নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচন এ দেশের রাজনীতির গতি প্রকৃতি অনেকটাই বদলে দিয়েছে।সেই নির্বাচনের পূর্বে এদেশের মানুষ বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে দেখেছে। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ক্ষমতার জন্য কতটা নির্মম, কতটা নৃশংস হতে পারেন। সেই সাথে এটাও স্পষ্ট হয়েছে যে, এরা গণতন্ত্র বলতে কেবল ক্ষমতার পালাবদলকেই বোঝেন। আর সেখানে যদি কোন রকম ব্যত্যয় ঘটে তখনই তাদের নখ দন্তের উলঙ্গ প্রকাশ ঘটে।
নব্বইয়ের গণআন্দোলনে এ দেশের মানুষ যে স্বপ্ন নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সে স্বপ্ন ভঙ্গ হতে তাদের খুব বেশি সময় লাগেনি। আমাদের অতি ধূর্ত নেতারা সেটা ভালভাবেই টের পেয়েছিলেন আর সে জন্যেই গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে এবার ধর্মের দোহাই দিয়ে কিছু ধর্মান্ধকে কাজে লাগালেন। যদিও সুতোটি তারা নিজেদের হাতেই রেখে দিলেন।
এই ধর্মান্ধ ও তাদের কুশীলবরা হয়ত সময়টাকে ঠিক ঠাহর করতে পারলেন না। বিংশ আর একবিংশ শতাব্দীর মানুষের চিন্তা চেতনা যে এক নয়। এখনকার মানুষ যে অনেক বেশি পরিণত চিন্তার ধারক এই তথ্যটিই তারা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছেন। আর তাই সাজানো বাগান থেকে ফুলটি তুলে নিতে ব্যর্থ হলেন বেগম জিয়া। তিনি ঢাকা বাসিকে ঠিকই অনুরোধ করলেন হেফাজতে ইসলামের পাশে গিয়ে দাড়াতে। কিন্তু ঢাকা বাসি আর সীতাকুণ্ড বাসির মানসিকতায় যে বিস্তর ফারাক এটা তিনি বুঝতে অক্ষম হলেন।
ঢাকা বাসি ভাবতে বসলেন বেগম জিয়া কি হেফাজতকে ব্যবহার করছেন না হেফাজত ইসলাম সত্যি-ই ইসলামের হেফাজতে এসেছে। সেই সাথে এটাও বিবেচনার দাবী রাখল যে, আমরা এই ধর্মীয় উন্মাদনাকে আদৌ প্রশ্রয় দেব কিনা। এখানেও সুস্থ চিন্তার জয় হল। ঢাকা বাসি বের হলেন না। এমনকি বেগম জিয়ার পোষ্যরাও রাতারাতি উধাও হয়ে গেল।
এর পরে বেগম জিয়া ধরলেন নতুন পথ। শাপলা চত্বরে হাজার হাজার আলেম ওলামাকে রাতের আধারে কচুকাটা করা হয়েছে বলে প্রোপাগান্ডা ছড়ান হল। ধোপে টিকল না তাও।
এবার কি হবে? বিএনপি ও তাঁর জোট এবার চরমপন্থা বেছে নীল। দেশব্যাপী চালান হল নৈরাজ্য। তাদের সব ক্ষোভ এবার সাধারণ জনগণের উপর গিয়ে পড়ল। হয়ত বার বার অনুরোধ করা স্বত্বেও তারা যে রাজপথে নেমে আসেনি, এটাই ছিল অপরাধ! তাদের সে ক্ষোভের আগুনে পুড়ে মরল অন্তঃসত্ত্বা থেকে শুরু করে ছাত্র-শিক্ষক-ডাক্তার এমনকি মানসিক রোগী পর্যন্ত। এরপরেও তারা নির্বিকার। উপুর্যপুরি নজিরবিহীন নৈরাজ্য চালিয়ে গেলেন। লাশের পর লাশ পরল। বিএনপি নেত্রী একটিবারের জন্যও দুঃখপ্রকাশ করলেন না।
বিএনপি নেত্রী একটিবার এই অসহায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা নির্দোষ মানুষগুলোকে সান্ত্বনা পর্যন্ত দিতে যাননি।যদিও সে মুখ তাঁর ছিলও না। তবু এ দেশে যারা নিরপেক্ষ থাকার ভান করে ভাল মানুষটি সাজেন তারা অন্তত আশা করেছিলেন মহান নেত্রীর পদধূলিতে বার্ন ইউনিট ধন্য হবে। আর তারা তাঁর স্তুতি গাইবেন। কিন্তু সেখানে যাওয়ার মত সৎসাহস প্রদর্শনে তিনি ব্যর্থ হলেন।
দেশের অভ্যন্তরে চূড়ান্ত পৈশাচিকতা চালিয়ে এবং দেশের বাইরের অসুরদের দ্বারা সব রকম চাপ প্রয়োগ করেও বিএনপি-জামায়াত সহ আঠারো দলীয় জোট পাঁচ জানুয়ারির নির্বাচনটি ঠেকাতে পারল না।
