নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন

আমি মানুষের কথা বলি। মানবতার কথা বলি। স্বপ্ন দেখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের। নিরাপদ একটি ভূখন্ডের।

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপরাধকে অপরাধ বলে গন্য না করলে তা মহামারি আকার ধারন করে।

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:২০


মানুষ যখন কোন অপরাধকে অপরাধ বলে মনে করে না। তখন সে অপরাধটি সমাজে মহামারি আকারে দেখা দেয়। যেমনটি দেখা গিয়েছে টেকনাফে। সেখানে একদিকে সমাজের প্রতিষ্ঠিত মানুষজন প্রকাশ্যে ইয়াবার ব্যবসা পরিচালনা করত অন্যদিকে রাষ্ট্র এর বিরুদ্ধে তেমন কোন শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেনি। ফলে সেখানকার সাধারণ মানুষ ইয়াবার কারবারকে অপরাধ বলে গণ্য করেনি। একে একটি লাভ জনক ব্যবসা বলে পরিগণিত করেছে। যার ফলে সেখানে এই ব্যবসার বিরুদ্ধে কোন সামাজিক প্রতিরোধ পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি। ফলে দিনের পর দিন ইয়াবা ব্যবসায়ীরা দেশ জুরে ছড়িয়ে যেতে পেরেছে এই মরণ বিষ।

একই ভাবে বাংলাদেশে অশিক্ষিত এবং যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়া চালকদের গাড়ী চালানোর সুযোগ দেয়াকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয় না। অপরাধ বলে গণ্য করা হয় না চালকদের স্বেচ্ছাচারিতাকেও। যেহেতু একে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়নি সেহেতু চালকদের মধ্যেও কোন সচেতনতা সৃষ্টি হয় না। বিষয়টা এমন দাঁড়িয়েছে যেন, সড়কে চলাচল করলে দুর্ঘটনা ঘটবেই। এটাই স্বাভাবিক। যেহেতু এই সব দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেই বললেই চলে সেহেতু চালকদের মধ্যেও এটা কোন অন্যায় নয় বলেই প্রতিভাত হয়েছে। ফলে আমাদের দেশে সড়কে দুর্ঘটনা মহামারি আকার ধারণ করেছে।
ওভার টেকিং, ওভার লোডিং, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা, চলাচলের অনুপযুক্ত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামা সর্বোপরি ট্রাফিক আইন মেনে না চলা যে অপরাধ এই বোধটুকুই গাড়ি চালকদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে না। একটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটার পরে সেটা অপরাধ কিনা বা সে ক্ষেত্রে চালকের অপরাধের মাত্রাটা কতটুকু সম্ভবত সেটা নির্ধারণে আইন প্রয়োগ সংস্থাও দ্বিধান্বিত হয়ে পরেন। একই সাথে চালক গনও কোন কাজটা কতটুকু অন্যায়। বোধ করি সেটা বুঝতে অক্ষম। যা তাদের কার্যকলাপে স্পষ্টই ধরা পরে। যদি তাই না হবে তাহলে, অভিনেত্রী অহনার গাড়িটি ধাক্কা দেয়ার অপরাধ থেকে বাচতে একজন ড্রাইভার কি করে খোদ অহনাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে! আমরা মাঝে মাঝেই প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানতে পারি, দুর্ঘটনার পরে গাড়িটা থামিয়ে দিলেও দুটি প্রাণ বেচে যেত। সড়ক দুর্ঘটনার পরে এই যে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এর প্রধান কারণটিই হল, একবার পালাতে পারলেই বেচে যাওয়া নিশ্চিত। ফলে অভিযুক্ত চালক দু চারজন মানুষকে পিষে মেরে হলেও বাচার চেষ্টা করে। এখানে আমাদের আইন প্রয়োগ কারী সংস্থার ব্যর্থতাই মূর্ত হয়ে ওঠে।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে অপরাধকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করাটা জরুরী। আর তারপরেই জরুরী সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রয়োজন সামাজিক প্রতিরোধ। বাস চালকদের নিয়ে যাও বা কিছু কথা উঠেছে, ট্রাক চালকদের নিয়ে তেমন কোন কথাই উচ্চারিত হচ্ছে না। ফলাফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। ২৯ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখে প্রথম আলোর হিসাব অনুযায়ী ৭০৩ দিনে ৬০৩৬ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৯ জন মানুষ মারা যাচ্ছে!
আমরা প্রতিদিন অসংখ্যবার শুনি। মানুষের অধিকারে কথা, গণতন্ত্রের কথা, ভোটাধিকারের কথা, সুশাসনের কথা। একদল বলে নেই অন্যদল বলে আছে। সড়কের এই নিরাপত্তা হীনতার কথা কোন দলই বলছে না। তার কারণ একটাই এ দেশের সকল যানবাহনের মালিকই হয় রাজনীতিবিদ নয়ত রাজনৈতিক আশীর্বাদ পুষ্ট। কাজেই নিজেদের স্বার্থ সু রক্ষার্থেই এ বিষয়ে তারা মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকেন। সড়ক দুর্ঘটনাকে অপরাধ বলে চিহ্নিত না করাটাও যে একটি গুরুতর অপরাধ সেটা আমাদের নেতৃবৃন্দ উপলব্ধি করতেই পারছেন না। যেদিন পারবেন সেদিন দেখব দেশের এখানে ওখানে চালকদের মৃতদেহ পরে আছে। কারো গলায় ঝুলানো থাকবে নোট- সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারার দায়ে আমি দোষী-এটাই আমার পরিণতি! যেমনটি এখন আমরা ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের বেলায় দেখছি।

