নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
ইসলাম মানুষের জন্য জ্ঞানার্জনের উপর অনেক বেশি গুরুত্বারোপ করেছে। আর তাই মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্নের ক্ষেত্রে দেখা যায়। প্রথম কথাটিই হচ্ছে “পড় তোমার প্রভুর নামে”। তাছাড়া মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের একটি বড় অংশ জুড়েই রয়েছে জ্ঞানার্জনের তাকীদ। একই ভাবে রাসূল (ছাঃ) তার উম্মতকে জ্ঞানার্জনের উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
মহানবী (ছাঃ) বলেন,
طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ-
‘জ্ঞানার্জন করা প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরয’। [১]
আল্লাহকে জানা বা চেনার এটিই একমাত্র পথ। ধর্মীয় বিশ্বাস কিংবা অনুশীলন কোনটিই জ্ঞান ব্যতীত সুষ্ঠুভাবে সম্ভব নয়। আল্লাহ এবং ঈমানের অন্যান্য বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হ’লে এ সকল বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই জ্ঞান থাকতে হবে। কারণ কোন বিশ্বাসই অজ্ঞতার উপর স্থাপিত হ’তে পারে না, হ’লেও তা হয় ভঙ্গুর। তাই ধর্মের গভীরতা, ব্যাপকতা ও বিস্তৃতির জন্য জ্ঞানের ব্যাপকতা ও গভীরতার সমান প্রয়োজন।
একই সাথে মহানবী (ছাঃ) বিভ্রান্তিমুলক তথ্য বা জ্ঞানের ক্ষেত্রেও সাবধান করে দিয়েছেন।
মহানবী (ছাঃ) বলেন,
إِنَّ هَذَا الْعِلْمَ دِيْنٌ فَانْظُرُوْا عَمَّنْ تَأْخُذُوْنَ دِيْنَكُمْ
‘নিশ্চয়ই এ জ্ঞান ধর্ম স্বরূপ। সুতরাং তোমরা লক্ষ্য রাখবে কার নিকট হ’তে তোমাদের ধর্ম গ্রহণ করছ’। [২]
এ হাদীছ থেকে বুঝা যায় যে, জ্ঞান কার নিকট হ’তে গ্রহণ করা হচ্ছে সেটাও লক্ষ্য রাখা কর্তব্য। কেননা জ্ঞানের যুক্তির সাহায্যে মানুষকে বিভ্রান্ত করা অধিকতর সহজ। তবে এই সতর্কতা ধর্মীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। পার্থিব জীবন তথা দেশ ও জাতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে নয়।
জ্ঞান চর্চায় গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে মহান আল্লাহ অজ্ঞতাকে অন্ধকারের সাথে তুলনা করেছেন। আল্লাহ বলেন,
قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيْرُ أَمْ هَلْ تَسْتَوِي الظُّلُمَاتُ وَالنُّوْرُ-
‘বল, অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান অথবা অন্ধকার ও আলো কি এক?’ (রা‘দ ১৬)
এ আয়াত থেকে বুঝা যায় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান ব্যক্তির মধ্যে যেমন পার্থক্য রয়েছে, তেমনি জ্ঞানী ও জ্ঞানহীন ব্যক্তির মধ্যেও রয়েছে ব্যাপক তফাৎ।
একই ভাবে মহানবী (ছাঃ) জ্ঞান চর্চায় গুরুত্বারোপ করে জ্ঞানী ব্যক্তির মর্যাদা নিরুপন করেন এভাবে-
فَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِىْ عَلَى أَدْنَى مِنْ أُمَّتِىْ
‘আবেদের উপরে আলেমের মর্যাদা হচ্ছে তোমাদের মধ্যে নিম্নতমের উপরে যেমন আমার মর্যাদা’। [৩]
এ প্রসঙ্গে মহানবী (ছাঃ) আরো বলেন,
مَنْ سَلَكَ طَرِيْقًا يَلْتَمِسُ فِيْهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللهُ لَهُ بِهِ طَرِيْقًا إِلَى الْجَنَّةِ وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِيْ بَيْتٍ مِنْ بُيُوْتِ اللهِ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ وَيَتَدَارَسُوْنَهُ بَيْنَهُمْ إِلاَّ نَزَلَتْ عَلَيْهِمُ السَّكِيْنَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمْ الْمَلاَئِكَةُ وَذَكَرَهُمْ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ فِيْمَنْ عِنْدَهُ-
‘যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের কোন পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। যখন কিছু লোক একত্রিত হয়ে আল্লাহ্র কিতাব অধ্যয়ন করে এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে তাদের উপর নেমে আসে প্রশান্তি, ঢেকে রাখে তাদেরকে আল্লাহ্র রহমত, পরিবেষ্টিত করে তাদেরকে ফেরেশতাগণ এবং তাদের ব্যাপারে আল্লাহ ফেরেশতাদের নিকট আলোচনা করেন’। [৪]
