নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীপ্ত উচ্চারণ “আমরা এর কাজ শেষ করতে পারব” কিংবা গাইবান্ধা-চাঁদপুর নদীপথে টানেল নির্মাণের স্বপ্ন এসবই আমাদের স্বপ্নাতুর করে তোলে। করে গর্বিত। স্বপ্ন দেখায় একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। কিন্তু কোন শশ্মানের উপর দাঁড়িয়ে নিশ্চয়ই সে সমৃদ্ধি কাম্য নয়?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এএমআইই’র ডিগ্রি ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন যা প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের কাজ করতে প্রয়োজন শুধু আত্মবিশ্বাস। আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করুন, তাহলে সফল হবেন’। সত্যিই তাই; যে কোন উন্নত কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সবার আগে প্রয়োজন প্রবল আত্মবিশ্বাস। সেইসাথে প্রয়োজন সততা - একাগ্রতা। আর সর্বাগ্রে এবং সবথেকে যেটি বেশি প্রয়োজন তা হল সদিচ্ছা। আমাদের সরকার বাহাদুরের অভাব যদি কিছু থেকে থাকে তা ঐ স্বদিচ্ছারই। যার সাথে যোগ হয় আপন-পরের ভেদ যাকে আমরা বলি এক চোখা নীতি। এই দুইয়ের দুষ্ট চক্রে পড়ে দেশের মানুষের ওঠে নাভিশ্বাস! বিচারের বানি নিভৃতে কাঁদে। মহাজনের কুম্ভীরাশ্রু উপহাস বলে মনে হয়। পরিশেষে স্রষ্টার দরবারে সকল অভিশাপ গচ্ছিত রেখে শুরু হয় “অভাজনের” নতুন পথ চলা।
শ্যাম রাখি না কুল রাখি, ধরনের সমস্যায় এ দেশে পূর্বাপর প্রায় প্রতিটি সরকারকেই পরতে দেখা গেছে। এই দ্বিধান্বিত মনোভাবের কারণেই তারা বারংবার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার খেসারত দিতে হয়েছে দেশকে, দেশের সাধারণ মানুষকে। ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেন ঠিকই কিন্তু শিক্ষা গ্রহণে ব্যর্থ হয়েছেন। আজও সেই একই দুষ্টচক্র আওয়ামী সরকারের ভীতকেই যখন নড়বড়ে করে তুলছে সম্ভবত তখনও তারা তা অনুধাবনে সক্ষম হননি। যদি এবারও চুয়ান্ন’র ইতিহাসের (অনেকের আশংকা) পুনরাবৃত্তি ঘটে! আওয়ামীলীগের আর কীইবা এমন ক্ষতি হবে। তাদের থেকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ। যা পুষিয়ে নিতে হয়ত কয়েক দশক লেগে যাবে। এই যে এত কথা বলা; এতটা উৎকণ্ঠিত হওয়া তার পেছনে কারণ ঐ একটিই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী; আওয়ামীলীগের বিকল্প মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষীয় শক্তি আজো এদেশে গড়ে ওঠেনি। আর তাই স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছর পড়ে এসেও আওয়ামীলীগকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে এটা আওয়ামীলীগের জন্য হয়ত গর্বের তবে সাধারণ মানুষের জন্য মোটেই স্বস্তির নয়। যার প্রধান কারণ আজকের আওয়ামী লিগের অনেক কিছুই আর পূর্বের আওয়ামীলীগের মত নেই।
আওয়ামী লিগের কাণ্ডারি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে এ জাতি আর কোনদিন পাবে না এটা চিরায়ত সত্য। কিন্তু তাই বলে তার আপোষহীনতা, ইস্পাত কঠিন দৃঢ়তা, আদর্শ, দেশপ্রেম, তার দেখানো পথের দিশা তো আমরা পেতেই পারি। যেহেতু তারই উত্তরসূরির হাতে শাসিত হচ্ছে দেশ। আমরা কি তা পাচ্ছি?
