![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সরকারি ভাবে বিদেশ ভ্রমনের সুযোগ পাব তা কখনও ভাবি নাই। অথচ সেই অভাবনীয় সুযোগ টি আমার জীবনে আসে ২০১২ সালের ১ জুলাই। আর সেই সুযোগে মালয়েশিয়া ও ফিলিফাইন ঘুরে দেখার সুযোগ হয়। যা আমার চাকুরী জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। দেশ দু'টিতে যাওয়ার ঠিক এক মাস আগে ও জানতে পারি নাই যে আমি যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত আমাকে নির্বাচিত করা হলো।
আমার আগের থেকে পাসপোর্ট করা ছিল না। কখনও বিদেশ যাওয়ার সুযোগ হয় নাই, তাই পাসপোর্ট করে রাখি নাই। আমরা ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আই এল ও) এর তত্ত্বাবধানে ২৪ জনের একটি দল কম্পিটেন্সি বেসড ট্রেনিং (সি বি টি) প্রোগ্রামের উপর ফিলিফাইন এর শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে জানার জন্য ঐ দেশে যাই। আমাদের যাওয়ার তারিখ আগেই ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের অনেকেরই পাসপোর্ট করা ছিল না। যার মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করার জন্য কাগজপত্র জমা দিয়ে আমার একজন সহকর্মীর পরিচিত লোক থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাই। তবে এর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে যেদিন পাসপোর্ট দিবে সেই দিনটি। সারা দিন কেটে শেষ বিকালে হাতে পাই পাসপোর্টটি। পরদিন সবা্র পাসপোর্ট গুলো এ্যাম্বেসিতে জমা দেওয়া হয় ভিসা এট্রি করার জন্য। একদিন পর তা ও পেয়ে যাই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিটা নিতে একটু বেগ পেতে হয়েছিল, তবে তা ও শেষ সময়ে হাতে পেয়ে যাই। আই এল ও বাংলাদেশ অফিস একদিন আগেই আমাদের হাতে টিকেট ও সম্মানী ডলার হাতে দিয়ে দেয়। এবার বিমানে চড়ব নিশ্চিত হলাম। কিন্তু আমার এক স্যার বলেন যে, বিমানে না উঠা পর্যন্ত নিশ্চিত নয়। যদি কোন সমস্যা দেখা দেয়। না শেষ পর্যন্ত কোন সমস্যাই হয় নাই। জীবনের প্রথম বিমানে চড়ার আনন্দ উপভোগ করলাম।
আমাদের সফরটি ছিল মাত্র ১৪ দিনের। যার কারণে আমি বিমান বন্দরে গিয়ে সারি সারি আত্মীয়-স্বজন বিদায় জানাবে তা একদমই পছন্দ করি নাই। অনেকের বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তানেরা বিদায় জানাতে এসেছিল। আমার কেবল মাত্র ছোট ভাই এবং ছোট চাচাতো ভাই বিদায় জানিয়েছেন বিমান বন্দরে। রাত ১.২০ মিনিটে আমাদের ফ্লাইটটি ছিল। মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স এর একটি এয়ার বাস বিমান। ঐ বিমানে করে প্রথমে মালয়েশিয়া গিয়ে পৌঁছালাম। মালয়েশিয়া দেশটি অনেক সুন্দর।
মালয়েশিয়া দেখা শেষ করে আমরা যাই ফিলিফাইন। সমুদ্র তীরবর্তী দেশ কতই না সুন্দর। বিমান বন্দরে নেমে কিছ ডলার কে পেসো তে রুপান্তরিত করতে গিয়ে কাউন্টারে কাজ করা ময়েটির কর্মদক্ষতা দেখে অভিভূত হলাম। একসাথে দ্রুত সবগুলো কাজ কিভাবে করছে। বিমান বন্দর থেকে অনেকে সীম কার্ড ক্রয় করে দেশে কথা বললেন। বিমান বন্দর থেকে বেরিয়ে আগে থেকে ঠিক করা গাড়িতে চড়ে আমার চলে আসলাম ম্যানিলায় অবস্থিত হোটেল বে লীফ এ। সুন্দর পরিপাটি সব গুলো রুম। ইন্টারন্যাশনাল মানের।
এখান থেকেই আমরা ফিলিফাইনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থান ঘুরতে বের হয়ে যেতাম সকাল বেলা আর ফিরতাম রাতে। রাতের ম্যানিলা দেখলাম। নর্ত্যকি আর নারী যে রাতের ম্যানিলার একটি অংশ। ফিলিফাইনের দেখা উল্লেখযোগ্য স্থান সমূহ হচ্ছেঃ
* আই এল ও কান্ট্রি অফিস (আর সি বি সি টাওয়ার এ অবস্থিত, এটি একটি সুরক্ষিত ভবন)
* টেকনিক্যাল এডুকেশন এন্ড স্কীল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (টেজডা), এটি ঐ দেশের কারিগরি শিক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান
* টেজডা ওমেন সেন্টার
* ন্যাশনার টিভেট ট্রেইনার একাডেমী
* সেন্ট মেরি এনজেল স্কুল
* আনিহান স্কুল
* পামপাংগা বেস্ট, মাংস প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ
* নেসলে ফিলিফাইন
* ২য় বিশ্ব যুদ্ধের সমাধিস্থল
* জোসি রিজেল পার্ক
* কনসেপসন ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট
* জাকোবো জি গনজেলাস স্কুল
* ন্যাশনাল ফুড অথরিটি
* মসজিদ
* সী বিচ
* মল অফ এশিয়া মার্কেট ইত্যাদি।
ফিলিফাইনের শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে এসেছি আমাদের দেশে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে শিক্ষার্থীদের যে অরাজকতা তাতে সিভিটি সিস্টেম যে কতদুর এগিয়ে যেতে পারবে তা সময়ই বলে দিবে।
যাদের কল্যাণে আমার বিদেশ ভ্রমণ হলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি সব সময় চেষ্টা করি আমার সবটুকু জ্ঞান শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দিতে। কারণ এই মুহুর্তে যদি আমার মৃত্যু হয়, তবে আমার শিক্ষার্থীরা আমার নিকট থেকে শিক্ষা গ্রহন হতে বঞ্চিত হবে।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:১৭
তছলিম উদ্দিন বলেছেন: আপনার বাবার জন্য দোয়া করি। আপনাকে ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩
দুর্বার বলেছেন: অভিনন্দন। আর ধন্যবাদ আপনার অনুভুতি প্রকাশের জন্য। আমার বাবা আজ রাত ১০ টার ফ্লাইটে মালয়েশিয়া যাচ্ছে। উনার জন্য দোয়া চাইছি। ভালো থাকবেন।