নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

যখন বিষণ্ণ জন্মদাত্রী “মা”; সন্তানের যাচিত নরকবাস!

১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫৯



সারা জীবনের যত খাটা খাটুনি; তা তো একটু সচ্ছলতা, একটু সুখেরই আশায়। এই যে দিনে দিনে আমরা এক একটি যন্ত্র মানব হয়ে উঠছি তা তো একটুকু নিশ্চিন্ত নিরাপত্তা বিধানের নিমিত্তেই। কিন্তু; এই সুখ সমৃদ্ধির সাথে যদি শান্তির সমন্বয় না ঘটে তাহলে এর সবই কি এক সময় মূল্যহীন মনে হবে না? অথচ মানুষের জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি অর্জন যতটা কষ্ট সাধ্য ঠিক ততটাই সহজ সাধ্য শান্তি অর্জন। প্রয়োজন একটু ছাড় দেয়ার মানসিকতা। বড় লাভের তরে সামান্য ত্যাগ। কথাটি এ জন্য বলছি; আজ আমরা যারা লাগামহীন ভোগের জীবনে প্রবেশ করেছি তারা অনেক কিছু অর্জনে সক্ষম হলেও একই সাথে অশান্তির দাবানলেও নিত্য দগ্ধ হচ্ছি। যার স্রষ্টাও আমরাই।



আজ আমরা এমনই এক জগত গড়ে নিয়েছি যেখানে আমি-তুমির বাইরে কেউ নেই। যেখানে সকলের মাঝে থেকেও প্রত্যেকেই পরবাসী। আমরা ভুলেই গিয়েছি হাসি-ঠাট্টা-আনন্দ । হাসব বলে এখন আমাদের হাসির ক্লাবের সদস্য হতে হয়! মনে পড়েনা শেষ কবে গলা ছেড়ে দু লাইন বেসুরো গেয়েছিলাম।

মানুষ যন্ত্র তো নয়। তবু ঠিক দম দেয়া ঘড়ীর মতই অনবরত ছুটে চলেছি। কোথা শান্তি? কার কাছে? আমরা জানিই না। অবশেষে ঘুমের বড়ি অথবা মাদকের কাছে করি শান্তির নিষ্ফল অন্বেষণ। আর এই শান্তির অন্বেষণে গিয়ে পড়ে যাচ্ছি আরও বড় অশান্তির ফাঁদে। টেরই পাচ্ছি না।



আমরা ততোক্ষণ পর্যন্ত থামছি না যতক্ষণ না দেহ ঘড়ীটি হয়ে পড়ছে বিকল। যখন সেটা বিকল হয়ে পড়ছে; শুশ্রূষার জন্য ছুটে যাই স্বাস্থ্য সেবা কিনতে। টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছি পথ্য-সেবা। শরীরটা হয়ত ঠিকই সুস্থ হয়ে উঠে। মনের অসুখটা সারে কই?



অসুস্থ আমার মাথাটি কোলে তুলে নেয় না যে আর। নারীর বাধন যার সাথে সেই মমতাময়ী “মা”। তাল শাঁস এর মত শক্ত খোলসে আটা সদা সিক্ত মনের যে বাবা। সহজ হতে না পারা গুরু গম্ভীর আমার বাবার দুষ্প্রাপ্য সেই স্নেহাস্পর্শ আর জোটে না যে!



মমতাময়ী সেই “মা”, জীবনের সুবটুকু স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করা সেই বাবাকে আজ আমরা অনায়াসেই ফেলে রেখে এসেছি বৃদ্ধাশ্রমে। আমরা সবাই ব্যস্ত আপন আপন প্রয়োজনে। মা-বাবার খোজ নেয়ার সময়টুকুও আজ আর হয়ে ওঠে না। আমাদের মাঝের যাও বা দু’একজন বিবেকবান(!) তাদের কখনো সখনো খোজ নেয়ার চেষ্টা করেন তাও যেন প্রাণহীন; লৌকিকতার মাঝেই সীমাবদ্ধ।



প্রাণের স্বজনকে নির্বাসন দিতে গিয়ে আসলে আজ আমরা নিজেরাই করি নির্বাসিত জীবন যাপন। জন্মদাত্রী “মা” কে রেখে এসেছি বৃদ্ধ নিবাসে। স্বামীর তৈরি আলি শান বাড়িতে তার ঠাই হয়নি। একদা যিনি বাড়ির রাজরানী আজ সেখানে তিনি বড় বেশি অপাংক্তেয়। সেখানে তার জোটেনা এতটুকু আশ্রয় পর্যন্ত। আমি তার ধন্যি ছেলে সন্দেহ কি তাতে!



স্ত্রীর সাথে মায়ের মন মালিন্য, সংসারের নিত্য অশান্তি। এটা মেনে নেয়া যায় না তার চেয়ে বরং এই ভাল, “মা” তুমি বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে থাক। তোমার বৌ মা বলে, সেখানে নাকি এত ভাল ব্যবস্থা যে মাঝে মাঝে তার নিজেরই গিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে! (যদিও নিজের মাকে যেন ভাইয়ের বৌ সেখানে না পাঠাতে পারে সে জন্য সে সর্বদাই সচেতন)। "মা" মুখ ফুটে বলতে পারেন না, তাহলে সেখানে গিয়ে তাকেই থাকতে বল। এ বাড়ী আমার স্বামীর। এ সন্তান আমার নাড়ী ছেড়া ধন। আমার রক্ত জল করা পরিশ্রমে তার বেড়ে ওঠা। সর্বংসহা মা” মুখ ফুটে বলতে পারেন না কিছুই। হৃদয়ের রক্তক্ষরণ তার অশ্রু ফোটা হয়ে ঝরে। এক জানে সে, আর বিধাতা। আল্লাহর আরশ ওঠে কেপে। সন্তানের মন হয় না সিক্ত।



অপদার্থ আমি, না পারি নিজেকে দিতে ধিক্কার। না স্ত্রীকে শাসাতে। মা চলে যান বৃদ্ধাশ্রমে। পেছনে ফেলে যান জীবনের সকল সম্বল। এমনকি নাড়ী ছেড়া ধনটি পর্যন্ত। তারে এমন নিঃস্ব করে আমি বিলাস ব্যসনে গা ভাষাই। মখমলের চাদর আর পালক নরম দুগ্ধ ফেননিভ বিছানায় ছুঁয়ে নির্ঘুম কাটাই রাত। শান্তি পরবাসী আজ।

বাবা তার সারা জীবনের তপস্যায় কর্মক্ষম করে তুলেছেন ঠিকই মানুষ করতে পারেননি। আজ তাই আমাদের এই অমানুষের মহড়া দেয়া। আজ আমরা “মা” দিবসে পরবাসী “মা” কে শুভেচ্ছা জানাতে যাই। সারা দিন হৈ হুল্লোড় করে মায়ের মনের দগদগে ঘাকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে করি রক্তাক্ত। পরিশেষে বিষণ্ণ মা’কে ফেলে রেখে আমরা ছুটে চলি আমাদেরই সযত্নে তৈরি নরককুণ্ডে। বিধাতা ক্ষমা নয় উপযুক্ত শাস্তি চাই আজ নিজেই। এরপরেও মা-বাবা তো দেবেনা অভিশাপ। সন্তানের মঙ্গল কামনাই যেঁ তার একমাত্র কাজ। নিজেকে অভিশাপ তাই আজ নিজেই দেই। তুমি যেন করোনা ক্ষমা কিছুতেই।



[email protected]

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩

এহসান সাবির বলেছেন: বিশ্বের সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.