এ দেশে সব সময়ই ক্ষমতাসীন দল এবং সরকার একাকার হয়ে যায়। যেন এটাই নিয়ম, দল সরকারে থাকলে জন সম্পৃক্ততা রাখতে নেই। জনগণের পাশে দাড়াতে নেই। জনসাধারণের কণ্ঠে কণ্ঠ মেলাতে নেই! দেশব্যপি চলমান এই গুম-হত্যা নিশ্চয়ই দল হিসেবে আওয়ামীলীগেরও কাম্য নয়? অথচ এর বিরুদ্ধে তারা নিশ্চুপ। কেন? কেন অন্যান্য দলের মত করে তারাও এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠছে না? তাদের ভাষায়, এর জন্য যদি বিএনপি-জামায়াত বা অন্য কোন শক্তিই দায়ী হয়ে থাকে। তাহলে তো তাদের আরও বেশি সরব হয়ে ওঠার কথা। কেন তারা চুপ করে বসে আছে?
দল হিসেবে আওয়ামী লিগের কর্মকাণ্ড বলতে আজ নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা কিছু অভিযোগ (সত্য/মিথ্যা) ব্যতীত আর তো কিছুই চোখে পড়েনা। আর এ সব অভিযোগ যে পুরোপুরি ভিত্তিহীন নয় তার প্রমাণ নেতাদের একে অপরের বিরুদ্ধে বিষদ্গার। যার মধ্যে থেকে বেড়িয়ে আসে অনেক তথ্য। যা এ সব অভিযোগের সত্যতাই নিশ্চিত করে। আওয়ামীলীগের বিভিন্ন স্তর থেকে বলা হয় ছাত্রলীগ যুবলীগ এমনকি আওয়ামী লীগ মুল দলেও অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আর তারাই আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছেনা কেন? তবে অনুপ্রবেশ ঘটুক চাই নাই ঘটুক আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে যে শুদ্ধি অভিযানের বিকল্প নেই তা বলাই বাহুল্য। সেইসাথে এই মুহূর্তে অনেক বেশি জরুরী হয়ে পড়েছে দেশের প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো। এর কোন বিকল্প নেই।
একটি পদ্মা সেতু এদেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টাতে যতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে তার থেকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে এ জাতীকে। আর সে জন্যেই পদ্মা সেতুর বাস্তবায়নে যত জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে এখন তার থেকেও অনেক বেশি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যাতে বর্তমান সরকার আর বেশি এগোতে না পারে। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক গন বিষয়টি বুঝতে অক্ষম এমন কথা বলার মত অতটা মূর্খ আমি নই, তবে এটা নিঃসংকোচে বলতে পারি নেতারা একে ধর্তব্যের মধ্যে নিচ্ছেন না।
দেশে হত্যা-গুম-খুন নতুন নয়। বছরের পর বছর ধরেই এটা চলে আসছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি আর ভুলো মনা এ জাতির কল্যাণে সহজেই তা চাপাও পড়ে যায়। কিন্তু হঠাত করেই তা সমগ্র দেশকে কেন গ্রাস করল? এ প্রশ্নটি কেউ করছে না। যারা অপহৃত হচ্ছেন তাদের পরিচয়কে উপজীব্য ধরে নিয়ে বিশ্লেষণ করলে কারণ হিসেবে প্রথমেই চলে আসবে মুক্তিপণ আদায়ের প্রসঙ্গটি। অথচ মাঝে মাঝে মুক্তিপণের কথা শোনা গেলেও তা এতটাই অস্পষ্ট যে এ দাবীটিকে আর মুখ্য বলে ধরে নেয়ার উপায় থাকছে না। আর দ্বিতীয় কারণ হিসেবে প্রতিপক্ষের প্রতিহিংসাকে ধরে নিলে কিছু ক্ষেত্রে তাকে উপযুক্ত বলে মনে হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটাও অসাড় বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এটা দেশব্যাপী একটি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টিরই অপপ্রয়াস কিনা।
আমরা তো দেখেছি নেতা আহ্বান জানালেন সীতাকুণ্ড মডেলে আন্দোলন করতে হবে। এর অব্যবহিত পরেই পুরো দেশ সীতাকুণ্ড হয়ে উঠল!
নেতা যেইমাত্র হুশিয়ারি উচ্চারণ করলেন গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে জনগণ ক্ষমতার পরিবর্তন করবে, অমনি দেশব্যাপী শুরু হয়ে গেল গুম হত্যার মহোৎসব!
