নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
যা সত্য যা সঠিক বলে মনে করি সর্বদা তাই সহজ করে বলার চেষ্টা করি। যা কখনো কখনো খুব স্বাভাবিক ভাবেই কারো পক্ষে যায় কখনোবা বিপক্ষে। আজ বহুদিন পড়ে তারেক রহমানের একটি বক্তৃতার সমর্থনে লিখতে পেরে সত্যিই ভাল লাগছে।
আজ কতদিন পড়ে ঠিক মনে করতে পারছি না, তারেক রহমানের কাছ থেকে প্রকৃত পক্ষে একজন জাতীয় নেতা সুলভ একটি নাতিদীর্ঘ বক্তব্য পাওয়া গেল। যেখানে সত্যিকারের একজন নেতার বক্তব্যই ফুটে উঠেছে।মঙ্গলবার লন্ডনের রমফোর্ডে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে, “গ্লোবাল ভিলেজে বাংলাদেশ এক অপার সম্ভাবনার নাম” শীর্ষক বক্তব্যের প্রায় শুরুতেই তিনি বলেন, কারো বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাইনা, শুধু গতানুগতিক রাজনৈতিক বক্তব্যের বাইরে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কিছু উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরতে চাই। কথাটি তার এই বক্তব্যকে একই সংগে কৌতূহলোদ্দীপক এবং অনেকখানি গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।তার পুরো বক্তব্য জুড়েই ছিল একটি সমৃদ্ধ জাতি গঠনের রোড ম্যাপ। যার মধ্যে স্যাটেলাইট সিটি তৈরি করা এবং রেলের আধুনিকায়ন সহ কিছু কিছু কার্যক্রম ইতিমধ্যে সরকারের পরিকল্পাধীন রয়েছে। কিছু কিছুতে রয়েছে বেশ অভিনবত্ব। সব মিলিয়ে তার এই কর্মপরিকল্পনার সাথে ভিন্নমত পোষণের তেমন কোন সুযোগ নেই। বরং প্রশ্ন করা যেতে পারে ক্ষমতায় থাকাকালে তারা কেন এই পরিকল্পনাগুলো প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।
বিএনপির শুভাকাঙ্ক্ষীরা হয়ত বলবেন তারা তখন এই সব উন্নয়ন মুলুক পরিকল্পনাগুলো প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করতে সক্ষম হননি বলেই ছিটকে পড়েছিলেন ক্ষমতার বলয় থেকে। আর আজ যে তারা এই সব উন্নয়ন মুলুক পরিকল্পনা সমুহ সামনে নিয়ে এগোতে চাইছেন এটা অবশ্যই শুভ লক্ষণ। নিঃসন্দেহে, আমি তাদের সাথে একমত।
আজকের এ সময়ে এসে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের বিশ্রী কাদা ছোঁড়াছুড়িটা সত্যিই বড় বেশী জঘন্য মনে হয়। তারা যদি এর থেকে বেড়িয়ে এসে সুস্থ রাজনৈতিক চর্চায় মনোনিবেশ করতে সক্ষম হন তাহলে তা শুধু তাদের জন্য নয় দেশের জন্যই মঙ্গলজনক। জামায়াত-জাপার নেতাদের মত যারা দেশের প্রধান রাজনৈতিক চালিকাশক্তি হওয়ার দিবাস্বপ্নে বিভোর নন তারা এটা নির্দ্বিধায় স্বীকার করে নিবেন যে এ দেশে আওয়ামী লিগ-বিএনপির বিকল্প কোন রাজনৈতিক শক্তি আজ যেমন নেই তেমনি অদূর ভবিষ্যতেও দেখা মিলবে এমন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। কাজেই আমাদের ভরসা রাখতে হচ্ছে এ দুটি দলের উপরেই। সাধারণের নজরটাও থাকে দল দুটির নেতৃস্থানীয়দের দেয়া বক্তৃতা বিবৃতির উপরেই।
এ ছাড়া দেশের ছোট খাট আশ্রিত যত দল আছে তাদের নেতারা কে কি বলল। কে কোন দিকে গেল ওটা নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যথা নেই। মাথা ব্যথাটা তখনই হয় যখন এই সব পরাশ্রিতরাই প্রধান দুটি দলের নীতিনির্ধারণে অযাচিত ভূমিকা রাখতে শুরু করে। দল দুটি নিজেদের আদর্শকে পর্যন্ত জলাঞ্জলি দিয়ে বসে পরজীবীদের প্রভাবে।
এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই আজকের বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় উন্নীত হওয়া প্রধানত এ দুটি দলের হাত ধরেই। তাই সফলতা ব্যর্থতার ভারটাও মূলত এদেরই। কাজেই দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখাতে হলে তাদেরই দেখাতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে তাদেরই এগিয়ে নিতে হবে। এমনকি দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলেও সরকারে থেকে এবং সরকারের বাইরে থেকে তাদেরকেই প্রধানত ভূমিকা রাখতে হবে।
তারেক রহমানের ভাষায়, “বিশ্ব অর্থনীতির পালা বদলে এবং ভৌগোলিক কারণে গ্লোবাল ভিলেজে বাংলাদেশ এক অপার সম্ভাবনার নাম। কিন্তু এই সম্ভাবনার সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে সবার দায়বদ্ধতা, কর্মকাণ্ড ঐক্য ও অর্জনের উপর। তাই স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে প্রত্যেককে কিছু কিছু ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠা প্রয়োজন।“
