নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

নামায আদায় করুন অর্থ জেনে, একাগ্রচিত্তে

১৪ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪১


নামায হল সেই ইবাদত যা মূলত একজন মুসলিমকে অমুসলিম থেকে পৃথক করে দেয়। জন্ম সূত্রে মুসলমান হলেই একজন মানুষ মুসলমান হয়ে যায় কি?
ইসলামে দাখিল হতে হলে প্রথমেই ইমানদার হতে হবে। আর সেটা কেবল মুখে উচ্চারণ করলাম, “লা ইলাহ ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ” তাতেই হয়ে গেল! তা তো নয়। এই কালেমার অর্থ এবং এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য জানতে হবে, বুঝতে হবে এবং সর্বোপরি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে এই কালেমার শিক্ষা মেনে চলতে হবে। যাতে সামান্যতম শিরকের কাছেও আমরা না ঘেঁসে যাই।
একজন প্রকৃত মুসলমানকে প্রথমেই ইমানদার হতে হবে আর তার পরেই যে কাজটি করতে হবে তা হল যথাযথ ভাবে সালাত বা নামাজ আদায়।
ধর্মপ্রাণ মুসলমান মাত্রই নামাজের প্রতিটি হুকুম-আহকাম মেনেই নামাজ আদায়ের চেষ্টা করে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য হল আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ নামাজিই জানেন না আসলে নামাজে তিনি কি পড়েন। মহান আল্লাহর দরবারে গিয়ে তিনি কি কি ওয়াদা করে এলেন এবং মহান আল্লাহর কি কি প্রশংসা করলেন অথবা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর কাছে কি কি চাইলেন।
যেমন ধরুন নামাজের শেষ অংশে আমরা দোয়া মাসুরা পড়ি। কি বলি সেখানে? এটা যদি জানতাম তাহলে সালাম ফিরিয়ে মুনাজাত করাকে একেবারেই অনাবশ্যক বলে মনে হত।
আমি সকলে মিলে মুনাজাত করার বিপক্ষে নই। কে জানে মহান আল্লাহ কখন কার উছিলায় কার দোয়া কবুল করে নেন। কার উছিলায় কখন কতজনের দোয়া কবুল হয়ে যায়। কাজেই প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে একাকী বা সম্মিলিতভাবে যত পাড়ুন দোয়া এস্তেগফার করুন।
আমার আলোচ্য বিষয় হল নামাজ শেষে মুনাজাত করা নিয়ে। একবার ভাবুন, আমি যখন তাকবীর তহরীমা বলে আল্লাহ পাকের দরবারে দাঁড়িয়ে গেলাম। তার সাথে আমার সরাসরি একটা যোগাযোগ স্থাপন করলাম। ছানা’য় তার প্রশংসা করলাম। সূরা ফাতিহায় নিজের জন্য দোয়া করলাম। এরপরে রুকুতে গিয়ে যখন বললাম, আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি(সুবহানা..................আজিম) । তার উত্তরে মহান আল্লাহ বলছেন, “যে আল্লাহর প্রশংসা করেছে, আল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করেছেন”(সামিআল্লাহুলিমান হামি দাহ)!
সবশেষে দোয়া মাসুরা'য় আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছি এভাবে, “হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করেছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ সমূহ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর এবং তোমার নিজের পক্ষ হইতে আমাকে দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল, দয়াবান”।
এরপরে সালাম ফিরিয়ে আমরা মহান আল্লাহর দরবার থেকে বেরিয়ে আসছি। প্রথম কথা হল দোয়া মাসুরা'য় বলা কথাগুলিই তো সর্বোত্তম মুনাজাত তাও আবার কখন বলছি? যখন আমি আমি নামাজের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ আল্লাহর সাথে সংযুক্ত। অথচ এই সংযোগ কেটে দেয়ার পরে, অর্থাৎ সালাম ফেরানোর পরে আমাদের মনে হল; মহান আল্লাহর কাছে কিছু চাই! বিষয়টা একটু অসংলগ্ন হয়ে গেল না?
আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন; নামাজ তো খারাপ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখবে। তাহলে যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন তারা কেন খারাপ কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখতে পারেন না। উত্তরটা সহজ, একজন নামাজি যখন বুঝতে পারেন, তিনি মহান আল্লাহর দরবারে গিয়ে সামান্য আগেই ওয়াদা করে এসেছেন আবার একটু পরেই পুনরায় একই ভাবে মহান আল্লাহর দরবারে গিয়ে দাঁড়াবেন। তখন তার দারা কোন অন্যায় আচরণ করা বা কোন অপরাধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু যে নামাজি নামাজে দাঁড়িয়ে কেবল কিছু ঠোটস্ত কথা আওড়ে চলে আসেন যিনি জানেনও না নামাজে তিনি কি কি ওয়াদা করে এলেন। কিভাবে ক্ষমা ভিক্ষা চেয়ে এলেন। ঐ নামাজ তার মনে কোন ভীতির সঞ্চার করে না। মহান আল্লাহর দরবারে পুনরায় দাঁড়ানোর লজ্জাও তাকে খুব একটা প্রভাবিত করতে পারে না। এমন নামাজ মহান আল্লাহ গ্রহণ করবেন কিনা সেটা একমাত্র দয়াময় আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন। তবে আমরা সাধারণ জ্ঞানেই কি বুঝতে পারি না যে, এভাবে না বুঝে নামাজ আদায় আদৌ সঠিক নয়। আর তা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে তেমন কোন প্রভাবও ফেলে না।
মসজিদে প্রবেশের সময় আমরা একটি দোয়া পড়ি, “আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রাহমাতিকা”। আমরা এর অর্থ জানি না, ফলে এর কোন প্রভাব কি আমাদের মধ্যে পড়ে? সম্ভবত নয়। কিন্তু যখন আমি জানব এই দোয়া পড়ছি মানে আমি মহান আল্লাহকে বলছি, হে আল্লাহ!আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাগুলো খুলে দাও। ভেবে দেখুন তার কি প্রভাব আপনার মনে পড়বে। একই ভাবে মসজিদ থেকে বেড়িয়ে আসার সময়ে পড়া দোয়ার কথা ভাবুন, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা মিন ফাদলিকা” অর্থাৎ- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার অনুগ্রহ কামনা করছি।’

