নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিএনপির নেতৃত্ব আসলে কার হাতে?

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৪



প্রশ্নটা অনেকদিন ধরেই বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল। দিন দিন যার উত্তরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত এই দলটিকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল বেগম জিয়ার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দূরদর্শিতা আর আপসহীন নেতৃত্ব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে তার সময়সীমা ছিল ক্ষীণ। যদিও পূর্বের সেই সুনামই তাকে দ্বিতীয়বারের মত ক্ষমতার স্বাদ পাইয়ে দেয়। আর অধঃপতনের শুরুটাও তখন থেকেই। বেগম জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম পাঁচটি বছরের সাথে পরবর্তী সময়ের তুলনামূলক চিত্রই আমার বক্তব্যের সমর্থনে প্রামাণ্য দলিল।



১৫ আগস্ট বেগম জিয়ার জন্মদিন পালন থেকে শুরু করে জামায়াতের সাথে গাঁটছড়া বাধা। মাঝে আওয়ামীলীগকে নেতৃত্বশূন্য করার অপচেষ্টা। দেশে জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্য সৃষ্টি এ সবই ছিয়ানব্বই পরবর্তী সময়ের ঘটনাপ্রবাহ। হাওয়া ভবনকে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু করে ক্ষমতায় থাকা স্বত্বেও বেগম জিয়াকে ক্ষমতাহীন করে তোলার একটা সফল প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাই। যদিও সেটা যে বেগম জিয়ার অমতে হয়েছে তেমন কোন আলামত দেখা যায়নি বরং বলা যায় বেগম জিয়ার সমর্থনেই সেটা করা হয়েছিল।

বেগম জিয়া তার সন্তানকে রাজনীতিবিদ হিসেবে তৈরি না করে প্রয়াত স্বামী ও তার নিজের রাজনীতির বেনিফিসিয়ারী হিসেবে তৈরি করতে চেয়েছেন। যা শুধুমাত্র তার জন্যেই নয় বিএনপির জন্যও বুমেরাং হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতে আমরা এক এগার ও তার পরবর্তী সময়ের মধ্যে দিয়ে বিএনপিকে যেতে দেখেছি। এতদসত্বেও বিএনপি নেত্রী যদি পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতেন তাহলেও আজকে বাংলাদেশের দৃশ্যপট হয়ত অন্য রকম হতে পারত।



শোনা যায় পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচনের পূর্বেও আওয়ামী লীগ - বিএনপি তারানকোর মধ্যস্থতায় একটি সমাধানে পৌঁছে গিয়েছিল। যা লন্ডনি সিদ্ধান্তে ভণ্ডুল হয়ে যায়। তার ফলাফলও তো বিএনপি এখন হারে হারে টের পাচ্ছে। পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন পরবর্তী সময়ে আন্দোলন স্থগিত করে বেগম জিয়া যেভাবে দল গোছানর কাজে হাত দেন সেটা যে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল তা এক কথায় সকলেই মেনে নেবে। বয়সের ভারে ন্যুজ হওয়া স্বত্বেও অসুস্থ শরীর নিয়ে প্রায় দেশ ব্যাপী জনসংযোগ। একের পর এক সভা সমাবেশ বিএনপিকে যখন একটা ভাল অবস্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল তখনই পুনরায় হঠকারী সিদ্ধান্ত নেয়া হল। বলা যায় চাপিয়ে দেয়া হল।



বেগম জিয়া আবারও নিজের জায়গা থেকে সরে গেলেন। মায়ের পুত্র বাৎসল্য খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু যখন তিনি একজন নেত্রী। একটি দেশের ভাল মন্দের ভার যে মায়ের কাঁধে সেই মাকে একজন মাত্র মানুষের মা হলে চলবে কেন? তিনি বিরোধী পক্ষের কাছে যেমন আপসহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হন ঠিক একই ভূমিকায় তার অবতীর্ণ হওয়া উচিৎ নীতি আদর্শের ক্ষেত্রেও। ঘরে কি বাইরে সব খানেই তার এক রুপি কাম্য। এই একটি জায়গাতেই তিনি বার বার হেরে গেছেন।