এরপরে ক্ষণ গণনা শুরু হল দৈব দুর্বিপাক আর বিদেশি প্রভুদের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দেখার। কিন্তু এখানেও বিধি বাম। দেনা পাওনার উপর আন্তর্জাতিক সম্পর্কের যে পারদটি উঠা নামা করে তাঁর হিসেবনিকেশও অনেক জটিল। পাশা এতটাই উলটে গেল যে আওয়ামী লীগ এবার অন্যান্য পরাশক্তির প্রশ্রয়ে বিশ্ব মোড়লের চোখ রাঙ্গানোকে হিসেবের মধ্যেই নিলো না।
বিশ্ব পরাশক্তিকে থোরাই কেয়ার করার এই সাহস দেখিয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, যে সাহসের পরিচয় দিলেন তা তাঁর রক্তে প্রবাহিত না হলে কিছুতেই সম্ভব হত না। এখানেই বঙ্গবন্ধু ফিরে ফিরে আসেন তাঁর আত্মজের মাঝেও। যাই হোক বিএনপির আন্দোলনে ফিরে যাই।
পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লন্ডনে বসে একজন অসহিস্নু হয়ে পড়লেন আর তাকে সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বিএনপি নেত্রী হুংকার ছেড়ে বসলেন। তিনি ঈদের পরে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিলেন। যদিও ঈদ বলতে তিনি ঈদুল ফিতর নাকি ঈদুল আযহাকে বুঝিয়েছে সেটি পরিষ্কার করেননি। তথাপি মানুষ শঙ্কিত হল।
খালেদা জিয়া বলেন, “৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে র্যা ব ও আওয়ামী লীগের ‘গুণ্ডা বাহিনীর’ কারণে অনেক জায়গায় বিএনপি কর্মসূচি করতে পারেনি। আগামীতে যখন মানুষ রাস্তায় নামবে, তখন তারা অস্ত্র চালাতে পারবে না। মানুষ দেখে স্তব্ধ হয়ে যাবে”।
এর প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর‘‘মাঠের খেলা মাঠেই হবে৷'' এর জবাবে রিজভী বরাবরের মতই আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বললেন ‘‘প্রধানমন্ত্রী রক্তাক্ত প্রান্তরেরই অশুভ ইঙ্গিত দিয়েছেন৷''
নির্বাচন পূর্ব বীভৎস সহিংসতা দেখার পরে সাধারণ মানুষ যদি এমনতর কথা শুনতে পায় তাহলে যে তাদের ঈদের আনন্দ ঈদের পূর্বেই শিকেয় উঠে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তথাপিও অসহায় মানুষ নারীর টানে গ্রামের বাড়ীতে ছুটে গেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছুটি শেষ হওয়ার পূর্বেই কর্মস্থল মুখি হয়েছে। আর দুর দুর বুকে অপেক্ষা করেছে কখন না জানি আবার কি শুরু হয়ে যায়।
তারই ধারাবাহিকতায় উভয় পক্ষ থেকেই নানা হুমকি পাল্টা হুমকি চলে আসছিল। আর আমরাও তটস্থ হয়ে উঠছিলাম। কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে হঠাৎই বিএনপির সুর নিন্ম গামী হতে শুরু করেছে। বর্তমানে যা দিচ্ছি, দেবতে এসে ঠেকেছে। পরিস্থিতিটা বেগম জিয়া ও তার সুযোগ্য সন্তান আঁচ করতে না পারলেও তাদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব সহ ঢাকার নতুন সিপাহশালার কিন্তু ঠিকই পেরেছেন। আর তাই তারা আকাশ কুসুম কল্পনা ছেড়ে বাস্তবতার নিরিখেই কথা বলতে শুরু করেছেন। যেমনটি মির্জা ফখরুল বলেছেন “জনগণই বর্তমান গণ বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবে। জনগণের ইচ্ছে অনুযায়ী আন্দোলন হবে। আর বিএনপি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবে”।
ঠিক একই সুরে অথবা বলা যায় গলা আরও একটু খাদে নামিয়ে মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে সরকারের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। বরং গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে ১৬ আগস্ট মৌন মিছিল হবে শান্তিপূর্ণ। এ ছাড়া ১৯ আগস্ট গণ বিরোধী সম্প্রচার নীতিমালার প্রতিবাদে সমাবেশও হবে শান্তিপূর্ণ।
এ সময় সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে মিটিং-মিছিল করার ক্ষমতা রয়েছে। এটা যদি বিশ্বাস করেন তাহলে তাকে কেন গলা টিপে ধরছেন?
