেই তা কেউ বলছে না; তবে শেষপর্যন্ত যে তারাই সাধারণের শেষ আশ্রয়স্থল এটাও তো অস্বীকার করার উপায় নেই। তাহলে রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ কেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাধারণ মানুষের প্রতিপক্ষ বানাতে উঠে পড়ে লেগেছেন? এটা কি আখেরে কোন সুফল বয়ে আনবে?



আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যথেচ্ছ ব্যবহার কোন সরকার না করেছে? কেন সেখানে মেধার থেকে বেশি আনুগত্যকে প্রশ্রয় দেয়া হয়? কারা সে প্রশ্রয়টি দিয়ে থাকেন? আজ গুম প্রসঙ্গে যখন মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন-

“যারা হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের খুঁজতে বাড়িতে গিয়ে পাচ্ছে না। তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

কিন্তু, পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তাদের গুম করা হচ্ছে। আসলে এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়”।



এ কথা বলে মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয় কি বোঝাতে চাইলেন? দেশে কোন গুমের ঘটনা ঘটছে না? তিনি কেন সকল অপহরণকে অস্বীকার করছেন? দেশে কি কোন সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল নেই যারা অর্থ প্রাপ্তি সহ নানাবিধ কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে।



একটি গুমের ঘটনায় একটি পরিবারে যে কি গভীর অমানিশা নেমে আসে তা একমাত্র ভুক্তভোগীর পক্ষেই অনুধাবন করা সম্ভব। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ কখনোই সাধারণ মানুষের যন্ত্রণাকে ধারণ করতে সক্ষম হন না। তারা সে চেষ্টাটাও করেন বলে তাদের কথা বা আচরণে প্রকাশ পায় না। তাদের এই ব্যর্থতার ফলেই হয়ত প্রতিটি ভুক্তভোগীই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে চেয়ে থাকেন। তার সুদৃষ্টি কামনা করেন। সবই যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকেই করতে হয় তাহলে আর এত এত সভাসদ কেন? তাদের কাজটি কি?



মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের কথাকেই যদি সঠিক ধরে নেই তাহলে এ প্রশ্ন তো উঠতেই পারে, এই যে মাঝে মাঝেই নাম পরিচয় হীন লাশের খোজ মিলছে সে গুলো কি পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে? এ সব লাশ তো কোন না কোন মানুষের। তাদেরও তো পরিবার পরিজন আছে। দয়া করে একটু মানবিক হন। এমন উপহাস সত্যিই বড় বেশি হৃদয় বিদারক।



আমাদের দেশের অনেক সীমাবদ্ধতার একটি হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপ্রতুল সদস্য সংখ্যা এবং সীমিত লজিস্টিক সাপোর্ট। তাই বলে মানবিক গুণাবলীর অপ্রতুলতা থাকতে হবে কেন? এ দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাধারণের নিরাপত্তা বিধানের থেকে অনেক বেশি সময় ও সামর্থ্য ব্যয় করতে হয় বিরুদ্ধ রাজনৈতিক শক্তি দমনে এবং সরকার বিরোধী শক্তির ধ্বংসাত্নক কর্মসূচী ঠেকাতে। তাহলে রাজনীতিবিদদের আসল প্রতিপক্ষটা কে? আর তারা দায়িত্ববানই বা কাদের প্রতি?



আইন শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে যদি কখনো কাউকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নিতেই হয় সেটা কেন সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হচ্ছে না? আজ যদি র্যা ব বা অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হত যে আমরা কাউকে আমাদের হেফাজতে নিলে তা সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করেই নিয়ে থাকি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির সর্বশেষ অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়ে থাকে। তাহলে তো প্রশাসনকে এত বেশি সন্দেহের তীরে বিদ্ধ হতে হত না। অভিযুক্ত ব্যক্তিটির পরিবারও আশ্বস্ত হতে পারত। এমনকি তারা গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটির সন্ধানের চেষ্টাটি অন্তত করতে পারত।



এখন একটি লোক গুম হয়ে গেলে তার পরিবারও কিং কর্তব্য বিমুঢ় হয়ে পড়ছে। তারা বুঝতে পারছে না তাদের কি করা উচিৎ। ঢালাওভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দোষারোপ করায় অপরাধীরাও পার পেয়ে যাচ্ছে সহজেই। আক্রান্ত ব্যক্তিটির অবস্থা তো আরও শোচনীয়। কেউ হয়ত দেন দরবার করে ফিরে আসছে কেউ বা হয়ে যাচ্ছে বেওয়ারিশ লাশ। আর এ দিকে দিনের পর দিন ধরে চলছে স্বজনদের প্রতীক্ষা।



একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি তো একজন মানুষ চাইতেই পারে। আর রাষ্ট্র যদি সে ক্ষেত্রে এই নিরাপত্তা বিধানে অক্ষম হয় তার দায়ভার নিশ্চয়ই রাষ্ট্র পরিচালনার যারা দায়িত্ব নিয়েছেন তাদের ঘারেই বর্তায়। আমাদের মহান নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যতটা উদগ্রীব ঠিক ততটাই উদাসীন জন সাধারণের প্রতি দায়িত্ববান হতে। আর এটাই সব সমস্যার মুলে।



আজ যে ভাবে গুম এবং গুপ্তহত্যা চলছে তাতে কাল যে আমি এর স্বীকার হব না সে নিশ্চয়তা কে দিবে? আমরা এ দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে এই অসহায়ত্বের হাত থেকে মুক্তি চাই। আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে নয় সাহায্যকারী হিসেবে দেখতে চাই। দয়া করে তাদের সাধারণ মানুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে দার করানোর অপচেষ্টা চালাবেন না। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যদি কোন ভুল থাকে তা ধরিয়ে দিন। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঠিক সহযোগিতায় সাধারণের নিরাপত্তা বিধানে সক্ষম, তাদের সুযোগ করে দিন। যে সাধারণের দোহাই দিয়ে আপনারা রাজনীতি করেন সেই সাধারণ মানুষের প্রতি দায়িত্ববান হন। আপনারা চাইলেই পারেন এই গুম গুপ্তহত্যার মত ভয়াবহতা রোধ করতে, প্রয়োজন কেবল মানবিক হয়ে ওঠা। এবার তাই হয়ে উঠুন।

[email protected]

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

মিছবাহ পাটওয়ারী বলেছেন: নিরাপদ মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। ১৫-২১ এপ্রিল আর সপ্তাহব্যাপী জাতীয় গুম উত্সব পালন করতে চাই না।
Click This Link

২০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১৫

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মিছবাহ ভাই আপনাকে, ভাল থাকুন।

২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৪১

নবীউল করিম বলেছেন: নিশ্চয়তা চান তো অমুক পণ্য কিনুন! জীবন না……………… এই দেশ শুধুই মৃত্যুর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.