কথাগুলি সত্যিই তিনি কতটা মন থেকে বলেছেন তা তার ও তার দলের পরবর্তী কার্যক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তবে কথাগুলি যে সর্বৈব সত্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন এটা আমাদের মহান নেতৃবৃন্দ অনুধাবনে সক্ষম হলে হয়।
তার মতে পাবলিক সেক্টরের নানা অব্যবস্থাপনা ও অকার্যকারিতার মাঝেও দেশটা কিছু-কিছু ক্ষেত্রে ভালো করছে, তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেশের প্রাইভেট সেক্টরের। সাধারণ খেঁটে খাওয়া মানুষের পরিশ্রম,দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের এই স্বীকৃতি প্রদানও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিশেষত্ব বিএনপি নেত্রী যখন আগামী ঈদুল ফিতরের পর আন্দোলনের আগাম ডাক দিয়ে বসে আছেন। আর আমাদের দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনে যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ এটা তা প্রতিষ্ঠিত সত্য।
সেইসাথে তিনি যখন বলেন, “ সাধারণ মানুষের প্রেরণা নিয়ে এবং তাঁদের চেতনাকে অন্তরে ধারণ করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যদি উন্নয়ন উৎপাদনের রাজনীতি নিশ্চিত করা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।“ তখন কি আমরা এটা আশা করতে পারি যে, বিএনপি ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথ পরিহার করে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে সচেষ্ট হবে?
তারেক রহমান ঠিকই বলেছেন দেশটা কারো একার নয়, কারো বাবার নয়, আমাদের সবার। এটা যদি রাজনীতিবীদ গন মনে রাখেন সেটাই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। আর যদি এটা হয় সংযমের মাসের প্রদর্শিত সংযম তাহলে তাকে দুর্ভাগ্য বলে মেনে নেয়া ছাড়া আর কি উপায়?
তবে আমাদের সংস্কৃতিতে না থাকলেও বর্তমান সরকারের নিকট আবেদন থাকবে তারেক রহমানের উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে মোটা দাগে বেশ কিছু বিষয় সরকার বিবেচনায় নিয়ে আগামীর উন্নয়ন রোডম্যাপ তৈরি করতে পারেন এতে একদিকে যেমন নতুন নতুন আইডিয়া যুক্ত হবার সুযোগ থাকবে তেমনি সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে কোণ প্রকল্প বন্ধ বা বাতিল করার প্রবণতাও কমবে। যাতে আখেরে দেশই লাভবান হবে। তারেক রহমানের কর্মপরিকল্পনা থেকে সে সমস্ত প্রস্তাবনা সরকার তার উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে সংযুক্ত করে নিতে পারেন-
১। কৃষিকে প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে পরিণত করা এবং কৃষি খাতের ভর্তুকির সুবিধা কৃষকের হাত অবধি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা।
২। শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক, গণমুখী, কর্মমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর করা।
৩। সরকারি চাকরিতে মেধাবীদের সুযোগ করে দিতে কোটার হার সর্বোচ্চ শতকরা পাঁচভাগে নামিয়ে আনা।
৪। শ্রম,আবাসন,বিদ্যুৎ,বিপণন ও শিক্ষা এই পাঁচটি সুবিধার দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ কয়েকটি শিল্প পার্ক নির্মাণ করা।
৫। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের আদলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুর এই তিনটি জেলা নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন এরিয়া এবং পুরো চট্টগ্রাম জেলা জুড়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়া গড়ে তোলা।
হতে পারে তারেক রহমানের এই কর্মপরিকল্পনার ছাপ আমরা খুঁজে পাব আগামীতে তাদের নির্বাচনী ঈশতেহারে। কিন্তু তার পূর্বেই কেন আমরা এই ধারনাগুলো কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে পারব না?
[email protected]
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৩৭
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আপন ভুবন.কম ব্লগারদের প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা একটি স্বতন্ত্র ওয়েব পোর্টাল। এটি ব্লগার্স কমিউনিটির প্রথম প্রয়াস। পড়ুন আপন ভুবন ব্লগ। লিখুন আপন ভুবনে। থাকুন আপনের সাথে। - See more at: http://aponvubon.com/#sthash.dDc15bf1.dpuf