মাদকের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর গা ছাড়া ভাবে থাকার পর সরকার যখন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করল তখন দেখা গেল হঠাত করেই একের পর এক মাদক কারবারি ক্রসফায়ারে মারা পরছে। কারা যেন(!) তাদের বাড়িঘর, নৌকা ভাঙচুর করছে, জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এক কথায় তাদের উপর কেয়ামত নেমে এসেছে।
কদিন যাবত দেখছি ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের মৃতদেহ পরে থাকছে। গলায় অদ্ভুত এক স্বীকারোক্তি নামা নিয়ে। সম্ভবত একদিন অভিযুক্ত গাড়ী চালকদেরও একই পরিণতির স্বীকার হতে দেখব। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো হয়ত তাতে কিছুটা শান্তিও পাবে। আবার মানবাধিকার সংগঠনগুলো হায় হায় রবও তুলবে। প্রশ্ন হল এটা কি ধরনের সমাধান? বলার অপেক্ষা রাখে না এ ধরনের হত্যাকাণ্ডও অপরাধ। রাষ্ট্র কেন এই অপরাধের দায় নেবে?
কেন সময় ক্ষেপণ করে, অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়ে একটি দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়? কেন প্রথমেই অপরাধের লাগাম টেনে ধরা হয় না? এটাও তো অনেক বড় অপরাধ।

আমরা কি সত্যিই বুঝতে পারি না কোনটা অপরাধ আর কোনটা নয়? সত্যিই যদি না বুঝে থাকেন, তাহলে প্রথমেই অপরাধের সংজ্ঞা নির্ধারণ করুন, অপরাধকে অপরাধ বলে চিহ্নিত করুন। আর সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আমরা সাধার মানুষ রাষ্ট্রের কাছে সব ধরনের নিরাপত্তা চাই। সড়কে চাই, স্বাস্থ্যে চাই, আইনগত চাই। এই নিরাপত্তা রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। আমরা আমাদের অধিকার চাই।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৪৬

আবদ্ধ বলেছেন: ভাবনার বিষয়!সকল অনিয়ম ও আইন ভঙ্গকারীদের পতন হোক।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৪

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সকল অনিয়ম ও আইন ভঙ্গকারীদের পতন হোক।

২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:৫২

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ভাববার বিষয়। সুন্দর উপস্থাপন। ভালো লাগলো।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৫

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: সৌরভ আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: ইশ্বর নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আমার চিন্তা মানুষদের নিয়ে।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:১৭

মোঃ গালিব মেহেদী খাঁন বলেছেন: অথচ ইশ্বর নিয়ে চিন্তা করলেই কেবল মানুষ নিরাপদ থাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.