আসুন একবার নিজেকে প্রশ্ন করে জেনে নেই, নামাযে যা কিছু পড়া হয় তার কতটুকুর অর্থ আমরা জানি? বা আদৌ কিছু জানি কিনা?
যদি জানতাম নামাজে দাঁড়িয়ে কোন কোন ওয়াদা করছি। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এর কাছে কি কি চাইছি। তাহলে কি আর আলাদা করে মোনাজাত করতে বসে যাওয়ার খুব একটা আবশ্যকতা থাকত? নাকি চেষ্টা করতাম আরও দুই রাকআত নামাজ আদায় করে নিতে। আরও অনেক বেশি যত্নবান হতাম নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে।
ইসলাম শিখতে বলেছে, জানতে বলেছে, জ্ঞান অর্জন করতে বলেছে। হাসান বসরী (রহঃ) একজন জ্ঞানী ব্যক্তির কলমের কালীকে শহীদের রক্তের সাথে তুলনা করেছেন। কারণ একটাই, জেনে বুঝে আদায় আর অবুঝের মত অনুসরণ এ দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক।
আমরা যেন একটা মূর্খ জাতিতে পরিণত না হই। অদ্ভুত বিষয় হল এই মূর্খতা আমাদের এমনই এক সময়ে গ্রাস করেছে যখন পৃথিবীর ইতিহাসে জ্ঞানার্জন সবথেকে সহজ হয়েছে। মা বাবার কাছে জেনে মুসলমান হয়েছি, অপরের কাছে শুনে ইবাদত বন্দেগিতে রত হই। আর এভাবেই কামিয়াবি লাভ করতে চাই। অথচ চেষ্টা করি না নিজে থেকে জ্ঞানার্জনের। বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। এই যুগে আমরা যেকোনো কাজ করার আগে তার অর্থ বা তা করার যৌক্তিকতা তালাশ করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আর সব বিষয়ে আমরা জিন্দেগিভর অনুসন্ধান চালিয়ে গেলেও ঈমান আমল সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত নই। এই না জানা এবং অসম্পূর্ণ জানার ভয়াবহতা তো দেখতেই পাচ্ছি। আজ একদল না জেনে না বুঝে ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটাচ্ছে। আরেক দল না জেনে বুঝেই হত্যা করছে। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) কি এই শিক্ষা দিয়েছেন? বোখারী ও মুসলিম শরীফে উল্লেখ আছে- ”ওহোদের যুদ্ধের পর হযরত আয়েশা সিদ্দিকা নবী করিম এঁর খেদমতে আরয করলেন - ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওহোদের চেয়েও অধিক কষ্টকর কোন ঘটনা কি আপনার জীবনের উপর দিয়ে গিয়েছিল? উত্তরে নবী করিম সঃ বললেন- ”আয়েশা, তায়েফ বাসীদের অত্যাচার ছিল আমার জীবনের কঠিন তম বিপদ। আমি অত্যাচারিত হয়ে যখন তায়েফ থেকে ফেরত আসছিলাম এবং মক্কা থেকে একদিনের রাস্তার মাথায় ‘করনুছ ছা’লিব’ নামক স্থানে (ইয়েমেন ও নজদবাসী হাজীদের মীকাত) পৌঁছলাম, তখন দেখি- আমার মাথার উপর মেঘের ছায়া এবং হযরত জিবরাইল (আঃ) ঐ মেঘমালা থেকে দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা ইসমাইলকে আপনার নির্দেশ পালনের জন্য পাঠিয়েছেন। নবীজী বলেন- পর্বতের দায়িত্বে নিয়োজিত উক্ত ফেরেশতা আমাকে ছালাম দিয়ে আরয করলো- ”ইয়া রাসূলুল্লাহ, আপনি নির্দেশ করলে এখনই আমি তায়েফের ‘আখশাবাইন’ নামক দুটি পর্বতকে তাদের উপর নিক্ষেপ করে তাদেরক ধ্বংস করে দেবো। এটাই আল্লাহর পক্ষ হতে আমার প্রতি নির্দেশ।” শত্রুকে ধ্বংস করার এমন সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও নবী করিম সঃ বললেন- ”না, বরং আমার একান্ত ইচ্ছা - তাদের বংশধরেরা অন্তত: ইসলাম গ্রহণ করে আল্লাহর ইবাদত করুক এবং শিরক থেকে বেঁচে থাকুক।” এটাই তো মহানবীর শিক্ষা। তাহলে আজ আমরা কি করে ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর খড়গ হস্ত হই?