আব্বাস আরও বলেন, খালেদা জিয়া আমাদের দল গোছাতে বলেছেন, বিশৃঙ্খলা করতে বলেননি।
তাদেরকে সাধুবাদ জানাই এই বোধোদয় ও তাঁর সরল স্বীকারোক্তির জন্য। মির্জা সাহেবরা ঠিকই ধরেছেন। এ দেশের মানুষ আর কারো চাপিয়ে দেয়া আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে না। তারা এখন আর কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হতে রাজি নয়। এখন তারা নিজেদের ভাল মন্দটা যেমন বুঝতে শিখেছে ঠিক তেমনি গণতন্ত্রের নামে ফাঁকিবাজিটাও বেশ ভালই বুঝতে পারছে। আর এ কারণেই এখন এ প্রশ্নটাও দেশবাসীর কাছে বড় হয়েই দেখা দিয়েছে যে, আমরা কি শুধু সেই গণতন্ত্র চাই; যা প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষকে অনিরাপদ করে তোলে। যা ক্ষমতার পালাবদল ছাড়া আর কিছুই দেয় না। নাকি সেই গণতন্ত্র; যার চর্চায় সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথে একটি সুখী সমৃদ্ধ জাতি হিসেবেও পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।
এর সাথে সাথেই চলে আসবে তুলনামূলক বিশ্লেষণ। বিএনপির আমলনামা আর আওয়ামীলীগের আমলনামা তো এখন স্পষ্ট। কোন দল রাষ্ট্র পরিচালনায় কতটুকু যোগ্য। কোন দল কতখানি গনতন্ত্রমনা। কোন দল কতটা জনমুখি। এর নিরিখেই মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে ক্ষমতায় থাকবে আর কে বিদায় নিবে। আর তাঁর উপরেই নির্ভর করবে আগামী দিনের আন্দোলনে জন সম্পৃক্ততা। এ ক্ষেত্রে বিএনপি বেশ খানিকটা বেকায়দায় আছে। তারা তাদের শাসনামলের এমন একটি ইতিবাচক দিক তুলে ধরতে পারছে না যা আওয়ামীলীগের সময়ে নেই। কাজেই তাদের একমাত্র ভরসা আওয়ামীলীগের ভুল বা হঠকারী সিদ্ধান্ত। এ ক্ষেত্রে অনেকটা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে সদ্য গৃহীত সম্প্রচার নীতিমালাটি। এখন দেখার বিষয় এ ক্ষেত্রে আওয়ামীলীগ কোন হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয় কিনা। আর তাঁর সেই সুযোগটিকে বিএনপি কতটা কাজে লাগাতে সক্ষম হয়।
[email protected]
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:১৮
রওনক বলেছেন: বিএনপি কিছুই করবে না। তারা অপেক্ষা করবে।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪
মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অপেক্ষা!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
মো ঃ আবু সাঈদ বলেছেন: এই জালিম সরকার কে এত সহজে নামনো যাবে..
এরা শান্তিপুর্ন ভাবে আন্দলোন কের কোন দিনও জাতিকে ভাল কিছু দিতে পারবে না..
যদি দিত বা উপল্বদ্দি করত তাহলে এক শেয়ার বাজারে আজও ভুক্তে হত না..
এরশান শৈরাচার এর আমলেও আন্দলোন হইছে কিন্তু পুলিশের গুলিতে এত আন্দোলন কারী মরে নাই...
তাই আব্বস এখন তার ব্যাবসার চিন্তাই বেশি করেন উনি বদলে গেছেন লীগের সাথে মনে হয় আত আত আছে তা না হলে উনি এই সকল কথা বলতে পারেন না..
আমারা জনগন যে ভারে পিষ্ঠ হচ্ছি তাতে কঠোর কর্মসুচি দেওয়ার মত দল কেই সমর্থন দেওয়া উচিত..