যখন তিনি মিথ্যে জেনেও ছেলের মনগড়া ইতিহাসকে বৈধতা দেন। যখন অনুচিত যেনেও ছেলের চাপিয়ে দেয়া কর্মসূচিকে গ্রহণ করেন তখন তার শত চেষ্টায় গরে তোলা ভাবমূর্তি ক্ষয়ে যেতে থাকবে এটাই স্বাভাবিক। পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন পূর্ব সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে ফোনালাপে তার যে অসহিস্নু মনোভাব প্রকাশ পেয়েছিল সেটা অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষককেই অবাক করে দিয়েছিল। বেগম জিয়ার শুভানুধ্যায়ীরা তখন এই বলে সান্ত্বনা খুঁজেছিলেন যে, ওটা তার আসল পরিচয় নয়। তিনি কারো দ্বারা প্রভাবিত হয়েই অমনটি করেছিলেন। যারা এমনটি বলছিলেন তাদের কাছে বেগম জিয়ার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি তখনো ভাস্বর। তাদের কাছে এক এগার পরবর্তী সময়ে দুই নেত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক তখনো টাটকা স্মৃতি। যার সাথে সেদিনের ফোনালাপের বেগম জিয়াকে মেলানোটা ছিল সত্যিই কঠিন।



আজ বেগম জিয়ার ছোট সন্তানের মৃত্যুতে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহমর্মিতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে তাকে দেখতে গেলেন। তখন তার সহযোগীরা যে নাটকের অবতারণা করলেন। যেভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে গেটের বাইরে পাঁচ মিনিট দার করিয়ে রেখে ফিরে আসতে বাধ্য করলেন তাতে কি সত্যিই বেগম জিয়ার আদৌ সায় ছিল? তাদের কথা অনুযায়ীই বলা যায়, ছিল না। কেননা তাদের কথা অনুযায়ী বেগম জিয়া তখন ইনজেকশনের প্রভাবে ঘুমচ্ছিলেন। অথচ এর দায়টা বেগম জিয়াকেই নিতে হবে। পরবর্তীতে যখন বলা হল বেগম জিয়া ঘুম থেকে জেগে যখন জেনেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন তখন তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এটাও তাদের কৃত কর্মের সাথে যায় না। তার কারণ হল; তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নেই বেগম জিয়াকে সে সময় ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। তথাপিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার ঘর পর্যন্ত যেতেই পারতেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে উপস্থিত নেতারা এবং বেগম জিয়ার পরিবারের লোকজন এসে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভিতরে নিয়ে যেতে পারতেন। তারা তা করেননি। এর কারণ হয়ত একটিই। তার ছেলে বা বিএনপির ঘারে চেপে বসা সিন্দবাদের ভুতেরা চাননি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বেগম জিয়ার মধ্যকার তিক্ততার অবসান হোক। যেমনটি তারা চাননি বেগম জিয়া নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আরেকবার আপোষহীন নেত্রীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হোক।

বেগম জিয়া আরেকবার হেরে গেলেন বা বলা যায় বিএনপি নেত্রীকে হারিয়ে দেয়া হল।

প্রশ্ন হোল তারা কেন এটা করছেন। এর উত্তর হতে পারে দুটি। এক- নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে যতটা সময়ের প্রয়োজন অতটা সময় দিতে তিনি বা তারা রাজি নন। দুই- যে থিংক ট্যাঙ্কের অঙ্গুলি নির্দেশনায় তিনি বা তারা চলেন তাদের উদ্দেশ্যই হল দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক। যাতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেয়া যায়। দেশের অগ্রগতির চাকা থামিয়ে দেয়াও তাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ। কারণ যাই হোক বাস্তবতা হল এই যে, দেশে একটি অস্থিতিশীলতা তৈরির সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। যাতে বেগম জিয়াকে দেখানো হচ্ছে মুল পরিকল্পনাকারী হিসেবে। আসলে তিনি এখন আর তার নিজের ইচ্ছাধীন নন। যদি এই আশঙ্কাই সঠিক হয় তাহলে সামনে আশার আলো দেখার কোন সুযোগ নেই। এ দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যের যে অংশটি বেগম জিয়ার নেতৃত্বে আস্থা রাখতে চেয়ে বিএনপিকে অন্ধ সমর্থন করে যাচ্ছেন মূলত তারাই সবচেয়ে বেশি প্রতারিত হচ্ছেন।



[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:৫৮

মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আপনার বিশ্লেষণ থেকে একটি ধারণাসূচক পাওয়া যায় মাত্র, তবে নিশ্চিত করে বলা যায় না।
তবে ঘটনা-পরম্পরা আপনার বক্তব্যকেই সমর্থন করে

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৫৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ঘটনা-পরম্পরাই সঠিক উপসংহারে পৌঁছানোর একমাত্র উপায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.