আখেরি নবীর উম্মত হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ইসলামের দাওয়াত দেয়া আর তা করতে গিয়ে যদি নির্যাতনের স্বীকার হতে হয় তাহলেও তার প্রতিশোধ না নিয়ে ক্ষমা করে দেয়া এটাই মহানবীর শিক্ষা। মহান আল্লাহ তো সূরা আল ইমরানে নিজেই বলেছেন “নিশ্চিতই যারা কাফের হয়েছে তাদেরকে আপনি ভয় প্রদর্শন করুন আর নাই করুন তাতে কিছুই আসে যায় না, তারা ঈমান আনবে না। আয়াত ৬
আল্লাহ তাদের অন্তঃকরণ এবং তাদের কানসমূহ বন্ধ করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখসমূহ পর্দায় ঢেকে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি। আয়াত ৭
মহান আল্লাহ তো তাদের শাস্তি প্রদানের দায়িত্ব আমাদের উপর ছেরে দেন নি। বরং সেটা করতে গিয়ে আমরা আল্লাহর বিধানকেই লঙ্ঘন করছি। আমরা এ সবই করছি না জেনে অথবা খণ্ডিত ভাবে কিছু জেনে যা ভুলেরই নামান্তর। কাজেই আগে আমাদের জানতে হবে। শিখতে হবে এবং জেনে বুঝে আমল করতে হবে। তাহলেই আমরা সাফল্য লাভ করতে পারব।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের উপর দৈনন্দিন যে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত/নামায ফরজ করেছেন তা আমরা বুঝে পড়ি না বা বোঝার চেষ্টাও করিনা নামায কেন এবং কীভাবে পড়বো তাও হয়তো জানি না)। হাশরের ময়দানে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নামাযের হিসাব সর্বপ্রথম নিবেন। তাই আমাদের সকলকে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।
আসুন নামাযে আমরা কি পড়ি সে সম্পর্কে একটু জেনে নেয়ার চেষ্টা করি-
১.তাকবীরে তাহরীমাঃ
উচ্চারণ: আল্লাহু আঁকবার অর্থ: আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
২.ছানা পড়াঃ
উচ্চারণ: সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওবিহামদিকা ওতাবারাকাছমুকা ওতাআ‘লাজাদ্দুকা ওলাইলাহাগইরুক।
অর্থ: আয় আল্লাহ! আমি তোমারই পবিত্রতা বর্ণনা করছি তোমার প্রশংসার সাথে, বরকতময় তোমার নাম। সুউচ্চ তোমার মহিমা এবং তুমি ভিন্ন কোন মা‘বুদনাই।
৩.আউযুবিল্লাহ পড়া:
উচ্চারণ: আউযুবিল্লা হিমিনাশ শায়তানির রাঝিম। অর্থ: আমি বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
৪.বিসমিল্লাহ পড়া:
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম। অর্থ: পরমকরুনাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
৫.সূরা ফাতিহা পড়া:
উচ্চারণ: (১)আল-হামদু লিল্লাহি রব্বিল আল-আমিন, (২)আর রাহমানির রাহিম, (৩)মালিকি ইয়াওমিদ্দিন, (৪)ইয়্যাকা না‘বুদু ওইয়্যাকা নাসতাঈন, (৫)ইহদিনাস সিরাতাল মুসতাকীম, (৬)সিরাতল্লাযিনা আনআমতা আলাইহিম, (৭)গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দ—লিন।(আমীন)
অর্থ: (১)সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, (২)যিনি সমস্ত জগতসমূহের সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা, পালনকর্তা। (৩)যিনি দয়াময়, অত্যন্ত দয়ালু, যিনি বড় মেহেরবান। (৪)যিনি কর্মফল দিবসের একচ্ছত্র মালিক। (৫)আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করছি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি। (৬)আমাদেরকে দেখাও সঠিক সরল পথ। (৭)তাদের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। যারা তোমার অনুগ্রহের পাত্র হয়েছেন। তাদের পথ নয় যাদের প্রতি তোমার পক্ষ থেকে গযব নাযিল হয়েছে।
বি: দ্রঃ উক্ত সূরা(ফাতিহা) শেষ করার পর আমীন বলতে হবে এবং সূরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলানো ওয়াজিব। তবে ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে তা নির্দিষ্ট।