এ সবই যদি কাকতালীয় হয়, হতে পারে। তবে এই যে একা চলতে নিষেধ করার মত উপদেশ প্রদান একে আমরা ভয়াবহ ভবিষ্যতের আলামত হিসেবেই দেখছি যা মানুষকে আরও বেশি আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলছে।
কেননা বেগম খালেদা জিয়া যখন নিজেই বলেন, “অপহরণ-গুম-খুন ও সকল নৈরাজ্য বন্ধ করতে হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে”। (সমকাল ৩০-৪-১৪)। তখন একে পরিকল্পিত বললে কি খুব বেশি বলা হয়ে যায়? চলমান অপহরণ- গুম-খুন এ সব, কোন বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের অংশ বা ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের আলামত নয় তো? এ ভাবনা আজ সচেতন সব মহলকেই পেয়ে বসেছে।
এই যখন সার্বিক অবস্থা তখন যেখানে নাগরিক সমাজ সহ সকল মহলের সাথে সরকারের আরও অনেক বেশি যোগাযোগ রক্ষা করা এবং তাদের পরামর্শ গ্রহণ জরুরী ঠিক সেই মুহূর্তে সরকারের নাগরিক সমাজের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিকেও সহ্য না করাকে খুব বেশি সুবুদ্ধির পরিচায়ক বলে মনে করার কোন কারণ নেই।
দেশে এখন যা চলছে তাকে শিষ্টের দমন এবং দুষ্টের লালন বললে ভুল হবে না। আর মুল সমস্যাটাও ওখানেই। আজ র্যা ব সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীক যেভাবে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তাতে তাদের প্রতি কতটা সুবিচার করা হচ্ছে সে আলোচনা উঠতেই পারে। র্যা ব এবং পুলিশ প্রশাসনের কোন সদস্যের কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায়ে পুরো বাহিনীকেই বিলুপ্ত করতে হবে বলে যারা আবদার করছেন। তারা যে তা কোন সৎ উদ্দেশ্যে করছেন না এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এটা তো ঠিক তাদের এই কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে বিচারহীনতার সংস্কৃতিই। লিমনের অঙ্গহানি ও তার পরবর্তীতে পঙ্গু লিমনকে নিয়ে র্যা বের টানা হেঁচড়া কি তাদের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করেনি?
জঙ্গি দমন থেকে শুরু করে মাদক বিরোধী অভিযান এবং পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচন পূর্ব অগ্নিগর্ভ দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে এই র্যা ব এবং বর্তমান পুলিশ প্রশাসন কি সফল ভূমিকা পালন করেনি? আমরা কেন তা ভুলে যাই? নাকি তাদের বিরুদ্ধে এটাই বড় অভিযোগ(কেন তারা সফল হলেন)!
আজ নির্মোহ বিচারের সময় এসেছে। আর সেটাই হতে পারে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সঠিক এবং একমাত্র উপায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা কি এইটুকু অন্তত আশা করতে পারি না। আমাদের প্রশাসন যোগ্য তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিন। অপরাধীরা ধরা পড়বেই। দলমত নির্বিশেষে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন। প্রশাসনের প্রতি সরকারের প্রতি সাধারন মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার এটাই একমাত্র পথ।
যদি কেউ কোন অন্যায় করে থাকে তাকে আইনের আওতায় নিতে হবে। তাতে তার পরিচয় যাই হোক না কেন। সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিকে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। যে জাতী স্বাধীনতার ৪২ বছর পার করে এসেও মহান মুক্তিযুদ্ধের দায় মেটাতে প্রবল প্রতাপশালী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে পারে সে জাতী কেন দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। অবশ্যই পারবে। প্রয়োজন কেবল সদিচ্ছা। আর সেই স্বদিচ্ছার প্রতিফলনটুকুই এবার আমরা দেখতে চাই।
[email protected]
০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: না ভাই আল্লাহর রহমতে এখনো গুম হয়ে যাইনি। সত্যিই বহুদিন পরে...। আপনি ভাল আছেন তো?
২| ০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৬
সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন: ক্যামন আছেন সবাই !!! @গালিব ও স্বপন ভাই !!!
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৯
provat বলেছেন: গালিব ভাই, আমি তো ভেবেছিলাম যে, আপনি কি স্বেচ্ছায় গুম হয়ে গেলেন নাকি ? কোন খোজ-খবর নাই,কথা-বার্তা নাই, লেখা-জোখা নাই, একেবারে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলেন ! আছেন তো ভালো ?