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ
‘তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে কুরআন শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়’। [৫]
রাসূল (ছাঃ) বলেন,
مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ عَلِمَهُ ثُمَّ كَتَمَهُ أُلْجِمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ-
‘কোন ব্যক্তির কাছে ইলম তথা জ্ঞান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হ’লে অতঃপর সে তা গোপন করলে ক্বিয়ামতের দিন তাকে জাহান্নামের একটি লাগাম পরিয়ে দেওয়া হবে’। [৬]
জ্ঞানী ব্যক্তির মর্যাদা সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেন,
مَنْ سَلَكَ طَرِيْقًا يَطْلُبُ فِيْهِ عِلْمًا سَلَكَ اللهُ بِهِ طَرِيْقًا إِلَى الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا لِطَالِبِ الْعِلْمِ وَإِنَّهُ لَيَسْتَغْفِرُ لِلْعَالِمِ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَالْأَرْضِ حَتَّى الْحِيْتَانُ فِي الْمَاءِ وَفَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ إِنَّ الْعُلَمَاءَ هُمْ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ لَمْ يَرِثُوا دِيْنَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَإِنَّمَا وَرِثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ-
‘যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনে কোন পথ অবলম্বন করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। ফেরেশতাগণ জানার্জনকারীর জন্য দো‘আ করে। জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা, এমনকি পানির নীচের মাছও। জ্ঞানহীন ইবাদত গোযারের তুলনায় জ্ঞানী ব্যক্তি ঠিক সেরকম, যেমন পূর্ণিমার রাতের চাঁদ তারকারাজীর উপর দীপ্তিমান। আর জ্ঞানীগণ নবীদের উত্তরাধিকারী। তারা টাকা-পয়সার উত্তরাধিকারী করেননি। বরং জ্ঞানের উত্তরাধিকারী করেছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করেছে সে ঐ উত্তরাধিকার পূর্ণ মাত্রায় লাভ করেছে’।
অতএব আমাদের উচিৎ সঠিক জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করা। ধর্মকে যেমন জেনে বুঝে পালন করাই শ্রেয়। তেমনি না জেনে না বুঝে অন্যের কথায় কান দিয়ে এবং শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে ধর্ম নিয়ে যা ইচ্ছা তা বলাও চরম মুর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।
১. মিশকাতুল মাছাবীহ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, হা/২১৮।
২. মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৩।
৩. তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৩, ২১৪।
৪. আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১২।
৫. আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইসমাঈল বুখারী, বুখারী, (রিয়ায: দারুস সালাম, ১৯৯৯), পৃ. ৯০১; মিশকাত হা/২১০৯।
৬. তিরমিযী, ‘কিতাবুল ইলম’, মিশকাত হা/২২৩।
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মুদদাকির আপনাকে।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬
বলো জয় বাংলা বলেছেন: +++
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:২৯
শেখ আজিজুর রহমান বলেছেন: সুন্দর লেখা...।
সাথে আমার সংগ্রহিত লেখাটা পড়ার অনুনয় করছি..। Go
০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৩
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: নিশ্চয়ই।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
মুদ্দাকির বলেছেন: আমাদের উচিৎ সঠিক জ্ঞানার্জনের চেষ্টা করা। ধর্মকে যেমন জেনে বুঝে পালন করাই শ্রেয়। তেমনি না জেনে না বুঝে অন্যের কথায় কান দিয়ে এবং শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে ধর্ম নিয়ে যা ইচ্ছা তা বলাও চরম মুর্খতা ছাড়া আর কিছু নয়।
একমত