৬. রুকুর তাসবীহ পড়া:
উচ্চারণ: সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম। অর্থ: আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
৭. রুকু হইতে ওঠার সময়ের তারবীহ পড়া:
উচ্চারণ: সামিআল্লাহুলিমান হামিদাহ অর্থ: যে আল্লাহর প্রশংসা করেছে, আল্লাহ তাহার প্রশংসা কবুল করেছেন।
৮. রুকু থেকে উঠে দাড়িয়ে থেকে পড়তে হবে:
উচ্চারণ: রাব্বানা লাকাল হামদ হামদান কাছীরান ত্বাইয়্যেবান মুবারাকানফিহ। অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক অধিক অধিক প্রশংসা ও পবিত্রতা তোমারই। (এখানে রাব্বানা লাকাল হামদ পর্যন্ত পড়লেও হবে।)
৯. সেজদায় তাসবীহ পড়া:
উচ্চারণ: সুবহানা রাব্বিয়াল আ‘লা। অর্থ: আমার মহান প্রতিপালকের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
১০. উভয় বৈঠকে(বসা অবস্থায়) তাশাহুদ বা আত্তাহিয়্যাতু পড়া:
উচ্চারণ: আত্যাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওস্ সলাওয়াতু ওত্ তয়্যেবাতু আসসালামুআলাইকা আয়্যুহান্নাবিয়্যু ওরাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু আসসালামুআলাইনা ওয়া‘লা ঈবাদিল্লাহি সসলিহিনা আশহাদুআল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মুহাম্মাদাং আবদুহু ওয়ারাসূলুহ।
অর্থ: সমস্ত মৌখিক ইবাদত, সমস্ত শারীরিক ইবাদত এবং সমস্ত পবিত্র বিষয় আল্লাহ তা‘আলার জন্য। হে নবী! আপনার উপর শান্তি ও তাহার বরকতসমূহ নাযিল হউক। আমাদের প্রতি ও আল্লাহ তা‘আলার নেক বান্দাদের প্রতি তাঁহার শান্তি বর্ষিত হউক। আমি সাক্ষ্য দিতেছি যে, আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত আর কোন মা‘বুদ নাই। আমি আরও সাক্ষ্য দিতেছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁহার বান্দা ও রাসূল।
১১.দরুদ পড়া:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সল্লেআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা সল্লেইতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিকআ‘লা মুহাম্মাদিও ও‘য়ালা আলি মুহাম্মদ কামা বারাকতা‘আলা ইবরাহিমা ওয়া‘লা আলি ইবরাহিমা ইন্নাকা হামিদুম্মাজিদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি রহমত বর্ষণ কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন রহমত বর্ষণ করেছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত। হে আল্লাহ! তুমি বরকত নাযিল কর মুহাম্মদ(সা.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি, যেমন বরকত নাযিল করেছ ইবরাহীম(আ.)-এর প্রতি ও তাঁহার পরিবার পরিজনের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও সম্মানিত।
১২. দু‘আয়ে মাসূরা পড়া:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতুনাফসি যুলমাং কাসিরাও ওলা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লা আংতা ফাগফিরলি মাগফিরাতাম মিনইংদিকা ওয়ারহামনি ইন্নাকা আংতাল গফুরুর রাহিম।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আমার আত্মার উপর অসংখ্য জুলুম করিয়াছি এবং তুমি ব্যতীত পাপ সমূহ ক্ষমা করার আর কেউ নেই। অতএব আমাকে ক্ষমা কর এবং তোমার নিজের পক্ষ হইতে আমাকে দয়া কর। নিশ্চয়ই তুমি ক্ষমাশীল, দয়াবান।
এখন আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ বলে ডানদিকে ও বামদিকে সালাম দিয়ে নামায শেষ করতে হবে।
অর্থ: (হে মুক্তাদী ও ফেরেশ্তাগন) তোমাদের উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হউক।

