নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

এখানে পিঠা্র পশরা সাজিয়ে বসা হয়, ভালবাসার নয়।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:০৫


আজ যে পিঠা নিয়ে তোমরা উৎসব কর সেটা বাঙ্গালির পিঠা নয়। বাঙ্গালীর পিঠার স্বাদ তোমরা জান না। দিতেও পারবে না। এটাকে পিঠা বা কেক যাই বল এটা কর্পোরেট। নিরস, প্রেমহীন-নিস্প্রান। অথচ বাঙ্গালী পিঠা বলতে শুধু খাদ্য বস্তুকে বোঝাতো না। বোঝাতো এর সারম্বর আয়োজন থেকে শুরু করে আনন্দ উল্লাস আর সম্পর্কের নবায়নকে। যেখানে জিভের রসনায় তৃপ্তি মিলত না, মিলত্ অন্তরের ভালবাসার মাখামাখিতে।
আজকের ছেলেমেয়েরা জানেই না রাতের পায়েস কি।
মনে আছে ছোটবেলায় দাদার বাড়িতে ভেড়াতে গেলে একবার বড় চাচা মাঝরাতে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন। বললেন চল তোকে পায়েশ খাওয়াব।
এত রাতে!
হুম, চল ওঠ।
শিতের রাত উঠতে চাইছিলাম না, জোর করে ওঠালেন। বাড়ীর পেছনে্র খেজুরের গাছে আগে থেকেই ঠিক করে রাখা একটি ছেলেকে ওঠালেন।
সে গাছ থেকে এক হাড়ি খেজুরের রস নিয়ে নামল।
মাঝরাতে সেই খেজুরের রসের স্বাদ বর্ননাতীত। ওটা যারা খেয়েছেন কেবল তারাই বুঝবেন। এরপরে বড় চাচা শুরু করলেন আসল পাগলামী। সেই রাতে বাড়ির উঠোনে ইট দিয়ে চুলো বানিয়ে খেজুরের রস দিয়ে পায়েস রাধলেন।
তার কথা হল রাতেই সেটা খেতে হবে। খেলাম এক ভিন্ন স্বাদের পায়েস। সেদিনই প্রথম জানলাম স্বাদের সাথে প্রকৃতি আর পরিবেশেরও একটা সম্পর্ক আছে।
সেই মাঝ রাতে খোলা আকাশের নিচে বসে হৈ হুল্লোড় করে বুনো উন্মাদনায় কলাপাতায় বেড়ে হাত দিয়ে উঠিয়ে উঠিয়ে খাওয়া আর মেকি সভ্যতার প্লেটে বেড়ে চামচে উঠিয়ে খাওয়ার মাঝে বিস্তর তফাৎ। আজ এতদিন বাদেও তাই সেই স্মৃতি অমলিন।

এখনো মনে আছে নানার বাড়িতে সারা রাত জেগে পিঠা বানানো দেখা। হৈ হুল্লোড় করে রাত জাগা আর কাক ভোরে সেই পিঠা খাওয়া। আসলে তখন পিঠা ছিল উপলক্ষ মাত্র, আনন্দটাই ছিল মুল।
আমার খুব খারাপ লাগে যখন দেখি একজন মা তার সন্তানদের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাসায়। তার সন্তান পিঠা হয়ত খায় কিন্তু পিঠার সাথে মায়ের যে ভালবাসাও আমরা একই সাথে উপভোগ করেছি। পিঠা খাওয়ার সাথে সাথে আমরা যে বাড়িতে পিঠা উৎসবের উন্মাদনার স্বাদ পেয়েছি তা আজকের এই কর্পোরেট মায়েরা কি করে দেবেন?

সেই প্যাশন, সেই সরল জীবন তার সবটাই আজ হারিয়ে গেছে। তাই আমার সন্তান যখন পিঠার ইংরেজি পড়ে কেক আমি বলি ঠিক বলেছ বাবা বাঙ্গালীর পিঠা এটা নয় একে বরং কেকই বলা উচিৎ। বাঙ্গালীর পিঠার আসল স্বাদটাই ভালবাসা-স্নেহ আর আদর মাখা। পিঠা উৎসব টাকা দিয়ে কেনা নানান রকম পিঠা খাওয়া নয়, পিঠা উৎসব হল উন্মাদনা আর রসনা বিলাসের এক যুগলবন্দী। যা এই সময়ের সাথে একেবারেই যেন যায় না।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালীর গ্রামের বেইকিং কি হারিয়ে যাচ্ছে?

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৩

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ধন্যবাদ চাঁদগাজী আপনাকে।

২| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৩১

আল-শাহ্‌রিয়ার বলেছেন: এটাকে পিঠা বা কেক যাই বল এটা কর্পোরেট। বাস্তবতা। এখানে শিল্পের ছোঁয়া নেই আছে নকল রঙের ছটা।

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: আল শাহরিয়ার অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। একদম ঠিক বলেছেন, "এখানে শিল্পের ছোঁয়া নেই আছে নকল রঙের ছটা।"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.