নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।
দ্বিতীয় খণ্ড।
পুরুষের মোহমুক্তি আর নারীর এই আটকে না রাখতে পারার গ্লানি দুজনকে ঠেলে দেয়ে যোজন যোজন দূরত্বে। বাকিটা জীবনে কেউ আর কারো মনের খোঁজ করেনা। তখন জীবনের যাবতীয় স্থূল চাহিদা পূরণই হয়ে ওঠে একত্রে থাকার একমাত্র উপলক্ষ। আর এতে করে যে, মানুষে পশুতে ভেদটুকুও ঘুচে যায় সেটা ভেবে দেখারও আর কারো অবকাশ মেলেনা।
অথচ নারীর শরীর যতটুকু উপভোগ্য তার থেকে মনের উপভোগ্যতা অনেক বেশি। দেহ-মনের যুগপৎ কাছে আসতে পারাই জীবনের সবথেকে বড় প্রাপ্তি, সবথেকে বেশি প্রশান্তির। নারীর মনের সেই গোপন গহীন তল স্পর্শ করাটা যে একেবারেই অসম্ভব তাও নয়। তবে সেটা তখনই সম্ভব যখন নারী নিজে থেকে সে পথ উন্মুক্ত করে দেয়। সে ক্ষেত্রে পুরুষ যেমন প্রশান্তি খুঁজে পায়, নারীও চরম পুলক লাভ করে। তখন একত্রে বাস বাধ্যতামূলক না হয়ে হয়ে উঠে চরম আনন্দঘন।
মনের এই চেনা জানা এখন যেন একেবারেই বাহুল্য হয়ে দেখা দিয়েছে। এর ফলে যেটা হচ্ছে তা হল জীবন এখন এক, একঘেয়ে সময় ক্ষেপণের নাম। অথচ একটু সচেতন হলে তা অন্যরকম হতে পারত। এমন সুখী দাম্পত্য যে একেবারে নেই তা নয়, তবে খুবই নগণ্য।
বলার অপেক্ষা রাখে না। যে নারী শরীর সর্বস্ব নয় সে অনেক বেশি উপভোগ্য। তবে তেমন উপভোগ্য হয়ে উঠতে গেলে নারীকে বৈষয়িক জীবনের কিছু তুচ্ছ বিষয়ে ছাড় দিতে হয়। যে ছাড় তার সঙ্গ কখনোই বিস্বাদ বা তিক্ত হতে দেয় না। সম্পর্কটাকে আরও বেশি উষ্ণ করে তোলে। সমস্যা হল এখানেই। বেশির ভাগ নারীই ছাড় দিতে প্রস্তুত নয়।
এখানে একটি কথা না বললেই নয়, নারী চরিত্রের বৈশিষ্ট্য সমূহের পূর্ণ প্রকাশ ঘটে তার সাংসারিক জীবনে এসে। যেখানে সে কর্তৃত্ব কামনা করে। সম্পর্কের উষ্ণতার ছন্দ পতনের শুরুটাও ওখান থেকেই। আমাদের সমাজে এখন পর্যন্ত আমরা যতই একক পরিবারের চর্চা করিনা কেন পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের নিয়ে থাকতেই আমাদের বেশি পছন্দ। আর সেটা করতে গিয়ে ব্যক্তি জীবনে নানারকম বিড়ম্বনার মাঝ দিয়ে যেতে হয়। যা পরিবারের শান্তি তো বিনষ্ট করেই সেই সাথে পরিবারের কর্তা ব্যক্তিটির জীবনকে কখনো কখনো করে তোলে দুর্বিষহ। ত্রুটি যার যেমনই থাকনা কেন একদিকে মা-বোন, অন্যদিকে স্ত্রী এই ত্রয়ীর যুদ্ধে পুরুষ ব্যক্তিটি হয়ে পড়ে অসহায়। এখানে তিনটি নারী চরিত্রের কেউ কাউকেই ছেরে কথা বলতে রাজি নয়। প্রত্যেকেরই ষোল আনা চাই। আর এই ষোলআনা পেতে গিয়ে কাউকে কাউকে পুরোটাই হারাতে হয়। তথাপিও তাঁরা আমৃত্যু যুদ্ধটা ঠিকই চালিয়ে যায়। ফলে দরজা জানালা দিয়ে মুর্হুমুহ সুখ প্রবেশ করলেও ঘর থেকে শান্তি চিরতরে বিদেয় হয়।
সংসার জীবনে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত যে নারী তার সঙ্গীর ভাল লাগা না লাগাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিত। সেই নারীই সংসার জীবনে প্রবেশ করে রাজদণ্ডটি হাতে পাওয়ার উদগ্র বাসনায় এতটাই বিভোর থাকে যে তার সঙ্গীটির দিকে ফিরে তাকানোর কথাও বেমালুম ভুলে যায়। এমনকি সকল কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পরেও তার যথেচ্ছ ব্যবহার করতে গিয়ে অনেকটা দূরে সরে যায় সঙ্গীর। এক সময় তার সঙ্গীটিও ঘরছাড়া হতে পারলেই যেন বাঁচে।
আসলে এ ধরনের নারী জানেইনা কি করে পুরুষকে আটকাতে হয়। শরীরকেই সে একমাত্র অবলম্বন হিসেবে ধরে নেয়। সেইসাথে পরিবার এবং সমাজকে মনে করে তার রক্ষা কবচ! যার ফলে নিরাপত্তা তার হয়ত কিছুটা মেলে তবে মেলে না শান্তি।
এ সব নারীর এটা বোঝা জরুরী যে, শরীর একেবারেই ঠুনকো। আর পুরুষের কাছে নারীর শরীরের বিকল্প শুধু স্ত্রীই নয়। অন্যায় যেনেও সে তখন বিকল্পের খোঁজ করে। এভাবেই সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার নিত্য নতুন গল্পের অবতারণা হয়। যদিও নারী চরিত্র নিয়ে কথা বলতে গেলে তার সংসার জীবনকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই। তথাপিও যেহেতু সেটি এই লেখনীর মুল উপজীব্য নয় তাই ও প্রসঙ্গে না হয় আমরা এখানেই যবনিকা টানি।
নারী-পুরুষের সম্পর্ক দিয়েই লেখাটার ইতি টানি। বলছিলাম নারী যদি চায় তাহলে পুরুষ সঙ্গীটিকে তার মনের গহীনে পৌঁছে দিতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে নারীকে পুরুষের হাত ধরে ধরে পাইয়ে দিতে হয় নিজের অন্ধ কানা গলির ঠিকানা। কিন্তু সমস্যা হল ওটা এতটাই পরিবর্তনশীল যে পুরুষের পক্ষে ধরে রাখাটা মুস্কিল। নারী যদি নিজের স্বার্থেই তাকে স্থিতি দানে সক্ষম হয় তবেই পুরুষের সে গভীরতর তল স্পর্শ করাটা সার্থক হয়ে ওঠে। আর নারী যদি তাকে সহায়তা না করে তাহলে পুরুষের পক্ষে সেই অতল স্পর্শ এক জনমেও হয়ে ওঠে না।
যেনে বুঝে হোক, আর স্বভাবজাত কারণেই হোক আমাদের সমাজে এমন নারীর সংখ্যা নগণ্য বলেই শেষ পর্যন্ত এ দেশের বেশীরভাগ নারী শরীর সর্বস্ব হয়েই রয়ে যায়। যেখানে পুরুষের দায় থাকলেও নারীর দায়টাও একেবারে কম নয়।
=সমাপ্ত=
©somewhere in net ltd.