দু‘আয়ে কুনুত পড়া:
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়ানাসতাগফিরুকা ওয়ানু‘মিনুবিকা ওয়ানাতাওয়াক্কালু আ‘লাইকা ওয়ানুছনি আ‘লাইকাল খইর, ওয়ানাশকুরুকা ওয়ালানাকফুরুকা ওনাখলা‘উ ওয়ানাতরুকু মাঈয়াফ যুরুকা, আল্লাহুম্মা ইয়্যা কানা‘বুদু ওয়ালাকানুসল্লি ওয়ানাসযুদু ওয়ালাইকানাস‘আ ওয়ানাহফিদু ওনারযু রাহমাতাকা ওয়ানাখশা আ‘যাবাকা ইন্না আ‘যাবাকা বিলকুফ্ফারি মুলহিক।
অর্থ: আয় আল্লাহ! আমরা তোমার নিকট সাহায্য ভিক্ষা করিতেছি এবং তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিতেছি এবং তোমার উপর ঈমান আনিতেছি এবং তোমার উপর ভরসা করিতেছি। তোমার উত্তম প্রশংসা করিতেছি এবং (চিরকাল) তোমার শুকুরগুজারী করিব, কখনও তোমার না শুকরী বা কুফুরী করিব না। তোমার নাফরমানী যাহারা করে(তাহাদের সহিত আমরা কোন সম্পর্কও রাখিব না।) তাহাদের আমরা পরিত্যাগ করিয়া চলিব। হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করিব,(অন্য কাহারও ইবাদত করিব না।) একমাত্র তোমার জন্য নামায পড়িব, একমাত্র তোমাকেই সেজদা করিব,(তুমি ব্যতীত আর কাহাকেও সেজদা করিব না।) এবং একমাত্র তোমার আদেশ পালন ও তাঁবেদারির জন্য সর্বদা(দৃঢ় মনে) প্রস্তুত আছি। (সর্বদা) তোমার রহমতের আশা এবং তোমার আযাবের ভয় অন্তরে রাখি। (যদিও) তোমার আসল আযাব নাফরমানদের উপরই হইবে।(তথাপি আমরা সেই আযাবের ভয়ে কম্পমান থাকি।)

নামাজ বেহেশতের চাবি। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের বিরাশিবার নামাজের তাগিদ দিয়েছেন। অতএব নামাজ আদায় করতেই হবে। আসুন আমরা নামাজ প্রতিষ্ঠা করি। জেনে বুঝে সহি শুদ্ধ-ভাবে নামাজ আদায় করি।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

জোকস বলেছেন: আমিন

২| ১৪ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: অনুভবহীন প্রেম অনুভব হীন ইবাদত মূল্যহীন।

আর এই অনুভবে প্রান সঞ্চার করে বিশ্বাস। বা ঈমান। আমাদের বিশ্বাসের শিথিলতা আমাদের ইবাদতে
শিথিলতা আনয়ন করে। আগে মুসলমান হতে হবে। পরিপূর্ণ মুসলিমের উপরই ফরজ সালাত।
ঈমানের পাঁচটি স্তম্ভ পাঁচ কলেমাকে অন্তরের গভীরে ধারন করতে পারলেই আমরা সে স্তর অর্জ ন করতে পারব।

সুন্দর পোষ্ট।

ভাল লাগা

++++

১৪ ই জুন, ২০১৮ রাত ৮:১০

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অনুভবহীন প্রেম অনুভব হীন ইবাদত মূল্যহীন। অশেষ ধন্যবাদ বিদ্রোহী ভৃগু।

৩| ১৪ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:১৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার একটি লেখা,
প্রত্যেক মমিন মুসলমানের জন্য
আবশ্যকীয়। জানতেই হবে!
আল্লাহ আপনার পরিশ্রমের
যথার্থ নেকী দান করবেন।

১৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৯

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: নুরু ভাই অশেষ ধন্যবাদ, আগাম ঈদ মুবারক।

৪| ১৪ ই জুন, ২০১৮ রাত ১০:৪৫

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট...

১৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, ঈদ মুবারক।

৫| ১৫ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:০০

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, দুই সেজদার মধ্যে বলতে হয়: আল্লাহু মাগফিরলি ওআহ হামনি ওআহ যুকনি ওআহ দিনি। এটা অনেকেই জানেনা । এটা বাদ পরে গেছে... আর দরুদে ইবরাহীম পড়ার সময় মুহাম্মদ (সাল::) ও ইবরাহিম (আ::) পড়ার আগে সম্মান পূর্বক ছ্যাইয়েদিনা পড়ি আমরা। চমৎকার একটা লেখা দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে রহমত দান করুন। আমীন।

১৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: হজরত ইবনে আব্বার রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সিজদার মাঝে বলতেন-
আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি। (মুসলিম, মিশকাত)
অর্থ : হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।

হজরত হুজায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সিজদার মধ্যবর্তী বৈঠকে এ দোয়াটি পড়তেন- রব্বিগফির লী, রব্বিগফির লী। (ইবনু মাজাহ, আবু দাউদ)
অর্থ : হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। হে আমার রব্ব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। ঈদ মুবারক।

৬| ১৫ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১:৩৪

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত মনোরম।

১৫ ই জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: ঈদ মুবারক।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.